Faculties and Departments > Commerce

সঙ্গী এখন ক্রেডিট কার্ড

(1/1)

Anuz:
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলমের পরিবারটা বেশ বড়। বছরের শেষের দিকে মাসের বেতনটাও একটু দেরিতে হয়। পরিবারের চাহিদা ও সময়মতো বেতন না হলে ক্রেডিট কার্ডই তাঁর ভরসা। আর সময়ের মধ্যে কার্ডের ঋণ শোধ করায় গত তিন বছরে কখনো সুদও দেননি। অভিজ্ঞতা থেকে জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রথম দিকে বিপদের সঙ্গী ছিল ক্রেডিট কার্ড। এখন অনেকটা প্রতিদিনের জীবনযাত্রার সঙ্গী হয়ে গেছে। কেনাকাটা, ঘোরাফেরা, জরুরি চিকিৎসা—সব ক্ষেত্রেই এখন এ কার্ড ব্যবহার করছি। কার্ডে যে অফার দেওয়া হয়, তা-ও মাঝেমধ্যে গ্রহণ করছি।’ এমন অনেক চাহিদা ও প্রয়োজনের কারণে ক্রেডিট কার্ড এখন দেশের প্রায় ১২ লাখ মানুষের জীবনসঙ্গী। ধীরে ধীরে এ সংখ্যা বাড়ছেই। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে, গত মে মাসে দেশে ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা ছিল ১১ লাখ ৮৯ হাজার ৭৯। ২০১৪ সালেও দেশের ক্রেডিট কার্ডে ছিল প্রায় ৬ লাখ। এখন ক্রেডিট কার্ডে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণ ৪ হাজার ৮৮৯ কোটি টাকা। শুধু গত মে মাসেই কার্ডের মাধ্যমে প্রায় ১৬ লাখ লেনদেন হয়েছে, যার পরিমাণ প্রায় ৯০০ কোটি টাকা। সূত্র জানায়, ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের মধ্যে ৮৪ শতাংশ পুরুষ ও ১৬ শতাংশ নারী।

বাংলাদেশে ১৯৯৭ সালে তৎকালীন এএনজেড গ্রিন্ডলেজ (বর্তমানে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড) ব্যাংক প্রথম ক্রেডিট কার্ড সেবা নিয়ে আসে। কাছাকাছি সময়ে তৎকালীন আর্থিক প্রতিষ্ঠান ভানিক বাংলাদেশ (বর্তমানে লংকাবাংলা ফাইন্যান্স) ও ন্যাশনাল ব্যাংক এ সেবা চালু করে। এরপর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেশের অন্য ব্যাংকগুলোও এ সেবায় মনোযোগী হয়। বর্তমানে দেশে ৪০টির মতো ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবা দিচ্ছে। এর মধ্যে প্রায় সবাই দিচ্ছে ভিসা ও মাস্টারকার্ড ব্র্যান্ডের কার্ড। তবে এর বাইরে কয়েকটি ব্যাংক কার্ড সেবাকে অভিনবত্ব দিতে অন্য ব্র্যান্ডের কার্ডও এনেছে। সিটি ব্যাংক অ্যামেক্স কার্ড, প্রাইম ব্যাংক জেবিসি কার্ড, ইস্টার্ণ ব্যাংক ডিনার্স ক্লাব কার্ড, ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংক নেক্সাস পে কার্ড ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ইউনিয়ন পে ইন্টারন্যাশনালের সেবা দিচ্ছে। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে গ্রাহকেরা নির্দিষ্ট পরিমাণ কেনাকাটা ও ঋণ নিতে পারেন। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এ দেশের কার্ডের ব্যবহার বেড়েছে বিদেশেও। তাই টাকার পাশাপাশি ডলারেও ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার বেড়েছে। দেশে-বিদেশে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে হোটেল বুকিং, বিমানভাড়া, রেস্টুরেন্ট ও কেনাকাটায় মিলে নানা ছাড় ও পয়েন্ট জেতার সুযোগ। এ ছাড়া এসব কার্ড দিয়ে দেশে-বিদেশে কেনাকাটা, খাওয়া, থাকা, ভ্রমণে মিলছে বিশেষ সুবিধা, যা অন্যদের থেকে কিছুটা এগিয়ে রাখছে কার্ড গ্রাহকদের। সময়মতো কার্ডের টাকা পরিশোধ করলে কোনো সুদও দিতে হয় না। বর্তমানে বাংলাদেশে ক্রেডিট কার্ড ব্যবসায় নেতৃত্ব দিচ্ছে দেশীয় মালিকানার দি সিটি ব্যাংক। ব্যাংকটির মাধ্যমে বাংলাদেশের বাজারে আসে আমেরিকান এক্সপ্রেস বা অ্যামেক্স কার্ড। এ কারণেই ক্রেডিট কার্ড সেবায় ব্যাংকটি এগিয়ে। বাজারে ব্যাংকটির রয়েছে ২৪ হাজার পয়েন্ট অব সেলস বা পিওএস মেশিন। আর চার লাখের বেশি কার্ড। ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ক্রেডিট কার্ড এখন আর ধনীদের সেবা পণ্য নয়। নির্দিষ্ট আয়ের মানুষেরাও এখন ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করছেন। আমরা চেষ্টা করছি প্রত্যন্ত অঞ্চলে এ কার্ডের ব্যবহার ছড়িয়ে দেওয়ার। এ জন্য বাইরের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সিটি ব্যাংক কাজ করছে।’ সিটি ব্যাংকের পাশাপাশি এ সেবায় শীর্ষ পর্যায়ে রয়েছে ইস্টার্ণ, ব্র্যাক, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, প্রাইম, যমুনা, প্রিমিয়ার, ঢাকাসহ আরও কয়েকটি ব্যাংক। এখন ১৬ বছরের ঊর্ধ্বের যেকোনো নাগরিক এ কার্ড সেবা নিতে পারেন। তবে তাঁর নির্দিষ্ট আয়ের ব্যবস্থা থাকতে হয়। আর এ কার্ডের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা ঋণ নেওয়া যায়। অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান সৈয়দ মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বর্তমান সময়ে সবাই চান একটু স্বাচ্ছন্দ্য। এ জন্য কার্ড ব্যবহার করেন। সময়ের সঙ্গে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার বাড়বে, ছড়িয়ে পড়বে দেশজুড়ে।

drrana:
thanks for sharing

Navigation

[0] Message Index

Go to full version