শীতের ঠান্ডা জনিত অসুখ নিরাময়ে

Author Topic: শীতের ঠান্ডা জনিত অসুখ নিরাময়ে  (Read 845 times)

Offline Mousumi Rahaman

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 827
  • Only u can change ur life,No one can do it for u..
    • View Profile
শীতের আগমনী বার্তা পাওয়া যাচ্ছে শহুরে জীবনেও। এ ঋতু পরিবর্তন শুধু যে কুয়াশা মোড়ানো সকাল আনে তা তো নয়, সঙ্গে আনে স্বাস্থ্যগত পরিবর্তনও। শীতের আবহাওয়া শুষ্ক, ধুলাবালির মাত্রাটাও কিছুটা বেড়ে যায়। এ কারণে স্বাস্থ্যসমস্যা দেখা দেয়। শীতের শুরুতেই জ্বর, সর্দি ও কাশি যেন আঁকড়ে ধরে। তবে বেশি বাড়ে শ্বাসতন্ত্রের রোগ। এসব রোগের প্রধান কারণ হচ্ছে ভাইরাস।

সাধারণত ঠান্ডা ও ফ্লুর কারণে কাশি হয়। তবে অ্যালার্জি, অ্যাজমা, অ্যাসিড রিফ্লাক্স, শুষ্ক আবহাওয়া, ধূমপান, এমনকি কিছু কিছু ওষুধ সেবনের ফলেও এ সমস্যা হতে পারে। অনেক সময় একবার কাশি শুরু হলে পিছু ছাড়তেই চায় না। একটানা খুকখুক কাশি বিরক্তিকরও বটে!

এ বিষয়ে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. গোবিন্দ চন্দ্র রায় বলেন, এটা মূলত শ্বাসতন্ত্রের ওপরের অংশের রোগ। এই রোগ এক সপ্তাহের মধ্যে এমনিতেই ভালো হয়ে যায়। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে কাশি কয়েক সপ্তাহ থাকতে পারে।

সর্দি-কাশি বাক মনকোল্ড

শীতে সবচেয়ে বেশি যে রোগ হয় তা হলো সর্দি-কাশি, কমন কোল্ড বা ঠান্ডাজ্বর। সাধারণত ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং প্যারা ইনফ্লুয়েঞ্জার মাধ্যমে এ রোগ হয়। আক্রান্ত ব্যক্তির শ্বাস-প্রশ্বাস, লালা, কাশি বা হাঁচি থেকে নিঃসরিত ভাইরাসের মাধ্যমে সর্দি-কাশির সংক্রমণ হয়। এর ফলে রোগীর জ্বর, গলাব্যথা, ঢোঁক গিলতে অসুবিধা, নাক বন্ধ, নাক দিয়ে অনবরত সর্দি নিঃসৃত হওয়া, খুসখুসে কাশির সঙ্গে গলা, মাথা ও বুকে-পেটে ব্যথাও অনুভূত হয়। কোনো কোনো সময় খাবারে অরুচি, পাতলা পায়খানা হতে পারে। এ রোগে আক্রান্ত হলে বিশ্রাম, প্রচুর পানীয়, ফলের রস ও পানীয় গ্রহণ করতে হবে। খুব বেশি জ্বর, গলাব্যথা, কাশি থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ গ্রহণ করতে পারেন।

অ্যাজমা বা হাঁপানি

শীতকালে অ্যাজমা বা হাঁপানির প্রকোপ খানিকটা বেড়ে যায়। যেকোনো বয়সের নারী-পুরুষ এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। পরিবেশদূষণ, শিল্পবর্জ্য থেকে উৎপন্ন ধুলাবালি, খাবার, ওষুধ-অ্যাজমা বা হাঁপানির মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। হাঁপানি নিয়ন্ত্রণে রাখতে মাস্ক পরে চলাচল করতে হবে। যেসব খাবার, ওষুধ, ধুলাবালিতে পরিবেশগত অ্যালার্জেন আছে, সেগুলো থেকে মুক্ত থাকার চেষ্টা করতে হবে। শ্বাসকষ্ট বেশি হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

