Faculty of Humanities and Social Science > Law

নারী অধিকার ও লংঘন সংক্রান্ত আইন

<< < (4/6) > >>

Sultan Mahmud Sujon:
   

নারী ও শিশু নির্যাতনমূলক অপরাধসমূহ কঠোরভাবে দমনের উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় বিধান প্রণয়নকল্পে প্রণীত আইন।
 

যেহেতু নারী ও শিশু নির্যাতনমূলক অপরাধসমূহ কঠোরভাবে দমনের উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় বিধান প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয় ; যেহেতু এতদদ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল :

 

ধারা-১। সংক্ষিপ্ত শিরোনামা :

 

এই আইন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ নামে অভিহিত হইবে।


ধারা-২। সংজ্ঞা :

 

বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে -

    (ক) " অপরাধ " অর্থ এই আইনের অধীন শাস্তিযোগ্য কোন অপরাধ;

    (খ) " অপহরণ " অর্থ এই বলপ্রয়োগ বা প্রলুব্ধ করিয়া বা ফুসলাইয়া বা ভুল বুঝাইয়া বা ভীতি প্রদর্শন করিয়া কোন স্থান হইতে কোন ব্যক্তিকে অন্যত্র যাইতে বাধ্য করা ;

    (গ) " আটক " অর্থ কোন ব্যক্তিকে তাহার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোন স্থানে আটকাইয়া রাখা ;

    (ঘ) " ট্রাইব্যুনাল " অর্থ এই আইনের অধীন গঠিত কোন ট্রাইবু্যনাল ;

    (ঙ) " ধর্ষণ " অর্থ ধারা ৯-এর বিধান সাপেক্ষে, Penal Code, 1860 (Act XLV of 1860) এর Section 375-  এ সংজ্ঞায়িত rape ;

    (চ) " নবজাতক " শিশু অর্থ অনূর্ধ চল্লিশ দিন বয়সের কোন শিশু;

    (ছ) " নারী " অর্থ যে কোন বয়সের নারী ;

    (জ) " মুক্তিপণ " অর্থ আর্থিক সুবিধা বা অন্য যে কোন প্রকারের সুবিধা ;

    (ঝ) " ফৌজদারী কার্যবিধি " অর্থ Code of Criminal Procedure, 1898 (Act V of 1898) ;

    (ঞ) " যৌতুক " অর্থ কোন বিবাহের কনে পক্ষ কর্তৃক বিবাহের বর বা বরের পিতা বা মাতা বর পক্ষের অন্য কোন ব্যক্তিকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে উক্ত বিবাহের সময় বা তত্পূর্ব বা বৈবাহিক সম্পর্ক বিদ্যমান থাকাকালে, বিবাহ স্থির থাকার শর্তে, বা বিবাহের পণ হিসাবে, প্রদত্ত অথবা প্রদানে সম্মত অর্থ, সামগ্রী বা অন্যবিধ সম্পদ, এবং উক্ত শর্ত বা পণ হিসাবে বর বা বরের পিতা, মাতা বা বর পক্ষের অন্য কোন ব্যক্তি কর্তৃক কনে বা কনে পক্ষের কোন ব্যক্তির নিকট দাবিকৃত অর্থ, সামগ্রী বা অন্যবিধ সম্পদ ;

              [ এখানে ২০০৩ সালে কিছু সংশোধন আনা হয়েছে ]

     

    (ট) " শিশু " অর্থ অনধিক চৌদ্দ বয়সের কোন ব্যক্তি;

     

              [ এখানে ২০০৩ সালে কিছু সংশোধন আনা হয়েছে ]

     (ঠ) " হাইকোর্ট " বিভাগ অর্থ বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট-এর হাইকোর্ট বিভাগ।

ধারা-৩। আইনের প্রাধান্য :

 

আপাতত বলবত্‍ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলী কার্যকর থাকিবে।

 

ধারা-৪। দহনকারী, ইত্যাদি পদার্থ দ্বারা সংঘটিত অপরাধের শাস্তি:

    (১) যদি কোন ব্যক্তি দহনকারী, ক্ষয়কারী অথবা বিষাক্ত পদার্থ দ্বারা কোন শিশু বা নারীর মৃত্যু ঘটানো বা মৃত্যু ঘটানোর চেষ্টা করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদন্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অনূর্ধ্ব এক লক্ষ টাকা অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

    (২) যদি কোন ব্যক্তি দহনকারী, ক্ষয়কারী বা বিষাক্ত পদার্থ দ্বারা কোন শিশু বা নারীকে এমনভাবে অাহত করেন যাহার ফলে উক্ত শিশু বা নারীর দৃষ্টিশক্তি বা শ্রবণশক্তি নষ্ট হয় বা শরীরের কোন অঙ্গ, গ্রন্থি বা অংশ বিকৃত বা নষ্ট হয় বা তাহার শরীরের অন্য কোন স্থান আহত হয়, তাহা হইলে উক্ত শিশুর বা নারীর-

            (ক) দৃষ্টিশক্তি বা শ্রবণশক্তি , নষ্ট বা মুখমনন্ডল, স্তন বা যৌনাঙ্গ বিকৃত বা নষ্ট হওয়ার ক্ষেত্রে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদন্ডে যা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অনূর্ধ্ব এক লক্ষ টাকার অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন ;
            (খ) শরীরের অন্য কোন অঙ্গ, গ্রন্থি বা অংশ বিকৃত বা নষ্ট হওয়ার বা শরীরের কোন স্থানে আঘাত পাওয়ার ক্ষেত্রে, উক্ত ব্যক্তি অনধিক চৌদ্দ বত্সর কিন্তু অন্যূন সাত বত্সরের সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অনূর্ধ্ব পঞ্চাশ হাজার টাকার অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

    (৩) যদি কোন ব্যক্তি কোন দহনকারী, ক্ষয়কারী অথবা বিষাক্ত পদার্থ কোন শিশু বা নারীর উপর নিক্ষেপ করেন বা করার চেষ্টা করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি, তাহার উক্তরূপ কার্যের দরুন সংশ্লিষ্ট শিশু বা নারীর শারীরিক, মানসিক বা অন্য কোনভাবে কোন ক্ষতি না হইলেও, অনধিক সাত বত্সর কিন্তু অন্যুন তিন বত্সরের সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অনূর্ধ্ব পঞ্চাশ হাজার টাকার অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

    (৪) এই ধারার অধীন অর্থদন্ডের অর্থ প্রচলিত আইনের বিধান অনুযায়ী দন্ডিত ব্যক্তির নিকট হইতে বা তাহার বিদ্যমান সম্পদ বা তাহার মৃত্যুর ক্ষেত্রে মৃত্যুর সময় রাখিয়া যাওয়া সম্পদ হইতে আদায় করিয়া অপরাধের দরুন যে ব্যক্তির মৃত্যু ঘটিয়াছে তাহার উত্তরাধিকারীকে বা ক্ষেত্রমত, যেই ব্যক্তি শারীরিক বা মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হইয়াছেন, সেই ব্যক্তিকে বা সেই ব্যক্তির মৃত্যুর ক্ষেত্রে, তাহার উত্তরাধিকারীকে প্রদান করা হইবে।

  ধারা-৫। নারী পাচার, ইত্যাদির শাস্তি :

    (১) যদি কোন ব্যক্তি পতিতাবৃত্তি বা বেআইনী বা নীতিবিগর্হিত কোন কাজে নিয়োজিত করার উদ্দেশ্যে কোন নারীকে বিদেশ হইতে আনয়ন করেন বা বিদেশে পাচার বা প্রেরণ করেন অথবা ক্রয় বা বিক্রয় করেন বা কোন নারীকে ভাড়ায় বা অন্য কোনভাবে নির্যাতনের উদ্দেশ্যে হস্তান্তর করেন, বা অনুরূপ কোন উদ্দেশ্যে কোন নারীকে তাহার দখলে, জিম্মায় বা হেফাজতে রাখেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদন্ডে বা যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

    (২) যদি কোন নারীকে কোন পতিতার নিকট বা পতিতালয়ের রক্ষণাবেক্ষণকারী বা ব্যবস্থাপকের নিকট বিক্রয়, ভাড়া বা অন্য কোনভাবে হস্তান্তর করা হয়, তাহা হইলে যে ব্যক্তি উক্ত নারীকে অনুরূপভাবে হস্তান্তর করিয়াছেন তিনি, ভিন্নরূপ প্রমাণিত না হইলে, উক্ত নারীকে পতিতাবৃত্তিতে নিয়োজিত করার উদ্দেশ্যে বিক্রয় বা হস্তান্তর করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন এবং তিনি উপ-ধারা (১) -এ উল্লিখিত দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন।

    (৩) যদি কোন পতিতালয়ের রক্ষণাবেক্ষণকারী বা পতিতালয়ের ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত কোন ব্যক্তি কোন নারীকে কোন নারীকে ক্রয় বা ভাড়া করেন বা অন্য কোনভাবে কোন নারীকে দখলে নেন বা জিম্মায় রাখেন, তাহা হইলে তিনি, ভিন্নরূপ প্রমাণিত না হইলে, উক্ত নারীকে পতিতা  হিসাবে ব্যবহার করার উদ্দেশ্যে ক্রয় বা ভাড়া করিয়াছেন বা দখলে বা জিম্মায় রাখিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন এবং উপ-ধারা (১) -এ উল্লিখিত দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন।

ধারা-৬। শিশুপাচার, ইত্যাদির শাস্তি :

    (১) যদি কোন ব্যক্তি কোন বেআইনী বা নীতিবিগর্হিত উদ্দেশ্যে কোন শিশুকে বিদেশ হইতে আনয়ন করেন বা বিদেশ প্রেরণ বা পাচার করেন অথবা ক্রয় বা বিক্রয় করেন বা উক্তরূপ কোন উদ্দেশ্যে কোন শিশুকে নিজ দখলে, জিম্মায় বা হেফাজতে রাখেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদন্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

    (২) যদি কোন ব্যক্তি কোন নবজাতক শিশুকে হাসপাতাল, শিশু বা মাতৃসদন নার্সিং হোম, ক্লিনিক ইত্যাদি বা সংশ্লিষ্ট শিশুর অভিভাবকের হেফাজত হইতে চুরি করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি উপ-ধারা (১) -এ উল্লিখিত দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন।

ধারা-৭। নারী ও শিশু অপহরণের শাস্তি :

 

যদি কোন ব্যক্তি ধারা ৫-এ উল্লিখিত কোন অপরাধ সংঘটনের উদ্দেশ্যে ব্যতীত অন্য কোন উদ্দেশ্যে কোন নারী বা শিশুকে অপহরণ করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি যাবজ্জীবন কারাদন্ডে বা অন্যূন চৌদ্দ বত্সর সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।
 

ধারা-৮। মুক্তিপণ আদায়ের শাস্তি :

 

যদি কোন ব্যক্তি মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে কোন নারী বা শিশুকে আটক করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদন্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে হইবেন।এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।
 

ধারা-৯। ধর্ষণ, ধর্ষণজনিত কারণে মৃত্যু, ইত্যাদির শাস্তি:

    (১) যদি কোন পুরুষ কোন নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করেন, তাহা হইলে তিনি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে  দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

    (২) যদি কোন ব্যক্তি কর্তৃক ধর্ষণ বা উক্ত ধর্ষণ পরবর্তী তাহার নিষেধ কার্যকলাপের ফলে ধর্ষিতা নারী বা শিশুর মৃত্যু ঘটে, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদন্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অন্যূন এক লক্ষ টাকা অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

    (৩) যদি একাধিক ব্যক্তি দলবদ্ধভাবে কোন নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করেন এবং ধর্ষণের ফলে উক্ত নারী বা শিশুর মৃত্যু ঘটে বা তিনি আহত হন, তাহা হইলে ঐ দলের প্রত্যেক ব্যক্তি মৃত্যুদন্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অন্যূন এক লক্ষ টাকা অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

