“ কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম এমন এক ব্যক্তির ব্যাপারে ফয়সালা হবে যে শহীদ হয়েছিল। তাকে আনা হবে এবং তাকে যেসব সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয়েছিল তাও তার সামনে পেশ করা হবে। সে তা চিনতে পারবে। আল্লাহ্ তা'আলা তাকে জিজ্ঞেস করবেন, আমি যে সমস্ত নিয়ামত তোমাকে দিয়েছিলাম, তার বিনিময়ে তুমি কি কাজ করেছ? সে বলবে, আমি তোমার পথে লড়াই করে শহীদ হয়েছি। তিনি বলবেনঃ তুমি মিথ্যা বলেছ। বরং তুমি এজন্য লড়াই করেছ যে, লোকেরা তোমাকে বীর-বাহাদুর বলবে! আর তা বলাও হয়েছে। অতঃপর তার সমন্ধে নির্দেশ দেয়া হবে এবং তাকে উপুড় করে টেনে নিয়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। অতঃপর আরেক ব্যক্তিকে নিয়ে আসা হবে, সে ইলম অর্জন করেছে, তা লোকদের শিক্ষা দিয়েছে এবং কুরআন পাঠ করেছে। তাকে উপস্থিত করা হবে এবং তাকে দেয়া সুযোগ-সুবিধাগুলোও তার সামনে তুলে ধরা হবে। সে তা দেখে চিনতে পারবে। তাকে জিজ্ঞেস করা হবে, তুমি তোমার নিয়ামতের কি সদ্ব্যবহার করেছ? সে বলবে, আমি 'ইলম' (বিদ্যা) অর্জন করেছি, লোকদেরকে তা শিক্ষা দিয়েছি এবং তোমার সন্তুষ্টির জন্যে কুরআন পাঠ করেছি। আল্লাহ্ বলবেন, তুমি মিথ্যা কথা বলছ। বরং তুমি এই উদ্দেশ্যেই বিদ্যা অর্জন করেছিলে যে, লোকেরা তোমাকে আলেম বা বিদ্বান বলবে, এবং কুরআন এজন্যে পাঠ করেছিলে যে, তোমাকে 'কারী' বলা হবে। আর তা বলাও হয়েছে। অতঃপর তার সমন্ধে নির্দেশ দেয়া হবে এবং তাকে মুখের উপর উপুড় করে টেনে নিয়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। অতঃপর আরেক ব্যক্তিকে আনা হবে, তাকে অজস্র ধন-দৌলত দান করেছেন এবং নানা প্রকারের ধন-সম্পদ দিয়েছেন। তাকে দেয়া সুযোগ-সুবিধাগুলো তার সামনে তুলে ধরা হবে। সে তা দেখে চিনতে পারবে। আল্লাহ্ জিজ্ঞেস করবেন, তোমার এ সম্পদ দ্বারা তুমি কি কাজ করেছ? সে বলবে, যেখানে ব্যয় করলে তুমি সন্তুষ্ট হবে এমন কোন খাত আমি বাদ দেইনি বরং সেখানেই খরচ করেছি তোমার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে। মহান আল্লাহ্ বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছ। বরং তুমি এ জন্যেই দান করেছ যে, লোকেরা তোমাকে দাতা বলবে। আর তা বলাও হয়েছে। অতঃপর নির্দেশ দেয়া হবে এবং তাকে উপুড় করে টেনে নিয়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।“
[সহীহ মুসলিম, ৬ষ্ঠ খণ্ড, চৌত্রিশতম অধ্যায়ঃ কিতাবুল ইমারাহ, ৪২ অনুচ্ছেদ, হাদীস নং-৪৭৭১]
আল্লাহ্ আমাদের সবাইকে এমন লোক দেখানো কাজ করা থেকে সর্বদা বিরত থাকার তাউফিক দিন। আমীন।
