Who was the best of the tournament

Author Topic: Who was the best of the tournament  (Read 1786 times)

Offline rumman

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 1020
  • DIU is the best
    • View Profile
Who was the best of the tournament
« on: June 14, 2018, 10:58:37 AM »

    বিশ্বকাপ ফুটবল মানেই উপরের সারির দলগুলোর বিশেষ বিশেষ খেলোয়াড়ের দিকে সবার নজর ঘুরে যাওয়া। সে আসরে কতোটা আশা পূরণ করতে পারবেন এই তারকা ফুটবলাররা, কী কৌশল অবলম্বন করবেন, কয়টি গোল করতে পারেন এসব নিয়ে আসরের শুরু থেকেই বিশেষজ্ঞরা বসে পড়েন হিসেবের খাতা নিয়ে। আসর শেষে সেরা খেলোয়াড়ের হাতেই ওঠে টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার গোল্ডেন বল।

    ফুটবল বিশ্বকাপে একাধিক ব্যক্তিগত পুরস্কার দেওয়া হলেও সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার হচ্ছে পুরো আসরে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার। ১৯৮২ বিশ্বকাপ থেকে অ্যাডিডাসের সৌজন্যে বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়কে গোল্ডেন বল  দেওয়া শুরু করে ফুটবলের বিশ্ব সংস্থা ফিফা। তবে এর আগের বিশ্বকাপগুলোর সেরা খেলোয়াড়ের নামও গোল্ডেন বল জয়ীদের তালিকায় রেখেছে ফিফা।

     

    ১৯৩০ বিশ্বকাপ: জোসে নাসাজ্জি ইয়ারজার

    ইতিহাসের প্রথম বিশ্বকাপ আসরের সেরা ফুটবলারের নাম জোসে নাসাজ্জি ইয়ারজার। আয়োজক দেশ উরুগুয়ের অধিনায়ক ছিলেন তিনি। ইতিহাসের প্রথম এই বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়নের পুরস্কারও ওঠে তার হাতেই। উরুগুয়ের বিশ্বকাপ জয়ে বড় অবদান ছিল ইয়ারজারের। তিনি ছিলেন সেই উরুগুয়ে দলের সেরা ডিফেন্ডার। তার নেতৃত্বেই সেবার পুরো আসরে উরুগুয়ের ডিফেন্স মাত্র তিনটি গোল হজম করেছিলো। আর সে কারণেই একজন ডিফেন্ডার হওয়া সত্ত্বেও সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার ওঠে তার হাতেই। ফুটবল বিশেষজ্ঞদের মতে উরুগুয়ের ফুটবল ইতিহাসের সর্বকালের সেরা খেলোয়াড় হচ্ছেন নাসাজ্জি ইয়ারজার।

    ১৯৩৪ বিশ্বকাপ: মেয়াজ্জার

    ১৯৩৪ সালে ইতালিতে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম নকআউট ফরম্যাটের বিশ্বকাপ। সেবারও স্বাগতিকদের ঘরেই থাকে শিরোপা। ইতালির এই সাফল্যে সামনে থেকে অবদান রেখেছেন ফরোয়ার্ড মেয়াজ্জা। পুরো আসরে তিনি মাত্র দুই গোল করেন। তবুও গোল্ডেন বল ওঠে তার হাতে। এর পেছনে প্রধান কারণ ছিলো ইতালির উপর তার প্রভাব। কোয়ার্টার ফাইনালে তার করা একমাত্র গোলেই স্পেনকে হারিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে ইতালি।

    সেমিফাইনালেও অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে দারুণ পারফম্যান্স করেন মেয়াজ্জা। সেমিফাইনালে তার সহযোগিতায় করা একমাত্র গোলে সেমিফাইনালের বৈতরণী পার হয় ইতালি। ফাইনালেও তার তৈরি করা সুযোগ কাজে লাগিয়েই ইতালি পেয়ে যায় জয়সূচক গোল। ইতালির বিশ্বজয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্যই টুর্নামেন্টের
সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার দেওয়া হয় মেয়াজ্জাকে।

