একটি সাইকেল, একজন মোস্তফা কামাল এবং মেঘনা গ্রুপের গল্প

Author Topic: একটি সাইকেল, একজন মোস্তফা কামাল এবং মেঘনা গ্রুপের গল্প  (Read 3521 times)

Offline Noor E Alam

  • Jr. Member
  • **
  • Posts: 94
  • Test
    • View Profile

সাধারণ মানুষের অসাধারণ হয়ে ওঠার একটা গল্প থাকে। সেই গল্পের পাতায় পাতায় থাকে সংগ্রাম আর টিকে থাকার লড়াই। জীবনের নানা দোলাচলের মাঝে তাঁকে টপকে যেতে হয় একের পর এক বাধার সিঁড়ি। স্বপ্নকে ছুঁয়ে দেখার সুতীব্র বাসনা তাঁকে পথ দেখায় অবিরাম। সেই পথে হাঁটতে হাঁটতে কেউ কেউ পৌঁছে যান সাফল্যের সোনালী বন্দরে। তেমনই একজন সফল ব্যক্তিত্ব মোস্তফা কামাল। তিনি দেশের শীর্ষ শিল্প প্রতিষ্ঠান মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চেয়ারম্যান। মেঘনা ঘাটের পূর্ব-পশ্চিম প্রান্তজুড়ে কয়েক কিলোমিটারব্যাপী গড়ে তুলেছেন এক বিশাল শিল্প সাম্রাজ্য। প্রতিদিন চল্লিশটিরও বেশি কারখানায় ৩২টিরও বেশি পণ্য উৎপাদিত হয় এখানে। কাজ করছেন প্রায় ২১ হাজার কর্মী। একটি বাইসাইকেল কেনার সামর্থ ছিল না যাঁর, তার প্রতিষ্ঠানে এখন আড়াই হাজারের বেশি গাড়ি শুধু পণ্য আনা-নেওয়া করে। রয়েছে এক ডজন আন্তর্জাতিক জাহাজসহ ১০০টি অভ্যন্তরীণ জাহাজ। যে মোস্তফা কামাল একসময় গুলিস্তান আর পুরান ঢাকার অলিগলিতে পণ্য ফেরি করেছেন, কোনো ডিলার পাননি, কোনো এজেন্ট পাননি; সেই মোস্তফা কামালের প্রতিষ্ঠানের ডিলারশিপ নেওয়ার জন্য এখন হাজার হাজার মানুষের কাছ থেকে অনুরোধ আসে। মাত্র ১৭৫ টাকা নিয়ে যে ব্যবসা শুরু করেছিলেন তার বার্ষিক টার্নওভার এখন দুই বিলিয়ন মাকিন ডলারেও বেশি।
« Last Edit: January 01, 2019, 05:06:54 PM by Noor E Alam »
Noor E Alam
Assistant Officer (Legal & Estate) 
Daffodil International University (DIU)
email- le@daffodilvarsity.edu.bd

Offline Noor E Alam

  • Jr. Member
  • **
  • Posts: 94
  • Test
    • View Profile

বিলিয়নিয়ার এই শিল্পসম্রাট গত ৩০ জুলাই ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে এসেছিলেন শিক্ষার্থীদেরকে তাঁর উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প শোনাতে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭১ মিলনায়তনে ‍শুনিয়েছেন সেই গল্প। মিলনায়তনে তো বটেই, মিলনয়তনের বাইরেও ছিল শিক্ষার্থীদের উপচেপড়া ভিড়। একটিবার তাঁকে কাছ থেকে দেখা এবং তাঁর মুখ থেকে কথা শোনার এই বিরল সুযোগ তারা কিছুতেই হাতছাড়া করতে চাননি। ডিআইইউ ইন্ডাস্ট্রি একাডেমিয়া লেকচার সিরিজ নামের ওই অনুষ্ঠানটি মূলত তরুণ শিক্ষার্থীদেরকে উদ্যোক্তা হওয়ায় উৎসাহী করতে সফল উদ্যোক্তার একক বক্তৃতার। ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় দেশের ব্যবসাক্ষেত্রের প্রথিতযথা ব্যবসায়ীদের জীবন, উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প ও সংগ্রামের ইতিহাস শিক্ষার্থীদের শোনাতে এ ধরনের আয়োজন গত দুই বছর ধরে করে আসছে। সেদিন গল্প শোনার ১৩তম আসর বসেছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭১ মিলনায়তনে।এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নিযুক্ত কোরিয়া দূতাবাসের সেকন্ড সেক্রেটারি চো মিং ইয়ং, মেঘনা গ্রুপের পরিচালক ও মোস্তফা কামালের জ্যেষ্ঠ কন্যা তাহমিনা মোস্তফা, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইউসুফ এম ইসলাম ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যারিয়ার ডেভেলাপমেন্ট সেন্টারের পরিচালক মো. আবু তাহের, মেঘনা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান ও মোস্তফা কামালের স্ত্রী বিউটি আক্তার, মেঘনা গ্রুপের পরিচালক ও মোস্তফা কামালের কনিষ্ট কন্যা তানজিনা মোস্তফা, মোস্তফা কামালের জামাতা তাইফ ইউসুফ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম মাহবুব উল হক মজুমদার, কোষাধ্যক্ষ মো. হামিদুল হক খান, রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম ফজলুল হক প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের এমপ্লয়াবিলিটি ৩৬০ ডিগ্রি কোর্সের সমন্বয়ক সোহাগ মিয়া।

