Open your minds > Dr. Yousuf Artcile

Dr.yunus's project

(1/1)

bipasha:


লেখক: মুনমুন শবনম বিপাশা, লেকচারার, ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি  |  সোম, ১৫ অগাষ্টu-এ ২০১১, ৩১ শ্রাবণ ১৪১৮

ঘনবসতিপূর্ণ জনবহুল এই দেশে সম্পদ সীমিত। দুর্নীতির দিক থেকেও বেশ এগিয়ে। যার ফল চরম দরিদ্রতা। যেকোনো সরকারের প্রধান লক্ষ্য হয়ে থাকে এ দারিদ্র্যের প্রকটতা কমানো। ক্ষুদ্রঋণের আলোচনা করার আগে দেশের দারিদ্র্যের অবস্থা কেমন তা নিয়ে কিছু কথা বলা দরকার।

২০০৫ সালের বাংলাদেশের খানা আয় ও ব্যয় জরিপ অনুযায়ী চরম দারিদ্রের হার ছিল ৪০ দশমিক ৪ শতাংশ। ২০১০-এ নেমে যা দাঁড়িয়েছে ৩১ দশমিক ৫ শতাংশে।

দারিদ্র্য দূর করার ব্যাংকিং সেবার গুরুত্ব কিছুতেই অস্বীকার করা যায় না। এ সেবা থেকে বঞ্চিত গরিব জনগণের জন্য রয়েছে ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থা। ক্ষুদ্রঋণের মূল উদ্দেশ্য, যারা দেশের প্রচলিত ব্যাংক ব্যবস্থার মাধ্যমে ঋণ গ্রহণ করতে পারবে না তাদের জন্য ঋণের ব্যবস্থা করা। দেশের সুবিধাবঞ্চিত দরিদ্র অসহায় মানুষের জন্য এই ঋণ ব্যবস্থা। বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশন (বিএনএফ) স্যোশাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (এসডিএফ), পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) প্রভৃতি প্রতিষ্ঠান ক্ষুদ্রঋণ ও বিনিয়োগের জন্য কাজ করছে। ২০১০-১১ অর্থবছরে পিকেএসএফ, এসডিএফ ও বিএনএফের ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচিতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে যথাক্রমে ১১৬ দশমিক ৫২ কোটি, ২১৪ কোটি এবং ৬ দশমিক ৫০ কোটি টাকা।

গ্রামের অসহায় নারীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ক্ষুদ্রঋণের ভূমিকা অনস্বীকার্য। মহিলা বিষয়ক অধিদফতর কর্তৃক সারা দেশে ৬৪টি জেলায় ৪৭৩টি উপজেলায় এ কর্মসূচী বাস্তবায়ন হচ্ছে। দারিদ্র্য বিমোচনে ক্ষুদ্রঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে পিকেএসএফ বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে। ২০১০-এর ডিসেম্বর পর্যন্ত পিকেএসএফের অধীন ২৬৫টি সংস্থা ১০ হাজার ১৯০ দশমিক ৮০ কোটি টাকা ঋণ প্রদান করে। মাঠ পর্যায়ে ঋণগ্রহীতার সংখ্যা ৮০ দশমিক ৬২ লাখ। যার মধ্যে ৯১ শতাংশ নারী। পিকেএসএফের ক্ষুদ্র ঋণগুলো হলো— পল্লী ক্ষুদ্রঋণ, নগর ক্ষুদ্রঋণ, অতি দরিদ্রদের জন্য ক্ষুদ্রঋণ, ক্ষুদ্র উদ্যোগ, মৌসুমি ঋণ, কৃষি খাতে ক্ষুদ্রঋণ, বৃহত্তর রংপুর মঙ্গাকবলিত এলাকায় ক্ষুদ্রঋণ এবং দরিদ্রবান্ধব উদ্ভাবনীমূলক কার্যক্রমের জন্য ঋণ সুবিধা।

দেশে ১০ বছরের ব্যবধানে দরিদ্র জনগোষ্ঠী কমে ৩১ শতাংশে নেমে এসেছে। সাম্প্রতিক সময়ের হিসাব অনুযায়ী, এক্ষেত্রে ক্ষুদ্রঋণের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। প্রচলিত ব্যাংকিং সেবা সবাই পায় না। এসব বঞ্চিত দরিদ্র জনগণের জন্য ক্ষুদ্রঋণের দরকার। এর ফলে একদিকে যেমন ক্ষমতায়ন হয়, অন্যদিকে আর্থিক পরিস্থিতি উন্নয়ন, কর্মসংস্থানের পথ সুগম হয়। ব্যাংক অনেক ক্ষেত্রে ঋণ দিতে পারে না। সেক্ষেত্রে ক্ষুদ্রঋণ বিশেষ ভূমিকা রাখে। সামাজিক, অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ক্ষুদ্রঋণ।

সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ড. ওসমান ফারুক বলেছেন, ক্ষুদ্রঋণের সমালোচনা সাধারণত ঋণগ্রহীতাদের কেউ করে না। রাজনৈতিক কারণে রাজনীতিবিদরা করে থাকেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমানও একই কথা বলেছেন। এ থেকে ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থার সমালোচনার কারণ কিছুটা আন্দাজ করা যায়। ক্ষুদ্রঋণের ক্ষেত্রে কোনো সমালোচনা যে নেই তা নয়। সব কাজেরই কিছু নেতিবাচক দিক থাকতে পারে, সেজন্য তার সমাধান করতে হয়। পুরো কাজের সমালোচনা করা উচিত নয়।

উচ্চ সুদের হার থাকা সত্ত্বেও দেশে ক্ষুদ্রঋণের প্রভাব বিতরণের আকার বেড়েই চলেছে। গ্রামীণ ব্যাংকসহ মোট ২১টি বেসরকারি সংস্থা এই ঋণ দিচ্ছে। গ্রামীণ ব্যাংকের ৮৩ লাখ ৫৯ হাজার ৯৯৩ জন গ্রাহকের মধ্যে ৮০ লাখ ২৭ হাজার ২৬২ জন নারী। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না মহিলাদের আর্থিক সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে এ ঋণের ভূমকি সব সময় গুরুত্বপূর্ণ। এ ঋণের ফলে অনেক নারী যেমন স্বাবলম্বী হয়েছেন, ঠিক তেমনিভাবে উচ্চ সুদ ও তদারকির অভাবে অনেকেই তাদের শেষ সম্বলটুকুও হারিয়েছেন। অনেকেই অসহায় হয়ে পড়েছেন এই ঋণ গ্রহণের ফলে। এ কথা স্পষ্টই বলা যায়, এ ঋণের ক্ষেত্রে সুদ হার গতানুগতিক ব্যাংকের চেয়ে অনেক বেশি। ক্ষুদ্রঋণের ক্ষেত্রে অনেক সময়ই ঋণগ্রহীতারা অতিরিক্ত ঋণের জালে আটকে যায়। এটি ক্ষুদ্রঋণের আরেকটি সীমাবদ্ধতা। এ ঋণ গ্রহণের ফলে আরও বেশি দরিদ্র হয়ে পড়ছে এমন নজিরও রয়েছে। সর্বোপরি ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী সংস্থাগুলোর জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা বাড়াতে হবে।

ishaquemijee:
Real facts.

fahad.faisal:
Nice post.

Navigation

[0] Message Index

Go to full version