    (৪) যদি কোন ব্যক্তি কোন নারী বা শিশুকে-

    (ক) ধর্ষণ করিয়া মৃত্যু ঘটানোর বা আহত করার চেষ্টা করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন ;

    (খ) ধর্ষণের চেষ্টা করেন, তাহা হইলে ব্যক্তি অনধিক দশ বত্‍‌সর কিন্তু অন্যূন পাঁচ বত্সর সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

    (৫) যদি পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন সময়ে নারী ধর্ষিতা হন, তাহা হইলে যাহাদের হেফাজতে থাকাকালীন উক্তরূপ ধর্ষণ সংঘটিত হইয়াছে, সেই ব্যক্তি বা ব্যক্তিগণ ধর্ষিতা নারীর হেফাজতের জন্য সরাসরিভাবে দায়ী ছিলেন, তিনি বা তাহারা প্রত্যেকে, ভিন্নরূপ প্রমাণিত না হইলে, হেফাজতের ব্যর্থতার জন্য, অনধিক দশ বত্সর কিন্তু অন্যূন পাঁচ বত্সরের সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অন্যূন দশ হাজার টাকা অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

     

     [ এই ধারাটির সাথে ২০০৩ সালে ৯ ক ধারা সংযোজিত করা হয়েছে  এবং কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে ]

ধারা-১০। যৌন পীড়ন, ইত্যাদির দন্ড :

    (১) কোন পুরুষ অবৈধভাবে তাহার যৌন কামনা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে তাহার শরীরের যে কোন অঙ্গ বা কোন বস্তু দ্বারা কোন নারী বা শিশুর যৌনাঙ্গ বা অন্য কোন অঙ্গ স্পর্শ করেন তাহা হইলে তাহার এই কাজ হইবে যৌন পীড়ণ।তজ্জন্য উক্ত পুরুষ অনধিক দশ বত্সর কিন্তু অন্যূন তিন বত্সর সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

     

    (২) কোন পুরুষ অবৈধভাবে তাহার যৌন কামনা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে কোন নারীর শ্লীলতাহানি করিলে বা অশোন অঙ্গভঙ্গি করিলে তাহার এ্ই কাজ হইবে যৌন পীড়ণ এবং তজ্জন্য উক্ত পুরুষ অনধিক সাত বত্সর কিন্তু অন্যূন দুই বত্সর সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

     

                   [ এই ধারাটি ২০০৩ সালে সংশোধন করা হয়েছে ]

 

ধারা-১১।যৌতুকের জন্য মৃত্যু ঘটানো, ইত্যাদির শাস্তি :

    যদি কোন নারীর স্বামী অথবা স্বামীর পিতা, মাতা, অভিভাবক, আত্নীয় বা স্বামীর পক্ষে অন্য কোন ব্যক্তি যৌতুকের জন্য উক্ত নারীর মৃত্যু ঘটান বা মৃত্যু ঘটানোর চেষ্টা করেন, উক্ত নারীকে আহত করেন বা আহত করার চেষ্টা করেন, তাহা হইলে উক্ত স্বামী, স্বামীর পিতা, মাতা, অভিভাবক, আত্নীয় বা ব্যক্তি
    (ক) মৃত্যু ঘটানোর জন্য মৃত্যুদন্ডে ঘটানোর চেষ্টার জন্য যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং উভয়  ক্ষেত্রে উক্ত দন্ডের অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন ;

    (খ) আহত করার জন্য যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে বা আহত করার চেষ্টা করার জন্য অনধিক চৌদ্দ বত্সর কিন্তু অন্যূন পাঁচ বত্সরের সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং উভয় ক্ষেত্রে উক্ত দন্ডের অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

     

     [ এই ধারাটি ২০০৩ সালে সংশোধন করা হয়েছে ]

ধারা-১২। ভিক্ষাবৃত্তি, ইত্যাদির উদ্দেশ্যে শিশুকে অঙ্গহানি করার শাস্তি :

    যদি কোন ব্যক্তি ভিক্ষাবৃত্তি বা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রির উদ্দেশ্যে কোন শিশুর হাত, পা, চক্ষু বা অন্য কোন অঙ্গ বিনষ্ট করেন বা অন্য কোনভাবে বিকলাঙ্গ বা বিকৃত করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদন্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

ধারা-১৩। ধর্ষণের ফলশ্রুতিতে জণ্মলাভকারী শিশু সংক্রান্ত বিধান :

    (১) অন্য কোন আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ধর্ষনের কারণে কোন সন্তান জণ্মলাভ করিলে -

    (ক) উক্ত সন্তানের ভরণপোষণের দায়িত্ব ধর্ষণকারী পালন করিবেন ;

    (খ) উক্ত সন্তান জণ্মলাভের পর সন্তানটি কাহার তত্ত্বাবধানে থাকিবে এবং তাহার ভরণ-পোষণ বাবদ ধর্ষণকারী কি পরিমাণ খরচ তত্ত্বাবধানকারীকে প্রদান করিবে তাহা ট্রাইব্যুনাল নির্ধারণ করিয়া দিতে পারিবে ;

    (গ) উক্ত সন্তান পঙ্গু না হইলে, এই খরচ পুত্র সন্তানের ক্ষেত্রে ২১ বত্সর পর্যন্ত এবং কন্যা সন্তানের ক্ষেত্রে তাহার বিবাহ না হওয়া পর্যন্ত এবং পঙ্গু সন্তানের ক্ষেত্রে তিনি স্বীয় ভরণ-পোষণের যোগ্যতা অর্জন না করা পর্যন্ত প্রদেয় হইবে।

                        [ এই ধারাটিতে কিছু সংশোধন আনা হয়েছে ২০০৩ সালে ]                   

 

ধারা-১৪। সংবাদ মাধ্যমে নির্যাতিতা নারী ও শিশুর পরিচয় প্রকাশের ব্যাপারে বাধা-নিষেধ :

    (১) এই আইনে বর্ণিত অপরাধের শিকার হইয়াছেন এইরূপ নারী বা শিশুর ব্যাপারে সংঘটিত অপরাধ বা তত্সম্পর্কিত আইনগত কার্যধারার সংবাদ বা তথ্য বা নাম-ঠিকানা বা অন্যবিধ তথ্য কোন সংবাদপত্রে বা অন্য কোন সংবাদ মাধ্যমে এমনভাবে প্রকাশ বা পরিবেশন করা যাইবে যাহাতে উক্ত নারী বা শিশুর পরিচয় প্রকাশ না পায়।

    (২) উপ-ধারা (১)-এর বিধান লঙ্ঘনের জন্য দায়ী ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের প্রত্যেকে অনধিক দুই বত্সর কারাদন্ডে বা অনূর্ধ্ব এক লক্ষ টাকা অর্থদন্ডে বা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন।

     

ধারা-১৫। ভবষিত্‍ সম্পত্তি হইতে অর্থদন্ড আদায় :

    এ

Sultan Mahmud Sujon:
     

বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ

ঢাকা,৪ঠা শ্রাবণ,১৪১০/১ঌশে জুলাই,২০০৩

 

সংসদ কর্তৃক গৃহীত নিম্নলিখিত আইনটি ৪ঠা শ্রাবণ ,১৪১০ মোতাবেক ১ঌ শে জুলাই ,২০০৩ তারিখে রাষ্ট্রপতির সম্মতি লাভ করিয়াছে এবং এতদ্বারা এই আইনটি সর্বসাধারণের অবগতির জন্য প্রকাশ করা যাইতেছেঃ-

 

২০০৩ সনের ৩০ নং আইন

 

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন,২০০০ এর সংশোধন কল্পে প্রণীত আইন

 

যেহেতু নিম্নবর্ণেত উদ্দেশ্য পূরণকল্পে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন,২০০০(২০০০ সনের ৮ নং আইন) -এর সংশোধন সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;

 

যেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইলঃ-

 

১।  সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন-

 

(১) এই আইন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) আইন,২০০৩ নামে অভিহিত হইবে।

(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।

 

২।২০০০ সনের ৮ নং আইনের ধারা ২ এর সংশোধন-
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন,২০০০ (২০০০ সনের ৮ নং আইন),অতঃপর উক্ত আইন বলিয়া উল্লিখিত ,এর ধারা ২ এর দফা (ঞ) এবং (ট) এর পরিবর্তে নিম্নরূপ দফা (ঞ) এবং (ট) প্রতিস্থাপিত হইবে,যথাঃ-

           

            "(ঞ)" 'যৌতুক' অর্থ-

                         

(অ) কোন বিবাহের বর বা বরের পিতা বা মাতা বা প্রত্যক্ষভাবে বিবাহের  সহিত জড়িত বর পক্ষের অন্য কোন ব্যক্তি কর্তৃক উক্ত বিবাহের সময় বা তত্পূর্বে বা বৈবাহিক সর্ম্পক বিদ্যমান থাকাকালে ,বিবাহ স্থিও থাকার শর্তে ,বিবাহের পণ হিসেবে বিবাহের কনে পক্ষের নিকট দাবীকৃত অর্থ ,সামগ্রী বা অন্যবিধ সম্পদ:

 

অথবা

 

 (আ) কোন বিবাহের কনে পক্ষ কর্তৃক বিবাহের বর বা বরের পিতা বা মাতা বা প্রত্যক্ষভাবে বিবাহের সহিত জড়িত বর  পক্ষের অন্য কোন ব্যক্তিকে উক্ত বিবাহের সময় বা তত্‌পূর্বে বা বৈবাহিক সর্ম্পক বিদ্যমান থাকাকালে ,বিবাহ স্থির থাকার শর্তে, বিবাহের পণ হিসবে প্রদত্ত বা প্রদানে সম্মত অর্থ, সামগ্রী বা অন্যবিধ সম্পদ;

           

                  (ট)  'শিশু' অর্থ অনধিক ষোল বত্সর বয়সের কোন ব্যক্তি ।

 

৩। ২০০০ সনের ৮নং আইনের ধারা ৯ এর সংশোধনঃ-

 

উক্ত ধারা ৯ এর উপধারা (১) এর ব্যাখ্যাতে দুইবার উল্লিখিত ' চৌদ্দ বত্সরের ' শব্দগুলির পরিবর্তে উভয় স্থানে 'ষোল বত্সরের' শব্দগুলি প্রতিস্থাপিত হইবে।

 

৪। ২০০০ সনের  ৮নং আইনে নূতন ধারা ৯ক এর সন্নিবেশ :-

 

উক্ত আইনের ধারা ৯ এর পর নিম্নরূপ নতুন ধারা ৯ক সন্নিবেশিত হইবে,যথাঃ-

         

       "৯ক"। নারীর আত্নহত্যায় প্ররোচনা,ইত্যাদির শাস্তি :- কোন নারীর সম্মতি ছাড়া বা ইচ্ছার

                বিরুদ্ধে কোন ব্যক্তির ইচ্ছাকৃত (willful) কোন কার্য দ্বারা সম্ভমহানি হইবার প্রত্যক্ষ

                কারণে কোন নারী আত্নহত্যা করিলে উক্ত ব্যক্তি উক্ত নারীকে অনুরূপ কার্য আত্নহত্যা

                করিতে প্ররোচিত করিবার অপরাধে অপরাধী হইবেন এবং উক্ত অপরাধের জন্য তিনি

                অনধিক দশ বত্সর কিন্তু অন্যূন পাঁচ বত্সর সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার

                অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডিত হইবেন।

 

৫।২০০০ সনের ৮ নং আইনের ধারা ১০ এর প্রতিস্থাপনঃ-
উক্ত আইনের ধারা ১০ এর পরিবর্তে নিম্নরূপ ধারা ১০ প্রতিস্থাপিত হইবে, যথাঃ-

     

       "১০"।যৌন পীড়ন ইত্যাদির দন্ডঃ- যদি কোন ব্যক্তি অবৈধভাবে তাহার যৌন কামনা চরিতার্থ করার