উল্লেখ্য, ইন্ড্রাস্ট্রি একাডেমিয়া লেকচার সিরিজের বক্তৃতাগুলো নিয়ে পরবর্তী সময়ে একটি বই প্রকাশিত হবে, যা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ব্যবসা, অথনীতি ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর শিক্ষার্থীদের জন্য রেফারেন্স বই হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি করবে। লেকচার সিরিজে আমন্ত্রিত উদ্যোক্তাদের ওপর ডিআইইউ থেকে প্রামাণ্যচিত্রও নির্মিত হবে। ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় আশা করছে যে, এ লোকবক্তৃতামালা নতুন প্রজন্মের সৎ, শিক্ষিত ও মেধাবী উদ্যোক্তাদেরকে সাহস, নিষ্ঠা ও দক্ষতার সাথে সামনে এগিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করবে। উদ্যোক্তা উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ তার সম্ভাবনার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ গতিতে এগিয়ে যেতে পারছে না বলে যে ধারনা চালু রয়েছে, এ লোকবক্তৃতামালা সে সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠতে অনেকখানি সাহায্য করবে বলে আশা করা যায়।
Noor E Alam
Assistant Officer (Legal & Estate) 
Daffodil International University (DIU)
email- le@daffodilvarsity.edu.bd

Offline Noor E Alam

  • Jr. Member
  • **
  • Posts: 94
  • Test
    • View Profile

বরেণ্য এই শিল্পোদ্যোক্তাকে নিয়ে নির্মিত একটি প্রামান্যচিত্র প্রদর্শিত হয় এ সময়। এর মাধ্যমে মেঘনা গ্রুপ ও মোস্তফা কামাল সম্পর্কে প্রধমিক ধারনা লাভ করে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের ধারনাকে আরও পোক্ত করতে মোস্তফা কামালের সংক্ষিপ্ত জীবনী পাঠ করে শোনান ক্যারিয়ার ডেভলপমেন্ট সেন্টারের পরিচালক আবু তাহের খান।আবু তাহের খান বলেন, আমাদের অধিকাংশের কাছে বৃষ্টিতে ভেজা আঠালো কাঁদামাটি মানেই এর পিচ্ছিল গাত্রে হোঁচট খেয়ে পড়ে যাওয়া। কিন্তু সেই পিচ্ছিল কাঁদামাটিই কুমারের হাতে পড়ে হয়ে ওঠে সুদৃশ্য মৃৎপাত্র। নদীর বুক ও পাড় ঘেঁসে আমাদের কতোজনেরইতো নিত্য আসা-যাওয়া। কিন্তু মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আগে সেখানে সে কবে খুঁজে পেয়েছিল কুবের মাঝির জীবন? গোমতী বা মেঘনা সেতু হওয়ার বহু আগে থেকেই কুমিল্লা থেকে এ পথে কতশত মানুষের যাতায়াত কিন্তু মোস্তফা কামালের আগে কে কবে ভেবেছিলেন যে, মেঘনার এ এবড়ো থেবড়ো পাড় ঘেঁষেই গড়ে তোলো যায় বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সাড়া ফেলে দেয়ার মতো অজুত সম্ভাবনাময় নানা শিল্প-কারখানা? হ্যাঁ, ইতিহাসের সংগ্রামী মানুষ যেমন কঠিন পাথর ঘষে তার বুক চিরে খুঁজে পেয়েছে আগুনের সন্ধান, মোস্তফা কামালও তেমনি ব্যবসা বাণিজ্যের নানা অচেনা পাথুরে পথঘাটকে নিরন্তর পরিশ্রম ও দূরদর্শী চিন্তাভাবনা দিয়ে একেবারেই অনায়াস সাধ্য করে তুলেছেন। বিদ্যালয়গামী মোস্তফা কামাল গ্রামের বাজারে চাচার সুপারির দোকানে বসে ব্যবসায়ের যে প্রথম পাঠ নিয়েছিলেন, সেটিই আজ পত্রপল্লবে মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ—একুশ হাজার কর্মীর কর্ম ও কলরবে মুখর চল্লিশটিরও বেশি কারখানায় উৎপাদিত ৩২টিরও বেশি পণ্যের নিত্য সমাহার, যেখানে বার্ষিক টার্নওভারের পরিমাণ ইতোমধ্যে ২ বিলিয়ন ডলারকেও ছাড়িয়ে গেছে। কোনো পরিশ্রম ছাড়াই রাতারাতি বিত্তবৈভবের মালিক হওয়ার আকাঙ্ক্ষায় বুঁদ হয়ে থাকা নতুন প্রজন্মের তরুণদের জেনে রাখা ভালো, যাত্রাবাড়ির লজিংয়ে থেকে ৪ আনা দিয়ে বাসে করে গুলিস্তান এসে সেখান থেকে পায়ে হেঁটে মৌলভীবাজারে হাজী মোহাম্মদ হোসেনের দোকানে পৌঁছা এবং সারাদিনের কাজ শেষে একই পথে ফিরে যাওয়া। বিনিময়ে মাস শেষে সর্বসাকুল্যে ১৭৫ টাকা। এই ছিল মোস্তফা কামালের প্রথম আনুষ্ঠানিক কর্মজীবন। আমাদের অনেকের কাছেই তাঁর ওই বেতনের এ পরিমাণকে আপাতদৃষ্টে সামান্য মনে হতে পারে। কিন্তু বেতন সামান্য হলেও সেখানে কাজ করে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার যে পুঁজি তিনি সংগ্রহ করেন, আজকের ২ বিলিয়ন ডলারের টার্নওভার সে পুঁজিরই ক্রমপুঞ্জিত রূপান্তর নয় কি? ব্যবসায়িক প্রস্তাব মূল্যায়নের এক অসাধারণ মেধাবী সামর্থ রাখেন মোস্তফা কামাল। এ ক্ষেত্রে প্রথমেই তিনি সম্ভাব্য পণ্যের অগ্র ও পশ্চাৎ সংযোগ পণ্যগুলোর কথা ভাবেন। ভাবেন প্রযুক্তি সংশ্লিষ্টতার স্তর নিয়েও এবং অবশ্যই পুঁজি সামর্থের বিষয়টি নিয়েও। এবং মেঘনা গ্রুপের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা দেখতে পাই, অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রথমে তিনি নিম্ন প্রযুক্তির স্বল্পপুঁজিসম্পন্ন পণ্যের কথা ভেবেছেন। কিন্তু মাথায় রেখেছেন এটিকেই উচ্চ প্রযুক্তির বড় পুঁজির ব্যবসায়ে রূপান্তরের। বস্তুত ধীরে ধীরে বড় ও বিকশিত হয়ে ওঠার এ চিন্তা তিনি ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে যেমনি করেছেন, তেমনি করেছেন জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রেও। অগ্র ও পশ্চাৎ সংযোগ শিল্পের নানা আদ্যোপান্ত নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-গবেষকরা যখন ঘর্মাক্ত হচ্ছেন, তারা মোস্তফা কামালের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বললে উপকৃত হবেন বলে আশা করা যায়। তাঁর অভিজ্ঞতার বিবরণ শোনার জন্য বিশ্বখ্যাত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল।
Noor E Alam
Assistant Officer (Legal & Estate) 
Daffodil International University (DIU)
email- le@daffodilvarsity.edu.bd

