Famous > History

History of Muslim'S

<< < (11/12) > >>

Md. Zakaria Khan:
আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির মানে কী ?
একজন বিচক্ষণ মানুষ যাচ্ছিলেন একটি শহরের পাশ দিয়ে। তিনি স্রষ্টাকে লক্ষ্য করে বলে উঠলেন কিভাবে আবার শহরটি প্রাণ ফিরে পাবে। পবিত্র কুরআনের সূরা বাকারায় ২৫৯ আয়াতে বহু আগের ঘটনাটি আল্লাহ উল্লেখ করেছেন। সেটি ছিল একটি বিরান জনশূন্য উল্টে পড়ে থাকা শহর। সেখানে আবার জনবসতি গড়ে ওঠা ওই ব্যক্তির কাছে একটি অসম্ভব ব্যাপার মনে হয়েছিল। আল্লাহ তাকে তাৎক্ষণিক মৃত্যু দিলেন, এক শ’ বছর পর আবার জীবিত করলেন। তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, তুমি কতক্ষণ ঘুমিয়েছ? তিনি জানালেন এক দিন বা তার কিছু অংশ। মহান স্রষ্টা তাকে জানালেন, না, তুমি এভাবে এক শ’ বছর ঘুমিয়ে কাটিয়েছ। তাকে লক্ষ করতে বলা হলো, তুমি যে খাদ্য ও পানীয় নিয়ে এসেছিলে, তা পচেনি এমনকি স্বাদ সামান্যও বদলেনি।
বলা হলো, ‘তাকিয়ে দেখো, তোমার গাধাটির দিকে। সেটির আর কোনো অস্তিত্ব এখন অবশিষ্ট নেই, ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। তবে এখন আমরা এটিকে আবার কিভাবে পূর্ণরূপে ফিরিয়ে আনি সেটি দেখো।’ তিনি সামনেই দেখতে পেলেন, মাটির সাথে মিশে যাওয়া হাড়গোড় অস্তিত্ব পাওয়া শুরু করেছে। একটার সাথে আরেকটা হাড় জোড়া লাগছে। সেগুলোর ওপর পরানো হলো গোশতের পোশাক। তার ওপর মোড়ানো হলো চামড়া। তাতে লেগে গেল চুল পশম ও লোম। তার সামনে এক শ’ বছর আগের গাধাটি হুবহু আগের রূপে হাজির হয়ে গেল। এসব দেখে বিচক্ষণ ব্যক্তি মন্তব্য করেছিল, ‘ইন্নাল্লাহা আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির’। আয়াতের শেষে তার মন্তব্যটি সংযুক্ত রয়েছে।
তিনি আসলে কোনোভাবে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না, শহরটিতে আবার জনবসতি গড়ে উঠতে পারে। অথচ এ শহরটি আগে একবার শূন্য থেকে গড়ে উঠেছিল, যেখানে এর কোনো অস্তিত্ব ছিল না। এই পুরো মহাবিশ্ব এমনকি চিন্তা করা মানুষটিরও একসময় কোনো অস্তিত্ব ছিল না। আজ তার কাছেই অনেক কিছু অসম্ভব আর অবাস্তব মনে হচ্ছে। তাই তাকে দেখিয়ে দেয়া হলো সব কিছু সম্ভব। আমরা যদি খুঁটিয়ে লক্ষ করি তা হলে দেখতে পাবো, এই পথিকের কাছে থাকা খাদ্য ও পানীয়ের ওপর দিয়ে সময় প্রবাহিত হয়নি। তাই তার খাদ্য পচেনি, পানির রঙ ও গন্ধ পরিবর্তন হয়নি। অন্য দিকে গাধাটির ওপর দিয়ে এক শ’ বছর অতিবাহিত হয়েছে। সে কারণে সেটির অস্তিত্ব বিলীন হয়ে মাটির সাথে মিশে গেছে। আবার সেটিকে এক শহর পুনরুজ্জীবিত করার মতোই ফিরিয়ে আনা হয়েছে। গাধাটির বয়স ও শক্তিতেও কোনো হেরফের হয়নি। চোখের সামনে এটি পূর্ণ অস্তিত্ব ধারণ করার কারণে তিনি মন্তব্যটি করেছিলেন, ‘ইন্নাল্লাহা আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির’।
আরবি বাক্যাংশটির অর্থ হচ্ছে, নিশ্চয়ই আল্লাহ প্রত্যেক বিষয়ের ওপর ক্ষমতাবান। আরো সহজ করে বলা যায়, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ প্রতিটি ব্যাপারে তার ক্ষমতা প্রয়োগে সক্ষম।’