               উদ্দেশ্যে তাহার শরীরের যে কোন অঙ্গ বা কোন বস্তু দ্বারা কোন নারী বা শিশুর যৌন অঙ্গ

               বা অন্য কোন অঙ্গ স্পর্শ করেন বা কোন নারীর শ্লীলতাহানি করেন তাহা হইলে তাহার এই

               কাজ হইবে যৌন পীড়ন এবং তজ্জন্য উক্ত ব্যক্তি অনধিক দশ বত্সর কিন্তু অন্যূন তিন বছর

               সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

 

৬।২০০০ সনের ৮ নং আইনের ধারা ১১ এর সংশোধন :-
উক্ত আইনের ধারা ১১ এর

         

         (ক)  "উক্ত নারীকে আহত করেন বা আহত করার চেষ্টা করেন", কমাগুলি এবং শব্দগুলির

               পরিবর্তে "কিংবাউক্ত নারীকে মারাত্মক জখম ( grievous hurt) করেন বা সাধারণ

               জখম (simple hurt) করেন" শব্দগুলি এবং বন্ধনীগুলি প্রতিস্থাপিত হইবে;

 

         (খ) দফা (খ) এর পরিবর্তে নিম্নরূপ দফা (খ) ও (গ) প্রতিস্থাপিত হইবে,যথাঃ-

             

                 "(খ) মারাত্নক জখম (grievous hurt) করার জন্য যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে অথবা

                      অনধিক বার বত্সর কিন্তু অন্যূন পাঁচ বত্সর সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং

                      উক্ত দন্ডের অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন ;

                  (গ) সাধারণ জখম (simple hurt) করার জন্য অনধিক তিন বত্সর কিন্তু  অন্যূন এক

                     বত্সর সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং উক্ত দন্ডের অতিরিক্ত অর্থ দন্ডেও দন্ডনীয়

                      হইবেন"।

 

৭।২০০০ সনের ৮ নং আইনের ধারা ১৩ এর প্রতিস্থাপন :-
উক্ত আইনের  ধারা ১৩-এর পরিবর্তে নিম্নরূপ ধারা ১৩ প্রতিস্থাপিত হইবে, যথাঃ-

     

            "১৩ ধর্ষণের ফলশ্রুতিতে জণ্মলাভকারী শিশু সংক্রান্ত বিধান :-

             (১) অন্য কোন আইনে ভিন্নতর

             যাহা কিছুই থাকুক না কেন , ধর্ষণের কারণে কোন সন্তান জণ্মলাভ করিলে-

     

             (ক) উক্ত সন্তানকে তাহার মাতা কিংবা তাহার মাতৃস্থানীয় আত্নীয়স্বজনের তত্ত্বাবধানে রাখা

                   যাইবে ;

             (খ) উক্ত সন্তান তাহার পিতা বা মাতা,কিংবা উভয়ের পরিচয়ে পরিচিত হইবার অধিকারী

                  হইবে;

             (গ) উক্ত সন্তানের ভরণপোষণের ভার রাষ্ট্র বহন করবে;

             (ঘ) উক্ত সন্তানের ভরণপোষণের ব্যয় তাহার বয়স একুশ বত্সর পূর্তি না হওয়া পর্যন্ত

                  প্রদেয় হইবে, তবে একুশ বত্সরের অধিক বয়স্ক কন্যা সন্তানের ক্ষেত্রে তাহার

                  বিবাহ না হওয়া পর্যন্ত এবং পঙ্গু সন্তানের ক্ষেত্রে তিনি স্বীয় ভরণপোষণের যোগ্যতা

              অর্জন না করা পর্যন্ত প্রদেয়।

 

     (২) সরকার বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত সন্তানের ভরণপোষণ বাবদ

               প্রদেয় অর্থেও পরিমাণ নির্ধারণ করিবে।

 

     (৩) এই ধারার অধীনে কোন সন্তানকে ভরণপোষণের জন্য প্রদেয় অর্থ সরকার ধর্ষকের নিকট

          হইতে আদায় করিতে পারিবে এবং ধর্ষকের বিদ্যমান সম্পদ হইতে উক্ত অর্থ আদায় করা

          সম্ভব না হইলে,ভবিষ্যতে তিনি যে সম্পদের মালিক বা অধিকারী হইবেন সেই সম্পদ হইতে

          উহা আদায়যোগ্য হইবে।"

 

৮। ২০০০ সনের ৮ নং আইনের ধারা ১৮-এর প্রতিস্থাপনঃ-
উক্ত আইনের ধারা ১৮ এর পরিবর্তে

    নিম্নরূপ ধারা ১৮ প্রতিস্থাপিত হইবে,যথাঃ-

 

     "১৮৷ অপরাধের তদন্ত -(১) ফৌজদারী কার্যবিধিতে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন ,এই

             আইনের অধীনে কোন অপরাধের তদন্ত --

           (ক) অভিযুক্ত ব্যক্তি অপরাধ সংঘটনের সময়ে হাতে নাতে পুলিশ কর্তৃক ধৃত হইলে বা অন্য

           কোন ব্যক্তি কর্তৃক ধৃত হইয়া পুলিশের নিকট সোপর্দ হইলে, তাহার ধৃত হইবার তারিখ

           হইতে পরবর্তী পনের কার্য দিবসের মধ্যে সম্পন্ন করিতে হইবে; অথবা

      (খ) অভিযুক্ত ব্যক্তি অপরাধ সংঘটনের সময়ে হাতে নাতে ধৃত না হইলে তাহার অপরাধ সংঘটন

           সংক্রান্ত প্রাথমিক তথ্য প্রাপ্তি বা ক্ষেত্রমত , সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা তাহার নিকট হইতে ক্ষমতা

           প্রাপ্ত কর্মকর্তা অথবা ট্রাইব্যুনালের নিকট হইতে তদন্তের আদেশ প্রাপ্তিতে তারিখ হইতে

           পরবর্তী ষাট কার্য দিবসের মধ্যে সম্পন্ন করিতে হইবে।

           

(২) কোন যুক্তিসঙ্গত কারণে উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত সময়ের মধ্যে তদন্তকার্য সমাপ্ত করা সম্ভব না হইলে ,তদন্তকারী কর্মকর্তা কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া অতিরিক্ত ত্রিশ কার্যদিবসের মধ্যে অপরাধের তদন্ত কার্য সম্পন্ন করিবেন এবং তত্সর্ম্পকে কারণ উল্লেখ পূর্বক তাহার নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তা বা ক্ষেত্রমত,তদন্তেও আদেশ প্রদানকারী ট্রাইব্যুনালকে লিখিতভাবে অবহিত করিবেন।

 

(৩) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত সময় সীমার মধ্যেও তদন্তকার্য সম্পন্ন করা না হইলে, সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী কর্মকর্তা উক্ত সময়সীমা অতিক্রান্ত হইবার চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে উক্তরূপ তদন্তকার্য সম্পন্ন না হওয়া সর্ম্পকে তাহার নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তা কিংবা তদন্তের আদেশ প্রদানকারী ট্রাইব্যুনালকে লিখিতভাবে অবহিত করিবেন।

 

(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন তদন্তকার্য সম্পন্ন না হওয়া সর্ম্পকে অবহিত হইবার পর নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তা কিংবা ,ক্ষেত্রমত, তদন্তের আদেশ প্রদানকারী ট্রাইব্যুনাল উক্ত অপরাধের তদন্তভার অন্য কোন কর্মকর্তার নিকট হস্তান্তর করিতে পারিবেন এবং উক্তরূপে কোন অপরাধের তদন্তভার হস্তান্তর করা হইলে তদন্তের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা -

 

                       (ক) অভিযুক্ত ব্যক্তি অপরাধ সংঘটনের সময়ে হাতে নাতে পুলিশ কর্তৃক ধৃত হইলে

                       বা অন্য কোন ব্যক্তি কর্তৃক ধৃত হইয়া পুলিশের নিকট সোপর্দ হইলে,তদন্তের

                       আদেশ প্রাপ্তির তারিখ হইতে পরবর্তী সাত কার্য দিবসের মধ্যে সম্পন্ন করিবেন;

                       অথবা

               

                       (ক) অন্যান্য ক্ষেত্রে তদন্তের আদেশ প্রাপ্তির তারিখ হইতে পরবর্তী ত্রিশ কার্যদিবসের

                                               মধ্যে সম্পন্ন করিতে হইবে।

       

          (৫) উপ-ধারা (৪) এ উল্লিখিত সময়সীমার মধ্যেও তদন্তকার্য সম্পন্ন করা না হইলে, সংশ্লিষ্ট তদন্ত কারী কর্মকর্তা উক্ত  সময়সীমা অতিক্রান্ত হইবার চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে উক্তরূপ তদন্ত কার্য সম্পন্ন না হওয়া সর্ম্পকে তাহার নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তা কিংবা ,ক্ষেত্রমত ,তদন্তের আদেশ প্রদানকারী ট্রাইব্যুনালকে লিখিতভাবে অবহিত করিবেন।

 

        (৬) উপ-ধারা (২) বা উপ-ধারা (৪) এ উল্লিখিত সময়সীমার মধ্যে কোন তদন্তকার্য সম্পন্ন না করার ক্ষেত্রে ,তত্সর্ম্পকে ব্যাখ্যা  সমন্বিত প্রতিবেদন পর্যালোচনার পর নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তা কিংবা,ক্ষেত্রমত,তদন্তের আদেশ প্রদানকারী ট্রাইব্যুনাল যদি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন না হওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী কর্মকর্তাই দায়ী,তাহা হইলে উহা দায়ী ব্যক্তির অদক্ষতা ও অসদাচরণ বলিয়া বিবেচিত হইবে এবং এই অদক্ষতা ও অসদাচরণ তাহার বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদনে লিপিবদ্ধ করা হইবেএবং উপযুক্ত ক্ষেত্রে চাকুরী বিধিমালা অনুযায়ী তাহার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে।

 

        (৭) তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর যদি ট্রাইব্যুনাল তদন্ত সংশ্লিষ্ট তথ্যাদি পর্যালোচনা করিয়া এই

              মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, তদন্ত প্রতিবেদনে আসামী হিসেবে উল্লিখিত কোন ব্যক্তিকে ন্যায়

              বিচারের স্বার্থে সাক্ষী করা বাঞ্চনীয়, তবে উক্ত ব্যক্তিকে আসামীর পরিবর্তে সাক্ষী হিসাবে

              গন্য করিবার নির্দেশ দিতে পারিবে।

                             

          (৮) যদি মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ সমাপ্তির পর ট্রাইব্যুনালের নিকট প্রতীয়মান হয় যে,এই আইনের

               অধীনে কোন অপরাধের তদন্তকারী কর্মকর্তা কোন ব্যক্তিকে অপরাধের দায় হইতে রক্ষা

               কবারষ উদ্দেশ্যে বা তদন্তকার্যে গাফিলতির মাধ্যমে অপরাধটি প্রমাণে ব্যবহারযোগ্য কোন

               আলামত সংগ্রহ বা বিবেচনা না করিয়া বা মামলার প্রমাণের প্রয়োজন ব্যতিরেকে উক্ত

               ব্যক্তিকে আসামীর পরিবর্তে সাক্ষী করিয়া বা কোন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীকে পরীক্ষা না করিয়া

               তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করিয়াছেন ,তাহা হইলে উক্ত তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে উক্ত

               কার্য বা অবহেলাকে অদক্ষতা বা ক্ষেত্রমত ,অসদাচরণ হিসেবে চিহ্নিত করিয়া ট্রাইব্যুনাল

               উক্ত কর্মকর্তার নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষকে তাহার বিরূদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহেনর

               নির্দেশ দিতে পারিবে।

 

          (৯) ট্রাইব্যুনাল কোন আবেদনের প্রেক্ষিতে বা কোন তথ্যের ভিত্তিতে কোন তদন্তকারী কর্মকর্তার