Offline Noor E Alam

  • Jr. Member
  • **
  • Posts: 94
  • Test
    • View Profile

অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান বলেন, বিশ্বের উন্নত দেশগুলো তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজ দেশের সফল উদ্যোক্তাদের নানাভাবে সম্পৃক্ত রাখে। কিন্তু আমাদের এই সংস্কৃতি গড়ে ওঠেনি। ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় চেষ্টা করছে এই সংস্কৃতি গড়ে তোলার। কারণ হিসেবে ড. মো. সবুর খান বলেন, তরুণ প্রজন্মের সঙ্গে আমাদের দেশের সফল উদ্যোক্তাদের পরিচয় করিয়ে দেয়া আমাদেরই দায়িত্ব। তাদের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। তারা কীভাবে উদ্যোক্তা হলেন সেই গল্প শুনলে তরুণরা অনুপ্রাণিত হবে। এই উদ্দেশ্য থেকেই ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় ইন্ডাস্ট্রি একাডেমিয়া লেকচার সিরিজ আয়োজন করে আসছে। ড. মো. সবুর খান আরো বলেন, ইন্ড্রাস্ট্রি যে ধরনের লোকবল চায়, সে ধরনের লোকবল আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সরবরাহ করতে পারছে না। কারণ ইন্ড্রাস্ট্রির সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কোনো সম্পর্ক নেই। এই সম্পর্ক তৈরি করতে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় কাজ করছে।

মোস্তফা কামালের জীবনকে অনুসরণ করতে শিক্ষার্থীদেরকে প্রতি আহ্বান জানান ড. মো. সবুর খান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে মোস্তফা কামলের মেঘনা গ্রুপ যে অবদান রেখে চলেছে তা ইতিহাসে সোনার অক্ষরে লেখা থাকবে। তাঁর কঠোর পরিশ্রম, অধ্যবসায় এবং সততা নতুন উদ্যোক্তাদের পথ দেখাবে বলে মনে করেন তিনি।
Noor E Alam
Assistant Officer (Legal & Estate) 
Daffodil International University (DIU)
email- le@daffodilvarsity.edu.bd

Offline Noor E Alam

  • Jr. Member
  • **
  • Posts: 94
  • Test
    • View Profile
মোস্তফা কামাল সম্পর্কে এতকিছু শোনার পর শিক্ষার্থীরা আরও উৎসাহী হয়ে ওঠে মোস্তফা কামালের মুখ থেকে কথা শোনার জন্য। তাদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাওয়ার জোগাড়। অতঃপর তিনি শিক্ষার্থীদের অপেক্ষার অবসান ঘটালেন। দৃঢ় পায়ে উঠলেন মঞ্চে। বলতে শুরু করলেন তাঁর শিল্পোদ্যোক্তা হয়ে গল্প।

শুরুতেই নিজেকে ‘কামলা’ বলে পরিচয় দিলেন মোস্তফা কামাল। তিনি বলেন, আমি একজন ‘কামলা’। কাজপাগল মানুষ। কাজ না করলে আমার ভালো লাগে না। সারাদিন কাজের মধ্যে ডুবে থাকতেই পছন্দ করি। মাত্র ১৭৫ টাকা পুঁজি নিয়ে ব্যবসায় নেমেছিলাম। এখন মেঘনা গ্রুপের বার্ষিক টার্নওভার ২ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। এই সফলতার পথ মোটেও মসৃন ছিল না। কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে। দিনে ১৮ ঘণ্টারও বেশি কাজ করেছি।

ত যে কাজ করেন, অবসর টবসর পান না নিশ্চয়? মোস্তফা কামাল হেঁসে বলেন, অবসর সত্যিই কম। তবু যেটুকু অবসর পাই, সেটা বই পড়েই কাটাই। বই পড়ার নেশা আমার ছোটবেলার। জেনারেল পারভেজ মোশাররফের লেখা বই ‘অন দ্যা ফায়ার’ এবং স্টিফেন মেয়ারের লেখা ‘মিডনাইট সান’ তাঁর জীবনদর্শন বদলে দিয়েছে বলে জানান মোস্তফা কামাল। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে হাতের নাগালেই সব পাওয়া যায়। ঘরে বসেই অক্সফোর্ড, হার্ভার্ড, কেমব্রিজের বই পড়া যায়। অথচ আমাদের সময়ে ভালো বই ছিল দুর্লভ। বড় ভাইদের কাছ থেকে বই ধার নিয়ে পড়তে হতো। পড়ালেখার জন্য পায়ে হেঁটে যেত হতো সাত মাইল দূরের স্কুলে। এখন প্রযুক্তি তোমাদের হাতের মধ্যে অনেক সুযোগ সুবিধা এনে দিয়েছে।
Noor E Alam
Assistant Officer (Legal & Estate) 
Daffodil International University (DIU)
email- le@daffodilvarsity.edu.bd

