The way to identify pure peer

Author Topic: The way to identify pure peer  (Read 952 times)

Offline rumman

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 1020
  • DIU is the best
    • View Profile
The way to identify pure peer
« on: February 02, 2018, 10:30:53 AM »
বর্তমান জামানায় ফেতনার ছড়াছড়ি। হাদিসে আছে, সকালবেলায় একজন মানুষ ঈমানদার ও পরহেজগার থাকবে, বিকেলবেলায় ফেতনায় পড়ে তার ঈমান নড়বড়ে হয়ে যাবে। আবার আরেকজন বান্দা, সে সকালবেলায় গোমরাহির ভেতর ছিল, আল্লাহর ওই বান্দার ভাগ্য ভালো, তাকে একজন ভালো লোকের সহবত কোনো অছিলায় মিলিয়ে দিয়েছেন, ওই ব্যক্তি বড় দরজার ঈমানওয়ালা হয়ে গেছে। চারদিকে শুধু ফিতনা। আরেক হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘এমন এক যুগ তোমাদের মধ্যে আসবে, সে যুগে হাতের ওপর জ্বলন্ত কয়লা রাখার যে কষ্ট তার চেয়ে বেশি কষ্ট হবে ঈমানের ওপর টিকে থাকা।’ এ অবস্থার মধ্যে বিশুদ্ধ দ্বিনের ওপর থাকা ও সঠিক পথনির্দেশক পাওয়া আল্লাহর অনেক বড় নেয়ামত। কামেল পীর হতে হলে খাঁটি ঈমানদার হতে হবে, পাপমুক্ত জীবন যাপন করতে হবে। সুন্নত তরিকা মোতাবেক চলতে হবে, নবীওয়ালা জিন্দেগি ও নবীওয়ালা আমল করতে হবে। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘জেনে রেখো, আল্লাহর ওলিদের কোনো ভয় নেই এবং তারা দুঃখিতও হবে না। (তারাই আল্লাহর ওলি) যারা ঈমান আনে ও তাকওয়া (পরহেজগারি) অবলম্বন করে।’ (সুরা : ইউনুস, আয়াত : ৬২-৬৩)

‘কছদুস সাবীল’ নামক কিতাবে হাকিমূল উম্মত হজরত আশরাফ আলী থানভি (রহ.) খাঁটি পীর চেনার ১০টি আলামত লিখেছেন।

১. সুন্নতি লেবাস : মাথা থেকে পা পর্যন্ত লেবাস, পোশাক, ওঠাবসা পুরো সুন্নত মোতাবেক হওয়া কামেল পীরের জন্য জরুরি।

২. কোরআন-হাদিসের পর্যাপ্ত জ্ঞান : শুধু লেবাস-পোশাক কাটছাঁট হলে চলবে না, ওই পীরের মধ্যে সাহেবে এলেম বা কোরআন-হাদিসের পর্যাপ্ত এলেম থাকতে হবে। এমন ব্যক্তির যদি পোশাক-আশাক ভালোও হয় আর পর্যাপ্ত এলেম না থাকে, তাহলে ওই ব্যক্তি কামেল পীর হওয়ার উপযুক্ত নন। ইঞ্জিন নিজেই যদি দুর্বল হয়, তাহলে এতগুলো বগি নিয়ে রেলগাড়ি কিভাবে এগোবে?

৩. আমলকারী : শুধু পর্যাপ্ত এলেম থাকলে হবে না, শুধু সুন্নত থাকলে হবে না; বরং ওই পীরের মধ্যে পর্যাপ্ত আমলও থাকতে হবে। লোকদের অনেক ওয়াজ-নসিহত করেন, কিন্তু তাঁর নিজের মধ্যে আমল নেই। নিজে তাহাজ্জুদ পড়েন না, কিন্তু মুরিদদের তাহাজ্জুদ পড়ার জন্য খুব বলেন, তাহলে ওই ওয়াজের কোনো তাছির হবে না।

৪. এখলাস থাকা : তাঁর মধ্যে এখলাস থাকতে হবে। লোক দেখানোর জন্য তিনি ইবাদত করেন না, বরং তিনি আল্লাহর মুহব্বতে এখলাসের সঙ্গে আমল করেন। আমল করেন কিন্তু এখলাস নেই, মুরিদদের দেখানোর জন্য যে শায়খ খুব নামাজ পড়েন, সে ব্যক্তি কামেল পীর হতে পারেন না। তাঁর ভেতরে এখলাস থাকতে হবে।

