Faculty of Humanities and Social Science > Humanities & Social Science
শ্রমিক বঞ্চনার অবসান হোক, মহান মে দিবস
(1/1)
Tumpa Rani Shaha:
১৮৮৬ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের শ্রমিকেরা যে আট ঘণ্টা কর্মদিবসের দাবিতে আন্দোলন করে জীবন দিয়েছিলেন, সেই আত্মদানের পথ ধরেই সারা বিশ্বে মহান মে দিবস পালিত হচ্ছে। মে দিবস শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠার দিন। এই দিবসটিতে তাঁরা এই বার্তাই বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দেন যে মানবসভ্যতা বিনির্মাণে শ্রমিকদেরও রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের শ্রমিকেরাও উৎসাহ–উদ্দীপনার সঙ্গে মে দিবস পালন করবেন। রাজনৈতিক দল ও শ্রমিক সংগঠনগুলো নানা কর্মসূচি নেবে। সেটি হলো আনুষ্ঠানিকতা।
কিন্তু এই আনুষ্ঠানিকতা ছাপিয়ে যে প্রশ্নটি সামনে এসেছে তা হলো বাংলাদেশের শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে কি না, তাঁদের জীবন ও জীবিকার নিরাপত্তা আছে কি না। বাংলাদেশে শ্রমিকদের একটি ক্ষুদ্র অংশ সরকারি কারখানায় কাজ করেন। বেশির ভাগের কর্মসংস্থান হলো বেসরকারি খাতে। সরকারি প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিকদের বেতন-ভাতা ও সুযোগ-সুবিধার মধ্যে রয়েছে বিরাট ফারাক। বেসরকারি খাতের কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান শ্রম আইন মানলেও বেশির ভাগ উপেক্ষা করে। অনানুষ্ঠানিক খাতে যেসব শ্রমিক কাজ করেন, তাঁদের ন্যূনতম মজুরি বা কর্মঘণ্টারও বালাই নেই।
২০১৮ সালে যখন মে দিবস পালিত হচ্ছে, তখন বাংলাদেশের শ্রমিকেরা এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে কম মজুরি পান। এটি তৈরি পোশাক খাতের হিসাব। অন্যান্য খাতের শ্রমিকদের অবস্থা আরও শোচনীয়। আশার কথা, তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণের জন্য নতুন মজুরি বোর্ড গঠিত হয়েছে। শ্রমিকদের পক্ষ থেকে যে ১৬ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরি দাবি করা হয়েছে, সেটি যৌক্তিক বলেই আমরা মনে করি। এর চেয়ে কম মজুরিতে একটি পরিবারের মাসের ব্যয় নির্বাহ করা কঠিন। শিল্পমালিকদের মনে রাখতে হবে, শ্রমিকের কাছ থেকে বেশি কাজ আদায় করতে হলে ভালো মজুরি দিতে হবে। তৈরি পোশাক খাতের মতো অন্যান্য শিল্পের শ্রমিকদেরও ন্যূনতম মজুরি ও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
মে দিবসের পথ ধরেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শ্রমিকদের অধিকার, বিশেষ করে মজুরি, কাজের পরিবেশ, সুযোগ-সুবিধা এসব ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। তবে জাহাজভাঙা শিল্প, ইমারত নির্মাণশিল্পসহ বাংলাদেশের শ্রমবাজারে তার প্রতিফলন দেখা যায় না। অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান শ্রমিকদের বাড়তি সময় কাজ করিয়ে নিলেও ন্যায্য মজুরি দেয় না। এটি আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এ ব্যাপারে সরকারের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। তৈরি পোশাক খাতে শ্রমিকদের আশি ভাগই নারী। কিন্তু তাঁদের মধ্যে একধরনের নিরাপত্তাহীনতা কাজ করছে। বিশেষ করে সাম্প্রতিক কালে পরিবহনে নারী নিগ্রহের ঘটনা বেড়েছে, যা আমাদের উদ্বিগ্ন না করে পারে না। নারী শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিষয়ে সরকার ও মালিকপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
মে দিবস পালন তখনই সার্থক হবে, যখন দেশের শ্রমজীবী মানুষ ন্যায্য মজুরি ও নিরাপদ কর্মস্থলের নিশ্চয়তা পাবেন। মালিকদের উপলব্ধি করতে হবে, শ্রমিকদের ঠকিয়ে শিল্পের মুনাফা আদায় বা অর্থনীতির বিকাশ নিশ্চিত করা যাবে না। দেশীয় ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে শ্রমিকদের ওপর যে শোষণ ও বঞ্চনা চলছে, তার অবসান হোক।
Ref: http://www.prothomalo.com
Abdus Sattar:
Thank you for sharing
tasnim.eee:
Excellent writing.
Navigation
[0] Message Index
Go to full version