Offline Noor E Alam

  • Jr. Member
  • **
  • Posts: 94
  • Test
    • View Profile

পায়ে হেঁটে সাত মাইল দূরের স্কুলে পড়তে যাওয়ার গল্প শুনে চোখ ছানাবড়া হয়ে যায় শিক্ষার্থীদের। তারা এই গল্পের আদ্যপান্ত জানতে চায়। মোস্তফা কামাল বলেন, এসএসসি পাশ করার পর বাবার কাছে আবদার করলাম একটা বাইসাইকেল কিনে দেওয়ার। ভাবলাম, সাইকেল পেলে কলেজে যাওয়া আসার সুবিধে হবে। এতটা পথ আর হাঁটতে হবে না। বাবা ছোটখাটো একটা সরকারি চাকরি করতেন। তার সামর্থে কুলালো না। তিনি সাইকেল কিনে দিতে অপারগ হলেন। আমিও তখন রাগ করে বাড়ি থেকে ঢাকায় চলে এলাম।ঢাকায় আসার পর মোস্তফা কামাল নেমে পড়েন উদ্যোক্তা হওয়ার এক কঠিন সংগ্রামে। পায়ে হাঁটার পথ তাঁর পিছু ছাড়ল না। তিনি যাত্রাবাড়ির লজিং বাড়ি থেকে চার আনা পয়সা খরচ করে বাসযোগে গুলিস্তান আসতেন। তারপর গুলিস্তান থেকে পায়ে হেঁটে মৌলভীবাজারে হাজী মোহাম্মদ হোসেনের দোকানে পৌঁছতেন এবং সারাদিন কাজ শেষে আবার পায়ে হেঁটে একই পথে ফিরে আসতেন।

সেইসব কষ্টকর দিনের স্মৃতিচারণা করে মোস্তফা কামাল বলেন, সেদিন যদি বাবা বাইসাইকেল কিনে দিতেন, তাহলে হয়ত তার উদ্যোক্তা হওয়া হতো না। একটি বাইসাইকেলের ব্যর্থতা তাঁর জীবনে এনে দিয়েছে অসীম সাফল্য। এখন মেঘনা গ্রুপের পণ্য আনা নেওয়ার জন্য রয়েছে নিজস্ব আড়াই হাজার গাড়ি। আরো রয়েছে প্রায় ১০০টি অভ্যন্তরীণ জাহাজ ও ১২টি আন্তর্জাতিক জাহাজ।


তাঁর উদ্যোক্তা হওয়ার পথে রয়েছে হাজারো কষ্টের গল্প। সেরকমই এক কষ্টের অধ্যায়ের নাম ১৬ কেজি তেলের ক্যান মাথায় করে বহন করা। মোস্তফা কামাল বলেন, তাঁর জন্ম ভারত সীমান্তের কাছাকাছি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি সীমানাপ্রাচীর টপকিয়ে ভারতে যেতেন এবং সেখান থেকে ভোজ্য তেলের ক্যান কিনে বাংলাদেশে এনে বিক্রি করতেন। এই পুরোটা পথ, মাইলের পর মাইল ১৬ কেজি ওজনের তেলের ক্যান মাথায় করে বহন করতেন মোস্তফা কামাল। পরে মোস্তফা কামালের মা বিষয়টি জানতে পেরে তাঁকে এ কাজ থেকে নিবৃত্ত করেন। কিন্তু রক্তের মধ্যে যার ব্যবসায়ী হওয়ার নেশা, তিনি কেন বসে থাকবেন। ঠিকই ঢাকায় এসে আবার সেই কষ্টকর, দুর্গম পথ বেছে নেন।
Noor E Alam
Assistant Officer (Legal & Estate) 
Daffodil International University (DIU)
email- le@daffodilvarsity.edu.bd

Offline Noor E Alam

  • Jr. Member
  • **
  • Posts: 94
  • Test
    • View Profile
উদ্যোক্তা হওয়ার পথে পা বাড়িয়ে দেখলেন, এ পথে বিস্তর কাঁটা। পদে পদে বাধা। ১৯৮২ সালে প্রথমবারের মতো পামওয়েল আমদানী করেন। কিন্তু সেই তেলের মান সামান্য খারাপ ছিল, নতুন ব্যবসায়ী হিসেবে তিনি যেটা বুঝতেই পারেননি। ফল হলো ভয়াবহ। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য খালাস করতে পারেন না। এভাবে প্রায় দুই বছর ধরে তেলের ড্রামগুলো পড়ে থাকল বন্দরে। মোস্তফা কামাল প্রায় পথে বসে গেলেন।ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য ভাবলেন, পরিবহণ ব্যবসায় নামবেন। অনেক ভেবে চিন্তে গুলিস্তান থেকে মিরপুর-১১ নম্বর রুটে একটি ভক্স ওয়াগন গাড়ি নামালেন। কিন্তু বেশিদিন চালাতে পারলেন না। ড্রাইভার, হেলপারদের দৌরাত্মে পরাজিত হয়ে ব্যবসায় লস করলেন। কিন্তু হাল ছাড়ার মানুষ তো তিনি নন। তাই ঝুঁকলেন শিল্প প্রতিষ্ঠার দিকে।
 

