Faculties and Departments > Commerce

পরিচালক পদ বিক্রির বিজ্ঞাপন নিয়ে ব্যাংকপাড়া সরগরম

(1/1)

Anuz:
ব্যাংক খাতের বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির খবরের মধ্যে নতুন করে আলোচনায় এসেছে ব্যাংকের পরিচালক পদ বিক্রির বিজ্ঞাপন। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এমন বিজ্ঞাপন চোখে পড়েছে গত বুধবার। ‘২% শেয়ারসহ প্রতিষ্ঠিত ব্যাংকের একটি পরিচালক পদ হস্তান্তর করা হবে’ এমন বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় একাধিক পত্রিকায়। নাম-পরিচয় প্রকাশ না করে দেওয়া এই বিজ্ঞাপন নিয়ে ব্যাংক খাতে চলছে নানা আলোচনা ও বিতর্ক। এতে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন বিভিন্ন ব্যাংকের পরিচালকেরাও।
গতকাল বিভিন্ন মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে, ওই বিজ্ঞাপন দিয়েছেন শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক মোহাম্মদ ইউনুছ। তিনি ইউনুছ গ্রুপের কর্ণধার এবং ব্যাংকটির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান। বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভি, ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিসহ ২৫টি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক মোহাম্মদ ইউনুছ। তিনি মূলত কাগজ মিলের পাশাপাশি কৃষি ও প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।
প্রচলিত আইন অনুযায়ী, এভাবে পরিচালক পদ হস্তান্তরের সুযোগও নেই। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক হওয়ায় বিষয়টি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) আইনেরও লঙ্ঘন। ব্যাংকটির ২ শতাংশ শেয়ারের বাজারমূল্য প্রায় ২৬ কোটি টাকা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা প্রথম আলোকে বলেন, ‘শেয়ার কিনলেই তো পরিচালক হওয়া যায় না। পরিচালক হতে হলে পর্ষদের অনুমোদনের পর বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন লাগবে। কোনো পরিচালকের কাছে এ ধরনের বিজ্ঞাপন কাঙ্ক্ষিত না। এ ধরনের বিজ্ঞাপন অভিপ্রেত না।’
গত বুধবার ছিল ব্যাংকটির ১৬তম বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম)। এদিনই পত্রিকায় পরিচালক পদ হস্তান্তরের বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। তবে বিজ্ঞাপনে কোন ব্যাংকের কোন পরিচালক পদ বিক্রি করবেন, তা উল্লেখ ছিল না। ১৩ জুলাইয়ের মধ্যে আগ্রহীদের একটি মেইল ঠিকানায় যোগাযোগের অনুরোধ জানানো হয়।
যোগাযোগ করা হলে মোহাম্মদ ইউনুছ গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিজ্ঞাপনটি আমার। ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ব্যাংক ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ভালো দাম পেলে শেয়ার ছেড়ে দেব।’
শেয়ারবাজার থাকতে কেন এভাবে বিজ্ঞাপন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার অন্য সমস্যা আছে, এটা ব্যক্তিগত ব্যাপার। ঠিক আছে, তাহলে শেয়ারবাজারের মাধ্যমেই বিক্রি করব, কোনো সমস্যা নেই।’
জানা গেছে, গত বুধবার বিজ্ঞাপনটি প্রকাশের দিনে ব্যাংকটির এজিএম অনুষ্ঠিত হয়। এজিএমে মোহাম্মদ ইউনুছও অংশ নেন। নাম-পরিচয় প্রকাশ না করে বিজ্ঞাপন দেওয়ায় এজিএমে তাঁর পরিচালক পদ ছেড়ে দেওয়া নিয়ে কোনো আলোচনাও হয়নি। সভায় ২০১৬ সালের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ এবং ৫ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ অনুমোদন হয়। ২০১৬ সালে ব্যাংকটি নিট মুনাফা করে ১৬৬ কোটি টাকা।
জানা গেছে, আইন অনুযায়ী শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোনো প্রতিষ্ঠানের পরিচালক শেয়ার বিক্রি করতে চাইলে তাঁকে অবশ্যই ঘোষণা দিতে হবে। এ ছাড়া নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেয়ার বিক্রি সম্পন্ন করতে হবে। শেয়ার হস্তান্তরের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে। তাই এভাবে বিজ্ঞাপন দিয়ে পরিচালক পদ বিক্রির কোনো সুযোগ নেই।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘শেয়ারবাজার থাকতে এভাবে কেন বিজ্ঞাপন দেবেন কোনো পরিচালক? আর এভাবে কি পরিচালক পদ হস্তান্তর করা যায়? এতে আমরা বিব্রত।’
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কর্মকর্তারা বলছেন, পরিচালকদের শেয়ার বিক্রির ঘোষণা মূল্য সংবেদনশীল তথ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাই এভাবে শেয়ার বিক্রি বা পরিচালক পদ বিক্রিরও কোনো সুযোগ নেই। এ ছাড়া এখনো বিষয়টি স্টক এক্সচেঞ্জে ঘোষণা না দেওয়ায় সন্দেহজনক। এভাবে বিভ্রান্তি ছড়ানো কাম্য নয়।
শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক সূত্র জানায়, ব্যাংকে অনেক পরিচালক থাকলেও মূল ভূমিকা রাখেন শীর্ষ বণিকদের সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ও হামিম গ্রুপের কর্ণধার এ কে আজাদ। এ ছাড়া সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনুছও ব্যাংকে সক্রিয়।
বেসরকারি খাতের শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ২০০১ সালে যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে ব্যাংকটির শাখার পরিমাণ ১০৩। মার্চে ঋণের পরিমাণ ছিল ১২ হাজার ১৮৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণ ৬০৫ কোটি টাকা।

Nujhat Anjum:
Informative post

Navigation

[0] Message Index

Go to full version