DIU Activities > Permanent Campus of DIU
ঈদ মানে আনন্দ সবার জন্য।
(1/1)
Reza.:
আমরা যেখানে বসবাস করি সেখানে আগে খালি জায়গা অনেক ছিল। তাই সেখানে নিয়মিত কোরবানির পশুর হাট বসতো। এলাকাটা যখন ফ্ল্যাট বহুল এলাকায় রূপান্তরিত হল - তখনও এখানকার রাস্তা গুলোতে প্রতি বছর গরু ছাগলের হাট বসতো। আমাদের বাসার গেটের পাশেও প্রতিবার গরু নিয়ে কোন বছর কুষ্টিয়ার কোন বছর যশোরের ফার্ম গরু বিক্রয়ের জন্য খুঁটি গাড়তো। এক বছর সেখানে একটি বিশাল একটি নেপালি গরু নিয়ে এক লোক বিক্রির জন্য বাঁশে গরু বেধে বসে থাকলো। গরুটির দাম উঠেছিল দেড় লক্ষ টাকা। কিন্তু সে আরো তিরিশ হাজার টাকা অর্থাৎ এক লক্ষ আশি হাজার টাকা চেয়ে আর বিক্রি করেনি। সেই বার হঠাৎ হাটে গরুর দাম পড়ে যায়। তার সেই নেপালি গরুটি অবিক্রিত থেকে যায়। আমি গেটের পাশে ছিলাম। নেপালি গরুওয়ালা অনেক দুঃখ করে বললঃ "আপনাদের কথা জানিনা। কিন্তু এই গরুটি ঠিক দামে বিক্রি করতে পারলে আমার ও আমার ছেলেমেয়ের জীবন নিশ্চিত হয়ে যেত।"
তার কিছুক্ষণ পর সব গুছিয়ে তার ঝোলা পিঠে নিয়ে বিশাল নেপালি গরুর দড়ি হাতে নিয়ে দৌড়ে মেইন রোডের দিকে চলে গেল। বিশাল গরুটিও তার পিছনে দৌড়ে চলল তার পিছনে। আমার বাস্তবে দেখা সিনেমার দৃশ্যের মত। যা কিনা ক্যামেরা বন্দি করা হয়নি।
গরুর হাটে গরু ওয়ালাদের দেখতাম। এখনও দেখি। তাদের রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজতে হয়। ধুলা ময়লা আর কাদায় তাদের বসবাস করতে হয়। তাদের পানির অভাবে থাকতে হয়। পয়ঃব্যবস্থা যথেষ্ট থাকে না। রান্না বান্না পথের পাশেই করতে হয়। গরুর পাশে তারা ঘুমায়। গরুর সাথেই তাদের খাওয়া দাওয়া রোদ বৃষ্টিতে ভেজা। অন্য ভাবে ভাবলে তারা আমাদের শহরের অতিথি। অনেকেই আছেন এই ঢাকা শহরে প্রথম এসেছেন। এর জটিল রাস্তা ঘাট কিছুই চেনেন না। তার পরও তারা গরু বিক্রয় করে গরু যার যার বাসায় পৌঁছে দেন। ছিনতাইকারীর ভয় না করে অপরিচিত শহরে টাকা নিয়ে হাটে ফিরে আসেন। এরা আসেন সৎ ভাবে উপার্জন করতে।
ক্রয় বিক্রয়ের সময় দামাদামি হবেই। তবে গরুর দাম যখন পড়ে যায় তখন আমরা কতটুকু ন্যায্য ভাবে পশু কিনি? সব জিনিশেরই একটি ন্যায্য মূল্য আছে। কম দামে কেনা মানে বিক্রেতাকে ঠকানো। ঈদ মানে আনন্দ। কোরবানির ঈদে আমরা ত্যাগ ও তিতিক্ষা শিখি। কিন্তু গরীব পশু বিক্রেতাকে দুঃখে ফেলে আমাদের নিজেদের ঈদের আনন্দ কতটুকু সঠিক হয় - তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়।
Navigation
[0] Message Index
Go to full version