গ্যালাক্সি মিল্কওয়েতে রয়েছে হীরায় মোড়ানো সম্পুর্ন এক গ্রহ

Author Topic: গ্যালাক্সি মিল্কওয়েতে রয়েছে হীরায় মোড়ানো সম্পুর্ন এক গ্রহ  (Read 582 times)

Offline Khan Ehsanul Hoque

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 549
  • Test
    • View Profile
গ্যালাক্সি মিল্কওয়েতে রয়েছে হীরায় মোড়ানো সম্পুর্ন এক গ্রহ

আপনি কি জানেন আমাদের গ্যালাক্সি মিল্কওয়েতে রয়েছে হীরায় মোড়ানো সম্পুর্ন এক গ্রহ?
হীরা পৃথিবীর জনপ্রিয় অলঙ্কারের মধ্যে অন্যতম । দাম হিসেবে ১ ক্যারেট হীরার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় প্রায় ৭৯,১৪১.৩১ টাকা ! পৃথিবীর অন্যতম বড় হীরার খনি রাশিয়ায় অবস্থিত “ মির মাইন “ । ১৯৬০ সালে খনিটি থেকে বাৎসরিক হীরা উৎপাদন হত প্রায় ১ কোটি ক‍্যারেট ।
আমরা প্রায়ই পত্রপত্রিকা বা ইন্টারনেটে হীরার খনি সন্ধানের নিউজ দেখে থাকি । কেমন হবে এখন যদি আমি বলি এই মহাবিশ্বে হীরার পাহাড় বা হীরার সমুদ্র নয় এমন একটা গোটা গ্রহ আবিষ্কৃত হয়েছে যা সম্পুর্ন হীরায় মোড়ানো ? তাও সেটি আমাদের গ্যালাক্সি মিল্কীওয়ের ।

গ্রহটি সম্পর্কে জানার জন্য অনেক উত্তেজনা কাজ করছে তাই না ? এখন এমনও জানতে ইচ্ছে হচ্ছে মনে মনে তাহলে পৃথিবীর লোকজন কিছু হীরে নিয়ে আসলেই ও পারে । সব বলবো , চলেন জেনে নেয়া যাক Super Earth ধরনের এই গ্রহটি ।
Super Earth ধরনের এই গ্রহটি ২০০৪ সালে আবিষ্কৃত হয় । বৈজ্ঞানিক ভাবে গ্রহটি 55 Cancri E নামে পরিচিত । 55 Cancri E হলো সূর্যের মতো তারা 55 Cancri A কে কেন্দ্র করে প্রদক্ষিণরত একটি গ্রহ । অর্থাৎ 55 Cancel A কে কেন্দ্র করে আরো গ্রহ প্রদক্ষিন করে । এখন মনে হতে পারে এর পর বা ব্যাস কেমন হতে পারে ? বিজ্ঞানীরা বলছেন , পৃথিবীর তুলনায় এর ভর ৮.৬৩ গুণ ভাবা যায় ? এবং ব্যাস প্রায় পৃথিবীর ব্যাসের দ্বিগুন বেশি। মাত্র ১৮ ঘণ্টায় এটি এর অক্ষের চারদিকে পরিভ্রমণ করে। গ্রহটির ভর অনেক বেশি এবং বৃহস্পতির চেয়ে এর ঘনত্ব অনেক বেশি। সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহ বৃহস্পতির চেয়ে এটি ২০ গুণ বেশি ঘন। অতি ঘনত্বের কারণে এর ওজনও বৃহস্পতির চেয়ে কিছুটা বেশি। তবে বৃহস্পতি গ্রহের মতো হাইড্রোজেন কিংবা হিলিয়াম নতুন এ গ্রহে পাননি বিজ্ঞানীরা । একে মিলিসেকেন্ড পালসার বলা হচ্ছে । এখন মনে প্রশ্ন আসতে পারে পালসার কি ? পালসার হলো, একটি ছোট মৃত নিউট্রন তারকা যার ব্যাস মাত্র ২০ কিলোমিটার। এই গ্রহটি কোন এক সময় প্রচুর ভরযুক্ত কোনো নক্ষত্রের অংশ ছিল। পরে একটি পালসার তাকে গ্রাস করে ফেলে যার ফলে বর্তমান রূপ ধারণ করেছে। আচ্ছা সব ঠিক আছে । গ্রহটি সম্পুর্ন হীরায় ভরপুর । তাহলে মানুষ গিয়ে কিছু হীরে আনলেই তো পারতো অথবা রোবট পাঠিয়ে । কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি বর্তমান প্রযুক্তিতে হীরে আনা সম্ভব না । কারন গ্রহটি পৃথিবী থেকে ৪০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত । ভাবা যায় ? 1 Light year বা ১ আলোকবর্ষ সমান ৯.৪৬×১০^১৫ মিটার । আবার এর পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ৪,৯০০ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা ২,৭০০ ডিগ্রী সেলসিয়াস যা কিনা পৃথিবীর তুলনায় অনেক অনেক বেশি। তাহলে ওখানে রোবট যাবেই বা কিভাবে অথবা গেলেও টিকবেই বা কিভাবে ।তবুও আমরা বিস্বাস করি মানুষ সব ই পারে । হয়তো ভবিষ্যতে কোনভাবে ওই গ্রহে আমাদের প্রযুক্তি পৌঁছে ব্যাপক তথ্য সংগ্রহ করে গ্রহটিই জয় করে নিব ।

