যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে পিছিয়ে পড়ছে বাংলাদেশ!যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে গত বছর আমদানি হওয়া তৈরি পোশাকের ৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ জোগান দিয়েছিল বাংলাদেশ। চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে সেটি কমে ৬ দশমিক ৪১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। তবে প্রতিযোগী ভিয়েতনাম ও ভারতের বাজার হিস্যা বেড়েছে।অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের সামগ্রিক পোশাক আমদানি গত বছরের চেয়ে কিছুটা কমেছে। গত জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সাত মাসে বিভিন্ন দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্র ৪ হাজার ৪৯৭ কোটি ডলারের পোশাক আমদানি করে। এটি গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১ দশমিক ৯০ শতাংশ কম। ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের আওতাধীন অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেল (অটেক্সা) প্রকাশিত পরিসংখ্যান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানির হালনাগাদ এসব তথ্য জানা গেছে।চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সাত মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ৩০৪ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। গত বছর একই সময়ে রপ্তানি হয়েছিল ৩২৩ কোটি ডলারের পোশাক। সেই হিসাবে এবার রপ্তানি কমেছে ৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ।রানা প্লাজা ধসের পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ভালো করতে পারছে না বাংলাদেশ। গত বছর ৫৩০ কোটি ৫৬ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছিল। ২০১৫ সালে রপ্তানি হয়েছিল ৫৪০ ডলারের পোশাক। সেই হিসাবে গত বছর রপ্তানি কমেছিল ১ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
জানতে চাইলে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সহসভাপতি মাহমুদ হাসান খান গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি উত্থান-পতনের মধ্যে আছে সত্য। তবে বড় ধরনের পতন হবে না বলেই মনে হচ্ছে। আশা করছি, আগামী দু-তিন মাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে।’অবশ্য বিজিএমইএর সহসভাপতি মোহাম্মদ নাছির প্রথম আলোকে বলেন, ‘বর্তমানে দুটি কারণে আমরা যুক্তরাষ্ট্রে চ্যালেঞ্জের মধ্যে আছি। চট্টগ্রাম বন্দরের জটিলতার কারণে লিড টাইম বেড়ে গেছে। এ ছাড়া পোশাক খাত নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণার কারণে অনেক ক্রেতা বাংলাদেশ বিমুখ হচ্ছেন।’নেতিবাচক প্রচারণার বিষয়টি ব্যাখ্যা করে মোহাম্মদ নাছির বলেন, ‘কিছু শ্রমিক সংগঠন ও এনজিওর প্রতিনিধিরা বাংলাদেশে “শ্রমিক অধিকার নাই” বলে অপপ্রচার ছড়াচ্ছেন। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ব্র্যান্ড ও ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় আমাদের। এসব এড়াতে বেশি দাম দিয়ে হলেও অন্য দেশে ক্রয়াদেশ দিচ্ছেন দেশটির ক্রেতারা।’
অটেক্সার তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে শীর্ষ পোশাক রপ্তানিকারক দেশ চীন। গত জানুয়ারি-জুলাই সময়কালে দেশটিতে ১ হাজার ৪৩১ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে চীন। গত বছরের একই সময়ের চেয়ে এই রপ্তানি ৪ দশমিক ২৭ শতাংশ কম। এই বাজারে দ্বিতীয় শীর্ষ রপ্তানিকারক ভিয়েতনাম ৬৫২ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। তাদের প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ১৬ শতাংশ। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের মোট পোশাক আমদানির ১৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ ভিয়েতনাম থেকে গিয়েছিল। গেল সাত মাসে সেটি বেড়ে ১৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশ যথাক্রমে বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া ও ভারত। যুক্তরাষ্ট্রে গত জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত ভারত ২৩২ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করে। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে শূন্য দশমিক ২১ শতাংশ। গত বছর ভারতের বাজার হিস্যা ছিল ৪ দশমিক ৫১ শতাংশ। গত সাত মাসে সেটি বেড়ে ৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ হয়েছে।
Source:
http://www.prothom-alo.com/economy/article/1319981/%E0%A6%AF%E0%A7%81%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%B7%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%87-%E0%A6%AA%E0%A7%8B%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%95-%E0%A6%B0%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A7%87-%E0%A6%AA%E0%A6%BF%E0%A6%9B%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A7%87-%E0%A6%AA%E0%A7%9C%E0%A6%9B%E0%A7%87