১৯৭৬ সালে ট্রেডিং কোম্পানি হিসেবে ক্ষুদ্র পরিসরে যাত্রা শুরু করেছিল মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ড্রাস্ট্রিজ। এরপর ১৯৮৯ সালে প্রথম প্রতিষ্ঠা করেন মেঘনা ভেজিটেবল ওয়েল ইন্ডাস্ট্রি। ধীরে ধীরে বাড়াতে থাকেন ব্যবসার পরিধি। চাল, ডাল, তেল, চিনি, লবন, আটা, ময়দা, সুজি থেকে শুরু করে নানা ধরণের খাদ্য পণ্য, রাসায়নিক পদার্থ, জাহাজ নির্মাণ শিল্প, বিদ্যুৎ প্লান্টসহ ৪০টির বেশি শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন।


Noor E Alam
Assistant Officer (Legal & Estate) 
Daffodil International University (DIU)
email- le@daffodilvarsity.edu.bd

Offline Noor E Alam

  • Jr. Member
  • **
  • Posts: 94
  • Test
    • View Profile
তার আরো অজানা অবদান
« Reply #7 on: January 02, 2019, 02:30:22 PM »
 দেশের প্রথম অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা
বাংলাদেশে প্রথম বেসরকারি উদ্যেগে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করেছেন মোস্তফা কামাল। ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে ইতিমধ্যে পাঁচটি ইন্ডাস্ট্রি পণ্য উৎপাদন শুরু করেছে। দেশ পেরিয়ে বিদেশে যাচ্ছে মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের পণ্য। এ মুহূর্তে বিশ্বের ১১টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে মেঘনার ব্র্যান্ড ‘ফ্রেস’ পণ্য।

নিজস্ব বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট
মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের রয়েছে নিজস্ব বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট। এই প্ল্যান্ট থেকে প্রতিদিন ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়। এরমধ্যে নিজের কারখানার প্রয়োজন মিটিয়ে ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরকারের কাছে বিক্রি করে মেঘনা গ্রুপের পাওয়ার প্ল্যান্ট।

মোস্তফা কামালের সামাজিক দায়বদ্ধতা
সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতাকে কখনোই ভুলে থাকেন না মোস্তফা কামাল। তিনি বলেন, কুমিল্লায় নিজের এলাকায় গরীব-দুঃখী মানুষেদের মধ্যে বস্ত্র বিতরণ, আর্থিক সহযোগিতাসহ নানা ধরনের মানবহিতৈষী কাজ করতেন। একদিন মোস্তফা কামালের বাবা বললেন, মানুষকে শিক্ষিত করার কাজে তোমার কিছু অর্থ ব্যয় করো। বাবার কথাকে শিরোধার্য মেনে নিয়ে তিনি শিক্ষা প্রসারে কাজ শুরু করেন। কুমিল্লার নিজ এলাকায় বাবার নামে কলেজ, মায়ের নামে মাদ্রাসাসহ বেশ কিয়েকটি স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন।

Noor E Alam
Assistant Officer (Legal & Estate) 
Daffodil International University (DIU)
email- le@daffodilvarsity.edu.bd

Offline Noor E Alam

  • Jr. Member
  • **
  • Posts: 94
  • Test
    • View Profile

কাজ করার ইচ্ছাই প্রধান উল্লেখ করে দেশ বরেণ্য এই উদ্যোক্তা বলেন, উদ্যোক্তা হতে হলে প্রবল ইচ্ছা শক্তি থাকতে হবে। ইচ্ছার ওপর ভর করে সাহসিকতার সঙ্গে ঝুঁকি নিতে হবে। ব্যর্থ হবার ভয়ে কাজ করা থেকে বিরত থাকলে কখনো সফল হওয়া  যাবে না। নিজেই নিজের শিক্ষক হতে হবে এবং নিজেকে গাইড করতে হবে। এসময় তিনি উদ্যোক্তা হতে আগ্রহী শিক্ষার্থীদেরকে তিনটি পরামর্শ দিয়ে বলেন, কথা দিয়ে কথা রাখা, সততা এবং মানুষকে সম্মান করতে জানলে সফলতা আপনি আপনি চলে আসে। এ তিনটি জিনিসই তাঁকে ব্যবসায়ী হিসেবে সফল করেছে বলে মনে করেন মোস্তফা কামাল।

দেশপ্রেম ধারণ করো
তরুণ শিক্ষার্থীদেরকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মোস্তফা কামাল। তিনি বলেন, এই দেশটা তোমার, একে গড়ে তোলার দায়িত্বও তোমার। বেঁচে থাকার জন্য ক্যারিয়ার হিসেবে যে পেশাতেই থাকো না কেন, দেশের জন্য কিছু করো। বাংলাদেশ একটি অপার সম্ভাবনাময় দেশ। এ দেশের সকল সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারলে বাংলাদেশ খুব দ্রুতই সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও তাইওয়ানের চেয়ে উন্নত দেশে পরিণত হবে। এজন্য নিজের ইচ্ছাশক্তি, মেধা ও পরিশ্রমকে ব্যবহার করতে তরুণ শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান এই সফল শিল্পোদ্যোক্তা।

কলা গাছ নয়, তালগাছ হও
তরুণ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেন, কলাগাছ খুব দ্রুত বড় হয়, আবার খুব সামান্য ঝড়েই উপড়ে যায়। বিপরীতে তালগাছ খুব ধীরে ধীরে বড় হয় কিন্তু শত ঝড় ঝাপ্টাতেও পড়ে যায় না। অতএব তালগাছ হও, কলা গাছ হয়ো না

ভবিষ্যতের ভাবনা এখনই ভাবো
ভবিষ্যতের ভাবনা এখনই ভাবতে পারাই উদ্যোক্তার হওয়ার প্রধান শর্ত বলে মনে করেন মোস্তফা কামাল। তিনি বলেন, আগামীকাল কী হবে, কী প্রয়োজনীয়তা মানুষ অনুভব করবে, কী সমস্যার মুখোমুখি হবে সেসব এখনই ভাবো। তারপর সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নাও। উদ্যোক্তা হওয়ার এটাই একমাত্র শর্ত। উদ্যোক্তাদের অন্তর্দৃষ্টি থাকতে হয় এবং ভবিষ্যৎ দেখতে পারার যোগ্যতা থাকতে হয়। তা না হলে উদ্যোক্তা হওয়া কঠিন।

