একসময়ের খরস্রোতা ডাকাতিয়া নদী দূষণ আর দখলের কবলে পড়ে মৃতপ্রায় নদীতে পরিণত হয়েছে। কুমিল্লা ও চাঁদপুরের বেশ কয়েকটি উপজেলার মানুষের কাছে আশীর্বাদের ডাকাতিয়া নদী এখন অভিশাপ। কুমিল্লা, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী জেলায় একসময় প্রধান যোগাযোগ মাধ্যম ছিল নৌপথ। ব্যবসায়ীদের যাতায়াতের প্রধান মাধ্যমও ছিল নৌপথ। একসময় পাল তোলা নৌকা চলত ডাকাতিয়া নদীতে। বিভিন্ন পণ্যবাহী বড় বড় জাহাজ ও লঞ্চ ডাকাতিয়ার বিভিন্ন নৌপথ দিয়ে চলাচল করত। শুষ্ক মৌসুমে কৃষকরা ফসল আবাদের সময় এ নদী থেকে পেত পর্যাপ্ত পানি। এ ছাড়া আগে খরস্রোতা এই নদীতে ছিল দেশীয় মাছের প্রাচুর্য। স্থানীয় হাজার হাজার জেলে এই নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন। সেই ডাকাতিয়া এখন দখল-দূষণ আর নাব্য সংকটে রীতিমতো অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে। এককথায়, লাখো মানুষের প্রাণের স্পন্দন হিসেবে পরিচিত নদীটি এখন পরিণত হয়েছে মরা খালে।
ডাকাতিয়া নদীর দুই পাড়ে অবৈধভাবে দখল ও ভরাট করে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। কলকারখানার দূষিত বর্জ্য ও আবর্জনা ফেলে বিষাক্ত করে তোলা হয়েছে। আশপাশের বসতবাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে ভাগাড় গড়ে তোলা হয়েছে নদীর বুকে। পানি দূষণের ফলে নদীতে জলজ প্রজাতি ও মাছের বংশবিস্তার ব্যাহত হচ্ছে। পলি পড়ে ভরাট হয়ে যাওয়ায় অল্প বৃষ্টিতেই ভেসে যায় নদীর দুই কূল। বর্ষা মৌসুমে নদীটি হয়ে ওঠে দক্ষিণ কুমিল্লাসহ আশপাশের এলাকার বন্যার প্রধান কারণ। এখনই সময়, নদীরক্ষায় দ্রুত প্রয়োজনীয় ও পরিকল্পিত পদক্ষেপ নিতে হবে।