২০১৯-এনসিওভি ভাইরাস, যার আরেক নাম করোনাভাইরাস। এটি মূলত শ্বাসনালির ভাইরাস। ভাইরাসটির অনেক প্রজাতি আছে, এর মধ্যে কয়েকটি মানুষের দেহে সংক্রমিত হতে পারে। ভাইরাস সাধারণত সময়ের সঙ্গে পরিবর্তিত ও পরিবেশের সঙ্গে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিতে পারে। ছড়িয়ে পড়ার সুবিধার জন্য ভাইরাসগুলো প্রয়োজনমতো পরিবর্তিত হয়। একজন মানুষের দেহ থেকে আরেকজনের দেহে ছড়াতে পারে। তবে অতি আতঙ্কিত না হয়ে প্রতিরোধের নিয়মকানুন মেনে চললে এই ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে নিজেকে বাঁচানো সম্ভব।
কীভাবে ছড়ায়?
ঠিক কীভাবে এর সংক্রমণ শুরু হয়েছিল, তা এখনো নিশ্চিত করে বলতে পারেননি বিশেষজ্ঞরা। প্রাণী থেকেই প্রথমে ভাইরাসটি কোনো মানুষের দেহে ঢুকেছে এবং তারপর মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়েছে। এ ভাইরাস ছড়ায় হাঁচি-কাশির মাধ্যমে অন্য সাধারণ ফ্লু বা ঠান্ডা লাগার মতো করেই। এই ভাইরাস মানুষের ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায়। এর আগে মহামারি ‘সার্স’ ভাইরাসের পরিবার থেকেই এসেছে এই নতুন ধরনের করোনাভাইরাস।
করোনাভাইরাসের লক্ষণ কী
করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রধান লক্ষণ হলো শ্বাসকষ্ট, জ্বর এবং কাশি। ভাইরাসটি শরীরে ঢোকার পর সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দিতে ৫-৭ দিন সময় লাগে। প্রথমে জ্বর। তারপর শুকনো কাশি। এক সপ্তাহের মধ্যে শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। খুব দ্রুত রোগী খারাপ হতে থাকে এবং রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়।
চিকিৎসা
এই ভাইরাসের টিকা বা প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। সাধারণত লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা করতে হয়। পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। ফুসফুসে সংক্রমণ হলে তা অন্যান্য অঙ্গকে দ্রুত নিষ্ক্রিয় করে দেয়। তবু সময়মতো সঠিক ও নিবিড় চিকিৎসা মৃত্যুহার কমাতে পারে। এমন লক্ষণ দেখলে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন।
কীভাবে প্রতিরোধ
হাঁচি বা কাশির পরে হাত ধুয়ে নিতে হবে।
কাশি বা হাঁচির আগে মুখ ঢেকে নিতে হবে।
হাত দিয়ে বারবার নাক-মুখ স্পর্শ না করা ও ঘরের বাইরে গেলে মুখোশ বা মাস্ক পরতে পারেন।
সংক্রমিত ব্যক্তির ঘনিষ্ঠতা এড়িয়ে চলতে হবে।
রান্না না করা গোশত ও ডিম খাওয়া এড়িয়ে চলতে হবে।
লক্ষণগুলো দেখা দেওয়া মাত্রই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন।
ঠান্ডা ও ফ্লু–আক্রান্ত ব্যক্তিকে আলাদা করে চিকিৎসা দিতে হবে।
ধূমপান এড়িয়ে চলতে হবে।
(ডা. মো. শরিফুল ইসলাম)