১৯৩৮ বিশ্বকাপ: লিওনিদাস

১৯৩৮ বিশ্বকাপটি কিছুটা ভিন্ন অভিজ্ঞতা নিয়েই আসে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড লিওনিদাসের জন্য। নকআউট ফরম্যাটের এই আসরে আগের দুইবারের ব্যর্থতা পেছনে ফেলে বেশ ভালোই এগিয়ে যায় ব্রাজিল। শেষ ষোলতে নাটকীয়ভাবে পোল্যান্ডকে ৬-৫ গোলে হারায় ব্রাজিল। এই ম্যাচে হ্যাটট্রিক করে দলের জয়ে সচেয়ে বড় অবদান রাখেন লিওনিদাস। কোয়ার্টার ফাইনালেও তার করা দুই গোলেই চেকোস্লোভাকিয়াকে হারিয়ে সেমিফাইনালে পৌঁছায় ব্রাজিল।

কিন্তু সেমিফাইনালে তখনকার ব্রাজিল কোচ পিমেন্তা আদেমা অদ্ভুতভাবেই মাঠে নামালেন না লিওনিদাসকে। ফাইনালের কথা ভেবে তিনি তার দলের সেরা খেলোয়াড়কে বিশ্রামে রাখলেন। আর তার এই চিন্তার মাশুলও বেশ খারাপভাবেই দিতে হলো ব্রাজিলকে। ইতালির বিপক্ষে ২-১ গোলে হেরে সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেয় সেলেসাওরা। আর সেই লিওনিদাসই তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে সুইডেনের বিপক্ষে জোড়া গোল করে আবারও নিজেকে প্রমাণ করেন। ফাইনাল না খেলতে পারলেও সাত গোল করে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়ে গোল্ডেন বল পেয়ে যান তিনি।

১৯৫০ বিশ্বকাপ: জিজিনহোর

১৯৫০ সালে প্রথমবার বিশ্বকাপ আয়োজন করে ব্রাজিল। বেশ ভালোই এগোচ্ছিলো শিরোপার লড়াইয়ে। তাদের এই অভিযানে বড় অবদান ছিল মিডফিল্ডার জিজিনহোর। দলের মিডফিল্ড সামলানোর পাশাপাশি সে আসরে দুটি গোলও করেন তিনি।

সেই আসরে কিছুটা ভিন্ন ফরম্যাটে খেলা হয়। ফাইনাল ছিলো না। সুপার ফোর সিস্টেমে যে দলের পয়েন্ট সবচেয়ে বেশি থাকবে তারাই জয়ী। সুপার ফোরের শেষ ম্যাচে উরুগুয়ের বিপক্ষে ঘরের মাঠে ড্র করলেই শিরোপা এমন সমীকরণের সামনে দাঁড়িয়ে ব্রাজিল। কিন্তু মারাকানায় উরুগুয়ের বিপক্ষে সেই ম্যাচে ঘরের মাঠে ২-১ গোলে হেরে যায় স্বাগতিকরা। শিরোপা না পেলেও পুরো টুর্নামেন্টে দারুণ খেলায় সেই আসরের সেরা খেলোয়াড় হন জিজিনহো।

১৯৫৪ বিশ্বকাপ: ফেরেঙ্ক পুসকাস

বলা হয় ১৯৫৪ সালের বিশ্বকাপে হাঙ্গারির সর্বকালের অন্যতম সেরা দল ছিলো। সেই দলে ছিলেন হিডেগকুটি, ককেসিসের মতো তারকারা। তবে সবার চোখ ছিলো ফেরেঙ্ক পুসকাসের দিকে।

