শিশু অধিকার
জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ, ১৯৮৯
সনদে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রসমূহ,
বিশ্বের প্রতিটি মানুষের মর্যাদা এবং জাতিসংঘ নীতিমালা ও ঘোষণা অনুযায়ী সমঅধিকারের স্বীকৃতিই হচ্ছে স্বাধীনতা, ন্যায় বিচার ও বিশ্ব শান্তির ভিত্তি৷
উল্লেখিত বিষয়টি বিবেচনায় রেখে জাতিসংঘের প্রতিটি সদস্য দেশ উক্ত সনদে বর্ণিত মৌলিক মানবাধিকার এবং মানুষের মর্যাদা ও মূল্যবোধের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে তাদের বিশ্বাস পুনর্ব্যক্ত করেছে৷ আরো স্বাধীনভাবে সমাজকে এগিয়ে নিতে এবং জীবন যাত্রার মান উন্নয়নে দৃঢ অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে৷
এই বিষয়টি সামনে রেখে জাতিসংঘের সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণা এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার নীতিমালায় এ কথা স্বীকৃত হয়েছে যে গোত্র, বর্ণ, লিঙ্গ, ভাষা, ধমৃ, রাজনৈতিক অথবা ভিন্নমত, জাতীয়তা কিংবা সামাজিক পরিচয়, শ্রেণী, জণ্মসূত্র কিংবা অন্য কোন মর্যাদা নির্বিশেষে প্রতিটি মানুষ কোন প্রকার বৈষম্য ছাড়াই এই ঘোষণায় বর্নিত সব ধরনের অধিকার ও স্বাধীনতা ভোগ করবে৷
জাতিসংঘের সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণা অনুযায়ী প্রতিটি শিশুর প্রাপ্য হচ্ছে বিশেষ যত্ন ও সহায়তা৷
এ বিষয়ে আস্থাশীল হতে হবে যে পরিবার হচ্ছে সমাজের প্রাথমিক সংগঠন৷ সুতরাং পরিবারের সকল সদস্য বিশেষ করে শিশু সদস্যদের যত্ন, শিশুর নিরাপত্তা ও কল্যাণ সম্পের্ক ঘোষণার সামাজিক আইনানুগ শর্তাবলী স্মরণ রেখে শিশুকে দত্তক এবং লালন পালনের দায়িত্ব প্রদান প্রসঙ্গে বিশেষভাবে শিশুদের নিরাপত্তা এবং কল্যাণ সম্পর্কে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে সামাজিক এবং আইনগত নীতিমালা ঘোষণা স্মরণ রাখতে হবে৷ শিশু সংক্রান্ত বিচার পরিচালনায় জাতিসংঘ ঘোষিত আদর্শ নূন্যতম বিধিমালা (বেইজিং রুলস) জরুরী অবস্থা এবং সশস্ত্র সংঘাতকালীন মহিলা ও শিশু নিরাপত্তা সংক্রান্ত ঘোষণার শর্তাবলী রাখতে হবে৷
পৃথিবীর প্রতিটি দেশে এমন শিশু রয়েছে যারা খুবই কষ্টকর পরিবেশে বাস করছে এবং তাদের জন্য অবশ্যই বিশেষ মনোযোগ প্রয়োজন এ কথা মনে রাখতে হবে৷
প্রতিটি শিশুকে রক্ষা এবং তাদের স্বাভাবিক বিকাশের স্বার্থে প্রতিটি জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় আনতে হবে৷
প্রতিটি দেশে, বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশসমূহে শিশুদের জীবন যাত্রার মান উন্নয়নে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার গুরুত্ব অনুধাবন করতে হবে৷
উল্লেখিত এই সকল বিষয় গুরুত্বের সাথে অনুধাবন করে নিম্নোক্ত বিষয়সমূহে ঐক্যমত ঘোষণা করছে :
পর্ব - ১
অনুচ্ছেদ-১: শিশুর বয়স
এই সনদে ১৮ বছরের নীচে সব মানবসন্তানকে শিশু বলা হবে, যদি না শিশুর জন্য প্রযোজ্য আইনের আওতায় ১৮ বছরের আগেও শিশুকে সাবালক হিসেবে বিবেচনা করা হয়৷
অনুচ্ছেদ-২: শিশু অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা
১. অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রসমূহ তাদের নিজ নিজ আওতায প্রতিটি শিশুর জন্য এই সনদে উল্লেখিত অধিকার সমূহের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে এবং এগুলির নিশ্চয়তা বিধান করবে৷ এ ব্যাপারে শিশু অথবা তার পিতামাতা কিংবা আইনসম্মতঃ অভিভাবকের ক্ষেত্রে গোত্র, বর্ণ, লিঙ্গ, ভাষা, ধর্ম, রাজনৈতিক ভিন্নমত, জাতিয়তা অথবা সামাজিক পরিচয়, বিত্ত, সামর্থ জণ্মসূত্রে কিংবা অন্য কোন বংশগত অবস্থানের কারণে বৈষম্য করা যাবে না৷
২. শিশুর পিতামাতা, আইনসম্মত অভিভাবক কিংবা পরিবারের সদস্যদের অবস্থান, কার্যকলাপ, প্রকাশ্য মতামত বা বিশ্বাস যদি কোন শিশুর জন্য বৈষম্য কিংবা শাস্তির কারণ হয় তবে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রসমূহ শিশুর অধিকার রক্ষার জন্য সব ধরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে৷
অনুচ্ছেদ-৩: শিশুর স্বার্থ রক্ষা
১. সরকারী এবং বেসরকারী সমাজকল্যাণ প্রতিষ্ঠান, আদালত, প্রশাসন বা আইন প্রণয়নকারী ব্যক্তিবর্গ যেই হোকনা কেন শিশু বিষয়ে যে কোন ধরনের কার্যক্রমে শিশুর স্বার্থই হবে প্রথম ও প্রধান বিবেচনায় বিষয়৷
২. শিশুর বাবা মা, আইনগত অভিভাবক বা অন্য ব্যক্তি যারা আইনগত ভাবে শিশুর দায়িত্বে আছেন তারা প্রত্যেকে শিশুর কল্যাণের জন্য সব ধরনের দায়িত্ব পালন করেছেন কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রসমূহ আইনগত ও প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ করবে৷
৩. অংশ গ্রহণকারী রাষ্ট্র শিশুর জন্য সেবা ও সুযোগ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের জন্য প্রযোজ্য মানদন্ড দক্ষতার সাথে তত্বাবধানের বিষয়টির নিশ্চয়তা প্রদান করবে, বিশেষ করে শিশুর জন্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য, প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের সংখ্যা ও তাদের উপযুক্ত তত্ত্বাবধানের বিষয়টি৷
অনুচ্ছেদ-৪: সনদের বাস্তবায়ন
এই সনদের সকল অধিকারকে বাস্তবায়নের জন্য অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্র সব ধরনের আইনগত ও প্রশাসনিক এবং অন্যান্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে৷ অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রসমূহ অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক অধিকার সমূহের বাস্তবায়নের জন্য সম্ভাব্য সব সম্পদের সর্বাধিক ব্যবহার প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার কাঠামোর আওতায় সহায়তার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করবে৷
অনুচ্ছেদ-৫: শিশুর প্রতি দায়িত্ব
এই সনদে উল্লেখিত শিশুর অধিকার রক্ষার জন্য শিশুর বিকাশের সাথে সংগতিপূর্ন উপযুক্ত নির্দেশ ও পরামর্শদানের ক্ষেত্রে বাবা-মা, স্থানীয় নিয়ম অনুযায়ী যৌথ পরিবার বা সমাজের কোন ব্যক্তি, আইনসম্মত অভিভাবক অথবা আইনানুগতভাবে শিশুর দায়িত্বপ্রাপ্ত অন্যান্য কোন ব্যক্তির প্রতি দায়িত্ব, অধিকার এবং কর্তব্যের প্রতি অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রসমূহ সম্মান দেখাবে
অনুচ্ছেদ-৬: শিশুর বেঁচে থাকার অধিকার
১. প্রতিটি শিশুর বেঁচে থাকার অধিকারকে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রসমূহ স্বীকৃতি দেবে৷
২. অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্র শিশুর বেঁচে থাকার এবং উন্নয়নের জন্য যথাসম্ভব সর্বাধিক নিশ্চয়তার ব্যবস্থা করবে৷
অনুচ্ছেদ-৭: শিশুর জন্ম নিবন্ধীকরণ
১. জণ্মের সাথে সাথে শিশুর জণ্মের নিবন্ধীকরণ করতে হবে৷ জণ্মের সাথে একটি নাম, নাগরিকত্ব এবং যতদূর সম্ভব শিশুর পিতামাতার পরিচয় জানবার অধিকার এবং তাদের কাছে প্রতিপালিত হবার অধিকার থাকবে৷
২. অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্র তাদের নিজস্ব জাতীয় আইন অনুসারে শিশুর এই সকল অধিকারসমূহ বাস্তবায়ন করবে৷ এবং এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় আন্তর্জাতিক দলিল সমূহ মেনে চলতে বাধ্য থাকবে৷ বিশেষ করে যে সকল ক্ষেত্রে এর অন্যথা হলে শিশু রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়বে৷
অনুচ্ছেদ-৮: শিশুর আইনসম্মত পরিচিতি
১. শিশুর জাতীয়তা, নাম এবং পারিবারিক সম্পর্ক, আইনসম্মত পরিচিতি রক্ষায় শিশুর অধিকারের প্রশ্নটিকে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্র সংরক্ষণ করবে৷ সেখানে কোন বেআইনী হস্তক্ষেপ করা চলবে না৷
২. কোথাও কোন শিশু তার নিজস্ব পরিচয় থেকে যদি আংশিক অথবা সম্পূর্ণ বেআইনীভাবে বঞ্চিত হয় তাহলে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রসমূহ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেই পরিচয় পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সহায়তা করবে এবং শিশুকে রক্ষার ব্যবস্থা করবে৷
অনুচ্ছেদ-৯: পিতামাতার সাথে বসবাসের অধিকার
১. অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্র কোন শিশুকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার বাবা মায়ের কাছ থেকে বিছিন্ন না করার নিশ্চিয়তা বিধান করবে৷ তবে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ ও আইনের ক্ষেত্রে বিধিবিধান অনুসারে এবং বিচার বিভাগীয় আলোচনা সাপেক্ষে শিশুর সর্বোচ্চ স্বার্থে শিশুকে যদি পৃথক করাই শিশুর সর্বোচ্চ স্বার্থ রক্ষা করে সেক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম হতে পারে৷ যে সব ক্ষেত্রে বাবা-মা সন্তানকে নির্যাতন অথবা অবহেলা করে অথবা পিতা ও মাতা আলাদা বাস করে সে ক্ষেত্রে সন্তান কোথায় বাস করবে তা নির্ধারন করা অবশ্য প্রয়োজন৷
২. এই অনুচ্ছেদের ১ নং প্যারা অনুসারে কোন মামলা হলে তাতে জড়িত সকল পক্ষের উপস্থিত থাকার এবং তাদের মতামত দেবার সুযোগ থাকবে৷
৩. যদি শিশুর সর্বোচ্চ স্বার্থের ক্ষতি না করে সেক্ষেত্রে পিতামাতার একজন বা উভয়ের সাথে বিছিন্ন শিশুটির ব্যক্তিগতভাবে এবং সরাসরি সম্পর্ক রাখা, যোগাযোগ করার অধিকার থাকবে৷ অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্র এ বিষয়ে সম্মান দেখাবে, অবশ্য তা যদি শিশুর সর্বোচ্চ স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর না হয়৷
অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্র যদি শিশুর পিতা অথবা মাতা ও উভয়কে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে আটক, কারাদন্ড, নির্বাসন, দেশত্যাগ করতে বাধ্য করে বা মৃত্যু হয় (রাষ্ট্রের অধীনে থাকাকালীন অবস্থায় যে কোন কারণে মৃতু্যবরণ সহ), এসকল কারণে শিশুকে, শিশুর পিতা মাতা এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্য সম্পর্কে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্র প্রয়োজনীয় তথ্যাদি প্রদান করবে, তবে যদি সে তথ্যের বিষয়বস্তু শিশুর জন্য অমঙ্গলের কারণ না হয়৷ অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রে এ ধরণের তথ্য প্রকাশ যেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির জন্য কোন বিরূপ ফলভোগের কারণ না হয়ে দাঁড়ায়৷
অনুচ্ছেদ-১০: পারিবারিক সংহতি
১. অনুচ্ছেদ ৯-এর ১ নং প্যারা অনুযায়ী পারিবারিক সংহতি বজায় রাখার জন্য কোন শিশুর পিতামাতা যদি অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্র ত্যাগ কিংবা প্রবেশ করতে চায় তবে সে বিষয়ে রাষ্ট্রসমূহ যথা শীঘ্রই ইতিবাচক মানবিক পদক্ষেপ গ্রহণ করবে৷ এই ধরনের অনুরোধ আবেদনকারী কিংবা তার পরিবারের কোন সদস্যের প্রতি যেন স্থায়ীভাবে কোন বিরূপ ফল বয়ে না আনে সে বিষয়ে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্র নিশ্চয়তা বিধান করবে৷
২. শিশু ও তার পিতামাতা যদি পৃথক রাষ্ট্রে বাস করে তবে বিশেষ ক্ষেত্র ছাড়া উভয়ে নিয়মিত ব্যক্তিগত সম্পর্ক এবং সরাসরি যোগাযোগ রাখতে পারবে৷ এ উদ্দেশ্যে ৯ অনুচ্ছেদ ১ নং প্যারার বর্ণনা অনুযায়ী শিশু বা তার পিতামাতার নিজের দেশসহ যে কোন দেশ ত্যাগ বা প্রবেশের অধিকারের প্রতি অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্র সম্মান দেখাবে৷
জাতীয় নিরাপত্তা, জনগণের শান্তি ও শৃঙ্খলা, জনস্বাস্থ্য, নৈতিকতা কিংবা অন্যের অধিকার ও স্বাধীনতা সংরক্ষণের ক্ষেত্রে সনদে স্বীকৃত অন্যান্য অধিকারের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ রাখার জন্য দেশ ত্যাগের উক্ত অধিকার খর্ব করা যাবে৷
অনুচ্ছেদ-১১: শিশু পাচার প্রতিরোধ
১. শিশুদের অবৈধভাবে বিদেশে পাচার এবং দেশে ফেরত না আসতে পারাকে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্র প্রতিহত করতে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে৷
২. এ উদ্দেশ্যে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্র সমূহ দ্বিপাক্ষীক এবং বহুপাক্ষীক চুক্তি প্রস্তুতের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করবে অথবা বর্তমানে প্রচলিত চুক্তির আশ্রয় গ্রহণ করবে৷
অনুচ্ছেদ-১২: শিশুর মত প্রকাশের অধিকার
১. মতামত গঠনে পরিপক্ক শিশু নিজস্ব মতামত এবং ধারনা প্রকাশে অবাধ স্বাধীনতার অধিকারী৷ সেই সকল অধিকার রক্ষার জন্য শিশু বয়স এবং নিজেকে প্রকাশ করার ক্ষমতা অনুযায়ী এই সকল মতামতকে যাতে যথাযথ গুরুত্ব দেয়া হয় অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রসমূহ তার নিশ্চয়তা বিধান করবে৷
২. এই উদ্দেশ্যে শিশুকে সুনির্দিষ্ট সুযোগ দিতে হবে যেন শিশু নিজে অথবা কোন প্রতিনিধি কিংবা কোন যথাযথ সংস্থার মাধ্যমে তার নিজ স্বার্থে সংশ্লিষ্ট বিচার বিভাগীয় বা প্রশাসনিক মকদ্দমার ক্ষেত্রে জাতীয় আইনের বিধিবদ্ধ ধারার সঙ্গে সংগতি রেখে তারা কথা বলতে পারে৷
অনুচ্ছেদ-১৩: শিশুর ভাব প্রকাশের অধিকার