               পরিবর্তে অন্য কোন তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিতে

               পারিবে।

 

৯।২০০০ সনের ৮ নং আইনের ধারা ১৯-এর প্রতিস্থাপনঃ-
উক্ত আইনের ধারা ১ঌ এর পরিবর্তে নিম্নরূপ ধারা প্রতিস্থাপিত হইবে,যথাঃ-

   

 "১৯। অপরাধ বিচারার্থে গ্রহণ, ইত্যাদি--(১) এই আইনের অধীন দন্ডনীয় সকল অপরাধ বিচারার্থ গ্রহণীয় (Cognizable) হইবে।

 

(২) উপ-ধারা (৩) এর বিধান সাপেক্ষে,এই আইনের অধীন দন্ডনীয় শাস্তিযোগ্য অপরাধ সংঘটনে জড়িত মূল এবং প্রত্যক্ষভাবে অভিযুক্ত কোন ব্যক্তিকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হইবে না,যদি-

 

           (ক) তাহাকে মুক্তি দেওয়ার আবেদনের উপর অভিযোগকারী পক্ষকে শুনানীর সুযোগ দেওয়া না হয়;এবং

           (খ) তাহার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগে তিনি দোষী সাব্যস্ত হওয়ার যুক্তিসঙ্গত কারণ রহিয়াছে মর্মে ট্রাইব্যুনাল সন্তুষ্ট হন।

 

(৩) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত কোন ব্যক্তি নারী বা শিশু হইলে কিংবা শারীরিকভাবে অসুস্থ (sick or infirm) হইলে সেই ক্ষেত্রে উক্ত ব্যক্তিকে জামিনে মুক্তি দেওয়ার কারণে ন্যায় বিচার বিঘ্নিত হইবে না মর্মে ট্রাইব্যুনাল সন্তুষ্ট হইলে তাহাকে জামিনে মুক্তি দেওয়া যাইবে।

 

(৪) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত ব্যক্তি ব্যতীত এই আইনের অধীন অপরাধ সংঘটনের  জন্য অভিযুক্ত অন্য কোন ব্যক্তিকে জামিনে মুক্তি দেওয়া ন্যায়সঙ্গত হইবে মর্মে ট্রাইব্যুনাল সন্তুষ্ট হইলে তদমর্মে কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ট্রাইব্যুনাল জামিনে মুক্তি দিতে পারিবে।"

 

 

১০।২০০০সনের ৮নং আইনের ধারা ২০ এর সংশোধন।-
 উক্ত আইনের ধারা ২০ এর -

   

    (ক) উপ-ধারা (৬) এর পরিবর্তে নিম্নরূপ উপ-ধারা (৬) প্রতিস্থাপিত হইবে,যথাঃ-

       

            "(৬) কোন ব্যক্তির আবেদনের প্রেক্ষিতে কিংবা ট্রাইব্যুনাল স্বীয় বিবেচনায় উপযুক্ত মনে

               করিলে এই আইনের ধারা ৯ এর অধীন অপরাধের বিচার কার্যক্রম রুদ্ধদ্বার কক্&

Sultan Mahmud Sujon:
এসিড অপরাধ দমন আইন, ২০০২
(২০০২ সনের ২ নং আইন)
ঢাকা ১৭ই মার্চ, ২০০২/৩রা চৈত্র, ১৪০৮

এসিড অপরাধসমূহ কঠোরভাবে দমনের উদ্দেশ্যে বিধান করার লক্ষ্যে প্রণীত আইন।যেহেতু এসিড অপরাধসমূহ কঠোরভাবে দমনের উদ্দেশ্যে বিধান করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়; সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল :
 

১। সংক্ষিপ্ত শিরোনাম -

এই আইন এসিড অপরাধ দমন আইন, ২০০২ নামে অভিহিত হইবে।
 

২। সংজ্ঞা-

 

বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে-

     " অপরাধ " অর্থ এই আইনের অধীন শাস্তিযোগ্য যে কোন অপরাধ;

     " এসিড " অর্থ দহনকারী, ক্ষয়কারী ও বিষাক্ত যে কোন পদার্থও অন্তভুক্ত হইবে ;

     " ট্রাইব্যুনাল " অর্থ এই আইনের অধীন গঠিত কোন ট্রাইবুনাল;

     " ফৌজদারী কার্যবিধি " অর্থ Code of Criminal Procedure, 1898 (Act V of 1898);

     " হাইকোর্ট বিভাগ " অর্থ বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ।

৩। আইনের প্রাধান্য-

আপাতত বলবত্‍  অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন? এই আইনের বিধানাবলী কার্যকর থাকিবে।

৪। এসিড দ্বারা মৃত্যু ঘটানোর শাস্তি-

    যদি কোন ব্যক্তি এসিড দ্বারা অন্য কোন ব্যক্তির মৃত্যু ঘটান তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদন্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অনূর্ধ্ব এক লক্ষ টাকা অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

৫। এসিড দ্বারা আহত করার শাস্তি -

 

যদি কোন ব্যক্তি কোন এসিড দ্বারা অন্য কোন ব্যক্তিকে এমনভাবে আহত করেন যাহার ফলে তাহার-

    (ক) দৃষ্টিশক্তি বা শ্রবণশক্তি সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে নষ্ট হয় বা মুখমন্ডল, স্তন বা যৌনাংগ বিকৃত বা নষ্ট হয় তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদন্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অনূর্ধ্ব এক লক্ষ টাকার অর্থদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন;

    (খ) শরীরের অন্য কোন অংগ, গ্রন্থি বা অংশ বিকৃত বা নষ্ট হয় বা শরীরের কোন স্থানে আঘাতপ্রাপ্ত হন তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি অনধিক চৌদ্দ বত্সর কিন্তু অন্যূন সাত বত্‍সরের সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অনূর্ধ্ব পঞ্চাশ হাজার টাকার অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

৬। এসিড নিক্ষেপ করা বা নিক্ষেপের চেষ্টা করার শাস্তি-

    যদি কোন ব্যক্তি অন্য কোন ব্যক্তির উপর এসিড নিক্ষেপ করেন বা করিবার চেষ্টা করেন, তাহা হইলে তাহার উক্তরূপ কার্যের দরুণ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির শারীরিক, মানসিক বা অন্য কোনভাবে কোন ক্ষতি না হইলেও, তিনি অনধিক সাত বত্সর কিন্তু অন্যূন তিন বত্সরের সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অনূর্ধ্ব পঞ্চাশ হাজার টাকার অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

৭। অপরাধে সহায়তার শাস্তি-
 

যদি কোন ব্যক্তি এই আইনের অধীন কোন অপরাধ সহায়তা করেন এবং সেই সহায়তার ফলে উক্ত অপরাধ সংঘটিত হয় বা অপরাধটি সংঘটনের চেষ্টা করা হয়, তাহা হইলে ঐ অপরাধ সংঘটনের জন্য বা অপরাধটি সংঘটনের চেষ্টার জন্য নির্ধারিত দন্ডে সহায়তাকারী ব্যক্তি দন্ডনীয় হইবেন।
 

 

৮। মিথ্যা মামলা, অভিযোগ দায়ের, ইত্যাদির শাস্তি-

    (১) যদি কোন ব্যক্তি অন্য কোন ব্যক্তির ক্ষতিসাধনের অভিপ্রায়ে উক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে এই আইনের কোন ধারার অধীন মামলা বা অভিযোগ করার জন্য ন্যায্য বা আইনানুগ কারণ নাই জানিয়াও মামলা বা অভিযোগ দায়ের করেন বা করান তাহা হইলে মামলা বা অভিযোগ দায়েরকারী ব্যক্তি এবং যিনি অভিযোগ দায়ের করাইয়াছেন উক্ত ব্যক্তি অনধিক সাত বত্সর সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

    (২) কোন ব্যক্তির লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ট্রাইবুনাল উপ-ধারা (১) এর অধীন সংঘটিত অপরাধের অভিযোগ গ্রহণ ও মামলার বিচার করিতে পারিবে।

৯। ক্ষতিগ্রস্তকে অর্থদন্ডের অর্থ প্রদান-
 

এই আইনের অধীন অর্থদন্ডের অর্থ প্রচলিত আইনের বিধান অনুযায়ী দন্ডিত ব্যক্তির নিকট হইতে বা তাহার বিদ্যমান সম্পদ, বা তাহার মৃত্যুর ক্ষেত্রে সময় রাখিয়া যাওয়া সম্পদ হইতে আদায় করিয়া অপরাধের দরুণ যে ব্যক্তির মৃত্যু ঘটিয়াছে তাহার উত্তরাধিকারীকে বা ক্ষেত্রমত, যেই ব্যক্তি শারীরিক বা মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হইয়াছেন সেই ব্যক্তিকে বা সেই ব্যক্তির মৃত্যুর ক্ষেত্রে, তাহার উত্তরাধিকারীকে প্রদান করা হইবে।

 

১০। অর্থদন্ড বা ক্ষতিপূরণ আদায়ের পদ্ধতি -
 

এই আইনের অধীনে কোন অর্থদন্ড আরোপ করা হইলে, ট্রাইব্যুনাল সংশ্লিষ্ট জেলার কালেক্টরকে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে বা অনুরূপ বিধি না থাকিলে ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে, অপরাধীর স্থাবর বা অস্থাবর বা উভয়বিধ সম্পত্তির তালিকা প্রস্তুতক্রমে ক্রোক ও নিলাম বিক্রয় ও ক্রোক ছাড়াই সরাসরি নিলামে বিক্রয় করিয়া বিক্রয়লব্ধ অর্থ ট্রাইব্যুনালে জমা দিবার নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে এবং ট্রাইব্যুনাল উক্ত অর্থ অপরাধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে প্রদানের ব্যবস্থা করিবে।

 

১১। অপরাধের তদন্ত -

    (১) এই আইনের অধীন অপরাধের তদন্ত সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসার কর্তৃক অপরাধটি সংঘটনের তথ্য প্রাপ্তি অথবা ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক অপরাধ তদন্তের আদেশ প্রদানের তারিখ হইতে পরবতী ত্রিশ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করিতে হইবে।

    (২) যেইক্ষেত্রে উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত সময়ীমার মধ্যে তদন্ত সমাপ্ত করা সম্ভব না হয় সেইক্ষেত্রে তদন্তকারী কর্মকর্তা যদি বিশেষ কারণ প্রদর্শন করিয়া ট্রাইব্যুনালকে সন্তুষ্ট করিতে পারেন যে, ন্যায়বিচারের স্বার্থে তদন্তের সময়সীমার বৃদ্ধি করা সমীচীন, তাহা হইলে ট্রাইব্যুনাল তদন্তের সময়সীমা অনধিক পনের দিন বর্ধিত করিতে পারিবে।

    (৩) যেইক্ষেত্রে (২) এ উল্লিখিত বর্ধিত সময়সীমার মধ্যে তদন্ত সমাপ্ত না হয়, সেইক্ষেত্রে উক্ত সময় সীমা অতিক্রান্ত হওয়ার পর বা মামলার বিচার চলাকালীন যে কোন সময় ট্রাইব্যুনাল কোন আবেদনের প্রেক্ষিতে বা ন্যায়বিচারের স্বার্থে যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, কোন অপরাধের তদন্ত সম্পন্ন করা বা ক্ষেত্রমত, তত্সম্পর্কে অধিকতর তদন্ত হওয়া প্রয়োজন, তাহা হইলে ট্রাইব্যুনাল অনধিক পনের দিনের মধ্যে তদন্ত বা অধিকতর তদন্ত সমাপ্তির নির্দেশ দিতে পারিবেন।

    (৪) উপ-ধারা (২) বা ক্ষেত্রমত, উপধারা (৩) এর অধীন নির্দেশিত অতিরিক্ত সময়ের মধ্যে কোন তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত সমাপ্ত করিতে ব্যর্থ হইলে, ট্রাইব্যুনাল -

