রোজা'র(অটোফেজি) উপর গবেষণা করে নোবেল জয়!

Author Topic: রোজা'র(অটোফেজি) উপর গবেষণা করে নোবেল জয়!  (Read 1646 times)

Offline Nahian Fyrose Fahim

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 322
  • Test
    • View Profile

মুসলিমরা রোজা রাখলে তাকে বলা হয় ‘সিয়াম’। খ্রিস্টানরা রোজা রাখলে তাকে বলা হয় ‘ফাস্টিং’। হিন্দু বা বৌদ্ধরা রোজা রাখলে তাকে বলা হয় ‘উপবাস’। বিপ্লবীরা রোজা রাখলে তাকে বলা হয় ‘অনশন’। আর, মেডিক্যাল সাইন্সে রোজা রাখকে বলা হয় 'অটোফেজি’।
তবে মুসলিমদের রোজা রাখার ধরনের সাথে অন্যদের কিছু পার্থক্য আছে।
খুব বেশি দিন হয়নি, মেডিক্যাল সাইন্স ‘অটোফেজি’র সাথে পরিচিত হয়েছে। ২০১৬ সালে নোবেল কমিটি জাপানের ডাক্তার ‘ওশিনরি ওসুমি’-কে অটোফেজি আবিষ্কারের জন্যে পুরষ্কার দেয়। এরপর থেকে আধুনিক মানুষেরা ব্যাপকভাবে রোজা রাখতে শুরু করে।
youtube এ অনেক ভিডিও পাবেন । যেখানে রোজা রাখার জন্যে আধুনিক সচেতন নারী ও পুরুষেরা কেমন ব্যস্ত হয়ে পড়ছে, দেখুন!!! শত হলেও, মেডিক্যাল সাইন্স বলে কথা!!
যাই হোক, Autophagy কি? এবার তা বলি।
Autophagy শব্দটি একটি গ্রিক শব্দ। Auto অর্থ নিজে নিজে, এবং Phagy অর্থ খাওয়া। সুতরাং, অটোফেজি মানে নিজে নিজেকে খাওয়া।
না, মেডিক্যাল সাইন্স নিজের গোস্ত নিজেকে খেতে বলে না। শরীরের কোষগুলো বাহির থেকে কোনো খাবার না পেয়ে নিজেই যখন নিজের অসুস্থ কোষগুলো খেতে শুরু করে, তখন মেডিক্যাল সাইন্সের ভাষায় তাকে অটোফেজি বলা হয়।
আরেকটু সহজভাবে বলি।
আমাদের ঘরে যেমন ডাস্টবিন থাকে, অথবা আমাদের কম্পিউটারে যেমন রিসাইকেল বিন থাকে, তেমনি আমাদের শরীরের প্রতিটি কোষের মাঝেও একটি করে ডাস্টবিন আছে। সারা বছর শরীরের কোষগুলো খুব ব্যস্ত থাকার কারণে, ডাস্টবিন পরিষ্কার করার সময় পায় না। ফলে কোষগুলোতে অনেক আবর্জনা ও ময়লা জমে যায়।
শরীরের কোষগুলো যদি নিয়মিত তাদের ডাস্টবিন পরিষ্কার করতে না পারে, তাহলে কোষগুলো একসময় নিষ্ক্রিয় হয়ে শরীরে বিভিন্ন প্রকারের রোগের উৎপন্ন করে। ক্যান্সার বা ডায়াবেটিসের মত অনেক বড় বড় রোগের শুরু হয় এখান থেকেই।
মানুষ যখন খালি পেটে থাকে, তখন শরীরের কোষগুলো অনেকটা বেকার হয়ে পড়ে। কিন্তু তারা তো আর আমাদের মত অলস হয়ে বসে থাকে না, তাই প্রতিটি কোষ তার ভিতরের আবর্জনা ও ময়লাগুলো পরিষ্কার করতে শুরু করে। কোষগুলোর আমাদের মত আবর্জনা ফেলার জায়গা নেই বলে তারা নিজের আবর্জনা নিজেই খেয়ে ফেলে। মেডিক্যাল সাইন্সে এই পদ্ধতিকে বলা হয় অটোফেজি।
জাস্ট এ জিনিসটা আবিষ্কার করেই জাপানের ওশিনরি ওসুমি (Yoshinori Ohsumi) ২০১৬ সালে নোবেল পুরস্কারটা নিয়ে গেল। শুনেছি প্রোফেসর ওশিনরি নিজেও সপ্তাহে দুটি করে রোজা রাখেন। আমার আফসোস হলো তাদের জন্যে, যারা স্বাস্থ্যের কথা ভেবে রোজা রাখেন না। আমরা তো প্রতিবছর একমাস রোজা রেখে শরীরের অটোফেজি করে ফেলি। কিন্তু, আপনারা কিভাবে শরীরের অটোফেজি করবেন?


Nahian Fyrose Fahim
Senior Lecturer ( Employee ID# 710001914)
Department of Pharmacy
Daffodil International University
Email: fyrose.ph@diu.edu.bd