পুসকাসের জোড়া গোলে দক্ষিণ কোরিয়াকে ৯-০ ব্যবধানে হারিয়ে সেবারের বিশ্বকাপ শুরু করে হাঙ্গেরি। পরের ম্যাচে পশ্চিম জার্মানিকে ৮-৩ গোলে উড়িয়ে দিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই কোয়ার্টার ফাইনালে যায় হাঙ্গেরি। সে ম্যাচেও পুসকাস করেন এক গোল। তবে সে ম্যাচেই চোট পেয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমিফাইনালে আর খেলতে পারেননি তিনি। পুসকাসকে ছাড়াই ফাইনালে পৌঁছে যায় তার দল। যেখানে আবারো তাদের প্রতিপক্ষ সেই পশ্চিম জার্মানি।

সে ম্যাচে এক পর্যায়ে পুসকাস ও জিবরের গোলে ২-০ গোলে এগিয়ে যায় হাঙ্গেরি। তবে আবারও ৩-২ এ পিছিয়ে পড়ে। পুসকাস হাঙ্গেরির হয়ে তৃতীয় গোল করলেও রেফারির ভুল সিদ্ধান্তে তা বাতিল হয়ে যায়। আর ওই এক বিতর্কিত সিদ্ধান্তই হাঙ্গেরির বিশ্বজয়ের স্বপ্নকে দুমড়ে মুচড়ে দেয়। টানা ৩১ ম্যাচ জয়ের পর হেরে যায় হাঙ্গেরি। তবে দল হারলেও টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হন পুসকাস।

১৯৫৮ বিশ্বকাপ: দিদি

১৯৫৪ বিশ্বকাপে  সফল না হলেও ১৯৫৮ বিশ্বকাপে ঠিকই সফল হয় ব্রাজিল। আর ব্রাজিলের এই সাফল্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখেন দিদি। ১৯৫৮ বিশ্বকাপের পুরোটা সময় ব্রাজিলের মিডফিল্ড দারুণভাবে সামলান সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার। মিডফিল্ড সামলানোর পাশাপাশি সেমিফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে ৩০ গজ দূর থেকে অসাধারণ একটি গোলও করেছিলেন তিনি। তার অবদানেই প্রথমবারের মতো ব্রাজিলের ঘরে যায় বিশ্বকাপ শিরোপা। টুর্নামেন্ট সেরাও হন দিদিই।

১৯৬২ বিশ্বকাপ: গারিঞ্চা

১৯৫৮ বিশ্বকাপে মাত্র ১৭ বছর বয়সে অভিষেক হওয়া পেলে চমকে দেন পুরো বিশ্বকে। সবার প্রত্যাশা ছিল ১৯৬২ বিশ্বকাপে পরিণত পেলে আরো দুর্দান্ত পারফরম্যান্স উপহার দেবেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য, চেকোস্লোভাকিয়ার বিপক্ষে ইনজুরিতে পড়ে বিশ্বকাপ শেষ হয়ে যায় তার। দলের সবারই মনোবল কমে যায়। তখনই নায়ক হিসেবে আবির্ভূত হন দলের আরেক তারকা গারিঞ্চা। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে স্পেনের বিপক্ষে গারিঞ্চার অ্যাসিস্ট থেকে আরমাল্ডোর শেষমুহূর্তের গোলেই নিশ্চিত হয় ব্রাজিলের গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়া।

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে জোড়া গোল করে ব্রাজিলকে সেমিফাইনালে নিয়ে যান গারিঞ্চা। সেমিফাইনালে চিলির বিপক্ষেও করেন ২ গোল। ফাইনালে দল জয় পেলেও গোল পাননি তিনি। চার গোল করে সেই আসরে যৌথভাবে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিলেন গারিঞ্চা। আর শিরোপার পথে এগিয়ে রাখার অবদান হিসেবে আসর সেরার পুরস্কার ওঠে বাঁকা পায়ের জাদুকরের হাতে।