বিনয়ী হও, নিচে তাকাও
মোস্তফা কামাল বলেন, অহংকারী হয়ো না, উদ্ধত হয়ো না। বিনীয়ী হও। মানুষকে সম্মান করতে শেখো। আর দৃষ্টিটাকে সব সময় নত রাখ, নিচের দিকে তাকাও। তোমার চেয়েও যারা নিম্নবর্তী তাদের দুঃখ-বেদনা অনুভর করার চেষ্টা করো। তাহলে জীবনে সফলতা আসবে দ্রুত। বাবার সম্পর্কে নিজের অনুভূতি জানাতে গিয়ে এই প্রসঙ্গের অবতারণা করেন মোস্তফা কামালের জ্যেষ্ঠ কন্যা ও মেঘনা গ্রুপের পরিচালক তাহমিনা মোস্তফা। তিনি বলেন, বাবা আমাদেরকে সব সময় বলতেন, নিচের দিকে তাকাবা। তিনি আমাদেরকে কখনোই প্রাচুর্য়ের মধ্যে বড় করেননি। অত্যন্ত সাধারণভাবে বড় হয়েছি আমরা। বাবা যে এত বড় মাপের একজন মানুষ, সেটা কখনোই বুঝতে দেননি। নিজের দম্ভ বা অহংকার প্রকাশ পায় এমন কোনো কথা বা কাজ তিনি কখনোই করেন না, আমাদেরকেও করতে দেন না।
Noor E Alam
Assistant Officer (Legal & Estate) 
Daffodil International University (DIU)
email- le@daffodilvarsity.edu.bd

Offline Noor E Alam

  • Jr. Member
  • **
  • Posts: 94
  • Test
    • View Profile

বাবাকে কী অপরিসীম শ্রদ্ধা করেন মোস্তফা কামালের সন্তানেরা, তার কিছুটা প্রমাণ পাওয়া গেল সেদিনের ইন্ডাস্ট্রি একাডেমিয়া লেকচার সিরিজ অনুষ্ঠানে। বাবার সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে অভূতপূর্ব এক ঘটনা ঘটালেন মোস্তফা কামালের জ্যেষ্ঠ কন্যা ও মেঘনা গ্রুপের পরিচালক তাহমিনা মোস্তফা। মঞ্চে পোডিয়ামের সামনে দাঁড়ানো বাবাকে বললেন, ‘আমার মোবাইলে একটু কল দাও তো, আব্বু।’ মেয়ের এমন অাকস্মিক আহ্বানে হতবাক হয়ে কিছুক্ষণ থাকিয়ে থাকেন মোস্তফা কামাল। তারপর নিজের মোবাইল থেকে মেয়ের মোবাইলে সংযোগ দিলেন। আর সঙ্গে সঙ্গে মেয়ের ফোনে ফায়ার এলার্মের মতো সংকেত বেজে উঠল! এরপর আবেগাপ্লুত কণ্ঠে তাহমিনা মোস্তফা বলেন, তিনি যেখানে যে অবস্থাতেই থাকুন না কেন, বাবার ফোন কল মিস করার সাধ্য তার নেই। বাবা তাঁর জীবনের সব থেকে জরুরি মানুষ। তাই নিজের মোবইল ফোনে বাবার নম্বরটা ইমার্জেন্সি রিংটোন দিয়ে সেভ করে রেখেছেন।বাবার প্রতি মেয়ের এই বিরল সম্মান প্রদর্শন দেখে মুহূর্মুহ করতালিতে ফেটে পড়ে পুরো মিলনায়তন।

মোস্তফা কামাল সম্পর্কে তাহমিনা মোস্তফা আরো বলেন, বাবাই তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা। তিনি কঠোর নিয়ম শৃঙ্খলার মধ্যে আমাদেরকে বড় করেছেন। সেই ছোটবেলায় নিয়মগুলো অসহ্য মনে হলেও এখন বুঝতে পারি ওই নিয়মগুলো আমার জীবনে সফলতা এনে দিয়েছে।

তাহমিনা মোস্তফা বলেন, বাবা যেকোনো পরিস্থিতে স্বাভাবিক থাকেন। কোনো কিছুতেই বিচলিত হন না। এই বিরল গুণ আয়ত্ত্ব করা খুবই কঠিন। বাবার এই বিরল গুণ তিনি আয়ত্ত্বে আনার চেষ্টা করে যাচ্ছেন বলে জানান।


বাবা সব সময় বলেন ‘কমিটমেন্ট রক্ষা করো
শুধু বড় মেয়েই বাবাকে মূল্যায়ন করবেন, আর ছোট মেয়ে চুপচাপ বসে থাকবেন তা তো হয় না! তাই মাইক্রোফোন হাতে তুলে নেন মোস্তফা কামালের দ্বিতীয় কন্যা ও মেঘনা গ্রুপের অন্যতম পরিচালক তানজিমা মোস্তফা। আবেগভরা কণ্ঠে বলেন, বাবার উপদেশ, পরামর্শ তিনি সব সময় মেনে চলেন। তাঁর ভাষায়, ‘বোস্টনের বেবসন কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন শেষ করে যখন মেঘনা গ্রুপে যোগ দিলাম তখন বাবা বললেন, বইয়ের পড়াশোনা আর বাস্তবজীবন কিন্তু সম্পূর্ণ আলাদা। জীবনে এমন অনেক সিদ্ধান্ত নিতে হবে যা তুমি বইয়ের পাতায় কখনোই পাবে না। এই উপদেশ আমি সব সময় মনে রাখি।’

