ক্যান্সার শনাক্তে মানুষের ‘জিনোম সিকোয়েন্সিং‘ হবে দেশেই

Author Topic: ক্যান্সার শনাক্তে মানুষের ‘জিনোম সিকোয়েন্সিং‘ হবে দেশেই  (Read 1866 times)

Offline imran986

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 375
  • If you don't try, Allah will not help you too
    • View Profile

মানুষের জীনবিন্যাস লিপিবদ্ধ করার মধ্যে দিয়ে ক্যান্সারসহ অন্যান্য বংশগত রোগের কারণ-ধরন নির্ণয়ে বাংলাদেশেই প্রতিষ্ঠা হলো ‘জিনোম সিকোয়েন্সিং ল্যাব’।

মঙ্গলবার বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদে (বিসিএসআইআর) ‘হিউম্যান হোল জিনোম সিকোয়েন্সিং’ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান। 

এই ল্যাবের বিশেষ প্রযুক্তির মাধ্যমে মাত্র ৩ দিনে ৪৮ জন মানুষের জিনের গঠন বৈশিষ্ট্য জানা যাবে বলে বিসিএসআইআর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

ইয়াফেস ওসমান বলেন, “এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হল, বাংলাদেশের মানুষের জিনোমে নতুন ক্যান্সার মার্কারসহ অন্যান্য জেনেটিক রোগের মার্কার খুঁজে বের করা। অজানা রোগ নির্ণয়ও এই প্রকল্পের উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে একটি।”

জিনবিন্যাস নির্ণয়ের পরীক্ষা-নিরীক্ষায় দেশ থেকে বহু নমুনা বিদেশে পাঠাতে হওয়ায় বাংলাদেশের রাজস্ব হারানোর কথা বলেন তিনি।

“এই ল্যাব প্রতিষ্ঠার ফলে এখন আর কোটি টাকা খরচ করে যেতে হবে না বিদেশ,” বলেন মন্ত্রী।

এর আগে পাট ও ইলিশের জিআই স্বীকৃতি পেতে বাংলাদেশ থেকে জিনোম সিকোয়েন্স করা হয়েছিল বিদেশের ল্যাবে।

ইয়াফেস ওসমান বলেন,  “জিনোম সিকোয়েন্স ল্যাব প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এখন বাংলাদেশেই সে প্রযুক্তি নিয়ে আসা সম্ভব।”

এই ল্যাবের বিশেষজ্ঞরা জানান,  বাংলাদেশের মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলো জিনোম সিকোয়েন্সিং থেকে রোগ অনুযায়ী চিকিৎসাধীন ব্যক্তিকে তার উপযোগী ওষুধ প্রয়োগ করতে পারবেন।  অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োগও করা যাবে নিখুঁতভাবে।

বিসিএসআইআরের বিজ্ঞানীরা বলছেন,  “এ প্রযুক্তি শুরু হওয়ার পর চিকিৎসা খাতে সময় ও অর্থ দুইই যেমন বেঁচে যাবে, তেমনিভাবে রোধ করা যাবে জেনেটিক তথ্য পাচারও।“

 জিনোম সিকোয়েন্স ল্যাবের প্রধান মো. সেলিম খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,  “বিসিএসআইআরে সাম্প্রতিক বিশ্বের সবচেয়ে অত্যাধুনিক নোভাসেক-৬০০০ মেশিন দিয়ে প্রাথমিকভাবে মানুষের ক্যান্সার ও বংশগত রোগ সম্পূর্ণ জিনোম সিকোয়েন্স করা হবে। এতে খুব সহজে, নির্ভুলভাবে এবং অল্প খরচে যে কোনো জেনেটিক রোগ শনাক্ত করা যাবে।” 
যুক্তরাষ্ট্রের ইলুমিনা প্রতিষ্ঠানের নোভাসেক-৬০০০ মেশিন কিনতে বিসিএসআইআরের খরচ হয়েছে ১৪ কোটি টাকা।

সহজে রোগ শনাক্ত করতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের জেনেটিক রোগের মার্কার বা ধরন ও লক্ষণের সঙ্গে দেশের রোগীদের জেনেটিক রোগের মার্কারগুলো মিলিয়ে একটি মাইক্রো চিপে তথ্যাগার করা হবে। 

সেলিম খান বলেন, “প্রতি জন মানুষের সাড়ে ৩ টেরাবাইট ডেটা প্রডিউস হয়। সেক্ষেত্রে এই মেশিনে ১৬৮ টেরাবাইট ধারণ করা যাবে।”

এ প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জিনোম রিসার্চ ল্যাবের প্রধান মাকসুদ হোসেন।

নোভাসেকের মাধ্যমে জিনোম সিকোয়েন্সের মাধ্যমে অ্যান্টিবায়োটিক চিকিৎসাতেও পরিবর্তন আসবে বলে মনে করেন তিনি।

মাকসুদ  বলেন, “ হিউম্যান জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের পাশাপাশি আমরা ব্যাকটেরিয়ারও সিকোয়েন্সিং করতে পারব। তখন অ্যান্টিবায়োটিক চিকিৎসা আরো স্পেসিফিক হবে।”

এখন  রোগীর শরীরে গড়পড়তা অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা হয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, ”আলাদাভাবে  জিনোম সিকোয়েন্স পেলে তার জন্য অ্যাপ্রোপ্রিয়েট অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা সম্ভব হবে, পার্সোনালাইজ মেডিসিন প্রয়োগ করাও সহজতর হবে।”

প্রাথমিক ধাপে সেলিম খান ও তার ছয় সহযোগী ক্যান্সার রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ৪০ জন ব্রেস্ট ক্যান্সারের প্রাথমিক রোগী নিয়ে তারা কাজ শুরু করেছেন।

মঙ্গলবার তাদের রিসার্চ ল্যাবে ২০ জন রোগীর জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের কাজও তারা শুরু করেছেন।

এই রোগীদের রক্ত সংগ্রহ করে জিনোম সিকোয়েন্স বার করার কাজ শুরু করেছেন তারা।

সেলিম খান বলেন,  “তাদের মধ্যে  আমরা যদি ক্যান্সারের কোনো ইউনিক মার্কার পেয়ে যাই, তাহলে অন্যান্য ক্যান্সার নির্ণয়ও আমাদের জন্য সহজতর হবে।”

এই রিসার্চ ল্যাবে যে কেউ জিনোম সিকোয়েন্স করাতে চাইলে খরচ হবে ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা।  তবে ৪৮ জন রোগীর জিনোম সিকোয়েন্স এক সঙ্গে করলে ব্যক্তিগত খরচ হবে প্রায় দুই লাখ টাকা বলে জানিয়েছেন ল্যাব কর্তৃপক্ষ।

বিসিএসআইআরের ল্যাবে আনা এই নোভাসেক মেশিনের মাধ্যমে মানুষের জিনোম সিকোয়েন্স করা গেলেও উদ্ভিদ ও অন্যান্য জীবজন্তুর জিনোম সিকোয়েন্স বের করতে প্রয়োজন হবে আলাদা প্রযুক্তির।

ল্যাব প্রধান সেলিম খান বলেন, বিসিএসআইআরে জিনোম রিসার্চ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করে সেখানে আলাদা ইউনিটে উদ্ভিদ ও অন্যান্য জীবজন্তু নিয়ে কাজ করবেন তারা।

https://bangla.bdnews24.com/science/article1582674.bdnews
...........................
Md. Emran Hossain
Coordination Officer
Department of Nutrition and Food Engineering (NFE)
Daffodil International University