১৯৬৬ বিশ্বকাপ: ববি চার্লটন

১৯৬৬ সালের বিশ্বকাপ আয়োজন করে ইংল্যান্ড। সেবারেও স্বাগতিকদের ঘরেই যায় চ্যাম্পিয়ন শিরোপা। আর এই শিরোপা জয়ের পেছনে বড় ভূমিকা রাখে স্যার ববি চার্লটনের অসাধারণ পারফরম্যান্স। গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচে মাত্র এক গোল করলেও জ্বলে ওঠেন সেমিফাইনালে।

পর্তুগালের বিপক্ষে জোড়া গোল করে দলকে ফাইনালে নিয়ে যান ববি চার্লটন। ফাইনালে গোল না পেলেও খেলেছেন অসাধারণ। পুরো ম্যাচেই মাঠ মাতিয়ে রেখেছিলেন তিনি। পশ্চিম জার্মানিকে অতিরিক্ত সময়ে ৪-২ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয় ইংল্যান্ড। আর স্যার ববি চার্লটন সেই আসরের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন।
১৯৭০ বিশ্বকাপ: পেলে

১৯৬৬ বিশ্বকাপের পর কিছুটা অভিমান নিয়েই আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকেই সরে যেতে চেয়েছিলেন পেলে! কিন্তু শেষপর্যন্ত বিশ্বকাপটা খেলার সিদ্ধান্তই নেন। আগের আসরগুলোতে স্ট্রাইকার হিসেবে খেললেও এই আসরে তিনি কিছুটা নিচে নেমে এসে প্লে-মেকারের ভূমিকা পালন করেন। সেবার  চারটি গোল করার পাশাপাশি অ্যাসিস্ট করেন পাঁচটি।

পুরো আসর জুড়ে তার রাজকীয় পারফরম্যান্সের উপর ভর করেই ইতিহাসের প্রথম দল হিসেবে তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ ঘরে তোলে ব্রাজিল। পাশাপাশি ইতিহাসের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে তিনটি বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। আর পেয়ে যান টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও।

১৯৭৪ বিশ্বকাপ: ইয়োহান ক্রুইফ

ইয়োহান ক্রুইফ তার টোটাল ফুটবল দিয়েই নেদারল্যান্ডসের হয়ে ১৯৭৪ বিশ্বকাপে সবাইকে মন্ত্রমুগ্ধ করে রেখেছিলেন। শুধু ট্যাকটিস দিয়েই নয়, মাঠের খেলায়ও সবাইকে মন্ত্রমুগ্ধ করে রেখেছিলেন ক্রুইফ। সে আসরে ক্রুইফ নিজে তিনটি গোলের পাশাপাশি তিনটি গোলে অ্যাসিস্টও করেন। তিনটি গোলই ছিল ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার মতো শক্তিশালী দুই দলের বিপক্ষে। পুরো টুর্নামেন্টে অসাধারণ খেলে ডাচদের ফাইনালে তোলার পুরস্কার হিসেবে টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারটা জিতে নেন ক্রুইফ।

১৯৭৮ বিশ্বকাপ: মারিও কেম্পেস

১৯৭৮ সালে যেন নতুন এক আর্জেন্টিনাকে দেখেছে বিশ্ব। নিজেদের মাটিতে আয়োজিত শিরোপা জিততে বদ্ধপরিকর আর্জেন্টিনা শুরু থেকেই দুরন্ত গতিতে ছুটতে থাকে। সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মারিও কেম্পেস। পোল্যান্ড ও পেরুর বিপক্ষে জোড়া গোল করে দলকে নিয়ে যান ফাইনালের মঞ্চে।

ফাইনালেও তার জোড়া গোলেই নেদারল্যান্ডসকে ৩-১ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ শিরোপা ঘরে তোলে আর্জেন্টিনা। ছয় গোল ও এক অ্যাসিস্ট নিয়ে টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতে আর্জেন্টিনার জাতীয় বীরে পরিণত হন কেম্পেস।

