জেনে নিন পাটশাকের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

Author Topic: জেনে নিন পাটশাকের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা  (Read 1506 times)

Offline Anuz

  • Faculty
  • Hero Member
  • *
  • Posts: 1988
  • জীবনে আনন্দের সময় বড় কম, তাই সুযোগ পেলেই আনন্দ কর
    • View Profile
পাটশাক যুগ যুগ ধরে পরিচিত। গ্রাম থেকে শুরু করে শহরের বাজার সর্বত্রই এই শাক পাওয়া যায়। দামও বেশি নয়। পাটশাক দুই নামে পরিচিত। একটি তীতা পাটশাক অন্যটি মিষ্টি পাটশাক। অনেকের কাছেই প্রিয়। পাটশাকের রয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুণ। এগুলো মানব দেহের বিভিন্ন রোগের ক্ষেত্রে অত্যন্ত উপকারী। পাটশাকে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম, আয়রন, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, সেলেনিয়াম এবং ভিটামিন সি, ই, কে, বি- ৬ এবং নিয়াসিন রয়েছে। এছাড়া পাটশাকে রয়েছে উচ্চমাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ক্যারোটিন এবং খাদ্যআঁশ।

প্রতি ১০০ গ্রাম পাটশাকে রয়েছে খাদ্যশক্তি  ৭৩ কিলোক্যালরি, আমিষ ৩.৬ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ২৯৮ মিলিগ্রাম, লোহা ১১ মিলিগ্রাম ও ক্যারোটিন ৬৪০০ (আইইউ)।এসব পুষ্টি উপাদান রোগবালাই থেকে দূরে রাখে। এবার জেনে নেই পাটশাক আমাদের কি কি উপকার করে :

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
পাটশাকের ভিটামিন এ, ই এবং সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এতে থাকা ভিটামিন সি ও ক্যারোটিন মুখের ঘা দূর করতে সাহায্য করে। তাছাড়া ভিটামিন-সি রক্তের শ্বেত কনিকা বৃদ্ধি করে এবং ভিটামিন-এ, ভিটামিন ই চোখ, হৃদপিণ্ডসহ অন্যান্য অঙ্গের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

হাড়ের ক্ষয় রোধ করে
পাটশাকে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম আছে, যা হাড় ভালো রাখতে সাহায্য করে এবং হাড়ের ক্ষয় রোধ করে। এতে থাকা আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, সোডিয়াম এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান হাড় গঠন ও ক্ষয়পূরণ করে এবং হাড় ভঙ্গুরতা রোধ করে।

উচ্চ রক্তচাপ দূর করে
পাটশাকে বিদ্যমান উচ্চমাত্রার পটাশিয়াম রক্তসঞ্চালন ও রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে। যার ফলে উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যা দূর হয়। এছাড়া পাটশাক রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে সহায়তা করে। নিয়মিত খেলে হার্ট অ্যাটাক এবং ষ্ট্রোকের ঝুঁকি কমে যায়।

মুখের রুচি বাড়ায়
এই শাক খাওয়ার রুচি বাড়ায়। মুখের স্বাদ ফিরিয়ে আনে ও মেদ বৃদ্ধির আশঙ্কা কমায়। পাটশাকের তেতো স্বাদ মুখে লালা ক্ষরণ করে শ্বেতসারকে ভাঙতে সাহায্য করে। এতে হজমের সুবিধা হয় ফলে খাবারের রুচি বাড়ে।

নিদ্রাহীনতা দূর করে
পাটশাকে থাকা ম্যাগনেশিয়াম উপাদান শরীরে প্রয়োজনীয় হরমোন উৎপাদন করে যা স্নায়ুতন্ত্র শান্ত রাখে এবং নিরবচ্ছিন্ন নিদ্রা নিশ্চিত করে। তাই ভাল ঘুমের জন্য পাটশাক খেতে পারেন।

হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে সহায়ক

এই শাকে প্রচুর পরিমাণ আয়রন থাকে যা রক্তে হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে সহায়তা করে। পাটশাকে থাকা আয়রন দেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা এবং কর্মদক্ষতাও বৃদ্ধি করে।

হজম শক্তি বড়ায়
পাটশাকে থাকা খাদ্যআঁশ হজম প্রক্রিয়াকে দারুণভাবে ত্বরান্বিত করে আমাদের হজম শক্তি বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। 

বাতের ব্যথা দূর করে
পাটশাকে প্রচুর ভিটামিন-ই রয়েছে। ভিটামিন-ই গেঁটেবাত, আর্থরাইটস এবং প্রদাহ জনিত অন্যান্য রোগ প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই এসব রোগের জন্য পাটশাক একটি গুরুত্বপূর্ণ পথ্য। পাটশাকে থাকা উচ্চমাত্রার অ্যান্টি অক্সিডেন্ট শরীরে যেকোনো ধরনের ক্যানসার রোধে সহায়তা করে। এতে বিদ্যমান ফলিক অ্যাসিড ত্বক ও চুল ভালো রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া এটি ডায়াবেটিক ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও মানসিক চাপ দূর করে শরীর সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
Anuz Kumar Chakrabarty
Assistant Professor
Department of General Educational Development
Faculty of Science and Information Technology
Daffodil International University