ফাইভ জি নেটওয়ার্ক কি ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াবে ?

Author Topic: ফাইভ জি নেটওয়ার্ক কি ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াবে ?  (Read 783 times)

Offline thowhidul.hridoy

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 185
  • Test
    • View Profile
গত ১৯ মার্চ দক্ষিণ কোরিয়াতে ফাইভ জি মোবাইল সেবা চালু হয়েছে। ব্রিটেনের কিছু শহরেও সমপ্রতি ফাইভ জি মোবাইল নেটওয়ার্ক চালু হয়েছে। দ্রুত গতির ইন্টারনেট সেবার নিশ্চয়তা মিলবে এই ফাইভ জি প্রযুক্তিতে।

প্রযুক্তিবিদদের মতে, বাধাহীন গতির সঙ্গে এটি বদলে দেবে মানুষের জীবনধারা। প্রযুক্তির এই অপার সম্ভাবনার পরও মানুষের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে ফাইভ জি নিয়ে। ফাইভ জি নেটওয়ার্ক স্বাস্থ্যের জন্য কতটা নিরাপদ তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ফাইভ জি নেটওয়ার্কে বাড়বে ক্যানসারের ঝুঁকি। একদল বিজ্ঞানী এবং চিকিত্সক ফাইভ জি বন্ধ করার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে চিঠি দিয়েছে।

প্রযুক্তি সেবা দাতারা বলছে, ফাইভ জি চালু হলে কয়েক সেকেন্ডে একটি হাইডেফিনেশন ভিডিওর সিনেমা ডাউনলোড করা যাবে, যেটা ফোর-জিতে কয়েক ঘণ্টা লাগে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবহন, কারখানার উত্পাদন ব্যবস্থায় বিপুল পরিবর্তন আসবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই) ও যন্ত্রের সঙ্গে যন্ত্রের যোগাযোগ বা আইওটির (ইন্টারনেট অব থিংস) ব্যবহার বাড়বে।

পৃথিবীর কয়েকটি দেশে এরই মধ্যে ফাইভ জি নেটওয়ার্ক চালু হয়েছে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে অনেক দেশেই চালু হয়ে যাবে ফাইভ জি নেটওয়ার্ক। ২০২৫ সাল নাগাদ পৃথিবীতে ফাইভ জির গ্রাহক দাঁড়াবে ২৮০ কোটি। পুরাতন মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কের মতো ফাইভ জি নেটওয়ার্কও নির্ভর করে এমন এক সিগন্যালের উপর যেটি রেডিও তরঙ্গের মাধ্যমে ছড়িয়ে যায়। অ্যান্টেনা এবং মোবাইল ফোন সেটের মধ্যে ইলেকট্রো ম্যাগনেটিক স্পেকট্রাম প্রবাহিত হয়। ফাইভ জি মোবাইল নেটওয়ার্কে অনেক হাই ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করা হয়। এর মাধ্যমে একই সময়ে অনেক মোবাইল ফোন সেটে দ্রুত গতিতে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায়। ফাইভ জি নেটওয়ার্কে যে তরঙ্গ থাকে সেটি শহরাঞ্চলে খুব বেশি দূর যায় না।

এই তরঙ্গ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য অনেক বেশি ট্রান্সমিটার ব্যবহার করতে হয় এবং সেগুলোর অবস্থান হতে হয় মাটির কাছাকাছি। মোবাইল ফোন প্রযুক্তিতে যে ইলেকট্রো ম্যাগনেটিক রেডিয়েশন ব্যবহার করা হয় সেটির কারণে বিশেষ কয়েক ধরনের ক্যানসার হতে পারে বলে উদ্বেগ রয়েছে।

অবশ্য ২০১৪ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, মোবাইল ফোন ব্যবহারের কারণে স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার বিষয়টি প্রমাণিত হয়নি। যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যানসার যৌথভাবে সব ধরনের রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি রেডিয়েশনকে শ্রেণিবিন্যাস করে বলেছে এর মাধ্যমে ক্যানসারের সম্ভাব্য ঝুঁকি রয়েছে।

২০১৮ সালে মার্কিন স্বাস্থ্য বিভাগের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যেসব পুরুষ ইঁদুর উচ্চমাত্রার রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি রেডিয়েশনের সংস্পর্শে এসেছে তাদের হূদপিণ্ডে ক্যান্সার বা টিউমার হয়েছে। এ গবেষণার জন্য কিছু ইঁদুরকে দুই বছর যাবত্ প্রতিদিন ৯ ঘণ্টা করে মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কের উচ্চমাত্রার রেডিয়েশনের সংস্পর্শে রাখা হয়েছিল। তবে একজন জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী বলেন, মোবাইল ফোন ব্যবহারের কারণে মানুষ যে ধরনের রেডিয়েশনের সংস্পর্শে আসে সেটির সাথে এই গবেষণায় ব্যবহূত রেডিয়েশনের সরাসরি তুলনা করা যাবে না।

মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কে যত উচ্চমাত্রার ইলেকট্রো ম্যাগনেটিক স্পেকট্রাম ব্যবহার করা হবে, ঝুঁকি তত বাড়বে। গবেষক ড. গ্রিমস বলেন, মোবাইল ফোন এবং ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কের সঙ্গে স্বাস্থ্য-ঝুঁকি তৈরি হবার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

আন্তর্জাতিক নির্দেশনা অনুযায়ী ফাইভ জি নেটওয়ার্কের একটি অংশ মাইক্রোওয়েভে ব্যান্ড-এর মধ্যে পড়ে। মাইক্রোওয়েভে বিভিন্ন বস্তুতে তাপ উত্পন্ন করে যাতে এটি সহজে পরিবাহিত হতে পারে। ফাইভ জি নেটওয়ার্কের জন্য যে মাইক্রোওয়েভ ব্যান্ড ব্যবহার করা হয় সেটি ক্ষতিকারক নয়, বলছিলেন অধ্যাপক রডনি ক্রফট। তিনি বলেন, ফাইভ জি মোবাইল নেটওয়ার্কের যে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি সেটি এতোই ছোট যে, তাপমাত্রা বৃদ্ধি হয় না বললেই চলে।
Md. Thowhidul Islam
Asst. Administrative Officer (Hall)
Daffodil International University (DIU), PC

Cell: 01847334814
Web: www.daffodilvarsity.edu.bd