১৯৮২ বিশ্বকাপ: পাওলো রসি

১৯৮২ বিশ্বকাপ থেকেই সর্ব প্রথম অ্যাডিডাসের সৌজন্যে বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতাকে গোল্ডেন বুট ও বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়কে গোল্ডেন বল দেওয়ার প্রচলন করে ফিফা। আর প্রথমবারই দুটি পুরস্কার একাই জিতে নেন পাওলো রসি। অথচ বিশ্বকাপের ঠিক আগে ম্যাচ গড়াপেটার দায়ে ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ থাকায় বিশ্বকাপই অনিশ্চিত ছিল তার। কিন্তু সে সময়ের ইতালি কোচ এনজো বেয়ারজোটের দায়িত্বেই বিশ্বকাপে আসেন রসি। আর তার আস্থার প্রতিদান দিতে মোটেই ভুল করেননি রসি।

টুর্নামেন্টের প্রথম চার ম্যাচে গোল পাননি। এর পর অবশ্য তার হ্যাটট্রিকে ভর করেই সেসময়ের শক্তিশালী দল ব্রাজিলকে ৩-২ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনালে চলে যায় ইতালি। সেমিফাইনালেও চমক দেখান রসি। তার জোড়া গোলে পোল্যান্ডকে ২-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে যায় ইতালি। ফাইনালেও এক গোল করেন রসি। পশ্চিম জার্মানিকে ৩-১ গোলে হারিয়ে তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ শিরোপা ঘরে তোলে ইতালি। ছয় গোল ও এক অ্যাসিস্টে গোল্ডেন বুটের সাথে গোল্ডেন বলটাও জিতে নেন রসি।

১৯৮৬ বিশ্বকাপ: দিয়েগো ম্যারাডোনা

বলতে গেলে ১৯৮৬ বিশ্বকাপে একক নৈপুণ্য দিয়ে একটা সাধারণ দলকে বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন ম্যারাডোনা। ওই বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা মোট ১৪টি গোল করেছিলো। এর মধ্যে ১০টি গোলেই সরাসরি অবদান রাখেন ম্যারাডোনা।

কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বিশ্বকাপ ইতিহাসের সবচেয়ে বিতর্কিত ও সবচেয়ে সুন্দর গোল করেন ম্যারাডোনা। তার এই দুই গোলে ভর করেই ইংল্যান্ডকে ২-১ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনালে চলে যায় আর্জেন্টিনা।

সেমিফাইনালেও বেলজিমায়ের বিপক্ষে তার জোড়া গোলেই বেলজিয়ামকে ২-০ গোলে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চত করে আর্জেন্টিনা। ফাইনালে তার অসাধারণ পাস থেকে গোল করে আর্জেন্টিনাকে ৩-২ গোলে এগিয়ে নেন বুরুচাগা। আর্জেন্টিনা ঘরে তোলে তাদের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ। আর পাঁচ গোলের সাথে পাঁচ অ্যাসিস্টে গোল্ডেন বল জিতে নেন ম্যারাডোনা।

১৯৯০ বিশ্বকাপ: স্যালভেটর শিলাচি

১৯৯০ বিশ্বকাপে স্যালভেটর শিলাচি একার প্রচেষ্টায় স্বাগতিক ইতালিকে সেমিফাইনালে নিয়ে যান। কোয়ার্টার ফাইনালে তার করা একমাত্র গোলেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয় ইতালির। সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনার বিপক্ষেও গোল পান তিনি। কিন্তু তার দল হেরে যায় টাইব্রেকারে। পুরো আসরে ছয় গোল ও এক অ্যাসিস্টে গোল্ডেন বুট জেতার সাথে গোল্ডেন বলটাও সেবার জিতে নেন শিলাচি।

