বদহজম হলে যা করবেন!
বদহজম একটি বিরক্তিকর সমস্যা। পরিপাকতন্ত্রে বড় কোনো সমস্যা নেই, তবু সহজে কিছু হজম হয় না—এমন অভিযোগ অনেকে করেন। কিছু খেলেই তাঁদের পেট কামড়ায়, মল ত্যাগ করলে সেই অস্বস্তি কমে। কেউ খুব কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন, কারও আবার পাতলা পায়খানা হয় বেশি। এ ধরনের সমস্যার নাম ইরিটেবল বাউয়েল সিনড্রোম বা আইবিএস। এর সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। তাই খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপনের ধরনে কিছু পরিবর্তন আনতে হবে।
সমস্যা যাঁদের কোষ্ঠকাঠিন্য: ময়দার রুটি বা পাউরুটি, সরু বা আতপ চালের ভাত, পোলাও, সাদা আটার রুটি ইত্যাদি খাবার কোষ্ঠকাঠিন্য রোগীর না খাওয়াই ভালো। চিপস, কুকিজ বা বেকারির বিস্কুট, কফি ও কার্বনযুক্ত পানীয়ও তাঁদের জন্য খারাপ। মাংসের তৈরি খাবারও তাঁদের সমস্যা বাড়াতে পারে। এমন রোগীদের জন্য পূর্ণ দানাদার শস্যের তৈরি খাবার উপকারী। যেমন: লাল চালের ভাত, লাল আটার তৈরি রুটি। ওটমিল, বরবটি, মটরশুঁটি, তাজা ফলমূল ও শাকসবজি তাঁদের জন্য ভালো। শুষ্ক ফল যেমন কিশমিশ খেতে পারেন। প্রচুর পানি পান করতে হবে। দৈনিক প্রচুর পরিমাণে আঁশযুক্ত খাবারও খেতে হবে।
বদহজমের রোগীদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকা: এসব রোগী দুই ধরনের সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে আসেন। এক ধরনের রোগী আসেন ডায়রিয়াজনিত সমস্যা এবং অন্য ধরনের রোগী আসেন কোষ্ঠকাঠিন্যজনিত সমস্যা নিয়ে। যেসব রোগী ডায়রিয়াজনিত সমস্যা নিয়ে আসেন তাঁরা প্রায়ই ঘন ঘন টয়লেটে যাওয়া, পরিষ্কারভাবে পায়খানা না হওয়া, আম যাওয়া ইত্যাদি উপসর্গের কথা বলেন। আর যাঁরা কোষ্ঠকাঠিন্য, পায়খানার রাস্তায় ব্যথা ও পেটে ব্যথা এসব সমস্যায় ভোগেন। এ রকম অনেক রোগী অনেক সময় মলদ্বারের বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগে থাকেন। তবে বদহজমের ধরন বুঝে খাবার গ্রহণ করলে সহজেই এই সমস্যা থেকে ভালো থাকা যায়।
ডায়রিয়া যাঁদের সমস্যা: কারও আবার খাবারে একটু এদিক-ওদিক হলেই পাতলা পায়খানা হয়। তাঁরা এড়িয়ে চলবেন বেশি আঁশযুক্ত খাবার যেমন খোসাসহ ফল বা সবজি। চকলেট, ভাজা ও তেলযুক্ত খাবার, অনেকের জন্য দুধ ও দুধের তৈরি খাবারও বদহজমের কারণ হতে পারে। একসঙ্গে প্রচুর না খেয়ে একটু একটু করে একেক সময় খান। খুব ঠান্ডা ও খুব গরম খাবার (যেমন: গরম স্যুপ ও ঠান্ডা পানীয়) একই সঙ্গে গ্রহণ করবেন না। মাঝারি মাত্রার আঁশযুক্ত খাবার খান। কাঁচা সবজি না খাওয়াই ভালো। বিশেষ করে শাক, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ব্রকোলি, পেঁয়াজজাতীয় সবজি পেটে গ্যাস বাড়াতে পারে।