আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিল
নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারের আন্তর্জাতিক ঐচ্ছিক প্রটোকল ১৯৬৬
১৯৬৬ সালের ১৬ ই ডিসেম্বর সাধারণ পরিষদ সিদ্ধান্ত নং ২২০০এ (২১) অনুযায়ী স্বাক্ষর, অনুমোদন ও যোগদানের জন্য গৃহীত ও উম্মুক্ত এবং অনুচ্ছেদ ৯ অনুযায়ী ১৯৭৬ সালের ২৩ শে মার্চ কার্যকর হয়
এই ঐচ্ছিক চুক্তিতে (প্রটোকল) অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রসমূহ যেহেতু মনে করে যে, নাগরিক এবং রাজনৈতিক অধিকার চুক্তির (পরবর্তীতে কেবল চুক্তি বলে উল্লেখ) উদ্দেশ্য অর্জনের লক্ষ্যে এবং ইহার শর্তাবলী কার্যকর করার লক্ষ্যে চুক্তির চতুর্থ পরিচ্ছেদে বর্ণিত মানবাধিকার কমিটিকে ক্ষমতা দেয়া প্রয়োজন, সেই সকল নাগরিকদের চিঠিপত্র গ্রহণ এবং বিবেচনা করতে যারা চুক্তিতে বর্ণিত যে কোন অধিকার লংঘনের ফলে উহার শিকার হয়েছেন,
সেহেতু আলোচ্য প্রটোকলে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রসমূহ একমত হয়ে নিম্নেবর্ণিত অনুচ্ছেদসমূহ প্রটোকলে সন্নিবেশিত করেছে;
অনুচ্ছেদ-১
চুক্তিতে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্র যদি আলোচ্য প্রটোকলে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্র হয় তবে তাকে কমিটির ক্ষমতাকে স্বীকার করতে হবে যে, উহার অধিকার রয়েছে সেই সকল নাগরিকদের চিঠিপত্র গ্রহণ এবং বিবেচনা করা যারা চুক্তিতে বর্ণিতে যে কোন অধিকার লংঘনের ফলে উহার শিকার হয়েছেন নিজেদের দেশে। কমিটি তাদের চিঠিপত্র গ্রহণ করবে না, যারা আলোচ্য প্রটোকলে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্র নয়।
অনুচ্ছেদ-২
১ নং অনুচ্ছেদ সাপেক্ষে, যদি কোন নাগরিক দাবি করেন যে, চুক্তিতে বর্ণিত কোন অধিকার লংঘিত হয়েছে এবং উহার প্রতিকারের জন্য সকল দেশীয় প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে, তাহলে তিনি বিবেচনার জন্য কমিটিকে লিখিতভাবে জানাতে পারেন।
অনুচ্ছেদ-৩
আলোচ্য প্রটোকল মোতাবেক কমিটি অগ্রাহ্য বেনামী চিঠিপত্র বিবেচনা করতে পারবে যদিও এতদসম্পর্কিত অধিকারের অপব্যবহার এবং চুক্তিতে বর্ণিত নীতিমালার পরিপন্থী।
অনুচ্ছেদ-৪
১. ৩ নং অনুচ্ছেদ শর্ত সাপেক্ষে, আলোচ্য প্রটোকল মোতাবেক কমিটি তার নিকট পেশকৃত যে কোন চিঠিপত্র সেই অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রের দৃষ্টিতে আনতে পারবে যার বিরুদ্ধে চুক্তির শর্ত লংঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে। অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্র উক্ত অভিযোগের চিঠি পাওয়ার
২. ছ'মাসের মধ্যে লিখিত আকারে উক্ত অভিযোগের ব্যাখ্যা অথাবা বিষয়টি পরিষ্কার করে এবং যদি কোন প্রতিকার গ্রহণ করা হয় তা উল্লেখপূর্বক কমিটির নিকট প্রতিবেদন পেশ করবে।