১৯৯৪ বিশ্বকাপ: রোমারিও

১৯৯৪ বিশ্বকাপ জয়ের জন্য বেশ ভালো পরিকল্পনা করে নামে ব্রাজিল। সেবার ব্রাজিলের খেলায় সৌন্দর্যের যে ছোঁয়া ছিল তাতে বড় অবদান ছিল রোমারিওর। অথচ এই রোমারিওই বিশ্বকাপ দলে ছিলেন অনিশ্চিত। বিশ্বকাপে সুযোগ পেয়ে নিজেকে পুরোপুরি প্রমাণ করতে ভুল করেননি এই স্ট্রাইকার।

গ্রুপপর্বের তিন ম্যাচেই গোল করেন রোমারিও। শেষ ষোলতে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে বেবেতোর করা গোলে অ্যাসিস্ট করেন। কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমিফাইনালেও গোল করে দলকে টেনে তোলেন ফাইনালে।

ফাইনালে ইতালিকে টাইব্রেকারে ৩-২ গোলে হারিয়ে দীর্ঘ ২৪ বছর পর আবারও বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয় ব্রাজিল। ফাইনালেও গোল করেন রোমারিও। পুরো টুর্নামেন্টে পাঁচ গোল ও দুই অ্যাসিস্টে গোল্ডেন বল জিতে নেন তিনি।

১৯৯৮ বিশ্বকাপ: রোনালদো

১৯৯৮ বিশ্বকাপের রোনালদোকে পারফরম্যান্স দিয়ে সঠিকভাবে বর্নণা করা একটু কঠিন। শুধুমাত্র গোল কিংবা অ্যাসিস্ট দিয়ে তার বর্ণনা করা যাবে না। প্রতি ম্যাচে প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে ত্রাস ছড়ানোর পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে গোল কিংবা অ্যাসিস্টও করে গেছেন সমান তালে।

শেষ ষোলতে চিলির বিপক্ষে জোড়া গোল, কোয়ার্টার ফাইনালে ডেনমার্কের বিপক্ষে করেছিলেন জোড়া অ্যাসিস্ট। সেমিফাইনালে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে করেন জয় সূচক এক গোল। ফাইনালে স্বাগতিক ফ্রান্সের বিপক্ষে ইনজুরি নিয়ে খেলায় ছিলেন না ছন্দে।

দল ব্রাজিল শিরোপা না জিততে পারলেও চার গোল ও তিন অ্যাসিস্টে সেবার গোল্ডেন বল ওঠে রোনালদোর হাতে।

২০০২ বিশ্বকাপ: অলিভার কান

বিশ্বকাপের ইতিহাসে অলিভার কানই একমাত্র ফুটবলার যিনি গোলকিপার হয়েও গোল্ডেন বল জিতেছেন। ২০০২ সালে তিনি এই নজির গড়েন। আক্ষরিক অর্থেই সে বিশ্বকাপে অলিভার কান জার্মানির প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। সেই আসরে তাদের ফাইনালে খেলার বড় কারণ ছিল অলিভার কানের অবিশ্বাস্য সব সেভ। ফাইনালের আগে পুরো আসরে জার্মানি গোল হজম করেছিলো মাত্র একটি। যদিও সেবার ব্রাজিলের বিপক্ষে হেরেই শেষ হয় জার্মানির বিশ্বকাপ। তবে দল বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন না হলেও গোলকিপিংকে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ায় অলিভার কানই জিতে নেন গোল্ডেন বলের পুরস্কার।

২০০৬ বিশ্বকাপ: জিনেদিন জিদান

বাছাই পর্বে ফ্রান্সকে খাবি খাওয়া থেকে বাঁচাতেই অবসর থেকে ফেরেন জিনেদিন জিদান। ২০০৬ বিশ্বকাপে দলে ফিরে বাছাই পর্ব পার করে মূল পর্বে নিয়ে আসেন ফ্রান্সকে। শেষ ষোলতে স্পেনের বিপক্ষে ফ্রান্সের ৩-১ গোলের জয়ে শেষ গোলটি করেন তিনি।