Md. Zakaria Khan:


মৃত্যু আসবেই। এটা এক অবধারিত বিষয়। কেউ তা থেকে পলায়ন করতে পারবে না। এমনকি কার মৃত্যু কখন হবে, কোথায় হবে এ কথাও কেউ জানে না। মৃত্যুর বিষয়টি শুধু আল্লাহই জানেন। তাইতো তিনি বলেন-
وَمَا تَدْرِي نَفْسٌ مَّاذَا تَكْسِبُ غَدًا ۖ وَمَا تَدْرِي نَفْسٌ بِأَيِّ أَرْضٍ تَمُوتُ ۚ إِنَّ اللَّـهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌ
কেউ জানে না আগামীকাল সে কী উপার্জন করবে এবং কেউ জানে না কোন স্থানে সে মৃত্যুবরণ করবে। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সর্ববিষয়ে সম্যক জ্ঞাত।' (সুরা লোকমান: আয়াত ৩৪)

Md. Zakaria Khan:
আবু হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলা সাত ব্যক্তিকে সেই দিনে তাঁর (আরশের) ছায়া দান করবেন যেদিন তাঁর ছায়া ব্যতীত আর কোন ছায়া থাকবে না; (তারা হল,) ন্যায়পরায়ণ বাদশাহ (রাষ্ট্রনেতা), সেই যুবক যার যৌবন আল্লাহ আযযা অজাল্লার ইবাদতে অতিবাহিত হয়, সেই ব্যক্তি যার অন্তর মসজিদসমূহের সাথে লটকে থাকে (মসজিদের প্রতি তার মন সদা আকৃষ্ট থাকে।) সেই দুই ব্যক্তি যারা আল্লাহর সন্তুষ্টিলাভের উদ্দেশ্যে বন্ধুত্ব ও ভালোবাসা স্থাপন করে; যারা এই ভালোবাসার উপর মিলিত হয় এবং এই ভালোবাসার উপরেই চিরবিচ্ছিন্ন (তাদের মৃত্যু) হয়। সেই ব্যক্তি যাকে কোন কুলকামিনী সুন্দরী (অবৈধ যৌন-মিলনের উদ্দেশ্যে) আহবান করে, কিন্তু সে বলে, ’আমি আল্লাহকে ভয় করি।’ সেই ব্যক্তি যে দান ক’রে গোপন করে; এমনকি তার ডান হাত যা প্রদান করে, তা তার বাম হাত পর্যন্তও জানতে পারে না। আর সেই ব্যক্তি যে নির্জনে আল্লাহকে স্মরণ করে; ফলে তার উভয় চোখে পানি বয়ে যায়।
(বুখারী ৬৬০, ১৪২৩, ৬৮০৬, মুসলিম ২৪২৭)