বাবা মোস্তফা কামালের আরো একটি উপদেশ শিক্ষার্থীদের সামনে উল্লেখ করেন তানজিমা মোস্তফা। তিনি বলেন, বাবার আরো একটি উপদেশ আমি সবসময় মনে রাখি। সেটা হচ্ছে, ‘কথা দিয়ে কথা রাখবা। কোম্পানির ক্ষতি হলেও কমিটমেন্ট রক্ষা করবা। এটাই সফল হওয়ার একমাত্র চাবি।’ সাড়ে আট বছরের কর্মজীবনে একবারের জন্যও তিনি বাবার এই উপদেশ ভোলেননি বলে জানান তানজিমা মোস্তফা।

‘বাবার কাছ থেকে সবচেয়ে বড় যে শিক্ষাটা নিয়েছি সেটা হচ্ছে কঠোর পরিশ্রম। বাবা এখনো আঠারো ঘণ্টার বেশি কাজ করেন। ছুটির দিনগুলোতে বাবাকে যদি কোথাও ঘুরতে যাওয়ার কথা বলি, তখন বাবা বলেন কাজ ছাড়া থাকলে নাকি তিনি অসুস্থ হয়ে পড়বেন। তাই সব সময় কাজ নিয়েই থাকেন।’ এভাবেই বাবাকে মূল্যায়ন করলেন মোস্তফা কামালের দ্বিতীয় মেয়ে তানজিমা মোস্তফা।
Noor E Alam
Assistant Officer (Legal & Estate) 
Daffodil International University (DIU)
email- le@daffodilvarsity.edu.bd

Offline Noor E Alam

  • Jr. Member
  • **
  • Posts: 94
  • Test
    • View Profile

পিয়াস অমি নামে এক শিক্ষার্থী মোস্তফা কামালের কাছে জানতে চান, আপনাদের সময় এবং আমাদের সময়ের মধ্যে বিস্তর পার্থক্য। এই ডিজিটাল যুগে আমরা নিজেকে কীভাবে উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরি করব?

জবাবে মোস্তফা কামাল বলেন, উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য নিজের ইচ্ছাশক্তিই যথেষ্ট। ইচ্ছাশক্তি নিয়ে কঠোর পরিশ্রম করলে অবশ্যই সফল হওয়া যায়। তবে সময়টা যেহেতু ডিজিটাল, সেহেতু প্রযুক্তির জ্ঞানে সমৃদ্ধ হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। প্রযুক্তি বিষয়ে এখন বিভিন্ন ধরনের সংক্ষিপ্ত কোর্স করা যায়। তরুণ উদ্যোকর্তাদের এসব করার আহ্বান জানান মোস্তফা কামাল।
লতান মাহমুদ নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের দেশে বিদ্যুৎ নিয়ে অনেক শিল্প কারখানাই সমস্যায় আছে। সরকারের কাছে তারা প্রতিনিয়ত বিদ্যুৎ চাইছে। এরকম পরিস্থিতিতে আপনি আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য নিজস্ব পাওয়ার প্ল্যান্ট করেছেন। বিষয়টি অভাবনীয় এবং বিস্ময়কর! এমন ভাবনা আপনার মাথায় কীভাবে এলো?

মোস্তফা কামাল মৃদু হেসে বলেন, একটা সময় দেখলাম, দিনে প্রায় চার-পাঁচ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। উৎপাদন ব্যহত হয়। তাছাড়া লো ভোল্টেজ, হাই ভোল্টেজ এসব কারণে প্রায়ই যন্ত্রপাতি নষ্ট হতে শুরু করল। এক একটি যন্ত্রের দাম লাখ লাখ টাকা। তখন ভাবলাম, নিজস্ব পাওয়ার প্ল্যান্ট ছাড়া উপায় নেই। সেই ভাবনা থেকেই ২০১৫ সালে নিজস্ব পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপন করি।
Noor E Alam
Assistant Officer (Legal & Estate) 
Daffodil International University (DIU)
email- le@daffodilvarsity.edu.bd

Offline Noor E Alam

  • Jr. Member
  • **
  • Posts: 94
  • Test
    • View Profile
মেঘনা গ্রুপের মার্কেটিং বিভাগের নির্বাহী পরিচালক আসিফ ইকবাল শিক্ষার্থীদেরকে মার্কেটিং সম্পর্কে নানা পরামর্শ দেন। ভাইরাল মার্কেটিং সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ভাইরাল মার্কেটিংয়ের ভালো দিক আছে, আবার খারাপ দিকও আছে। ভালো দিক হচ্ছে খুব তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে পড়ে। আর খারাপ দিক হচ্ছে, আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে ভালো কিছুকে ভাইরাল করা বেশ কঠিন। কিন্তু গুজব, অসত্য বা নেতিবাচক কিছু উপস্থাপন করলে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তাই ভাইরাল মার্কেটিং বিষয়ে আমাদের খেয়াল রাখা উচিত যে এমন কিছু ভাইরাল না করা যেটা কোম্পানির ইমেজ বা ব্র্যান্ডকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এসময় তিনি ফ্রেস মিল্কের উদাহরণ দিয়ে বলেন, ফ্রেস মিল্কের একটি ট্যাগ লাইন হচ্ছে ‘আমি জিতলে জিতে যায় মা’। এটি ইতিবাচক ভাইরাল মার্কেটিংয়ের একটি অন্যতম উদাহরণ।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি আরো বলেন, ইতিবাচক ভাইরাল মার্কেটিংয়ের জন্য কনভার্সেশনাল ভ্যালুকে গুরুত্ব দিতে হবে। কনভার্সেশনাল ভ্যালু—অর্থাৎ কথপোকথনের গুরুত্বকে আত্মস্থ করতে পারলে ভাইরাল মার্কেটিংয়ে সফল হওয়া কঠিন কিছু নয়।
Noor E Alam
Assistant Officer (Legal & Estate) 
Daffodil International University (DIU)
email- le@daffodilvarsity.edu.bd