জিদানের আসল রুপ দেখা যায় কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিলের বিপক্ষে। সেসময়ে তারকায় ঠাসা ব্রাজিলকে পুরো ম্যাচে একাই নাচিয়ে ছাড়েন। ৫৭ মিনিটে জিদানের নেওয়া ফ্রি কিক থেকে গোল করে ফ্রান্সকে সেমিফাইনালে নিয়ে যান ফরাসি স্ট্রাইকার থিয়েরি অঁরি।

সেমিফাইনালেও পর্তুগালের বিপক্ষে জিদানের একমাত্র গোলে জয় পেয়ে ফাইনালে উঠে ফ্রান্স। ফাইনালেও গোল পান জিদান। কিন্তু ইতালির ফুটবলার মার্কো মাতেরাজ্জি তার বোনকে উদ্দেশ্য করে গালি দেওয়ায় রাগে নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাকে মাথা দিয়ে ঢুঁস দিয়ে বসেন জিদান। রেফারি সাথে সাথে জিদানকে লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠ থেকে বের করে দেন। নিজেদের নেতাকে হারিয়ে টাইব্রেকারে ইতালির সাথে আর পেরে ওঠেনি ফ্রান্স। তবে এই কাণ্ডের পরেও সেই আসরের গোল্ডেন বল জিদানই জিতে নেন।

২০১০ বিশ্বকাপ: দিয়েগো ফোরলান

২০০৬ বিশ্বকাপে বাছাইপর্ব পার হতে না পারায় ২০১০ বিশ্বকাপে শুরু থেকেই ভালো করার চাপ অনুভব করছিলো উরুগুয়ে। তাদের ত্রাণকর্তা হিসেবে হাজির হন দিয়েগো ফোরলান। গ্রুপ পর্বে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তিনি করেন জোড়া গোল। কোয়ার্টার ফাইনালে ঘানার বিপক্ষে অসাধারণ এক দূরপাল্লার গোল করে উরুগুয়েকে সমতায় ফেরান ফোরলান। সেমিফাইনালে নেদারল্যান্ডের বিপক্ষেও গোল পান তিনি, কিন্তু উরুগুয়ে ম্যাচটা হেরে যায় ৩-২ গোলে। তবে পাঁচ গোল ও এক অ্যাসিস্টে উরুগুয়েকে সেমিফাইনালে নিয়ে আসায় সেবারের গোল্ডেন বল পেয়ে যান ফোরলান
২০১৪ বিশ্বকাপ: লিওনেল মেসি

২০১৪ বিশ্বকাপে মেসির ব্যাপারে আর্জেন্টিনার প্রত্যাশার পারদ ছিল অনেক উঁচুতে। ২৮ বছর আগে ম্যারাডোনা যেভাবে একক নৈপুণ্যে আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ এনে দিয়েছিলেন, মেসিকে নিয়েও ছিলো তেমন স্বপ্ন। ম্যারাডোনার মতো আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ এনে দিতে পারেননি মেসি। ফাইনালে তার দল হেরে গেছে জার্মানির বিপক্ষে। তবে গোল্ডেন বলটা ঠিকই জিতেছিলেন মেসি।

বিশেষ টিপ্পনী: বিশ্বকাপ ফুটবলের ইতিহাসে এ যাবত সবচেয়ে বেশি সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতেছেন ব্রাজিলের খেলোয়াড়েরা। সব মিলিয়ে সাতজন ব্রাজিলিয়ান বিশ্বকাপে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতেছেন।

এখন পর্যন্ত হওয়া বিশটি বিশ্বকাপের মধ্যে দশটি বিশ্বকাপেই সেরা খেলোয়াড় হয়েছে চ্যাম্পিয়ন দলের খেলোয়াড়েরা। তবে ১৯৯৪ বিশ্বকাপের পর টানা পাঁচটি বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন দলের কেউ গোল্ডেন বল জিততে পারেননি।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২৫ ঘণ্টা, ১৪ জুন, ২০১৮
Md. Abdur Rumman Khan
Senior Assistant Registrar