Career Development Centre (CDC) > Career Tips

‘ভালো মানুষ হতে পারলে সাফল্য পেছনে ঘুরবে’

(1/2) > >>

shilpi1:



অচ্ছুত সামন্ত ছবি: সাজিদ হোসেন২৭ জুলাই। গুলশান ক্লাবে অনুষ্ঠানটি তখনো শুরু হয়নি। শান্ত ভঙ্গিতে কক্ষে এসে ঢুকলেন সাদা শার্ট, জিনস ও কালো কোটি পরা একজন। মুখে সাদা খোঁচা খোঁচা দাড়ি। হাতে বন্ধুপত্নীকে উপহার দেওয়ার জন্য আনা শাড়ি। উঠে দাঁড়ালেন হলভরা লোকজন। জানলাম, ইনিই অধ্যাপক অচ্ছুত সামন্ত। তাঁকে সম্মানিত করতেই এই অনুষ্ঠান।

হতদরিদ্র ঘরে জন্ম নেওয়া অকৃতদার এই অধ্যাপক ভারতের ওডিশায় একদম একা হাতে গড়ে তুলেছেন দুটি বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়। কলিঙ্গ ইনস্টিটিউট অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেকনোলজি (কিট) ও কলিঙ্গ ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল সায়েন্স (কিস)। কিট একটি পূর্ণাঙ্গ বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, যার বার্ষিক আয় ৩০০ কোটি রুপির ওপরে। কিন্তু যে কারণটি অধ্যাপক সামন্তকে নিয়ে গেছে অন্য এক উচ্চতায়, তা হলো কিস। শিক্ষা দিয়ে দারিদ্র্যকে জয় করার এক ‘মেগা প্রজেক্ট’ হাতে নিয়েছেন তিনি। এখানে ১৫ হাজারের বেশি আদিবাসী শিক্ষার্থী একদম বিনা মূল্যে পড়ছেন স্নাতকোত্তর পর্যায় পর্যন্ত। শুধু পড়ালেখা নয়, কিসের সব ছাত্রছাত্রীর জন্য থাকা, খাওয়া, বিনোদন, খেলাধুলা, স্বাস্থ্যসেবা—সবকিছুই বিনা মূল্যে। কিটের আয়ের কিছু অংশ এখানে ব্যয় হয়। কিসের শিক্ষার্থীদের তিন বেলা খাওয়ার দৃশ্য নিয়েই তৈরি হয়েছে অনেক তথ্যচিত্র। সে এক এলাহি ব্যাপার, কেউ কেউ এটিকেই ভারতের বৃহত্তম রান্নাঘর আখ্যা দিয়েছেন। বিশ্বের বরেণ্য লোকজন এই দুটি বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে কেউ তাকে আখ্যা দিয়েছেন ঈশ্বরের আশ্চর্য সৃষ্টি, কেউ বলেছেন বাতিঘর। কেউবা এ প্রতিষ্ঠানকে আখ্যা দিয়েছেন ভারততীর্থ নামে।

সেই অধ্যাপক সামন্ত এসেছিলেন ঢাকায়। গত ২৭ জুলাই ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সঙ্গে এক চুক্তি করতে। ড্যাফোডিলের মাধ্যমে ঢাকাতেও বিস্তৃত হচ্ছে কিসের কার্যক্রম।

গত বৃহস্পতিবার গুলশান ক্লাবে তাঁর সম্মানে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল ড্যাফোডিল। সেখানেই কথা হয় অধ্যাপক সামন্তের সঙ্গে।

