Faculty of Engineering > Civil Engineering
পরীক্ষা সমাচার ১
(1/1)
mardia.ce:
ড্যাফোডিলে আছি প্রায় এক বছর। তিন সেমিস্টার পার হল। সে হিসেবে তিনটা মিড টার্ম আর তিনটা ফাইনালের পরীক্ষা পরিদর্শক থাকলাম। একেকবারে গড়ে ১২টা ডিউটি থাকে। শুনতে কম শোনালেও মাত্র পাঁচ কি ছয় দিনে এই এতোগুলো সময় পাহারাদারি করা বেশ আয়াসসাধ্য ব্যপার।
কি হয় পরীক্ষার সময়?
ডিউটি রোস্টার পাবার পর, সময় ধরে গেলাম পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ কক্ষে। এ কী? মস্ত বড় লাইন! সাইনের জন্য। সাইন করে খাতা নিয়ে হেলেদুলে রুমে যাবেন? হবে নাহ। পরীক্ষার খাতা, প্রশ্নের খাম, সব নিতে হবে। কোনোটার কলেবরই বগলদাবা করার যোগ্য না। তার ওপর, কপাল ভালো হলে পড়বেন একই বিল্ডিং এ। নইলে তরতর করে নেমে ফুটপাথ দিয়ে, অগ্নিশলাকার আহ্বানে মত্ত ছাত্রদের ভিড় বাঁচিয়ে অন্য বিল্ডিং এ যেতে হবে। ফেরার সময়ও একই রুটে ফিরবেন। মোটামুটি ভিড় ঠেলে, পরীক্ষা শেষে উদ্বেলিত জনতার ভিড়। আমার মত ছোটখাটো হলে ত কথাই নেই, মানুষের কোমরের বাঁক দিয়ে আলো দেখা যায় সামনে, ওই দেখে হাঁটতে হবে।
রুমে গিয়ে মোটামুটি হুংকার দিতে হবে, মোবাইল ফোন জমা দাও, ব্যাগ সব। এরপরের কাজ মোটামুটি গৎবাঁধা। খাতা দেয়া, প্রশ্ন দেয়া, সাইন করা, কিছু ফর্ম ফিলাপ করা, আর পেছনে হাত বেঁধে গম্ভীর হয়ে হেঁটে বেড়ানো। কপাল খারাপ হলে কারুর দুষ্কর্ম আবিষ্কার করবেন, হয়ত সে খাতা আটকে হুমকি দিতে হবে, আর গুরুতর হলে পরীক্ষা শেষ করে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ কক্ষে সে খাতা রিপোর্ট করবেন। কপাল কার খারাপ? নিয়ন্ত্রণ কক্ষে আসবার আগ পর্যন্ত আপনার মনে হবে, ছাত্রেরই কপালটা খারাপ। আহা বেচারা! কিন্তু জমা দেয়ার ঝামেলার পর? আপনার মনে হতে থাকবে, কি ভুলে আমি এত, সয়েছি ব্যথা... ইত্যাদি।
কড়া নজরদারীর মজা হল, বেশ একটা তৃপ্তি পাওয়া যায় যে, আইনের অনুগমন করা হল। আরেকটা ভালো দিক হল, ঘুম পায় না। নইলে ঘুমঘুম চোখে ছাত্রদের দিকে তাকাবেন, তাদের একজনকে দুইজন হয়ে যেতে দেখবেন, আর সেটা টের পেলে ওরাও আপনাকে বেশ একটু ‘দেখে নেবে’। তবে, এই দেড় ঘন্টা বা দুইঘন্টার তিনটা ডিউটি একই দিনে পড়লে মাথা মোটামুটি হ্যাং হয়ে যাবার সম্ভাবনা আছে। ফেরার পথে ভাড়া দিতে টের পাবেন। আরও একটা ঝামেলা আছে। লিফটে একদিন একদল তরুণের কি এক কথায় হাসি আটকাতে না পেরে ফিক করে হেসে দিয়েছি। নেমে এরা ঘিরে ধরলো, আমি ত দেখতে শুনতে মনুষ্যপদবাচ্যই মনে হয় ওদের, তবে কেন পরীক্ষার হলে এমন বিদ্ঘুটে হয়ে যাই? আরেকদিন, অর্ধেক সময় না যেতেই এক ছাত্র উঠে এসে খাতা জমা দিয়ে একদম সোজাসুজি বলে দিলো, ‘ম্যডাম কাজটা ভালো করলেন না’। কি কাজ? কড়া পাহারা দিয়েছি, ও কিছুই লেখেনি প্রায়। বললাম, ‘পরের পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে আগেই ভাববা, আমিই গার্ডে থাকবো। দেখো প্রস্তুতি ভালো হবে’। কিসের কি, দৃষ্টিতে মোটামুটি ভষ্ম করে বিদায় নিলো।
পরীক্ষার হলে প্রায়ই একটা গান মনে পড়ে। ওই যে যখন উত্তরের মাঝে আটকে গিয়ে কোন এক অসহায় আদম সন্তান সামনের জনের অস্বচ্ছ পিঠ বরাবর নিষ্পলক তাকিয়ে থাকে, তখন। না জানি মনে মনে গায়, ‘তোমার বুকের মধ্যখানে, মন যেখানে হৃদয় যেখানে ... (আহা যদি সে বরাবর একটা ফুটো থাকতো)’। তাই পথেঘাটে, ক্লাসে, ক্রমাগত বুঝাই, এই পরীক্ষা হলের স্ট্যান্ডার্ড হলো ওদের সার্টিফিকেটের মানের সমানুপাতিক। সুতরাং, সময় থাকতে সাধনায় লেগে পড়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
tokiyeasir:
;)
mardia.ce:
Thank you for your comment
Shihab Ahammed:
nice
Jasia.bba:
Nice sharing.........
Thanks
Navigation
[0] Message Index
Go to full version