    (ক) অন্য কোন কর্মকর্তার দ্বারা অনধিক পনের দিনের মধ্যে তদন্ত সমাপ্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিতে পারিবেন; এবং

    (খ) এই ধারার অধীন নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে তদন্ত সমাপ্ত করিতে ব্যর্থ তদন্তকারী কর্মকর্তার ব্যর্থতার বিষয়টি অদক্ষতা হিসাবে চিহ্নিত করিয়া উক্ত কর্মকর্তার নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের নিকট তাহার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্ত নির্দেশ দিতে পারিবেন।

    (৫) ট্রাইব্যুনাল কোন আবেদনের প্রেক্ষিতে বা অন্য কোন তথ্যের ভিত্তিতে কোন একজন তদন্তকারী কর্মকর্তার পরিবর্তে অন্য কোন তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিতে পারিবেন।

১২। ক্ষেত্রবিশেষে আসামীকে সাক্ষী গণ্য করা-

 

তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর যদি ট্রাইব্যুনাল তদন্ত সংশ্লিষ্ট তথ্যাদি পর্যালোচনা করিয়া এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, তদন্ত প্রতিবেদনে আসামী হিসাবে উল্লিখিত কোন ব্যক্তিকে ন্যায়বিচারের স্বার্থে সাক্ষী করা বাঞ্ছনীয়, তবে উক্ত ব্যক্তিকে আসামীর পরিবর্তে সাক্ষী হিসাবে গণ্য করিবার নির্দেশ দিতে পারিবেন।

 

১৩। তদন্তকারী কর্মকর্তা কর্তৃক আলামত, সাক্ষ্য ইত্যাদি সংগ্রহে গাফিলতি-

 

যদি মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ সমাপ্তির পর ট্রাইব্যুনালের নিকট প্রতীয়মান হয় যে, এই আইনের অধীন কোন অপরাধের তদন্তকারী কর্মকর্তা কোন ব্যক্তিকে অপরাধের দায় হইতে রক্ষা করিবার উদ্দেশ্যে বা তদন্তকার্যে ইচ্ছাকৃত গাফিলতির মাধ্যমে অপরাধটি প্রমাণে ব্যবহারযোগ্য কোন আলামত সংগ্রহ বা বিবেচনা না করিয়া বা উক্ত ব্যক্তিকে আসামীর পরিবর্তে সাক্ষী করিয়া বা কোন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীকে পরীক্ষা না করিয়া তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করিয়াছেন, তাহা হইলে উক্ত তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে উক্ত কার্য বা অবহেলাকে অদক্ষতা বা, ক্ষেত্রমত, অসদাচরণ হিসাবে চিহ্নিত করিয়া ট্রাইব্যুনাল উক্ত কর্মকর্তার নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষকে তাহার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিতে পারিবেন।

 

১৪৷ অপরাধের আমলযোগ্যতা, অ-আপোসযোগ্যতা ও অ-জামিনযোগ্যতা-

 

এই আইনের অধীন সকল অপরাধ আমলযোগ্য (Cognizable), অ-আপোষযোগ্য (Non-Compoundable) এবং অ-জামিনযোগ্য (Non-Bailable) হইবে।

 

১৫। জামিন সংক্রান্ত বিধান -

 

(১) এই আইনের অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, অভিযুক্ত বা শাস্তিযোগ্য কোন ব্যক্তিকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হইবে না, যদি-

    তাহাকে মুক্তি দেওয়ার আবেদনের উপর রাষ্ট্র বা, ক্ষেত্রমত, অভিযোগকারী পক্ষকে শুনানীর সুযোগ দেওয়া না হয়; এবং

     তাহার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগে তিনি দোষী সাব্যস্ত হওয়ার যুক্তিসঙ্গত কারণ রহিয়াছে মর্মে ট্রাইব্যুনাল সন্তুষ্ট হন; অথবা

      তিনি নারী বা শিশু অথবা শারীরিকভাবে বিকলাঙ্গ না হন এবং তাহাকে জামিনে মুক্তি দেওয়ার কারণে ন্যায়বিচার বিঘ্নিত হইবে না মর্মে ট্রাইব্যুনাল সন্তুষ্ট না হন।

(২) কোন অপরাধের তদন্ত সমাপ্তির পর তদন্ত প্রতিবেদন বা সেই সূত্রে প্রাপ্ত অন্যান্য তথ্যের ভিত্তিতে যদি ট্রাইব্যুনাল বা ক্ষেত্রমত, আপীল আদালত এইমর্মে সন্তুষ্ট হন যে, কোন ব্যক্তি উক্ত অপরাধের সহিত জড়িত নহেন বলিয়া বিশ্বাস করিবার যুক্তিসঙ্গত কারণ রহিয়াছে, তাহা হইলে ট্রাইব্যুনাল বা আপিল আদালত সংশ্লিষ্ট তথ্য ও কারণ উল্লেখপূর্বক উক্ত ব্যক্তিকে জামিনে মুক্তির আদেশ দিতে পারিবেন।

 
 

১৬। বিচার পদ্ধতি -

 

(১) এই আইনের অধীন কোন অপরাধের বিচার কেবলমাত্র ধারা ২৩-এর অধীন গঠিত এসিড অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে বিচারযোগ্য হইবে।

(২) ট্রাইব্যুনালে কোন মামলার শুনানী শুরু হইলে উহা শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্রতি কর্মদিবসে একটানা চলিবে।

(৩) ট্রাইব্যুনালে বিচারের জন্য মামলার নথি প্রাপ্তির তারিখ হইতে নব্বই দিনের মধ্যে বিচারকার্য সমাপ্ত করিবেন।

(৪) কোন মামলার বিচারকার্য শেষ না করিয়া যদি কোন ট্রাইব্যুনালের বিচারক বদলী হইয়া যান, তাহা হইলে তিনি বিচারকার্যের যেই পর্যায়ে মামলাটি রাখিয়া গিয়াছেন, সেই পর্যায়ে হইতে তাহার স্থলাভিষিক্ত বিচারক বিচার করিবেন এবং তাহার পূর্ববতী বিচারক যে সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করিয়াছেন সেই সাক্ষীর এবং তাহার পূর্ববতী বিচারক যে সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করিয়াছেন সেই সাক্ষীর এবং তাহার পূর্ববর্তী বিচারক যে সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করিয়াছেন সেই সাক্ষীর সাক্ষ্য পুনরায় গ্রহণ করার প্রয়োজন হইবে না।

      তবে শর্ত থাকে যে, ন্যায়বিচারের স্বার্থে যদি বিচারক কোন সাক্ষীর সাক্ষ্য পুনরায় গ্রহণ করা অপরিহার্য বলিয়া মনে করেন, তাহা হইলে তিনি সাক্ষ্য গ্রহণ করা হইয়াছে এমন যে কোন সাক্ষীকে তলব করিয়া পুনরায় তাহার সাক্ষ্য গ্রহণ করিতে পারিবেন।

(৫) ধারা ৪, ৫ ও ৬ এর অধীন কোন অপরাধের বিচারের ক্ষেত্রে, কোন আবেদনের প্রেক্ষিতে, ট্রাইবুনাল উপযুক্ত মনে করিলে অপরাধের শিকার কোন ব্যক্তি বা অন্য কোন সাক্ষীর জবানবন্দি রুদ্ধদ্বারা কক্ষে গ্রহণ করিতে পারিবেন৷

 

 

১৭। অভিযুক্ত শিশুর বিচার পদ্ধতি -

 

কোন শিশু এই আইনের অধীন অপরাধ সংঘটনের অভিযোগে অভিযুক্ত হইলে তাহার ক্ষেত্রে Children Act, 1974 (Act XXXIX of 1974) এর বিধানাবলী যতদূর সম্ভব অনুসরণ করিতে হইবে।

 

১৮। আসামীর অনুপস্থিতিতে বিচার-

 

(১) যদি ট্রাইব্যুনাল এই মর্মে বিশ্বাস করিবার যুক্তিসংগত কারণ থাকে যে, -
      (ক) অভিযুক্ত ব্যক্তি তাহার গ্রেফতার বা তাহাকে বিচারের জন্য সোপর্দকরণ এড়াইবার জন্য পলাতক রহিয়াছে বা আত্নগোপন করিয়াছে; এবং
      (খ) তাহার আশু গ্রেফতারের কোন সম্ভাবনা নাই, তাহা হইলে ট্রাইব্যুনাল অন্তত দুইটি বাংলা দৈনিক খবরের কাগজে প্রজ্ঞাপিত আদেশ দ্বারা, আদেশে উল্লিখিত সময়, যাহা পনের দিনের বেশী হইবে না, এর মধ্যে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিতে পারিবে এবং উক্ত সময়ের মধ্যে যদি অভিযুক্ত ব্যক্তি ট্রাইব্যুনালে হাজির হইতে ব্যর্থ হন, তাহা হইলে ট্রাইব্যুনাল তাহার অনুপস্থিতিতে বিচার সম্পন্ন করিতে পারিবেন।

 

(২) যদি কোন অভিযুক্ত ব্যক্তি ট্রাইব্যুনালে হাজির হইবার পর বা তাহাকে ট্রাইব্যুনাল হাজির করিবার পর  বা তাহাকে ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক জামিনে মুক্তি দেওয়ার পর পলাতক হন, তাহা হইলে তাহার ক্ষেত্রে উপ-ধারা (১) এর বিধান প্রযোজ্য হইবে না, এবং সেই ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনাল কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া, অভিযুক্ত ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে তাহার বিচার সম্পন্ন করিতে পারিবে।

 

১৯। ম্যাজিষ্ট্রেট কর্তৃক যে কোন স্থানে জবানবন্দি গ্রহণের ক্ষমতা

 

(১) এই আইনের অধীন সংঘটিত কোন অপরাধের তদন্তকারী কোন পুলিশ কর্মকর্তা বা তদন্তকারী অন্য কোন ব্যক্তি কিংবা অকুস্থলে কোন আসামীকে ধৃত করার সময় কোন পুলিশ কর্মকর্তা যদি মনে করেন যে, ঘটনা সম্পর্কে ওয়াকেবহাল বা ঘটনাটি নিজ চক্ষে দেখিয়াছেন এমন কোন ব্যক্তির জবানবন্দি অপরাধের ত্বরিত বিচারের স্বার্থে কোন ম্যাজিষ্ট্রেট কর্তৃক অবিলম্বে লিপিবদ্ধ করা প্রয়োজন, তাহা হইলে তিনি কোন প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেটকে উক্ত ব্যক্তির জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করিবার জন্য লিখিতভাবে বা অন্য কোনভাবে অনুরোধ করিতে পারিবেন।

 

(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লেখিত ম্যাজিষ্ট্রেট ঘটনাস্থলে বা অন্য কোন যথাযথ স্থানে উক্ত ব্যক্তির জবানবন্দি গ্রহণ করিবেন এবং উক্তরূপে গৃহীত জবানবন্দি তদন্ত প্রতিবেদনের সহিত সামিল করিয়া ট্রাইব্যুনালে দাখিল করিবার নিমিত্ত তদন্তকারী কর

Sultan Mahmud Sujon:
১৯৬৫ সালের
শ্রমিক নিয়োগ (স্থায়ী আদেশ আইন)
[The Employment of Labour (Standing Orders) Act, 1965]
[১৯৬৫ সালের ৮ নং আইন]

[১লা সেপ্টেম্বর, ১৯৬৫]

১৯৬০ সালের শিল্প ও বানিজ্যিক নিয়োগ (স্থায়ী আদেশ) অধ্যাদেশ বাতিল এবং কতিপয় সংশোধনীসহ পুন:প্রণয়নের উদ্দেশ্যে প্রণীত আইন।