অনুচ্ছেদ-৫
১. কোন নাগরিক বা অংশগ্রহণকারী কোন রাষ্ট্র কর্তক প্রদত্ত লিখিত তথ্যাদির আলোকে কমিটি আলোচ্য প্রটোকল মোতাবেক তার নিকট পৌঁছানো চিঠিপত্র বিবেচনা করবে।
২. কমিটি নাগরিকের চিঠিপত্র বিবেচনা করবে না যদি না উহাতে নিশ্চিত থাকে:
ক.আন্তর্জাতিক তদন্ত এবং ব্যবস্থা অনুযায়ী একই বিষয় পরীক্ষিত না হয়
খ.উক্ত নাগরিক দেশীয় প্রতিকারের সকল প্রচেষ্টা চালিয়েছে। প্রতিকার কার্যকর হতে যদি অযৌক্তিক ভাবে বিলম্বিত হয় তবে সেক্ষেত্রে সেই নিয়ম প্রযোজ্য হবে না।
৩. আলোচ্য প্রটোকল মোতাবেক যখন কোন চিঠিপত্র পরীক্ষা করা হবে তখন কমিটি রুদ্ধদ্বার বৈঠক অনুষ্ঠিত করবে।
৪. কমিটি তার মতামত সংশ্লিষ্ট নাগরিক এবং অংশগ্রহণকারী রাষ্টকে জানাবে।
অনুচ্ছেদ-৬
আলোচ্য প্রটোকল মোতাবেক কমিটি বার্ষিক প্রতিবেদনে চুক্তির ৪৫ ধারা অনুযায়ী তার কার্যক্রমের সংক্ষিপ্ত সার অন্তর্ভুক্ত করবে।
অনুচ্ছেদ-৭
ঔপনিবেশিক দেশ এবং জাতিসমূহের স্বাধীনতা অনুমোদন ঘোষণা সম্বন্ধীয় ১৯৬০ সালের ১৬ ই ডিসেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক গৃহীত ১৫১৪(vx) প্রস্তাবের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য অর্জন সাপেক্ষ, আলোচ্য চুক্তির নিয়মনীতি কোনক্রমে সীমিত করতে পারবে না ঐ সকল জাতিসমূহের অধিকার যা জাতিসংঘ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক চুক্তি এবং দলিল অনুযায়ী তাদেরকে দেয়া হয়েছে।
অনুচ্ছেদ-৮
১. অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্র, যে আলোচ্য চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে, তার জন্য আলোচ্য প্রটোকলে স্বাক্ষর দেয়া উন্মুক্ত।
২. চুক্তিতে অনুমোদন দিয়েছে বা দিতে রাজী হয়েছে তাদের দ্বারা আলোচ্য প্রটোকল অনুমোদনযোগ্য।
৩. চুক্তিতে অনুমোদন দিয়েছে বা দিতে রাজী হয়েছে তাদের জন্য আলোচ্য প্রটোকলে যোগদান উণ্মুক্ত থাকবে।
৪. জাতিসংঘের মহাসচিবের নিকট যোগদানের অনুমতির দলিল জমা দেওয়ার মাধ্যমে আলোচ্য প্রটোকল কার্যকর হবে।
৫. আলোচ্য প্রটোকলে যারা স্বাক্ষর করেছে অথবা যোগদানের জন্য অনুমতি চেয়েছে বা উহার কাগজপত্র জমা দিয়েছে, তাদের কথা জাতিসংঘের মহাসচিব এই প্রটোকলে স্বাক্ষরকারী সকল রাষ্ট্রসমূহকে অবহিত করবেন।
অনুচ্ছেদ-৯
১. চুক্তি কার্যকর হওয়া সাপেক্ষে, জাতিসংঘের মহাসচিবের নিকট দশম অনুমোদন বা যোগদানের দলিল জমা দেয়ার তারিখ থেকে তিন মাস পরে আলোচ্য প্রটোকল কার্যকর হবে।
২. প্রত্যেক রাষ্ট্র দশম অনুমোদন বা যোগদানের দলিল জমা দেয়ার পর এবং আলোচ্য প্রটোকলে অনুমোদন বা যোগদানের দলিল জমা দেয়ার তারিখ থেকে তিন মাস পরে তা কার্যকর হবে।
অনুচ্ছেদ-১০
