Faculty of Allied Health Sciences > Pharmacy
উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমায় আম
(1/1)
farjana aovi:
বাংলাদেশে আমের মৌসুম মে থেকে আগস্ট-এই তিন মাস। এই সময়ের মধ্যে দেশের প্রতিটি মানুষ গড়ে তিন কেজি করে আম খায়। পাকা-মিষ্টি আমের পুষ্টিগুণ অনেক, এটি কমবেশি সবার জানা। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় প্রথমবারের মতো জানা গেল, যাঁদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে, তাঁদের জন্য কতটা উপকারী আম। যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকেরা বলছেন, আম রক্তচাপ কমাতে ভূমিকা রাখে। মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়া (পোস্ট মেনুপোসাল) ২৪ জন সুস্বাস্থ্যের অধিকারী নারীকে নিয়ে করা এক গবেষণায় এই তথ্য পাওয়া গেছে। গবেষকেরা বলছেন, হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতেও কার্যকর এই ফল।
আম নিয়ে এই গবেষণাটি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি বিভাগের গবেষকেরা। তাঁরা দেখেছেন, আম খাওয়ার প্রায় দুই ঘণ্টা পর রক্তনালি শিথিল হয়ে যায়। এটাই রক্তচাপ কমার কারণ। আমের আরও একটি উপকারের কথা বলেছেন গবেষকেরা। তা হলো, আম খাওয়ার পর অন্ত্র বেশি সক্রিয় হয়।
হৃদরোগীদের ক্ষেত্রে আমের কার্যকারিতা নিয়ে বিশ্বে এটিই প্রথম কোনো গবেষণা। চলতি জুন মাসেই আমেরিকান সোসাইটি ফর নিউট্রিশনের বার্ষিক সম্মেলনে (নিউট্রিশন-২০১৮) গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করা হয়। এই গবেষণায় আর্থিক সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ম্যাঙ্গো বোর্ড ও ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন।
গবেষকেরা বলছেন, আমে কার্বলিক অ্যাসিডের মিশ্রণ থাকে। যা স্বাস্থ্য সুরক্ষার সম্ভাব্য উপকরণ। গবেষকেরা মনে করেন, আমে থাকা সক্রিয় যৌগ স্বাস্থ্যে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাকোলজি বিভাগের অধ্যাপক সাইদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আম নিয়ে করা গবেষণার ফলাফল নিশ্চয়ই গুরুত্বপূর্ণ।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা বলেছেন, বয়স বেশি হওয়ার কারণে যেসব নারীর মাসিক স্বাভাবিক কারণে বন্ধ হয়ে যায়, তাঁদের শরীরে হরমোনজনিত পরিবর্তন ঘটে। মাসিক বন্ধ হওয়া নারীদের রক্তচাপ বেশি হওয়ার প্রবণতা থাকে।
বিভিন্ন শস্য, সবজি ও ফলের পুষ্টিগুণ নিয়ে গবেষণা করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক নাজমা শাহীন। তিনি বলেন, আমের রাসায়নিকের হরমোনজনিত প্রভাব আছে, যা গ্রন্থিবাত, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।
পদ্ধতি ও ফলাফল
মাসিক বন্ধ হওয়া ২৪ জন সুস্বাস্থ্যের অধিকারী নারীকে দৈনিক ৩৩০ গ্রাম মিষ্টি আম খেতে দেওয়া হতো। গবেষণার জন্য পরপর ১৪ দিন তাঁদের ওই পরিমাণ আম থেকে খাওয়ানো হয়। আম খাওয়ার দুই ঘণ্টা পর এসব নারীর হৃৎস্পন্দন, রক্তচাপ, রক্তের নমুনা ও শ্বাসপ্রশ্বাস পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় দেখা যায়, সিস্টোলিক রক্তচাপ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। হৃৎস্পন্দনের সময় রক্তনালির দেয়ালে প্রবহমান রক্ত যে চাপ প্রয়োগ করে, সেটাই সিস্টোলিক রক্তচাপ (রক্তচাপ মাপার সময় ওপরের সংখ্যা)।
গবেষকেরা দেখেছেন, আম খাওয়ার পর পালস প্রেশার বা ধমনি স্পন্দন চাপও কমে। স্পন্দন চাপ হচ্ছে সিস্টোলিক ও ডায়াস্টোলিক (রক্তচাপ মাপার সময় নিচের সংখ্যা) রক্তচাপের মধ্যকার সংখ্যার পার্থক্য। আম খেলে এই পার্থক্য কম হয়। গবেষকেরা শ্বাসপ্রশ্বাসে হাইড্রোজেন ও মিথেনের পরিমাণও মেপে দেখেন। অন্ত্রে অণুজীবের সক্রিয়তায় এসব গ্যাস তৈরি হয়। ২৪ জন নারীর মধ্যে ৬ জনের নিশ্বাসে মিথেন পাওয়া যায়। এই ছয়জনের মধ্যে তিনজনের আম খাওয়ার পর মিথেনের পরিমাণ কমে। এর অর্থ তাঁদের অন্ত্র ভালো ছিল।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা বলছে, বাংলাদেশ বিশ্বের অষ্টম আম উৎপাদনকারী দেশ। চিকিৎসকেরা বলছেন, হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পরিমিত পরিমাণে আম খাওয়া প্রয়োজন।
Source: Prothom Alo
Navigation
[0] Message Index
Go to full version