১. শিশুর স্বাধীনভাবে ভাব প্রকাশের অধিকার থাকবে৷ এই অধিকারের মধ্যে সীমান্ত নির্বিশেষে সব ধরনের তথ্য, ধ্যান-ধারনা সম্পর্কে জানার, গ্রহণ করার এবং অবহিত করার স্বাধীনতা থাকবে৷ তা মৌখিক, লিখিত, ছাপান অথবা অংকন চিত্রের বা শিশুর পছন্দ মত অন্য কোন মাধ্যমে হতে পারে৷
২. এই অধিকার চর্চার ক্ষেত্রে কিছু বিধি নিষেধ আরোপ করা যেতে পারে, তবে তা হবে আইন দ্বারা নির্ধারিত এবং নিম্নলিখিত কারণ সমূহের প্রয়োজনে :
ক) অন্যের অধিকার ও সুনামের প্রতি সম্মান দেখাবার প্রয়োজনে৷
খ) জাতীয় নিরাপত্তার অথবা জন শৃংখলা, জনস্বাস্থ্য বা নৈতিকতা সুরক্ষার প্রয়োজনে৷
অনুচ্ছেদ-১৪: শিশুর চিন্তা, বিবেক ও ধর্মীয় স্বাধীনতা
১. অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্র শিশুর চিন্তা, বিবেক ও ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকারের প্রতি সম্মান দেখাবে৷
২. শিশুর নিজস্ব বিকাশের সাথে সামঞ্জস্য রেখে শিশুর অধিকার চর্চার বিষয়টিকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য পিতামাতা এবং আইনসঙ্গত অভিভাবক, যেখানে প্রযোজ্য, তার অধিকার এবং কর্তব্যের প্রতি অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্র সম্মান দেখাবে৷
৩. কারো ধর্ম অথবা বিশ্বাস স্বাধীনভাবে চর্চা করার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র সেই সকল বিষয়ে সীমাবদ্ধতা আরোপ করা যাবে, যা আইনে উল্লেখিত রয়েছে এবং নিরাপত্তা. শৃংঙ্খলা, স্বাস্থ্য, নৈতিক অথবা মৌলিক অধিকার ও অন্যের স্বাধীনতা সংরক্ষনের জন্য প্রয়োজন৷
অনুচ্ছেদ-১৫: শিশুর সংঘবদ্ধ ও সমাবেশের অধিকার
১. অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রসমূহ শিশুদের সংঘবদ্ধ হবার ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার অধিকারকে স্বীকৃতি দেবে৷
২. শিশুর এই অধিকারকে বাস্তবায়িত করতে গিয়ে কোন বিধি নিষেধ আরোপ করা যাবে না, যদি না গণতান্ত্রিক সমাজে জাতীয় কিংবা জন নিরাপত্তা, শৃঙ্খলা, স্বাস্থ্য, নৈতিকতা এবং অন্যের অধিকার ও স্বাধীনতাকে ক্ষতিগ্রস্থ না করে৷
অনুচ্ছেদ-১৬: শিশুর মর্যাদা ও সুনামের অধিকার
১. শিশুর নিজস্ব গোপনীয়তা, পরিবার এবং বাসস্থান অথবা যোগাযোগের প্রতি অন্যায়ভাবে হস্তক্ষেপ করা যাবে না৷ কোন শিশুর মর্যাদা এবং সুনামের উপর অন্যায়ভাবে হস্তক্ষেপ এবং আক্রমন করা যাবে না৷
২. এই ধরনের কোন হস্তক্ষেপ কিংবা আক্রনের জন্য শিশু আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারে৷
অনুচ্ছেদ-১৭: শিশুর শারীরিক এবং মানসিক উন্নয়ন
শিশুর শারীরিক এবং মানসিক উন্নয়নের জন্য অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্র গণমাধ্যমের কর্মকান্ড গুরুত্বের সাথে স্বীকৃতি দিয়ে শিশুর জন্য বিভিন্ন ধরনের জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে প্রাপ্ত তথ্য ও বিষয়বস্তু শিশুর সামনে তুলে ধরবে৷ বিশেষ করে সে সব তথ্য ও বিষয় যা শিশুর সামাজিক-আত্নিক কল্যাণ করবে এবং শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের বিকাশ সাধন করবে৷ এই উদ্দেশ্যে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রসমূহঃ
ক) অনুচ্ছেদ ২৯ এর ভাবধারার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শ