DIU Activities > Permanent Campus of DIU
Living cost, minimum wage and human rights.
(1/1)
Reza.:
আমাদের এলাকার পুরোটাই এপার্টমেন্ট বিল্ডিঙয়ে ভর্তি। লক্ষ্য করে দেখেছি প্রায় প্রতি বিল্ডিঙয়ে ৩ জন করে সিকিউরিটি আছে। এরা পালাক্রমে সারাদিন এই বিল্ডিং গুলোর গেট পাহারা দেয়। এছাড়াও অনেক বিল্ডিঙয়েই বাজার সদাইয়ের কাজও এদের দিয়ে করানো হয়। প্রায় সব ক্ষেত্রেই গেটের পাশের ছোট একটি রুম এদের আবাস্থল। যতজনই হোক একটি রুমই বরাদ্দ থাকতে দেখেছি। ভোরবেলা বেলা এরা ফ্লাস্কে ফেরি করা চা পান করে। এদের ফ্যামেলি গ্রামে থাকে আর এরা শহরের বিল্ডিঙয়ের ঘুপচি ঘরে কাটায়।
এছাড়াও অনেক কমার্শিয়াল বিল্ডিঙয়ের পাহারাদার হিসেবে সিকিউরিটি থাকে। সারারাত এদের বিল্ডিঙয়ের গেটের বাইরে পাহারা দিতে দেখা যায়। অনেকদিন ভোরে এদের অনেককেই গেটে মেঝেতে ঘুমিয়ে থাকতে দেখেছি। এছাড়া আছে ২৪ ঘন্টা খোলা এ টি এম বুথের সিকিউরিটি।
আমাদের দেশের বিভিন্ন শিল্পের সার্থকতার প্রশ্ন আসলেই প্রথমেই আসে আমাদের শ্রমিকদের কম মজুরী দিতে হয় এই প্রসঙ্গ। কিন্তু তার মানে এই না যে আমাদের দেশের লিভিং কষ্ট কম।
ভাবতেছিলাম মিনিমান ওয়েজ হিউম্যান রাইটস আর লিভিং কষ্ট নিয়ে। আমাদের চারিদিকে দেখলে আমাদের জন্য এদের কোন সাম্য অবস্থা নাই এটাই বোঝা যায়। এমনকি আমাদের নিজেদের ক্ষেত্রেও আমরা অন্যায্য ব্যাবহার পাই। আপনি বেতন দিলেই কাউকে অমানবিক পরিবেশে ও অসুবিধায় কাজ করাতে পারেন না। আমরা সারাদিন আমাদের বন্ধু বান্ধব ও আত্মীয় স্বজনদের সাথে কথা বলি। বেড়াতেও যাই তাদের বাসায়। কিন্তু নিরাপত্তা প্রহরীদের একমাত্র স্থল হল গেটের পাশে বা ব্যালকনিতে। নিজের পরিবারের সহায় ও নিরাপত্তা বাদ দিয়ে এরা অন্যের পরিবার ও সহায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে যায় এরা। এদের নাই কোন স্বাভাবিক সামাজিক পরিবেশ ও আবাসস্থল। আনব্যালেন্সড একটি অবস্থায় এদের বসবাস।
সিকিউরিটি ড্রাইভার ও কাজের লোক থাকা অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের আভিজাত্য প্রকাশ করে। কিন্তু আমরাও আমাদের এ সি গাড়ি এ সি এপার্টমেন্টে বসে টেনশন করি আর ঘামি। আমাদের ব্যাংক ব্যালেন্স বেড়ে চলে আর আমরা অপেক্ষা করি সুদিনের। কিন্তু এক সময় আমাদেরও পাড়ি জমাতে হয় ভীন দেশে।
কতটা ভাল আছি আমরা?
কারো হয়ত মিনিমান ওয়েজ কি তা নিয়ে মাথা ঘামাতে হয় না। লিভিং কষ্ট ফুলফিল করেও অনেক বেচে যায়। তার পরেও তারা পাড়ি জমায়। শীতের দেশে হু হু করে কাঁপে। মিস করে আত্মীয় স্বজন ও কাছের বন্ধুদের। ঘরে বন্দি থেকে জানালার বাইরে বরফ পড়া দেখে আর স্বপ্ন দেখে সুজলা সুফলা একটি উষ্ণ আবহাওয়ার দেশের। সে হয়ত সার্থক ভাবে তার জীবন পার করে দিয়েছে কিন্তু তার ছেলেমেয়ে যাতে ন্যায্য ব্যাবহার ও শিক্ষা পায় সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে - তার জন্যই তাদের দেশ ত্যাগ করা।
এখন বেশীর ভাগ মানুষই সরকারী চাকুরীর দিকে ঝুকেছে। কেননা নতুন পে স্কেল অনেক উন্নত করা হয়েছে। আগেও কিন্তু মানুষ সরকারি চাকুরী করত। হিসেব করে চলতে হলেও অনেক সংখ্যক মানুষেরই আগ্রহ থাকতো সরকারি চাকুরীর প্রতি। কেননা তারা আগেই অনুধাবণ করতে পারেন যে কেবলমাত্র বেতনই চাকুরীর একমাত্র শর্ত নয়।
একটি গাছের চারা পরিচর্যা না পেলেও প্রাকৃতিক নিয়মেই তার বৃদ্ধি ঘটে যদি না গরু ছাগল খেয়ে ফেলে। ঠিক সেই রকম ভাবে একটি দেশের ধীরে হলেও ক্রমাগত উন্নতি হয়। যদি সেখানে কেবল মাত্র বিবেক জাগ্রত থাকে। সাধারণ ভাবে কোন পণ্যের আমদানী বাড়লে তার মূল্য কমে। একই ভাবে মানুষকে বিচার করলে হবে না। তার আছে লিভিং কষ্ট, হিউমান রাইটস আর মিনিমান ওয়েজ নিয়ে মাথা ব্যাথা। মানুষ ও পণ্যকে যতদিন আমরা একই ভাবে মূল্যায়ন করবো ততদিন আমাদের দুর্ভোগও যাবে না।
(আমার ফেসবুক পোস্ট থেকে নেওয়া।)
Navigation
[0] Message Index
Go to full version