যেহেতু দোকান ও বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে এবং শিল্প প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত শ্রমিকদের চাকুরীর শর্তাবলী নিয়ন্ত্রনের জন্য ১৯৬০ সালের শিল্প ও বানিজ্যিক নিয়োগ (স্থায়ী অাদেশ) অধ্যাদেশটি বাতিল এবং কতিপয় সংশেধনীসহ পুন:প্রণয়ন করা সমীচীন এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়াদির জন্য প্রয়োজন;
সেহেতু নিম্নোক্ত আইন প্রণয়ন করা হইলো:

ধারা-১। সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, আওতা, প্রবর্তন ও প্রয়োগ (Short title, extent, commencement and application): এই আইনকে ১৯৬৫ সালের শ্রমিক নিয়োগ স্থায়ী আদেশ আইন নামে অভিহিত করা হইবে।
(২) এই  আইন সমগ্র বাংলাদেশে প্রযোজ্য হইবে।
(৩) ইহা  অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
(৪) ইহা  প্রযোজ্য হইবে-
(ক) যে সকল   দোকান বা বানিজ্য প্রতিষ্ঠানের উপর [১৯৬৫ সালের দোকান ও প্রতিষ্ঠান আইন] প্রযোজ্য, তেমন সকল  দোকান ও বানিজ্যক প্রতিষ্ঠানে;
(খ) যে সকল   এলাকায় [১৯৬৫ সালের দোকান ও প্রতিষ্ঠান আইন] প্রযোজ্য, সেই সকল এলাকার সকল শিল্প প্রতিষ্ঠানে; এবং
(গ) [বাংলাদেশের] অন্যান্য এই লাকার প্রত্যেক শিল্প প্রতিষ্ঠানে, যেই ইখানে  পাঁচ বা ততোধিক শ্রমিক নিয়োজিত রহিয়াছেন অথবা পূর্ববর্তী বারো মাসের যে কোনো  দিনে নিয়োজিত ছিলেন।
তবে শর্ত হচ্ছে যে ,সরকারী মালিকানাধীন এবং [সরকার] কর্তৃক প্রত্যক্ষভাবে পরিচালিত কোনো দোকানে অথবা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে অথবা শিল্প প্রতিষ্ঠানে এই  আইনের বিধানসমূহ প্রযোজ্য হইবেনা এবং এই সকল  প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত ব্যক্তিগণ সরকারী কর্মচারী আচরণ বিধিমালা (Government Servant Conduct Rules) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হইবেন ।

ধারা-২। সংজ্ঞাসমূহ (Definitions) :
বিষয় ও প্রসঙ্গের বিপরীত না হইলে এই আইন অনুযায়ী -
(ক) ‘শিক্ষানবিস’  অর্থ, যে ব্যক্তি কাজ শিখিতেছে এবং শিক্ষাকালীন সময়ে ভাতা পাইয়া থাকে, তাহাকে বুঝাইবে;
(খ) ‘বদলী’ অর্থ, সাময়িকভাবে অনুপস্থিত স্থায়ী বা শিক্ষানবিস শ্রমিকের জায়গায় যে শ্রমিককে নিযুক্ত করা হইয়াছে;
(গ) ‘সাময়িক শ্রমিক’ অর্থ, যেই ই শ্রমিককে সাময়িকভাবে কাজে নিযুক্ত করা হইয়াছে;
(ঘ) ‘বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান’ অর্থ, বিজ্ঞাপন প্রচার, কমিশন অথবা মাল চালান দেওয়া ধরনের ব্যবসায় নিযুক্ত প্রতিষ্ঠান, অথবা কোনো বাণিজ্যিক এজেন্সী এবং তত্‍সহ যেই ই কোনো কারখানা বা বাণিজ্যিক সংস্থার কেরাণীর কাজ সংক্রান্ত বিভাগ, কোনো বাণিজ্যিক বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকের সহিত ব্যবসায়ের চুক্তিতে আবদ্ধ যে কোনো ব্যক্তি কর্মচারী নিয়োগ করিয়া ব্যবসায় করিয়া থাকে, তাহার অফিস, কোনো এজেন্ট, যুক্ত স্টক কোম্পানির যে কোনো ইউনিট, যে কোনো বীমা কোম্পানি, যেই  কোনো ব্যাংকিং কোম্পানি বা ব্যাংক, কোনো ব্রোকারের অফিস বা শেয়ার বাজার, কোনো ক্লাব, কোনো হোটেল বা রেস্তোরা বা খাবারের দোকান, কোনো সিনেমা বা থিয়েটার, কিংবা সরকার সরকারী গেজেটে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করিয়া যেই  কোনো শ্রেণীর প্রতিষ্ঠান বা সংস্থাকে এই আইনের আওতাভুক্ত বলিয়া ঘোষণা করিবেন;
(ঙ) ‘ডাইরেক্টর অব লেবার’ অর্থ, সরকার কর্তৃক উক্ত পদে নিযুক্ত অফিসার;
(চ) ‘চাকুরী  হইতে অপসারণ’ অর্থ, দৈহিক বা মানসিক দিক হইতে অক্ষমতা বা ক্রমাগত অসুস্থতা বা এই  ধরনের, অনুরূপ প্রকৃতির অন্য যেই  কোনো কারণে যাহা অসদাচারণ নহে, মালিক কর্তৃক কোনো শ্রমিককে কর্মচ্যুত করা;
(ছ) ‘বরখাস্তকরণ’ অর্থ, অসাদচরণের জন্য মালিক কর্তৃক কোনো শ্রমিককে কর্মচ্যুত করা;
(জ) ‘মালিক’ অর্থ কোনো দোকানে, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকানায় ও ব্যবস্থাপনায় অধিষ্ঠিত কোনো ব্যক্তি, ব্যক্তিসমষ্টি, বিধিবদ্ধ সংস্থা, কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান, তাহাদের উত্তরাধিকারী বা বংশগত উত্তরাধিকারী (অবস্থানুযায়ী যেইরূপ হইবে), এবং তত্‍সহ নিম্নোক্ত ব্যক্তিগণ :-
(i) কোনো কারখানায় উহার ম্যানেজার;
(ii) কোনো স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, বা উহার পক্ষে পরিচালিত কোনো দোকানে, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে ভারপ্রাপ্ত অফিসার, প্রধান নির্বাহী অফিসার; এবং
(iii) অন্য যেই  কোনো দোকান, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রত্যেক ডাইরেক্টর, ম্যানেজার, সেক্রেটারী, এজেন্ট ব্যবস্থাপনার সহিত সংশ্লিষ্ট এবং উহার তদারক ও নিয়ন্ত্রণের জন্য মালিকের নিকট দায়ী অন্য যেই  কোনো কর্মকর্তা বা ব্যক্তি;
(ঝ) ‘ধীরে কাজ করা’ অর্থ একদল শ্রমিক কর্তৃক সংঘবদ্ধভাবে উদ্দেশ্যমূলক ও ইচ্ছাকৃতভাবে স্বাভাবিক কাজের গতি বা উত্‍পাদন মন্থর করা এবং যাহা যান্ত্রিক গোলযোগ, যন্ত্রপাতি বিকল হওয়ার, বিজলী সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ার বা খুচরা যন্ত্রপাতি বা স্বাভাবিক মাল-মশলা সরবাহের কারণে সংঘটিত হয়নি;

(ঞ) ‘শিল্প প্রতিষ্ঠান’ অর্থ কোনো কারখানা বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান, যেইখানে কোনো পণ্য উত্‍পাদন, সংযোজন বা প্রস্তুত করা হয়, অথবা যেইখানে ব্যবহার, পরিবহন, বিক্রয় বা চালান দেওয়ার উদ্দেশ্যে কোনো দ্রব্য বা দ্রব্যাংশ তৈয়ার করা, পরিবর্তন করা, মেরামত করা, ঝালাই করা, শ্রীবৃদ্ধি করা বা প্যাকিং করা হয়, অথবা নৌযানসহ অন্য যেই  কোনো শ্রেণীর যানবাহন, যাহাকে সরকার সরকারী গেজেটে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে এই  আইনের আওতায় শিল্প প্রতিষ্ঠান হিসাবে ঘোষণা করিবেন, এবং তত্‍সহ -
(i) যেই  কোনো মোটর বা বাস সার্ভিস;

‌(ii) যেই  কোনো ডক পোতাশ্রয় বা জেটি;
(iii) যেই  কোনো খনি, গ্যাসফিল্ড বা তৈল উত্তোলন ক্ষেত্র,
(iv) যেই  কোনো বাগান; অথবা
(v) ১৯৬৫ সালের কারখানা আইনে নির্দেশিত যেই  কোনো কারখানা বুঝাইবে;
(ট) ‘শ্রম আদালত’ অর্থ, ১৯৬৯ সালের শিল্প বিরোধ অধ্যাদেশ অনুসারে গঠিত যেই  কোনো আদালত ;
(ঠ) ‘লে-অফ’ অর্থ, কয়লা, বিজলী বা কাঁচামালের স্বল্পতা বা মওজুদ মালের জন্য বা যন্ত্রপাতি বিকল হওয়া বা অন্য কোনো কারণে মালিক কর্তৃক তাহার দোকান, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের মাস্টার রোলে নাম অন্তর্ভুক্ত  রহিয়াছে, এইরূপ শ্রমিককে চাকুরীতে বহাল রাখিতে ব্যর্থতা ও অস্বীকৃতি বা অক্ষমতা প্রকাশ করা;
(ড) ‘স্থায়ী শ্রমিক’ অর্থ, স্থায়ী ভিত্তিতে নিযুক্ত শ্রমিক বা সংশ্লিষ্ট দোকানে বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত যেই  শ্রমিক শিক্ষানবিসের মেয়াদ সন্তোষজনকভাবে সমাপ্ত করিয়াছে;
(ঢ) ‘বাগান’ অর্থ, সিংকোনা, রাবার, কফি বা চা উত্‍পাদনের উদ্দেশ্যে সংরক্ষিত বাগান এবং তত্‍সহ চিনিকলের অধীনস্থ ইক্ষু চাষের খামার, যেইখানে  উক্ত উদ্দেশ্যে পঁচিশ জন বা ততোধিক ব্যক্তিকে কাজে নিযুক্ত করা হইয়াছে;
(ণ) ‘সরকারী কর্মচারী’ অর্থ, ১৮৬০ সালের দন্ডবিধির ২১ ধারায় যাহাদিগকে বুঝানো হইয়াছে ;
(ত)’শিক্ষানবিস’ অর্থ, কোনো স্থায়ী পদ পূরণের জন্য অস্থায়ীভাবে কর্মে নিযুক্ত শ্রমিক, যাহার শিক্ষানবিস হিসাবে কার্যকালের মেয়াদ শেষ হয় নাই;
(থ) ‘ছাঁটাই’ অর্থ, শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসাবে না হইয়া অনাবশ্যকতা হেতু মালিক কর্তৃক শ্রমিকের চাকুরীর অবসান ঘটানো;
(দ) ‘দোকান’ অর্থ, ইস্ট বেঙ্গল শপ্স এ্যান্ড এস্টাব্লিশমেন্টস অ্যাক্ট, ১৯৫১ দ্বারা যেই  সমস্ত দোকান বুঝানো হইয়াছে ;
(ধ) ‘অস্থায়ী শ্রমিক’ অর্থ, মূলত অস্থায়ী ধরনের কাজে নিযুক্ত শ্রমিক এবং অল্প কিছুদিন পর যাহার কাজ শেষ হইবে;
(ন) ‘ট্রেড ইউনিয়ন’ অর্থ, ১৯৬৯ সালের শিল্প সম্পর্ক অধ্যাদেশের অধীনে রেজিষ্ট্রিকৃত ইউনিয়ন;
(প) ‘মজুরী’ অর্থ, ১৯৩৬ সালের মজুরী প্রদান আইন অনুসারে সংজ্ঞায়িত মজুরী;
(ফ) ‘শ্রমিক’ অর্থ, কোনো দোকানে বা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানে বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে কোনো দক্ষ, অদক্ষ, দৈহিক, কারিগরী, বাণিজ্য-সংক্রান্ত বা কেরাণীগিরী ধরনের কাজ করিবার জন্য মজুরী প্রদানের ভিত্তিতে নিযুক্ত ব্যক্তি (শিক্ষানবিশসহ), তাহার চাকুরীর শর্ত ব্যক্ত বা অব্যক্ত, যেই রূপ হইয়া থাকুক না কেন, কিন্তু নিম্নোক্ত ব্যক্তিগণ উহার অন্তর্গত হইবে না-
(i) প্রধানত ব্যবস্থাপনা -সংক্রান্ত প্রশাসনিক দায়িত্বে নিযুক্ত ব্যক্তি; অথবা,
(ii) তদারকির কাজে নিযুক্ত সেই ব্যক্তি, যেই ব্যক্তি তাহার দায়িত্ব হিসাবে, অথবা প্রাপ্ত ক্ষমতার বলে ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত বা প্রশাসনিক ধরনের দায়িত্ব পালন করিয়া থাকে।