কোন অন্তরায় বা বাধা ছাড়া আলোচ্য প্রটোকলের শর্তসমূহ প্রটোকলে আবদ্ধ রাষ্ট্র্রসমূহের সকল অংশে পরিব্যপ্ত।
অনুচ্ছেদ-১১
১. আলোচ্য প্রটোকলে অংশগ্রহণকারী যে কোন রাষ্ট্র সংশোধনী প্রস্তাব রাখতে এবং উহা জাতিসংঘের মহাসচিবের নিকট উত্থাপন করতে পারবে। মহাসচিব উক্ত প্রস্তাবের ওপর ভোট গ্রহণ এবং বিবেচরনার জন্য সম্মেলন ডাকা যায় কিনা সে মতামত পেতে প্রটোকলে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রসমূহকে লিখবেন। এক তৃতীয়াংশ রাষ্ট্রসমূহ যদি উক্ত সম্মেলন আহ্বানে একমত প্রকাশ করে, তবে মহাসচিব জাতিসংঘের সৌজন্যে উক্ত সম্মেলন অনুষ্ঠিত করবেন। উক্ত সম্মেলনে সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্র কর্তৃক গৃহীত এবং ভোটে পাশকৃত যে কোন সংশোধনী অনুমোদনের জন্য সাধারণ পরিষদে পেশ করতে হবে।
২. সংশোধনীসমূহ কার্যকর হবে যখন উহা সাধারণ পরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত এবং প্রটোকলে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রসমূহের দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় গঠনতন্ত্র পদ্ধতিতে গ্রহণীয় হবে।
৩. যখন সংশোধনীসমূহ কার্যকর হবে তখন যে সব রাষ্ট্র উহা গ্রহণ করেছে তাদের উপর উহা পালন আবশ্যক হয়ে পড়বে। আলোচ্য প্রটোকলের শর্ত এবং পূর্বের অন্য যে কোন সংশোধনী তারা গ্রহণ করেছে তার দ্বারা অন্যান্য অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রসমূহের ওপরও উহা পালন অত্যাবশ্যক হয়ে পড়বে।
অনুচ্ছেদ-১২
১. জাতিসংঘের মহাসচিবকে লিখিত নোটিশের দ্বারা যে কোন অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্র আলোচ্য প্রটোকল যে কোন সময়ে অগ্রাহ্য কাযকর হবে।
২. অগ্রাহ্য কার্যকর হবার আগে,২ নম্বর অনুচ্ছেদ মোতাবেক পেশকৃত চিঠিপত্রের ওপর কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।
অনুচ্ছেদ-১৩
অনুচ্ছেদ ৮ এর পঞ্চম অনুচ্ছেদ অনুসারে কোন প্রজ্ঞাপন ছাড়াই জাতিসংঘের মহাসচিব চুক্তির ৪৮ নং অনুচ্ছেদের ১ নং ক্লজে বর্ণিত সকল রাষ্ট্রসমূহকে নিম্নের তথ্যাদি অবহিত করবেন;
ক. ৮ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী স্বাক্ষর, অনুমোদন এবং যোগদান,
খ. ৯ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আলোচ্য প্রটোকল কার্যকর হবার তারিখ এবং ১১নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী যে কোন সংশোধনী কার্যকর হবার তারিখ,
গ. ১২ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রটোকল অগ্রাহ্য করা।
অনুচ্ছেদ-১৪
১. চীনা, ইংরেজী,ফ্রান্স, রাশিয়ান এবং স্পেনীয় ভাষায় আলোচ্য প্রটোকলের কপি জাতিসংঘের মহাফেজখানায় জমা রাখতে হবে।
২. চুক্তির ৪৮ নং অনুচ্ছেদে বর্ণিত সকল রাষ্ট্রসমূহে মহাসচিব আলোচ্য প্রটোকলের সত্যায়িত কপি প্রেরণ করবেন।