৫. দুনিয়াবিমুখতা : তাঁর মধ্যে দুনিয়াবি লোভ থাকবে না। তিনি লোভী হবেন না, পরেরটা পেতে চেষ্টা করবেন না। বর্তমান জামানায় ভণ্ড পীর তাদের মুরিদদের কাছে বহু কিছু প্রত্যাশা করে। হুজুরের সঙ্গে মোসাফা করতে গেলে কিছু খলিফা মুরিদদের বলে দেন যে হুজুরের সঙ্গে মোসাফা করতে হাতে হাদিয়া রাখবেন। সাহাবিরা তো মহানবী (সা.)-এর কাছে গিয়ে হাত মেলাতেন, হুজুর কি বলতেন যে মোসাফা করার জন্য হাতে হাদিয়া নিয়ে যেতে? অতএব, এই চাওয়া-পাওয়ার মোয়ামেলাত এটা কামেল পীরের আলামত না।

৬. আখলাক : তাঁর মধ্যে এমন আখলাক থাকবে, যে আখলাক দ্বারা দ্বিনের ব্যাপারে তাঁর মধ্যে শিথিলতা থাকবে না। হক কথা বলতে কাউকে ভয় করবেন না। তিনি ভাববেন না যে এই লোক আমার মুরিদ, বড় লোক মানুষ। সুদ-ঘুষ খায়; কিন্তু আমাকে এত হাদিয়া দেয়, তাকে কিভাবে বলব দ্বিনের ব্যাপারে। একজন হক্কানি পীর প্রত্যেককে এসলাহ করবেন, দ্বিনের ব্যাপারে প্রত্যেককে শক্ত কথা বলবেন, কারো মুখের দিকে চেয়ে কথা বলবেন না।

৭. নামাজে মনোযোগী : নামাজ ও জামাতের পাবন্দি করবেন। জামাতের মধ্যে তিনি অলসতা করবেন না। তিনি নামাজের ব্যাপারে শক্ত থাকবেন। আল্লাহর রাসুল (সা.) ইন্তেকালের আগে অসুস্থ অবস্থায় চারজন ব্যক্তির কাঁধে ভর করে মসজিদ-ই-নববীর জামাতে হাজির হয়েছেন। অনেক পীর সাহেব বিনা ওজরে পর্দার আড়ালে নামাজ পড়েন, এটা ঠিক না। আজকাল ভণ্ড পীরের কাছে নামাজের কোনো গুরুত্বই নেই।

৮. চোখের হেফাজত : সে ব্যক্তি চলাফেরায়, ওঠাবসায় তাঁর চোখের হেফাজত করবেন। আজকাল অনেক পীর মুরিদের বউদের সঙ্গে দেখা দেন। বলেন, আমার ছেলের বউ, কত বড় ভণ্ডামি! মুরিদরা পীরের রুহানি সন্তান। আল্লাহ রুহানি সন্তানদের জন্যও পর্দা ফরজ করেছেন। রাসুল (সা.) তাঁর উম্মতের নারীদের বায়াত করেছেন পর্দার আড়ালে আর পুরুষদের বায়াত করেছেন সামনে রেখে, যা সুরা ছফে উল্লেখ আছে।

৯. পর্দা করা : হাকিমুল উম্মত আশরাফ আলী থানভি (রহ.) বলেছেন, ‘তুমি তোমার পীরের মধ্যে দেখো যে, সে পর্দা মেনে চলে কি না? তুমি যাচাই করো।’

১০. কোরআন তিলাওয়াত : হাকিমুল উম্মত বলেন, দেখো সে কোরআন শরিফ তিলাওয়াতে উৎসাহ দেয় কি না? কী লাভ মুরিদ হয়ে, যদি অন্তত নামাজ পড়ার মতো পাঁচটি সুরা, তাশাহুদ, দরুদ শরিফ, দুয়ায়ে মাসুরা ঠিক না করেন? কামেল পীরের আলামত যে তিনি নিজে কোরআন তিলাওয়াত করেন এবং কোরআন তিলাওয়াতের ব্যাপারে তাগিদ দেন। বর্তমানে অনেক পীর কোরআন তিলাওয়াতের কোনো তাগিদই দেন না। সুতরাং ভাইয়েরা, আমাদের বুঝতে হবে, বর্তমানে ফিতনার জামানায় হক চাওয়া, হকের ওপর থাকা একটা কঠিন জিনিস। সুতরাং কেউ আধ্যাত্মিক গুরু বা পীর ধরতে চাইলে হজরত আশরাফ আলী থানভি কর্তৃক রচিত ‘কছদুস সাবীল’ নামক কিতাবে উল্লিখিত গুণাবলি তালাশ করে নেবেন। আল্লাহ আমাদের ভণ্ড পীরদের থেকে রক্ষা করে হক্কানি পীরদের সহবতে থাকার তৌফিক দান করুন। আমিন।

লেখক : প্রিন্সিপাল ও শায়খুল হাদিস, মোস্তফাগঞ্জ মাদরাসা ও খতিব, তাঁতীবাজার মাদরাসা মসজিদ, ঢাকা।
« Last Edit: March 13, 2018, 12:47:47 PM by rumman »
Md. Abdur Rumman Khan
Senior Assistant Registrar