ওহঃ সবই তো বলা হলো কিন্তু আবিস্কার কে করলো এটাই বলা হলো না তাই না ? আসলে বিষয়টা এত এক্সসাইটেড যে আবিস্কার এর কথা বলতে গিয়ে একটু দেরি হলো । যাকগে , 55 Cancri E ২০০৪ সালের ৩০ আগস্ট আবিষ্কৃত হয় । McArthur et al নামের এক বিজ্ঞানী এটিকে সর্বপ্রথম আবিষ্কৃত করেন ।

এখন প্রশ্ন হতে পারে এত হীরে আসলো কোথা থেকে ? আমাদের পৃথিবীতে এমন কিছু একটা হলেও তো ভালোই হতো । বিজ্ঞানীরা বলছেন, নতুন এই গ্রহের ঘনত্ব প্রতি ঘনসেন্টিমিটারে কমপক্ষে ২৩ গ্রাম যেখানে পৃথিবীর ঘনত্ব ৫.৫১ প্রতি ঘন সেন্টিমিটারে। নতুন এই গ্রহটির ঘনত্ব সীসার চেয়ে দ্বিগুণ। আর এই ঘনত্ব জানা গ্রহগুলোর চেয়ে অনেক অনেক বেশি। যেহেতু গ্রহটি কার্বন সমৃদ্ধ আর অন্তর্বর্তী চাপ অত্যন্ত বেশি, এই অত্যাধিক চাপের কারণেই কার্বন ঘনীভূত হয়ে হীরার স্ফটিকে রূপান্তরিত হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা ।

অন্যভাবে বলতে গেলে গ্রহটির পাথরের মূল উপাদান হচ্ছে কার্বন। আর হীরারও মূল উপাদান কার্বন। আমরা জানি হীরা এবং গ্রাফাইট কার্বনের জাতক । সুতরাং গ্ৰহের পাথর আর হীরার উপাদান একই। সাধারণত ঘন কার্বনেই তৈরি হয় হীরা। এই গ্রহে কার্বনের ঘনত্ব অত্যন্ত বেশি হওয়ার এর ভূ-ভাগ হীরায় পরিণত হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। কার্বন ছাড়াও গ্রহটিতে রয়েছে অক্সিজেন এবং অন্যান্য গ্যাস । ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব অ্যাস্ট্রোফিজিক্সের অধ্যাপক জ্যোতির্বিজ্ঞানী সুজন সেনগুপ্ত বলেছেন, ‘এই সদ্য আবিস্কৃৃত Cancri E মূলত পৃথিবীর মতো একটু পাথুরে গ্রহ কিন্তু এদের ভূপৃষ্ঠে অক্সিজেনের যৌগএর সাথে প্রচুর কার্বনডাই-অক্সাইড আর সিলিকেট অক্সাইড পাওয়া যায় । কিন্তু এখানে অক্সিজেনের চেয়ে কার্বনের পরিমান ব্যাপক বেশি । যার কারনে এগুলোকে বলা হয় কার্বন নক্ষত্র। আর আবর্তন করা গ্রহগুলোকে বলা হয় কার্বন প্লানেট। প্রচণ্ড তাপ আর চাপে ওই কার্বন পরমাণুগুলোই হীরার কেলাস তৈরি করেছিল।

Source: https://www.facebook.com/search/top?q=science%20content%20post
Khan Ehsanul Hoque

Daffodil International University
01847334702
fd@daffodilvarsity.edu.bd
www.daffodilvarsity.edu.bd