Religion & Belief (Alor Pothay) > Quran

A verse in life changing

(1/1)

rumman:
আমাদের সমাজ যেসব রোগে প্রতিনিয়ত আক্রান্ত হয়। যে রোগগুলো আমাদের আত্মার সঙ্গে মিশে আছে, কিন্তু অনেক সময় রোগগুলো দেখা যায় না—তার একটি হলো হিংসা।

হিংসা মানুষের একটি আত্মিক রোগ। মরণ-ব্যাধির চেয়েও ভয়ঙ্কর। নেক আমল ও পুণ্যকর্ম বরবাদ করে দেয়। আত্মাকে দুষিত ও কলুষিত করে। হিংসার ব্যাপারে আল্লাহর রাসুল (সা.) সর্বদা সতর্ক করতেন। এই রোগের ক্ষতির দিকগুলো বারবার বর্ণনা করেছেন। বিভিন্নভাবে এবং বিভিন্নভাবে আঙ্গিকে এ রোগ থেকে বেঁচে থাকতে আদেশ দিয়েছেন। এ রোগের ক্ষতির স্থানগুলো চিহ্নিত করেছেন। পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে হিংসা থেকে বেঁচে থাকার জোর নির্দেশনা এসেছে।

 আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘হে মুমিনগণ! পুরুষগণ যেন অপর পুরুষেদেরকে উপহাস না করে। তারা (অর্থাৎ যাদেরকে উপহাস করা হচ্ছে) তাদের চেয়ে উত্তম হতে পারে এবং নারীগণও যেন অপর নারীদেরকে উপহাস না করে। তারা (অর্থাৎ যে নারীদেরকে উপহাস করা হচ্ছে) তাদের চেয়ে উত্তম হতে পারে। তোমরা একে অন্যকে দোষারোপ করো না। এবং একে অন্যকে মন্দ উপাধিতে ডেক না। ঈমানের পর গোনাহের নাম যুক্ত হওয়া বড় খারাপ কথা। যারা এসব থেকে বিরত না হবে তারাই জালেম।’ (সুরা হুজুরাত, আয়াত : ১১)

আয়াতে বলা হয়েছে, কোনো পুরুষ বা নারী অন্যকোন পুরুষ বা নারীকে ‘সাখার’ না করে। ‘সাখার’ অর্থ হলো হিংসা-বিদ্বেষ, দোষারোপ, উপহাস ও বিদ্রুপ করা ইত্যাদি। সুতরাং এ আয়াত থেকে আমরা জানতে পারলাম, একে অপরে হিংসা করা যাবে না, অন্যের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করা যাবে না, অন্যকে উপহাস করা যাবে না, অন্যকে নিয়ে হাসি-তামাশা ও বিদ্রুপ করা যাবে না। এই আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসির কুরাইরিতে এসেছে, ‘আল্লাহ তায়ালা মানুষকে আদেশ দিচ্ছেন যে, মানুষকে ঘৃণা হেয়জ্ঞান অবজ্ঞা না করতে, গিবত না করতে, অধিকার সম্পর্কে অপমান না করতে ইত্যাদি।’

সমাজে এক শ্রেণির লোক রয়েছে যাদের কাজই হলো, কে করলো, তার কি দোষ আছে—তা খুটে খুটে বের করা। যদি মানুষ নিজেদের মধ্যকার দোষগুলো তালাশ করতে থাকে, তাহলে কেউ নির্দোষ বা বিপদমুক্ত থাকতে পারবে না। বরং সমাজের স্থিতি সম্পূর্ণরূপে ভেঙে যাবে।

অন্যের দোষ তালাশ করা এমন একটি রোগ—যা রোগীকে শান্তি তো দেয়ই না, বরং সমাজকেও অশান্তির অনলে জ্বালায়। আয়াতে অন্যকে মন্দ উপাধিতে ডাকা থেকে বেঁচের থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাফসিরে জালালাইনে বলা হয়েছে, ‘তোমরা একে অপরকে এমন উপাধিতে ডেকো না যা অপছন্দনীয়। যেমন হে কাফের! হে ফাসেক! ইত্যাদি।’ (তাফসিরে জালালাইন)

মন্দ উপাধির কতগুলো রূপ আছে। কারো নাম ব্যঙ্গ করে ডাকা। নামের উচ্চারণে ব্যঙ্গাত্মক সুর বা শব্দ করা। নামের আগে পরে ব্যঙ্গাত্মক শব্দ জুড়ে দেওয়া ইত্যাদি।

আয়াতে আল্লাহ তাআলা আরো বলেছেন, ঈমান গ্রহণ করার পর মন্দ কথা বড়োই পাপের বিষয়। কোনো ঈমানদারের ভূষণ হতে পারে না যে, সে অন্যকে বিদ্রুপ করবে, অন্যকে দোষারোপ করবে, অন্যকে মন্দ নামে ডাকবে।

ঈমান গ্রহণের পরও যে এই সব ঘৃণিত কাজ পরিহার করবে না—সে অবশ্যই জালেম শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত। আলোচনা থেকে আমাদের কাছে প্রতীয়মান হলো, কোনো ঈমানদার অন্য কাউকে বিদ্রুপ, উপহাস, হেয়জ্ঞান ও হাসি-তামাশা করতে পারে না। নিজেরা একে অপরকে দোষারোপ করা বা দোষারোপের পেছনে লেগে থাকে না। যদি আমরা সকলেই জীবনের ও সমাজের সকল ক্ষেত্রে আলোচ্য আয়াতটি পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন করতে পারি, তাহেল আমার নিজের জীবন যেমন আশান্তি মুক্ত হবে, তেমনি সমাজও হবে অশান্তিমুক্ত একটি সুন্দর সুখি সমাজ। আল্লাহ পাক আমাদের এ আয়াতের ওপর আমল করা তৌফিক দান করুন। আমিন।
Source:  হাবীবুল্লাহ সিরাজ, অতিথি লেখক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

Navigation

[0] Message Index

Go to full version