Faculties and Departments > Life Science
ক্যাফেইনমুক্ত চা-কফি!
(1/1)
tahmina:
কেউ যদি দাবি করেন যে স্বাদ ও মান অক্ষুণ্ন রেখে অল্প ক্যাফেইনের বা একেবারেই ক্যাফেইন নেই—এমন চা–পাতা দিতে পারবেন আপনাকে, কেমন লাগবে আপনার? চায়নিজ একাডেমি অব অ্যাগ্রিকালচারাল সায়েন্সের চা গবেষণা প্রতিষ্ঠানের লিয়াং চেন ও জিং-কিয়াং জিন তেমন দাবিই করেছেন। তাঁরা বলছেন, দক্ষিণ চীনের ফুজিয়ান প্রদেশে দুর্গম এলাকায় বুনো এই চাগাছ রয়েছে। জার্নাল অব অ্যাগ্রিকালচারাল অ্যান্ড ফুড কেমিস্ট্রি সাময়িকীতে তাঁরা লিখেছেন, ওই চাগাছ শুধু প্রাকৃতিকভাবেই ক্যাফেইনমুক্ত নয়, এতে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী কিছু ঔষধি উপাদানও রয়েছে।
ক্যাফেইনমুক্ত চা এই অবস্থা থেকে মুক্তি দিতে পারে, তবে সে ক্ষেত্রেও বেশ কিছু অসুবিধা রয়েছে। চা–পাতাকে ক্যাফেইনমুক্ত করতে হলে হয় অতি উচ্চ তাপমাত্রায় কার্বন ডাই–অক্সাইডের মধ্যে পাতাগুলোকে নিমজ্জিত করতে হয় অথবা গরম জলে চা–পাতা থেকে নির্যাস বের করে নিতে হয়। এ প্রক্রিয়ায় বেশির ভাগ ক্যাফেইনমুক্ত করা গেলেও এর ফলে চায়ের উপকারী উপাদান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্যাফেইনমুক্ত কফির ব্যাপারে অনেকের মত হচ্ছে, এতে কফির দারুণ গন্ধটি মাটি হয়ে যায়!
ইকোনমিস্ট সাময়িকীর এক প্রতিবেদনে এই চা সম্পর্কে বলা হয়েছে, এমন আবিষ্কার এটাই প্রথম নয়; এর আগে ২০১১ সালে পাশের গুয়াংদং প্রদেশে এমন একটি চাগাছের খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল, যার মধ্যে স্বল্প মাত্রার ক্যাফেইন রয়েছে বা একেবারেই নেই। গাছটি ‘ক্যামেলিয়া টিলোফেলা’ নামে পরিচিত, এতে এমন ধরনের যৌগিক উপাদান রয়েছে, যা অতিরিক্ত মেদ কমানোর চিকিৎসায় কাজে লাগবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এখনো এ বিষয়ে গবেষণা চলছে। এই চাগাছ চীনের উদ্ভিদবিজ্ঞানীদের বিশাল দেশটির দুর্গম এলাকার আনাচকানাচ খুঁজতে আরও অনুপ্রাণিত করেছে। সবশেষ চাগাছটি সেই খোঁজাখুঁজির ফল।
নতুন আবিষ্কৃত এই চাগাছকে স্থানীয়ভাবে বলা হচ্ছে হোংইয়াচা। এটা শুধু সমুদ্রপৃষ্ট থেকে ৭০০-১০০০ মিটার উচ্চতার পাহাড়ি গ্রামগুলোর অল্প কিছু জায়গায় জন্ম নেয়। হোংইয়াচাকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে গবেষণাগারে পরীক্ষা–নিরীক্ষা করা হয়নি। ওই অঞ্চলের মানুষ যুগ যুগ ধরে এই চা ব্যবহার করে আসছে। তাদের দাবি, এটা ঠান্ডা, জ্বর ও পেটের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
ড. চেন ও তাঁর সহকর্মীরা নিশ্চিত যে হোংইয়াচায় কম পরিমাণের ক্যাফেইন রয়েছে। তরল পদার্থকে ক্রোমাটোগ্রাফি ও স্পেকট্রোমেট্রি করাসহ নানা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাঁরা দেখতে পেয়েছেন, ওই চাগাছের পাতা ও কুঁড়িতে অন্যান্য যৌগিক পদার্থেরও বিন্যাস রয়েছে। এর মধ্যে এমন উপাদান আছে, যা টিউমার বৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে তরল পদার্থ থেকে এর যৌগিক বা মিশ্র পদার্থের উপাদানকে পৃথক করাকে ক্রোমাটোগ্রাফি এবং পদার্থ ও তড়িৎ চুম্বকীয় বিকিরণের মধ্যে ক্রিয়া ঘটানোবিষয়ক গবেষণাকে স্পেকট্রোমেট্রি বলা হয়।
হোংইয়াচার জিন গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে গবেষকেরা আবিষ্কার করেছেন, জিনের রূপান্তরের ফলে ক্যাফেইন অনুপস্থিত থাকে। বিস্ময়করভাবে ক্যামেলিয়া টিলোফেলার মধ্যে এই জিন রূপান্তরকে ভিন্নভাবে পাওয়া গেছে।
ক্যামেলিয়া টিলোফেলা ও হোংইয়াচা—এই দুই ধরনের গাছ ক্যাফেইনমুক্ত হওয়ার জন্য তাদের পৃথক যাত্রা শুরু করেছে।
আরও গবেষণা না হওয়া পর্যন্ত গবেষকেরা এখন হোংইয়াচাকে প্রাকৃতিকভাবে রক্ষার উপায় বের করার করার চেষ্টা করছেন। এতে সময় লাগতে পারে। বিষয়টি বিফলেও যেতে পারে। নতুন কিছু পাতা বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের জন্য যত্ন নেওয়া হচ্ছে।
প্রাকৃতিকভাবে ক্যাফেইনমুক্ত কফিগাছটি আবিষ্কৃত হয়েছিল ২০০৩ সালে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত এ কাজে খুব কমই অগ্রগতি হয়েছে। শেষ পর্যন্ত ফলাফল কী আসে, তা জানার জন্য চা-কফি পিপাসুরা আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকুন।
https://www.prothomalo.com/life-style/article
nasima.nfe:
Thanks for sharing.
Navigation
[0] Message Index
Go to full version