বর্তমানে বিনা কারণে রাত জেগে থাকা (staying up all night) অনেকের কাছে একটি স্বাভাবিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। অনেকেই আছেন যারা রাত জেগে থাকেন এবং ভোর বেলা বা সকালে ঘুমান।
রাত জাগা অত্যন্ত বাজে অভ্যাস। কোন কাজ যা করা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ এবং আগামীকাল কাল করা সম্ভব নয় এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছাড়া রাত জাগা অত্যন্ত বাজে অভ্যাস। শুধু রাতেই করা যায় এবং দিনে করা অসম্ভব এমন কাজ নিশ্চয়ই প্রতিদিন আমাদের থাকেনা।
আপনি কেন রাতে ঘুমাবেন? (proper sleep at night)
আমাদের শরীর এবং মনের সঠিকভাবে কাজ করার জন্য রাতের ঘুম প্রয়োজন। ফেসবুক ব্যবহার করা, ইন্টারনেট ব্রাউজ করা, মুভি দেখা কিংবা যেকোনো কাজ যা রাতে না করে দিনেও করা যায় ইত্যাদি কাজের জন্য যদি আপনি রাত জেগে থাকেন তবে আপনার রাত জাগার কুফল সম্পর্কে জানা প্রয়োজন।
নিয়মিত রাত জেগে শরীর ও মনের ক্ষতি করার ফলাফল খুবই খারাপ কারণ দিনে ঘুমিয়ে রাতের ঘুম পূরণ করা কঠিন কাজ। গবেষণা থেকে জানা যাচ্ছে যে ঘুমের অভাবের কারণে বিষণ্ণতা, মনোযোগ দেয়ার ক্ষমতা হ্রাস পাওয়া, দিনের বেলা ঘুম আসা এবং সহজেই ক্লান্ত হয়ে যাওয়া,সহজে রেগে যাওয়া এমনকি আত্মহত্যার ইচ্ছা জাগার মতো সমস্যা ইত্যাদি দেখা যেতে পারে। মনে রাখুন প্রথমে আপনার শরীর তারপর আপনার কাজ।
কিভাবে রাত জাগার অভ্যাস ত্যাগ করবেন?
তারিখ নির্বাচন করুন- কবে থেকে আপনি রাত জাগার অভ্যাস পরিবরতন করতে চান তা নির্ধারণ করুন এবং সম্ভব হলে আপনার আশপাশের মানুষদেরকেও জানিয়ে রাখুন।
প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যান এবং ঘুম থেকে উঠুন - প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে গেলে এবং ঘুম থেকে উঠার অভ্যাস করলে আপনার জন্য রাতে ঘুমাতে যাওয়া সহজ হয়ে যাবে।
ঘুমানোর আগে যা যা করবেন- ঘুমানোর কমপক্ষে এক ঘণ্টা আগে পিসি ও ইন্টারনেট ব্যবহার করা বন্ধ করুন এবং টিভি বন্ধ করে দিন। ঘুমানোর আগে নিজেকে মনে করিয়ে দিন যে রাতের গুরুত্ব কত বেশি। বিকালের পর কোন ধরনের চা বা কফি খাবেন না। ঘুমানোর আধা ঘণ্টা পূর্বে সম্ভব হলে এক গ্লাস মৃদু উষ্ণ দুধ পান করুন। ঘুমানোর আগে অতিরিক্ত পানি পান করা থেকে বিরত থাকুন।
যদি ঘুম না আসে তাহলে কি করবো?
গভীর নিঃশ্বাস নিন- ঘুমানোর জন্য শোবার পর চোখ বন্ধ করুন এবার নাক দিয়ে গভীর ভাবে আস্তে আস্তে নিঃশ্বাস নিন এরপর ২-৩ সেকেন্ড নিঃশ্বাস আটকে রাখুন এবার মুখ দিয়ে আস্তে আস্তে ছেড়েদিন এবং আবার প্রথম থেকে শুরু করুন। এভাবে কমপক্ষে ৫-১০ মিনিট করুন অথবা ঘুম আসার পূর্ব পর্যন্ত করতে থাকুন।
ধারাবাহিক ভাবে পেশী শিথিল করুন- শুয়ে থাকা অবস্থায় পা থেকে মুখের পেশী পর্যন্ত ধারাবাহিক ভাবে প্রত্যেকটি পেশীকে টান টান করে সামান্য কিছুক্ষণ ধরে রাখুন এবং ছেড়ে দিয়ে পেশীকে সম্পূর্ণ শিথিল হয়ে যেতে দিন।পুরো প্রক্রিয়া একবার শেষ করে আবার প্রথম থেকে শুরু করুন। এভাবে করতে থাকুন ঘুম আসার পূর্ব পর্যন্ত।তবে পেশি শিথিল করার সময় তাড়াহুড়া করবেন না।
গণনা পদ্ধতি- ২০০ থেকে ০ শুণ্য পর্যন্ত গননা করুন। প্রত্যেক গণনার মাঝে ২-৩ সেকেন্ড বিরতি রাখুন এবং বিরতির মাঝে মনে মনে ধীরে ধীরে নিজেকে বলুন “আরাম আরাম” অথবা “ঘুম ঘুম”। পেশীগুলোকে ছেড়ে দিন এবং শিথিল হতে দিন।পুরো প্রক্রিয়া প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত করে আবার শুরু করুন ঘুম না আসা পর্যন্ত।
এই পদ্ধতিগুলো একটির পর একটি করা যেতে পারে অথবা যেকোনো একটি করা যেতে পারে। তবে কোন পদ্ধতি টি প্রয়োগ করে আপনি ভালো ফলাফল পান তা জানার জন্য সব গুলো পদ্ধতি একবার হলেও প্রয়োগ করে দেখুন।
Collected.