এডিনয়েড-টনসিলের প্রদাহ

শীতে গলাব্যথার অন্যতম প্রধান কারণ হলো এডিনয়েড, টনসিল বড় হওয়া বা প্রদাহ হওয়া। এর ফলে রোগীর গলাব্যথা, ঢোঁক গিলতে কষ্ট, জ্বর, নাক দিয়ে নিশ্বাস নেওয়া এবং ঘড়ঘড় শব্দ ইত্যাদি হতে পারে। এই রোগসমূহ অনেকের বারবার হয় এবং জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে। এ জন্য চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ গ্রহণ করতে হবে। গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে কুলকুচা করেও প্রতিরোধের চেষ্টা করা যেতে পারে।

এ ছাড়া শীতের সময় অনেকে আবার সাইনোসাইটিসের সমস্যায় ভোগেন। শীতের সময় অনেকে আবার ফুসফুসের সংক্রমণের সমস্যায় ভোগেন। সাধারণত শিশু ও বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে এগুলো বেশি দেখা যায়। শীতে এসব রোগের হাত থেকে নিজেকে নিরাপদে রাখতে বেশ কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে।

কাশি দূর করার কার্যকর উপায়

কুলকুচা: এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে আধা চা-চামচ লবণ মিশিয়ে কুলকুচা করতে হবে। এক সপ্তাহ যাবৎ প্রতিদিন তিন বেলা করে কুলকুচা করবেন। এতে কফ, কাশি, গলাব্যথা—সবই খুব দ্রুত কমে যাবে। এটি খুবই কার্যকর একটি পদ্ধতি।

মধু: এক কাপ লেবুমিশ্রিত চায়ের মধ্যে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে পান করতে পারেন। মধু কাশি কমাতে সাহায্য করে এবং গলাব্যথায় উপশম করে।

এ ছাড়া আদা চা, গরম পানি খাওয়া, গলায় ঠান্ডা না লাগানো নিয়মিত মেনে চললে কাশি দ্রুত ভালো হয়ে যায়।

এরপরও কাশি ভালো না হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

সর্দি-কাশিও হাঁপানি প্রতিরোধে করণীয়

১. ঠান্ডা খাবার ও পানীয় পরিহার করা

২. কুসুম কুসুম গরম পানি পান করা। হালকা গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করা উচিত।

৩. প্রয়োজনমতো গরম কাপড় পরা। তীব্র শীতের সময় কান-ঢাকা টুপি পরা এবং গলায় মাফলার ব্যবহার করা ভালো।

৪. ধুলাবালি ও ধূমপান এড়িয়ে চলা।

৫. ঘরের দরজা-জানালা সব সময় বন্ধ না রেখে মুক্ত ও নির্মল বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখা।

৬. হাঁপানি রোগীরা শীত শুরুর আগেই চিকিৎসকের পরামর্শমতো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।

৭. যাদের অনেক দিনের শ্বাসজনিত কষ্ট আছে, তাদের জন্য ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং নিউমোকক্কাস নিউমোনিয়ার টিকা নেওয়া উচিত।

৮. তাজা, পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ এবং পর্যাপ্ত পানি পান করা, যা দেহকে সতেজ রাখবে এবং রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করবে।

৯. হাত ধোয়ার অভ্যাস করা। বিশেষ করে চোখ বা নাক মোছার পরপর হাত ধোয়া।

১০. সাধারণভাবে রাস্তায় চলাচলের সময় মাস্ক পরা, আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে দূরে থাকা এবং তার ব্যবহৃত জিনিসপত্র ব্যবহার না করাই ভালো। তাজা ফলমূল খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।

যাদের হাঁপানি বা অনেক দিনের কাশির সমস্যা যেমন ব্রংকাইটিস আছে, ঠান্ডা আবহাওয়ায় তাদের কষ্টও বাড়ে। নিউমোনিয়াও এ সময় প্রচুর দেখা দেয়। তাই প্রত্যেকের প্রতিরোধমূলক জীবনযাপন করা উচিত।

লেখক: চিকিৎসক
Mousumi Rahaman
Senior Lecturer
Dept. Textile Engineering
Faculty of Engineering
Daffodil International University

Offline Raihana Zannat

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 392
  • Test
    • View Profile
Thank you for sharing this article.
Raihana Zannat
Senior Lecturer
Dept. of Software Engineering
Daffodil International University
Dhaka, Bangladesh

Offline safayet

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 168
  • Test
    • View Profile