ফসলের আগাছা দূর করতে রোবট

Author Topic: ফসলের আগাছা দূর করতে রোবট  (Read 1297 times)

Offline Mrs.Anjuara Khanom

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 478
  • Test
    • View Profile
 ক্ষেতে আগাছা নিধনের কাজ করছে রোবট
ফসলের আগাছা সনাক্ত করা ও কিটনাশক দিয়ে সেই আগাছা ধ্বংস করতে সক্ষম এমন একটি রোবট আবিষ্কার করেছেন সুইজারল্যান্ডের বিজ্ঞানীরা। সুইজারল্যান্ডের একটি সুগার বিটের ক্ষেতে এই রোবট কাজ করতে দেখা গেছে। সৌর শক্তি চালিত এ রোবটটি দেখতে একটি টেবিলের মতো। চার চাকাওয়ালা এ রোবটে আছে ক্যামেরা। ক্যামেরার সাহায্যে রোবটটি আগাছা খুঁজে বের করে। তারপর সেটিকে নিজের ভেতর থাকা এক ধরনের নীল তরল দিয়ে ধ্বংস করে ফেলে।
এখনও পর্যন্ত আবিষ্কারটি পরীক্ষামূলক পর্যায়ে থাকলেও সুইস এই রোবটটিকে আগাছা প্রতিরোধে একটি নতুন ব্যবস্থা হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর ফলে ফসলে বেহিসেবী আগাছানাশক রাসায়নিক প্রয়োগের পরিমাণও কমবে। সুইজারল্যান্ডের আগাছানাশক রোবট প্রকল্পের ডেভেলপার ইকো-রোবোটিক্স জানায়, তারা বিশ্বাস করে এ যন্ত্রটি কৃষকদের আগাছানাশক প্রয়োগের হার ২০ গুণ কমিয়ে দেবে। তারা আরো জানায়, তারা বেশ কিছু বিনিয়োগকারীর সাথে চুক্তি সই করার চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে এবং ২০১৯ সালের শুরুর দিকে তাদের এ রোবট বাজারে যাবে।
গত বছর ব্লু রিভার নামের সিলিকন ভ্যালি স্টার্টআপ কোম্পানি গত বছর তিন কোটি ৫০ লাখ ডলার দিয়ে মার্কিন ট্রাক্টর কোম্পানি ডিরে অ্যান্ড কোং কিনে নেয়। তারা একটি যন্ত্রকে উন্নত করে তাতে ক্যামেরা সংযোজন করে। এ ক্যামেরার সাহায্যে আগাছা চিহ্নিত করা হয় এবং ঠিক সেখানেই কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়। ‘দেখা এবং স্প্রে করা’ এই পদ্ধতির যন্ত্রটি গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের তুলাক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয়। এর ফলে সেখানে কীটনাশকের প্রয়োগ ৯০ শতাংশ হ্রাস পায়।
জার্মানি, ডেনমার্কসহ বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন কোম্পানি এ ধরনের যন্ত্র আবিষ্কারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কোম্পানিগুলো বিশ্বাস করে, ভবিষ্যতে ব্যবসার ক্ষেত্রে আগাছা বাছাইয়ে এ ধরনের স্প্রে পদ্ধতিই হবে মুনাফা অর্জনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। রোবোর ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা অঞ্চলের সিইও রিচার্ড লাইটবন্ড বলেন, অনেক প্রযুক্তিই এখন সহজলভ্য। কিন্তু এখন গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে এগুলো সব একত্র করে কৃষকের কাছে তা ন্যায্য দামে পৌঁছানো। যদি কীটনাশক কমানো যায় তাহলে উৎপাদনের ক্ষেত্রে এটি ব্যবহারে কৃষক বাধ্য হবে। পরিবেশবান্ধব এই যন্ত্রটি কৃষকদের কাছে খুবই জনপ্রিয় হবে।
এ যন্ত্রটি এমন সময়েই বাজারে আসছে যখন আগাছা ও কীটপতঙ্গ দমনে স্প্রের বিষয়টি পরিবেশবাদী ও পরিবেশ নিয়ন্ত্রকদের সমালোচনার মুখে পড়েছে। তাদের সমালোচনার মুখে এসব কীটনাশক ব্যবহার অনেকটা কমে এসেছে। সব মিলিয়ে ধারণা করা হচ্ছে এই যন্ত্রটি উন্নত দেশগুলোর কৃষিক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন আনবে। এমনকি আগাছা ও কীটনাশক ও জিএম শস্যের ব্যবসাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেবে রোবট টাইপের এ যন্ত্রটি।
তবে বিনিয়োগকারীরা বলছে, নতুন এই রোবটের কারণে এক লাখ কোটি ডলারের কীটনাশক ও বীজ শিল্পের ব্যবসায় ব্যাহত হবে। বিশ্বব্যাপী তারা যে কীটনাশক ও জিনগত রূপান্তরিত উচ্চফলনশীল জাতের খাদ্যশস্য (জিএম) আবাদের জন্য তারা সরবরাহ করত, এ রোবটের ফলে তার প্রয়োজনীয়তা কমে আসবে। বায়ের, ডাউডুপন্ট, বিএএসএফ ও সিঞ্জেন্টার মতো কোম্পানিগুলো এ ব্যবসায় নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু নতুন এই ডিজিটাল কৃষি প্রযুক্তির কারণে তাদের এই ব্যবসায় এখন ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
বাজার গবেষক ফিলিপস ম্যাকডুগাল বলেন, এসব কোম্পানি কীটনাশক বিক্রি করে ২৬০ কোটি ডলারের, যা বাজারের ৪৬ শতাংশ। একই সময়ে তারা বাজারের ৯০ শতাংশ জিএম খাদ্যশস্য বিক্রি করত। বিনিয়োগকারী কেড্রিক লিকেম্প বলেন, নতুন এ পরিস্থিতিতে এখন যেসব মুনাফা কৃষি-রাসায়নিক কোম্পানিগুলোর হাতে আসছে তা স্থানান্তরিত হবে। কিছু যাবে কৃষকদের হাতে আর কিছু যাবে যন্ত্রপাতি প্রস্তুতকারকদের কাছে।

সূত্র:http://www.dailynayadiganta.com/invention/11430
________________________________________
Mrs, Anjuara Khanom
Library Assistant Officer,
Daffodil International University
DSC Campus
02224441833/34