লিভার ভালো নেই বুঝবেন যেভাবে

Author Topic: লিভার ভালো নেই বুঝবেন যেভাবে  (Read 1544 times)

Offline Mrs.Anjuara Khanom

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 478
  • Test
    • View Profile
লিভার (যকৃৎ) দেহের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। আমাদের শরীরের বিপাকীয় কার্যাবলী লিভারই সম্পাদন করে। এই অঙ্গ থেকে নিসৃত জারক রসেই খাবার হজম হয়। যাদের লিভার দুর্বল, তাদের পেটে সারাবছর সমস্যা লেগেই থাকে। গবেষকের মতে, লিভারের রোগকে নীরব ঘাতক বলা হয়। কেননা লিভারের যেকোনো রোগ সাধারণত প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়ে না। রোগ বেড়ে গেলে এর লক্ষ্মণ প্রকাশ পায়। অনেক সময় তখন আর কিছু করার থাকে না। লিভার ভালো না থাকার লক্ষণগুলো জেনে নিন-

* দুর্গন্ধযুক্ত নিঃশ্বাস
মুখের স্বাস্থ্য ভালো থাকার পরেও যদি আপনার নিঃশ্বাসের সঙ্গে দুর্গন্ধ বের হয় তাহলে বুঝবেন যে আপনার লিভারের কোনো সমস্যা আছে। লিভারের স্বাস্থ্য ভালো না থাকার একটি লক্ষণ এটি।

* অকারণে ওজন বেড়ে যাওয়া
লিভার যেহেতু চর্বি হজমের জন্য প্রধানত দায়ী সেহেতু এটি যথাযথভাবে কাজ না করলে দেহে চর্বি জমতে থাকে। যার ফলে ব্যাখ্যাতীতভাবে অকারণে ওজন বাড়তে থাকে।

* অ্যালার্জি
লিভার ভালো থাকলে তা এমন সব অ্যান্টিবডি তৈরি করে যেগুলো অ্যালার্জেন বা অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী উপাদানগুলোকে আক্রমণ করে ধ্বংস করে। কিন্তু লিভারের কার্যক্ষমতা কমে গেলে দেহ ওই অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী উপাদানগুলোকে জমা করতে থাকে। এর প্রতিক্রিয়ায় আবার দেহ হিস্টামিন উৎপাদন করতে থাকে যা অ্যালার্জি সৃষ্টিকারক উপাদানগুলো দূর করতে কাজ করে। কিন্তু অতিরিক্ত হিস্টামিন উৎপাদন হলে আবার চুলকানি, ঝিমুনি এবং মাথা ব্যথা হতে পারে।

*ক্রমাগত অবসাদ
দেহে টক্সিন জমা হলে তা মাংসপেশির টিস্যুর বিপাকীয় প্রক্রিয়ায় বাধার সৃষ্টি করে। যা থেকে আবার ব্যাথা এবং শারীরিক অবসাদও সৃষ্টি হতে পারে। ক্লান্তি থেকে মেজাজ খিটখিটে হওয়া, মানসিক অবসাদ এবং ক্ষোভের বিস্ফোরণের মতো সমস্যাও তৈরি হতে পারে। লিভার ভালো না থাকার শীর্ষ লক্ষণগুলোর একটি এটি। দেহে অতি উচ্চ মাত্রায় টক্সিন বা বিষ জমা হওয়ারও একটি লক্ষণ এটি।

* অতিরিক্ত ঘাম বের হওয়া
বেশি বেশি কাজ করার কারণে লিভারের কার্যক্ষমতা কমে যায় এবং সেটি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তখন লিভার দেহের অন্যান্য অঙ্গেও তাপ ছড়িয়ে দেয় এবং অতিরিক্ত ঘাম বের করার মাধ্যমে লিভার নিজেকে ঠাণ্ডা করে।

* ব্রণ
লিভারে জমা হওয়া টক্সিন দেহে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করতে যারে। যা থেকে ত্বকে ব্রণ সৃষ্টি হতে পারে। কার্যক্ষমতা হারানো লিভারের কারণে সৃষ্ট ত্বকের এই সমস্যা ততক্ষণ পর্যন্ত যাবে না যতক্ষণ না পুনরায় লিভারের কার্যক্ষমতার উন্নতি ঘটানো হবে।

তবে যাদের লিভার সুস্থ আছে তারা কিছু খাবার নিয়মিত খেলে রোগব্যাধি এ অঙ্গটি থেকে দূরে থাকবে। যেমন-
* লেবুর গরম পানি : অন্যান্য খাবারের তুলনায় কুসুম গরম পানিতে লেবু চিপে খাওয়ার অভ্যাস লিভারে অনেক বেশি এনজাইম উৎপাদনে সহায়তা করে, এছাড়াও ভিটামিন সি গ্লুটেথিয়ন নামক যে এনজাইম উৎপন্ন করে তা লিভারের ক্ষতিকর টক্সিন দূর করে লিভার পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে। তাই সকালে ঘুম থেকে উঠে ১ গ্লাস কুসুম গরম পানিতে সামান্য লেবু চিপে পান করুন। এতে করে লিভার পরিষ্কার থাকবে।

* সবুজ চা : সবুজ চায়ের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের দেহের ফ্রি সার্জিকেল টক্সিসিটি দূর করে এবং আমাদের লিভার পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে। প্রতিদিন ১-২ কাপ সবুজ চা পান করার ফলে লিভারে জমে থাকা টক্সিন দূর হয়ে যায় এবং পুরো দেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সঠিকভাবে কাজ করতে সক্ষম হয়।

* রসুন : রসুনে রয়েছে সালফারের উপাদান যা লিভারের এঞ্জাইমের সঠিক কাজে সহায়তা করে। এছাড়াও রসুনে রয়েছে অ্যালিসিন ও সেলেনিয়াম যা লিভার পরিষ্কারের পাশাপাশি লিভারের সুস্থতা নিশ্চিত করে। তাই খাবারে প্রতিদিন রসুন ব্যবহার করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

* হলুদ : লিভারের সবচেয়ে পছন্দের খাদ্য উপাদান হলুদ। হলুদ একটি নিরাময় ওষুধ হিসেবে বিবেচিত। এলিভারের ডিটক্স এর পরিমাণ বৃদ্ধি করে, লিভারকে পরিষ্কার করে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে সেইসঙ্গে আমাদের ইমিউন সিস্টেম এর জন্য ব্যবহার করা হয় হলুদ। এটা ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারে। 

* আপেল : পেক্টিন নামক এক প্রকার উপাদান রয়েছে আপেলে। যা শরীরের খারাপ উপাদানগুলো দূর করে ও পরিপাকতন্ত্রকে টক্সিনমুক্ত করে। লিভারকেও টক্সিনমুক্ত করার কারণে, লিভার সঠিকভাবে কাজ সম্পন্ন করতে পারে।

* সবুজ শাকসবজি : লিভারকে পরিষ্কার ও সক্রিয় রাখার ক্ষেত্রে সব থেকে ভাল খাবার হল সবুজ শাকসবজি। সবুজ শাক রান্না করে বা জুস করে খেতে পারেন। এটিতে রক্তের টক্সিন মুক্ত রাখার উপাদান রয়েছে।

বিডি প্রতিদিন/
Mrs, Anjuara Khanom
Library Assistant Officer,
Daffodil International University
DSC Campus
02224441833/34