শিশু বিকাশ তত্ত্ব মতে যে মেয়েরা তাদের মায়েদের সঙ্গে ভালভাবে একাত্বীভবন করতে পারে না (Identity) অথবা যাদের বাবারা প্রকাশ্যভাবে মেয়েদের সঙ্গে বন্ধন যুক্ত হয় তাদের বিকাশ ছয় বছর বয়সের বিকাশ পর্যন্ত আটকে যায়; অর্থাৎ এদের বিকাশ থেমে যায় যেন তারা এখনোও ছয় বছরের বাচ্চা শিশু রয়েছে; ফলে তারা পুরুষ বা মহিলা বা উভয়কে ভয় পেতে শুরু করে অথবা উল্টো তাদের প্রতি যৌন-সম্মোহনী রূপে আকৃষ্ট হয়ে থাকে; এই ভয় পাওয়া হোক অথবা নৈকট্য লাভের চেষ্টা হোক উভয় ক্ষেত্রেই এ ধরনের মেয়েরা স্কুল পর্যায়ে স্বাভাবিক নাও থাকতে পারে; তখন মেয়েকে নিজ প্রয়োজনে মায়ের সাথে সম্পর্ক ঠিক করে নিতে হবে; মায়ের বোধ-বুদ্ধি-উপলব্ধি কম যেহেতু; তখন সব ঠিক হয়ে যাবে।
একই ধরনের পরিস্থিতির উদ্ভব হতে পারে ছেলেদের বেলায়ও যদি তারা সফলভাবে তাদের বাবাদের সঙ্গে একাত্বভবন সৃষ্টি করতে না পারে; এই ধরনের বাবারা হয়ে থাকে একাকী থাকা ধরনের, নিষ্ঠুর ধরনের অথবা বাবা অনুপস্থিতও থাকতে পারেন; তখন ছেলেকে নিজ প্রয়োজনে বাবার সাথে সম্পর্ক ঠিক করে নিতে হবে; বাবার বোধ-বুদ্ধি-উপলব্ধি কম যেহেতু; তখন সব ঠিক হয়ে যাবে।
মেয়েদের যদি বাবার সঙ্গে আত্বিক ও সুস্থ সম্পর্ক তৈরি না হয়, তার প্রভাব পড়বে তার স্বামী-শশুর থেকে শুরু করে কর্মক্ষেত্রে অফিসের বস্ থেকে অনেকের সঙ্গেই; তখন মেয়েকে নিজ প্রয়োজনে বাবার সাথে সম্পর্ক ঠিক করে নিতে হবে; বাবার বোধ-বুদ্ধি-উপলব্ধি কম যেহেতু; তখন সব ঠিক হয়ে যাবে।
যেসব ছেলেদের বাবার সঙ্গে একাত্বীভবন কম হবে তারা অন্য পুরুষ লোককে ভয় পাবে; নিজে যে পুরুষ এই লিঙ্গ পরিচয় সম্বেন্ধ সন্দেহ থাকবে; অথবা মাকে ত্যাগ করতে বা দূরে থাকতে অনিচ্ছুক থাকবে; একাকী স্কুলে যেতে ভয় পাবে ও স্কুল না যাওয়ার বায়না ধরবে; উদ্দ্যম-উদ্যোগের অভাব থাকবে; পড়াশোনায় তেমন ভাল করবে না; তখন ছেলেকে নিজ প্রয়োজনে বাবার সাথে সম্পর্ক ঠিক করে নিতে হবে; বাবার বোধ-বুদ্ধি-উপলব্ধি কম যেহেতু; তখন সব ঠিক হয়ে যাবে।
সুতরাং, দেহে-মনে-আত্বায় শান্তি যদি পেতে চান পিতা ও মাতা দুইজনকে সমান সমান ভাবে ভালবাসুন; কারণ তাদের দুই জনের সমান সমান ফসল = আপনি।
তাদের আত্বার সাথে আপনার আত্বার সম্পর্ক কারেন্টের তারের মত; একজনকে বেশি ভালবাসলে অন্যজন আত্বায় কষ্ট পাবে; কারেন্টের তার দিয়ে ওই কষ্ট আপনার মধ্যে চলে আসবে। সুতরাং, দুইজনকে সমান সমান ভাবে ভালবাসুন; যে পিতা মাতাকে সারাজীবন সমানভাবে ভালবাসতে পারে সে সারাজীবন সুখে-শান্তিতে কাটায়; কেননা সে ভারসাম্যের মূল বীজ হৃদয় ভুমিতে বপন করেছে ও তার যথাযথ পরিচর্যা করেছে; ফল তো সে-ই ভোগ করবে! (শিশু বিকাশ তত্ত্ব অবলম্বনে)।