ধারা-৩। চাকুরীর শর্তাবলী (Conditions of employment) :

(১) প্রত্যেক দোকানে বা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানে বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকদের চাকুরী  এবং তত্‍সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয় এই  আইনের বিধান অনুসারে নিয়ন্ত্রিত হইবে।
তবে শর্ত এই যে, যেই  কোনো দোকানে, বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানে বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকদের বা যেই  কোনো শ্রেণীর কর্মচারীদের চাকুরী  নিয়ন্ত্রণের জন্য নিজস্ব বিধিমালা থাকিতে পারে, কিন্তু উক্ত বিধিমালা শ্রমিকদের নিকট এই  আইনের বিধান অপেক্ষা কম অনুকূল হইলে চলিবে না।
(২) উপধারা (১)-এর শর্তে বর্ণিত ব্যবস্থা অনুসারে কোনো দোকান, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের বা কোনো শ্রেণীর কর্মচারীদের চাকুরী  নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে কোনো চাকুরী-বিধি থাকিলে, উহা ৩০ ধারার অধীনে নিযুক্ত ইন্সপেক্টরের নিকট উক্ত দোকানের বা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানের বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক অনুমোদনের জন্য পাঠাইবেন এবং ইন্সপেক্টরের অনুমোদন না পাওয়া পর্যন্ত উক্ত চাকুরী-বিধি কার্যকর করা যাইবে না।
(৩) ইন্সপেক্টরের আদেশের ফলে অসন্তুষ্ট যে কোনো ব্যক্তি উক্ত নির্দেশ জারীর ত্রিশ দিনের মধ্যে চীফ ইন্সপেক্টরের নিকট আপিল করিতে পারিবেন এবং তিনি ইন্সপেক্টরের আদেশ বহাল রাখিতে, সংশোধন করিতে বা বাতিল করিতে পারিবেন।
(৪) চীফ ইন্সপেক্টরের আদেশের বিরুদ্ধে তাঁহার নির্দেশ জারির ত্রিশ দিনের মধ্যে সরকারের নিকট দ্বিতীয় আপিল করা যাইবে এবং সরকারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হইবে।

ধারা-৪। শ্রমিকদের শ্রেণীবিভাগ এবং শিক্ষানবিশীর সময়-সীমা (Classification of workers and period of probation) :
(১) কোনো দোকানে বা বাণিজ্যে প্রতিষ্ঠানে বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে চাকুরীতে নিযুক্ত শ্রমিককে তাহার কাজের প্রকৃতি ও শর্ত অনুযায়ী এবং এই  আইনের বিধানমতে নিম্নোক্ত যেই  কোনো শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত  করিতে হইবে :
(ক) শিক্ষানবিশ                   (ঘ) স্থায়ী
(খ) বদলী                         (ঙ) শিক্ষানবিশ এবং
(গ) সাময়িক                      (চ) অস্থায়ী।

(২) কেরানীগিরি ধরনের কাজে নিযুক্ত হইলে শ্রমিকের শিক্ষানবিশ থাকার সময়-সীমা ছয় মাস হইবে এবং অন্য ধরনের শ্রমিকদের বেলায় উক্ত সময়-সীমা তিন মাস হইবে। ছুটির জন্য কর্ম-বিরতি, বে-আইনী ‘লক-আউট’ বা ধর্মঘট (বে-আইনী ধর্মঘট নহে) চলাচালীন সময়ও উহার অন্তর্ভুক্ত  হইবে ।
তবে শর্ত এই  যে,  কোনো দক্ষ শ্রমিকের বেলায় তিন মাস  শিক্ষানবিশ থাকার সময় যদি কোনো কারণে তাহার যোগ্যতা যাচাই করা সম্ভব না হইয়া থাকে, তবে সেই ক্ষেত্রে তাহাকে শিক্ষানবিশ রাখার সময়-সীমা অতিরিক্ত তিন মাস বৃদ্ধি করা যাইতে পারে।
(৩) শিক্ষানবিশ থাকার সময়-সীমার মধ্যে উপধারার বিধানমতে দক্ষ শ্রমিকের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত তিন মাস কোনো শ্রমিককে চাকুরী  হইতে বরখাস্ত করা হইলে একই মালিক যদি তাহাকে পরবর্তী  তিন বত্‍সরের মধ্যে কোনো সময় চাকুরীতে নিযু্ক্ত করিয়া থাকেন, তবে স্থায়ী ভিত্তিতে নিযুক্ত না করা হইয়া থাকিলে তাহাকে শিক্ষানবিশ শ্রমিক বলিয়া গণ্য করিতে হইবে এবং তাহার মোট শিক্ষানবিশীর সময়-সীমার হিসাবের মধ্যে পূর্ববর্তী শিক্ষানবিশী সময়কালকে অন্তর্ভুক্ত  করিতে হইবে।
(৪) কোনো স্থায়ী শ্রমিককে কোনো নূতন পদে শিক্ষানবিশ নিয়োগ করা হইলে শিক্ষানবিশী সময়কালের মধ্যে যেই  কোনো সময় তাহার পুরাতন স্থায়ী পদে চলিয়া আসিতে পারে।
[১৯৯৪ সালের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১নং প্রশ্নের উত্তরের শেষ অংশ]।

Sultan Mahmud Sujon:
ধারা-৫। ছুটি ও অবকাশ (Leave and holidays) :
(১) দোকানে বা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানে বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে চাকুরীতে নিযুক্ত শ্রমিকগণ ১৯৫১ সালের ইস্ট বেঙ্গল শপস এ্যান্ড এস্টাব্লিশমেন্টস অ্যাক্ট, ১৯৬৫ সালের ফ্যাক্টরীজ অ্যাক্ট এবং বর্তমানে প্রচলিত অন্য যে কোনো আইনে নির্দিষ্ট করা যাবতীয় সবেতন ছুটি ও অবকাশ ভোগ করিবার অধিকারী এবং তত্‍সহ সরকারী গেজেটে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে সরকার শ্রমিকদের জন্য আরও যেই  সকল অবকাশ ঘোষণা করিবেন, তাহাসহ তাহারা সবেতন ভোগ করিতে পারিবে।
(২) কোনো শ্রমিক কাজে অনুপস্থিত থাকিয়া ছুটি লইতে চাহিলে উক্ত উদ্দেশ্যে তাহাকে মালিকের নিকট ছুটির ঠিকানা উল্লেখসহ লিখিতভাবে দরখাস্ত করিতে হইবে এবং মালিক বা তাহার ভারপ্রাপ্ত অফিসার দরখাস্ত দাখিলের এক সপ্তাহের মধ্যে এবং ছুটি আরম্ভের দুই দিন পূর্বে (যাহা পূর্বে  হয়) উক্ত দরখাস্তের উপর তাঁহার আদেশ লিপিবদ্ধ করিবেন।
তবে শর্ত এই যে,  জরুরী প্রার্থিত ছুটি যদি দরখাস্ত করিবার দিন হইতে বা উহার তিন দিনের মধ্যে শুরু হয়, তবে সেই ক্ষেত্রে মালিকের বা তাঁহার ভারপ্রাপ্ত অফিসারের আদেশে দরখাস্ত করিবার দিনই দিতে হইবে। প্রার্থিত ছুটি মঞ্জুর করা হইলে সংশ্লিষ্ট শ্রমিককে ছুটির একটি ছাড়পত্র দিতে হইবে। আর ছুটির আবেদন প্রত্যাখ্যান করা বা মূলতবী রাখা হইলে তাহার কারণ উল্লেখসহ মালিককে উক্ত উদ্দেশ্যে রক্ষিত একটি রেজিষ্ট্রারে উহা লিপিবদ্ধ করিতে হইবে। ছুটিতে যাওয়ার পর শ্রমিক যদি ছুটির মেয়াদ বৃদ্ধি করিতে চায় এবং যদি বর্ধিত মেয়াদের জন্য ছুটি পাওনা থাকে, তবে তাহাকে মেয়াদ শেষ হওয়ার যথেষ্ট পূর্বে  মালিকের নিকট ছুটির মেয়াদ বাড়াইবার আবেদনপত্র লিখিয়া পাঠাইতে হইবে এবং মালিক যতদূর সম্ভব শ্রমিকের ছুটির ঠিকানায় বর্ধিত ছুটির আবেদন প্রত্যাখান বা মঞ্জুর করা সম্পর্কে স্বীয় সিদ্ধান্ত লিখিতভাবে জানাইবেন।
(৩) প্রথমে মঞ্জুরকৃত ছুটির মেয়াদ বা পরে মঞ্জুরকৃত বর্ধিত মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও যদি শ্রমিক কাজে অনুপস্থিত থাকে, তবে ছুটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরবর্তী  দশ দিনের মধ্যে কাজে যোগদান না করিলে এবং যথাসময়ে কাজে যোগদান না করিবার সম্পর্কে মালিকের সন্তুষ্টি মোতাবেক কৈফিয়ত না দিলে তাহার চাকুরীর অধিকার হারাইবার সম্ভাবনা থাকিবে।
তবে শর্ত এই  যে, এই  ধারা অনুসারে শ্রমিক যদি তাহার চাকুরীর অধিকার হারায়, তাহা হইলে অতীত চাকুরীর জন্য আইন অনুযায়ী যেই সকল সুযোগ-সুবিধা তাহার প্রাপ্য হইয়াছে, তাহা হইতে তাহাকে বঞ্চিত করা যাইবে না এবং সম্ভব হইলে তাহাকে ‘বদলী’ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত  করিয়া রাখিতে হইবে।
আরও শর্ত এই  যে , উক্ত শ্রমিক যদি ছুটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্বে চাকুরীতে ফিরিয়া আসিতে না পারার কারণ দর্শাইয়া মালিকের নিকট সন্তোষজনক কৈফিয়ত দিতে ব্যর্থ হয়, তবে মালিক দোষ লাঘব করিবার মতো পরিস্থিতি থাকিলে উহা বিবেচনা করিয়া শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসাবে শ্রমিকের প্রত্যাবর্তনের তারিখ হইতে অনধিক সাত দিনের জন্য তাহাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করিতে পারিবেন এবং শ্রমিক ছুটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর হইতে অনুপস্থিত থাকাকালীন সময়ের এবং সাময়িকভাবে বরখাস্ত থাকার সময়ের বেতন হইতে বঞ্চিত হইবে, তাহা হইলে উক্ত শ্রমিক চাকুরীর অধিকার হইতে বঞ্চিত হইবে না।

(৪) যদি একজন শ্রমিকের চাকুরীর, যাহার কোনো বার্ষিক ছুটি [১৯৬৫ সালের দোকান ও প্রতিষ্ঠান আইন], [১৯৬৫ সালের কারখানা অাইন] অথবা সাময়িকভাবে প্রযোজ্য অন্য যেই কোনো আইনের বিধান অনুযায়ী পাওনা থাকে এবং এই ছুটি উপভোগ করিবার আগে ছাঁটাই, কর্মচ্যুতি, বরখাস্ত, অবসান, অবসরগ্রহণ অথবা তাহার পদত্যাগের কারণে তাহার চাকুরীর অবসান হয়, তাহা হইলে অনুরূপ ভোগ্য ছুটির পরিবর্তে তিনি যে হারে মজুরী পাওয়ার অধিকারী ছিলেন, ছুটির সময়ে উক্ত আইনসমূহের বিধান অনুযায়ী সেই হারে মালিক তাহাকে মজুরী প্রদান করিবেন এবং এই মজুরী চাকুরীর অবসানের পরবর্তী দ্বিতীয় কর্মদিবস শেষ হইবার পূর্বে প্রদান করিতে হইবে।