Md. Zakaria Khan:
মানুষের হতাশায় আল্লাহ যেভাবে সাহায্য করেন
@মানুষ বলে, আমি ব্যর্থ !
> আল্লাহ বলেন, 'অবশ্যই ঈমানদার সফল হয়' (সুরা মুমিনুন : আয়াত ১)
@ মানুষ বলে, আমার জীবনে অনেক কষ্ট !
> আল্লাহ বলেন, 'নিশ্চয় কষ্টের সঙ্গেই রয়েছে স্বস্তি।' (সুরা নাশরাহ : আয়াত ৬)
@মানুষ বলে, আমাকে কেউ সাহায্য করে না !
> আল্লাহ বলেন, 'মুমিনদের সাহায্য করা আমার দায়িত্ব' (সুরা রূম : আয়াত ৪৭)
@মানুষ বলে, আমি দেখতে খুবই কুৎসিত !
> আল্লাহ বলেন, 'আমি সৃষ্টি করেছি মানুষকে সুন্দরতর অবয়বে।' (সুরা ত্বীন : আয়াত ৪)
@মানুষ বলে, আমার সঙ্গে কেউ নেই !
> আল্লাহ বলেন, তোমরা ভয় করো না, আমি তোমাদের সঙ্গে আছি, আমি শুনি এবং দেখি।' (সুরা ত্বহা : আয়াত ৪৬)
@ মানুষ বলে, আমার গোনাহ অনেক বেশি !
> আল্লাহ বলেন, 'নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারীদের ভালোবাসেন।' (সুরা বাকারা : আয়াত ২২২)
@মানুষ বলে, আমার জীবনে আনন্দ নেই !
> আল্লাহ বলেন, আপনার পালনকর্তা শিগগিরই আপনাকে এতা দান করবেন, অতপর আপনি সন্তুষ্ট হবেন।' (সুরা দোহা : আয়াত ৫)
@মানুষ বলে, আমার কোনো পরিকল্পনাই সফল হচ্ছে না !
> আল্লাহ বলেন, আমিও কৌশল অবলম্বন করেন। মূলতঃ আল্লাহই হচ্ছেন সর্বোত্তম পরিকল্পনাকারী' (সুরা ইমরান : আয়াত ৫৪)
@মানুষ বলে, আমার কেউ নেই!
> আল্লাহ বলেন, 'যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে তার জন্যে তিনিই যথেষ্ট। আল্লাহ তার কাজ পূর্ণ করবেন।' (সুরা তালাক : আয়াত ৩)

Md. Zakaria Khan:
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক লোক নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর খেদমতে এল। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর স্ত্রীদের কাছে লোক পাঠালেন। তাঁরা জানালেন, আমাদের নিকট পানি ছাড়া কিছুই নেই। তখন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, কে আছ যে এই ব্যক্তিকে মেহমান হিসেবে নিয়ে নিজের সাথে খাওয়াতে পার? তখন এক আনসারী সাহাবী [আবূ ত্বলহা (রাঃ)] বললেন, আমি। এ বলে তিনি মেহমানকে নিয়ে গেলেন এবং স্ত্রীকে বললেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর মেহমানকে সম্মান কর। স্ত্রী বললেন, বাচ্চাদের খাবার ছাড়া আমাদের ঘরে অন্য কিছুই নেই। আনসারী বললেন, তুমি আহার প্রস্তুত কর এবং বাতি জ্বালাও এবং বাচ্চারা খাবার চাইলে তাদেরকে ঘুম পাড়িয়ে দাও। সে বাতি জ্বালাল, বাচ্চাদেরকে ঘুম পাড়াল এবং সামান্য খাবার যা তৈরী ছিল তা উপস্থিত করল। বাতি ঠিক করার বাহানা করে স্ত্রী উঠে গিয়ে বাতিটি নিভিয়ে দিলেন। তারপর তারা স্বামী-স্ত্রী দু’জনই অন্ধকারের মধ্যে আহার করার মত শব্দ করতে লাগলেন এবং মেহমানকে বুঝাতে লাগলেন যে, তারাও সঙ্গে খাচ্ছেন। তাঁরা উভয়েই সারা রাত অভুক্ত অবস্থায় কাটালেন। ভোরে যখন তিনি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর নিকট গেলেন, তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আল্লাহ্‌ তোমাদের গত রাতের কান্ড দেখে হেসে দিয়েছেন অথবা বলেছেন খুশী হয়েছেন এবং এ আয়াত নাযিল করেছেন। “তারা অভাবগ্রস্ত সত্ত্বেও নিজেদের উপর অন্যদেরকে অগ্রগণ্য করে থাকে। আর যাদেরকে অন্তরের কৃপণতা হতে মুক্ত রাখা হয়েছে, তারাই সফলতাপ্রাপ্ত।”❤️
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৩৭৯৮

Navigation

[0] Message Index

[#] Next page

[*] Previous page

Go to full version