কথা শুরু হওয়ার পরপর বাংলাদেশের ছেলেমেয়েদের দেখিয়ে ভাঙা বাংলায় বললেন, ‘আমি হান্ড্রেডস অব ছেলেমেয়েদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেছি। তারা খুবই সম্ভাবনাময়, মেধাবী ও ভালো শিখছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, তারা যথাযথ গুরুত্ব পাচ্ছে কি না। আমি বলব, ঢাকায় তারা অনেক যত্ন পাচ্ছে।’ জানতে চাইলাম, শিক্ষার লক্ষ্যটা কী? অধ্যাপক বললেন, ‘একজন সফল মানুষ হওয়ার চেয়ে ভালো মানুষ হওয়া বেশি জরুরি। ভালো মানুষ হতে পারলে সাফল্য তার পেছনে ঘুরবে। আমরা একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের আরও অনেক কিছুই শেখাই। যাতে তারা ভবিষ্যতে ভালো মানুষ ও দায়িত্ববান নাগরিক হতে পারে। এসবের জন্য আমি আমার জীবনটা তাদের জন্য উৎসর্গ করেছি।’

কিস পরিদর্শনের পর ভুটানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী লিওনচেন জিগমি ওয়াই থিনলে লিখেছেন, ‘এখানে শিক্ষার্থীদের সবকিছু বিনা মূল্যে। কিন্তু কোনো কিছুই বিনা মূল্যে নয়, শিক্ষার্থীদের সেই মূল্য দিতে প্রস্তুত থাকতে হবে।’

কী হতে পারে সেই মূল্য, জানতে চাইলে অচ্ছুত সামন্ত বলেন, ‘আমরা তাদের কাছে কোনো মূল্য প্রত্যাশা করি না। কিন্তু যে প্রতিষ্ঠানটি তাদের একজন ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলছে, সম্মানজনক জীবন দিচ্ছে তার প্রতি, সেই সমাজের শিক্ষার্থীদের কর্তব্য রয়েছে, দায় রয়েছে।’

ভারত ও বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারতের শিক্ষাব্যবস্থার ভালো-মন্দটা জায়গাভেদে নির্ভর করে। ভারত সরকার এখন ভোকেশনাল শিক্ষার বিষয়ে অনেক গুরুত্ব দিচ্ছে, অনেক কিছু করছে। যার কারণে এই শিক্ষার দৃশ্যমান প্রসার ঘটছে। আমি আশা করব, বাংলাদেশেও কর্মমুখী শিক্ষার প্রসার ঘটবে।’ তিনি বলেন, বাংলাদেশেও অনেক নামী বিশ্ববিদ্যালয় আছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সবচেয়ে পুরোনো ও বড়। এখানে বেসরকারি পর্যায়েও অনেকগুলো ভালো বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ধীরে ধীরে এগোচ্ছে। কারণ, এক্সিলেন্স এক দিনে অর্জিত হয় না। এ জন্য সময় লাগবে।

‘তবে যা-ই হোক না কেন, শিক্ষা হতে হবে মানবিক ও মানসম্মত। আমার বিবেচনায় শিক্ষাহীনতার চেয়ে অর্ধেক শিক্ষা ক্ষতিকর।’

ছেলেমেয়েদের অস্থিরতা, উগ্রপন্থায় যুক্ত হওয়া প্রসঙ্গে এই অধ্যাপক বলেন, শিক্ষায় নৈতিকতা থাকতে হবে অবশ্যই। তাতে তারা ইতিবাচক ও সৃষ্টিশীল হয়। শিক্ষিত খারাপ মানুষ খুব ক্ষতির কারণ হতে পারেন। নৈতিক শিক্ষার পাশাপাশি কর্মসংস্থান ও সম্মানজনক জীবনের নিশ্চয়তা থাকাটাও বড় বিষয়। এ বিষয়গুলো ঠিক থাকলে অন্তত শিক্ষার্থীর মধ্যে হতাশা থাকবে না। তারা বিপথে যাবে না।

খুব অল্প সময়ের মধ্যে কয়েকবারই বলেছেন, ‘যত কিছুই বলুন, পড়ার কোনো বিকল্প নেই। এ অভ্যাস গড়তে হবেই। অনেক কিছুর সমাধান আছে এখানেই।’

milan:
Right !!

anwar.swe:
Thanks for sharing this informative article

Farhadalam:
Thanks madam.

masudur:
This is a very useful post.

Navigation

[0] Message Index

[#] Next page

Go to full version