 
ধারা-৬। কাজ বন্ধ রাখা (Stoppage of work) :
(১) যে কোনো সময় অগ্নিকান্ড, আকস্মিক বিপদ, যন্ত্রপাতি বিকল হওয়া, বিজলী সরবরাহ বন্ধ হওয়া, মহামারী, রাজনৈতিক গোলযোগ অথবা মালিকের আয়ত্ব বহির্ভুত অন্য যে কোনো কারণে মালিক তাহার দোকান, বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান বা শিল্প প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণভাবে বা উহার যে কোনো শাখা যে  কোনো সময়ের জন্য বন্ধ রাখিতে পারিবেন।
(২) কাজের সময়ের পরে উক্তরূপে প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হইলে মালিক কারখানার বেলায় উহা সংশিষ্ট শাখার নোটিশ বোর্ডে এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে কোনো প্রকাশ্য স্থানে নোটিশ লটকাইয়া কবে কাজ পুনঃআরম্ভ হইবে এবং বন্ধ থাকার সময় সংশ্লিষ্ট শ্রমিকগণ কর্মস্থলে থাকিবেন কিনা, তাহা স্পষ্ট করিয়া লিখিয়া জানাইবেন।
(৩) কাজের সময়ের মধ্যে উক্তরূপে প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হইলে মালিক কারখানার বেলায় উহার সংশ্লিষ্ট শাখার নোটিশ বোর্ডে এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে কোনো প্রকাশ্য স্থানে নোটিশ লটকাইয়া কাজ কবে পুনঃআরম্ভ হইবে এবং সংশ্লিষ্ট কর্মচারীগণ তাহাদের কর্মস্থল ত্যাগ করিয়া যাইবে, না কর্মস্থলে উপস্থিত থাকিবে, তাহা স্পষ্ট করিয়া লিখিয়া জানাইবেন।
(৪) অনুরূপভাবে কাজ বন্ধ হওয়ার দরুন শ্রমিকগণ আটকা পড়িয়া গেলে-
(ক) আটকা পড়িবার মেয়াদ অনধিক এক ঘন্টা হইলে তজ্জন্য শ্রমিকের কিছুই পাওনা হইবে না;
(খ) এক ঘন্টার বেশি সময় আটকা থাকিলে শ্রমিক পুরা আটক থাকাকালীন সময়ের জন্য বেতন পাইবে।
(৫) কাজ বন্ধ রাখার মেয়াদ যদি একদিনের কাজের সময়ের অতিরিক্ত না হয়, তবে উপধারা (৪)-এর অনুচ্ছেদ (খ) অনুসারে বেতন পাওনা না হইলে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকগণ উহার জন্য কোনো বেতন পাইবে না; কিন্তু কাজ বন্ধ রাখার মেয়াদ যদি একদিনের কাজের সময়ের অতিরিক্ত হইলে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকগণ (বদলী ও সাময়িক শ্রমিক বাদে) একদিনের কাজের সময়ের অতিরিক্ত প্রতিদিনের জন্য বেতন পাইবে, এবং কাজ বন্ধ রাখার মেয়াদ একদিনের কাজের সময়ের অতিরিক্ত হইলে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকগণ (বদলী ও সাময়িক শ্রমিক বাদে) একদিনের কাজের সময়ের অতিরিক্ত প্রতিদিনের জন্য বেতন পাইবে, এবং কাজ বন্ধ রাখার মেয়াদ তিন দিনের অতিরিক্ত হইলে ৯ ধারার বিধান মোতাবেক সংশ্লিষ্ট শ্রমিকদিগকে লে-অফ করা যাইতে পারে এবং উক্ত লে-অফ কাজ বন্ধ হওয়ার দিন হইতে কার্যকরী হইবে, এবং প্রথম তিন দিনের জন্য শ্রমিকদিগকে কোনো বেতন দেওয়া থাকিলে, তাহা লে-অফ বাবদ তাহাদের পাওনা কাটিয়া লওয়া যাইবে।
তবে শর্ত এই  যে,  ঠিকা শ্রমিকের বেলায় পূর্ববর্তী মাসে তাহার প্রতিদিনের গড় আয়ের হিসাব করিয়া পূর্ববর্তী উপধারা মোতাবেক প্রাপ্য মজুরীর হার নির্ণয় করিতে হইবে।
(৬) কোনো দোকানের, বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানের বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের কোনো এক শাখায় বা বিভাগে ধর্মঘট চলিলে, উক্ত শাখা বা বিভাগ অথবা উহার দ্বারা প্রভাবিত অন্য যেই  কোনো শাখা বা বিভাগ মালিক সম্পূর্ণ বা আংশিকভাব বন্ধ রাখিতে পারিবেন  এবং অনুরূপ বন্ধ রাখার সময়ের জন্য শ্রমিকগণ কোনো বেতন পাইবে না।
তবে শর্ত এই  যে,  মালিক উক্ত বন্ধ রাখার বিষয়টি কারখানা হইলে উহার সংশ্লিষ্ট শাখায় বা বিভাগের নোটিশ বোর্ডে ও তত্‍সহ টাইম কিপারের অফিস থাকিলে, তাহার নোটিশ বোর্ডে এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের বেলায় উহার কোনো প্রকাশ্য স্থানে বিজ্ঞপ্তির আকারে লটকাইয়া দিবেন এবং উক্ত বন্ধের মেয়াদ উত্তীর্ণ হইলে কোন তারিখ হইতে কাজ পুনঃআরম্ভ হইবে, উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে তাহারও উল্লেখ থাকিতে হইবে।

ধারা-৭। অব্যাহত চাকুরীর ‘এক বছর’ বা ‘ছয় মাস’ হিসাব (Calculation of ‘one year’ or ‘six months’ of continuous service) : 
এই আইনের উদ্দেশ্যে কোনো শ্রমিক কোনো দোকানে বা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানে বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে পূর্ববর্তী ১২ টি পঞ্জিকা মাসে প্রকৃতপক্ষে যথাক্রমে অন্যূন দুইশত চল্লিশ দিন ও একশত চল্লিশ দিন কাজ করিয়া থাকিলে যথাক্রমে এক বছর ও ছয় মাস কাজ করিয়াছে বলিয়া গণ্য করিতে হইবে এবং সেইভাবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে তাহার অব্যাহত চাকুরীর হিসাব গণনা করিতে হইবে।

ধারা-৮। ৬, ৯, ১০ এবং ১১ ধারা প্রয়োগে বিধি-নিষেধ (Restrictions of applications of sections6, 9, 10 and 11) :
এই আইনের অন্যত্র যাহাই থাকুক না কেন-
(ক) পাঁচজন বা ততোধিক সংখ্যক শ্রমিক যেইখানে  চাকুরীতে নিযুক্ত নাই, অথবা পূর্ববর্তী ১২ মাসে নিযুক্ত ছিল না, সেই সকল  দোকান, বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের বেলায় ৬, ৯, ১০ এবং ১১ ধারার বিধানসমূহ প্রয়োজন হইবে না;
(খ) চাকুরীতে নিযুক্ত শ্রমিকের সংখ্যা যাহাই হউক না কেন, সংশ্লিষ্ট দোকান, বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান বা শিল্প প্রতিষ্ঠান যদি মওসুমী ধরনের হয় এবং সেইখানে যদি মাঝে মাঝে কাজ হইয়া থাকে, তবে তাহাদের ক্ষেত্রেও ৯ হইতে ১১ পর্যন্ত ধারাগুলি প্রযোজ্য হইবে না।
তবে শর্ত এই  যে,  কোনো দোকান বা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান বা শিল্প প্রতিষ্ঠান মওসুমী ধরনের কিনা এবং উহাতে মাঝে মাঝে কাজ চলে কিনা, এই  প্রশ্ন উত্থাপিত হইলে সেই সম্পর্কে সরকারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হইবে।
আরও শর্ত এই যে, যেই সমস্ত দোকান বা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের বেলায় এই ধারার (খ) অনুচ্ছেদ প্রযোজ্য, তাহাদের মালিককে ৬ ধারার (৫) উপধারার অধীনে কাজ বন্ধ হওয়ার কারণে লে-অফ হইলে ৯ হইতে ১১ ধারাগুলি অনুসরণের প্রয়োজন নাই।

ধারা-৯।‘লে-অফ’ শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণের অধিকার (Rights of the laid-off workers for compensation):

(১) যে  শ্রমিকের নাম (বদলী বা সাময়িক শ্রমিক বাদে) কোনো দোকান বা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের মাস্টার রোলের অন্তর্ভুক্ত রহিয়াছে এবং মালিকের অধীনে যাহার অব্যাহতভাবে অন্যূন এক বছর পূর্ণ হইয়াছে, তাহাকে লে-অফ করা হইলে মালিক তাহাকে সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলি বাদে লে-অফের অবশিষ্ট সমস্ত দিনগুলির জন্য ক্ষতিপূরণ বাবদ তাহার মোট মূল বেতন ও মহার্ঘ ভাতার অর্ধেক এবং আবাসিক ভাতা, যদি থাকে, পূর্ণ অংশ প্রদান করিবেন।
তবে শর্ত এই  যে , বদলী শ্রমিক যদি অব্যাহত চাকুরীর এক বত্‍সর পূর্ণ করিয়া থাকে এবং তাহার নাম যদি সংশ্লিষ্ট দোকান বা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের মাস্টার রোলে অন্তর্ভূক্ত থাকে, তাহা হইলে তাহার ক্ষেত্রে এই  ধারার বিধান প্রযোজ্য হইবে না।
আরও শর্ত এই যে, মালিকের সহিত বিপরীত কোনো চুক্তিতে আবদ্ধ না হইয়া থাকিলে কোনো শ্রমিক উপরে বর্ণিত পদ্ধতি মোতাবেক কোনো পঞ্জিকা বত্‍সরের জন্য ৪৫ দিনের বেশি ক্ষতিপূরণ পাইবে না।
(২) উপধারা (১)-এর শর্তে যেই  বিধানই থাকুক না কেন, কোনো শ্রমিককে যদি একটি পঞ্জিকা বত্‍সরের একটানা বা বিরতিসহ ৪৫ দিনের বেশি লে-অফ করিয়া রাখা হইয়া থাকে এবং প্রথম ৪৫ দিন পর লে-অফের মেয়াদ যদি ১৫ দিন বা উহার বেশি হয়, তাহা হইলে (মালিকের সহিত তাহার বিপরীত কোনো চুক্তি না হইয়া থাকিলে) উক্ত শ্রমিককে পরবর্তী  ১৫ বা ততোধিক দিনের জন্য ক্ষতিপূরণ বাবদ তাহার মূল বেতনের ও মহার্ঘ ভাতার এক-চতুর্থাংশ এবং সম্পর্ণূ আবাসিক ভাতা, যদি থাকে, তাহা দিতে হইবে।
(৩) কোনো ক্ষেত্রে কোনো শ্রমিক একটি পঞ্জিকা বত্‍সরে প্রথম ৪৫ দিন লে-অফের পর পুনরায় ১৫ দিন বা তাহার অধিক দিনের জন্য লে-অফ করিবার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে, মালিক তাহাকে লে-অফ করিবার পরিবর্তে ১২ ধারা মোতাবেক ছাঁটাই করিতে পারিবেন।

Navigation

[0] Message Index

[#] Next page

[*] Previous page

Go to full version