Offline Noor E Alam

  • Jr. Member
  • **
  • Posts: 94
  • Test
    • View Profile
মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামালের সেদিনের বক্তব্য লাইভ সম্প্রচার করা হয় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ফেসবুক পেজ থেকে। সেখানেও উচ্ছসিত মন্তব্য করেন অনেক দর্শক। যেমন মো. আরিফ বিল্লাহ নাছিম লিখেছেন, আমি স্যারের কোম্পানিতে আছি ট্রেডিংয়ে ফ্রেশ সিমেন্ট ব্র্যান্ডের নির্বাহী (বিক্রয় ও বিপণন) হিসাবে। স্যার আমার দেখা একজন সফল মানুষ।


জাফর ইকবাল নামের একজন লিখেছেন, খুবই অনুপ্রেরণাদায়ী বক্তব্য। শেখার আছে অনেক কিছু। অপরদিকে নুসরাত জাহান লিখেছেন, জীবনে অনেক পরিশ্রম করেছেন স্যার। আপনাকে অভিনন্দন।

জাকির হোসেন নামের একজন লিখেছেন, ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে অনেক তরুণ শিক্ষার্থী তাঁর বক্তব্য শুনছে। নিশ্চয় এই তরুণ প্রজন্ম মোস্তফা কামালের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখতে পারবে।


ক্যাম্পাস টিভির লাইভ অনুষ্ঠানে দর্শক মন্তব্য
ডিআইইউ ইন্ডাস্ট্রি একাডেমিয়া লেকচার সিরিজের সেদিনের অনুষ্ঠান ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাস টিভিতে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। সরাসরি অনুষ্ঠানে দেশ বিদেশের বিপুল সংখ্যক দর্শক তাঁকে অভিনন্দ জানান এবং বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করেন। যেমন ফিনল্যান্ড থেকে মি. রাস্কিন লিখেছেন, আপনি বিশ্বখ্যাত হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটিতে বক্তৃতা দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। এজন্য আপনাকে অভিনন্দন জানাই। সেদিনের অনুভূতি কী একটু জানাবেন?

উত্তরে মোস্তফা কামাল বলেন, আমার বক্তব্যের পুরো ভিডিও ইউটিউবে আছে। আগ্রহীরা সেটা দেখতে পারেন। আমার যদ্দুর মনে পড়ে, এরকম বলেছিলাম যে বাংলাদেশ একটি অপার সম্ভাবনাময় দেশ। এবং একইসঙ্গে বিনিয়োগবান্ধব। আপনারা আমাদের দেশে আসুন। বিনিয়োগ করুন।

মো. আবু তাহের নামের একজন লিখেছেন, অনেক সালাম জনাব মোস্তফা কামালকে। আমরা গর্বিত আপনি আমাদের প্রিয় মাটি চৌদ্দগ্রামের মেধাবী সন্তান। আপনি কর্মবীর, আপনি সততার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, আপনি সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সফল মানুষ। বাংলাদেশে ব্যবসা ও শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠিত করে কর্ম সংস্থান সৃষ্টিতে আপনি বিরল মেধার পরিচয় দিয়েছেন। এখন আমরা ভাবতে পারি সে সময় বেশী দূর নয় আমরা সিংগাপুরসহ অনেক উন্নত দেশকে অতিক্রম করতে পারি। আপনার সফল এ কাজটি একঝাঁক মেধাবী তারুণ্য আপনার পাশে আছে। সকল মহতী উদ্যোগ আপনার সফলতা আসুক, কামনা করি। আপনি সুস্থ থাকুন, ভাল থাকুন মানুষের কল্যাণে, মানবতার কল্যাণে সোনার বাংলা বিনির্মাণে।


আব্দুস সাত্তার প্রধান লিখেছেন, মেঘনা গ্রুপের কর্ণধার মোস্তফা কামাল, সত্যিই তিনি একজন বড় মনের মানুষ, তার জন্য আল্লাহর কাছে দীর্ঘায়ু কামনা করছি।

শেখ মো. রফিক বলেছেন, শরীরের ঘাম একদিন দিবে দাম/ শ্রম ও সততাই মহান/ তিলেতিলে গড়া মেঘনা গ্রুপ, এটাই তার প্রমাণ।

গোকুল চক্রবর্তী লিখেছেন, স্যার সততা আর কঠোর পরিশ্রমই ছিলো আপনার মূলধন। আপনার জয হবে সবসময়।

এরকম আরো অসংখ্য মন্তব্য ছিল ক্যাম্পাসি টিভির লাইভ অনুষ্ঠানে।


অনুষ্ঠানের শেষ মুহূর্তে অনুষ্ঠান শুরুর সময়ে তোলা ছবি উপহার দিচ্ছেন ড. মো. সবুর খান ও উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইউসুফ এম ইসলাম।

Noor E Alam
Assistant Officer (Legal & Estate) 
Daffodil International University (DIU)
email- le@daffodilvarsity.edu.bd

Offline Noor E Alam

  • Jr. Member
  • **
  • Posts: 94
  • Test
    • View Profile
Documentary on DIU Industry Academia lecture series, 13- 30 July 2018 Link:- [ Invalid YouTube link ]


এটিএন বাংলা:


একাত্তর টেলিভিশন:


সময় টেলিভিশন:


ডিবিসি টেলিভিশন:


চ্যানেল আই:











Noor E Alam
Assistant Officer (Legal & Estate) 
Daffodil International University (DIU)
email- le@daffodilvarsity.edu.bd