« on: January 25, 2020, 06:03:01 PM »

কোন এক মফস্বল থেকে অথবা কোন একটি পারিবারিক স্নেহময় পরিবেশের গন্ডি পেরিয়ে প্রথম যখন একজন ছেলে বা মেয়ে কাজের তাগিদে নিজেকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত একজন ব্যক্তি হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন নিয়ে এই শহরে পা রাখে, হলফ করে বলা যায়, একটি বছর চলে যায় তাদের সেই শহরের পরিবেশের সাথে, কাজের জায়গাতে খাপ খাইয়ে নিতে। কখনো হয়তো তারো বেশি সময় ধরে তারা চেষ্টা করে মানিয়ে নেবার। এই শহরে নিজের কেউ নাই, এটা ভেবেই যে কত রাত চোখের পানি আর নাকের পানিতে একাকার হয়, সেই হিসাব বাদ।
নিজের পরিবার ছেড়ে একজন মানুষ যখন অফিসটাকেই তার দ্বিতীয় পরিবার বানিয়ে নেয়, নিজের মত করে চারপাশের অভিজ্ঞজনদের দেখে, শিখতে চায়, আদর্শ বড়দের মত বড় হতে চায়, আপনার উচিত সেই মানুষটির উপর যথেষ্ট সহানুভূতিশীল হওয়া তাকে সহায়তা করা। কারন, নিজের পরিবার রেখে আসা মানুষটি অফিসের কর্পোরেট পরিবেশে, সহকর্মীদেরকে নিজের ভাই-বোন, বন্ধু বলে ভাবতে শুরু করে।
আপনি চাইলে, কর্পোরেট পলিটিক্স করে কারো ক্ষতি খুব সহজে করে ফেলতে পারেন, কিন্তু মনে রাখবেন, কারো ভালো করতে চাইলে, কারো শ্রদ্ধা অর্জন করতে হলে নিজ গুনে কষ্ট করে অর্জন করতে হয়। মানুষ আপনাকে দুইভাবেই মনে রাখবে। কারো উপকার করে আপনি মানুষের মনে থাকতে পারেন, আর ক্ষতি করলে তো মানুষ আপনাকে জীবনব্যাীই মনে রাখবে, অবশ্যই তা ঘৃনার সাথে । কোনটা আপনার জন্য সম্মানের সেটা আপনার বিবেচনা।
সহনশীল হওয়া খুব সহজ বিষয় না। মানুষকে আঘাত করা সহজ। আপনার জায়গা থেকে এমন একটি কথাও যদি আপনার অধিনস্ত মানুষটিকে কষ্ট দেয়, আপনার কথায় দীর্ঘশ্বাস ফেলতে সে যদি বাধ্য হয়, সেই হিসাব সৃষ্টিকর্তার কাছে তোলা থাকে ঠিকই। "পদাধিকার" কিন্তু সৃষ্টিকর্তার কাছে খাটে না!!! আপনি অনেক কিছুই পারেন, আপনার বলার কিংবা করার ক্ষমতা আছে বলেই যে আপনি যা খুশি তাই বলবেন বা করবেন, প্লিজ সেটা করবেন না। সংযত হউন। নিজের আচরণ সংযত করুন। এই সুদীর্ঘ কর্মজীবনে যদি আপনার কোন একটি ভালো কাজের জন্য আপনাকে মানুষ মনে নাই রাখে, তাহলে আপনার এই কর্মজীবন বৃথা নয় কি?
জীবন খাতায় সব ক্ষেত্রে প্রাপ্তি জমা হবে তা নয়, কিন্তু আপনি যেচে কারো দীর্ঘশ্বাস দিয়ে জীবনখাতা ভরে ফেলবেন না প্লিজ। আপনি অবশ্যই বোঝেন, কারো ক্ষতি করতে যাওয়া মানে নিজেকেই বিপন্ন করা। জীবনে কোন একটা সময় এমন আস্আতে পারে যখন অন্যের সহানুভূতি আপনার প্রয়োজন হতে পারে। কে জানে,আজ যাদের হেনস্থা করছেন, দুঃখ দিচ্ছেন, এরাই আপনার বিপদে পাশে গিয়ে দাঁড়াবে। হিপোক্রেসি ছেড়ে দিন। পারলে ভালো একটা কাজ করুন। মানুষ তার পদবীতে বড় হয় না। হয় তার কর্মে, ব্যাবহারে
কোন কিচ্ছু না হউক অন্তত একজন মানুষ হিসেবে মানুষকে সম্মান দিতে চেষ্টা করলে ক্ষতি নেই। তাতে নিজের সম্মান বাড়বে। অল্পই তো সময়, নিজে ভালো থাকার চেয়েও যখন অন্যকে ভালো রাখা জরুরি, যখন নিজের জীবন বিপন্ন করে এক একটা লোক কাজ করে সততা নিয়ে,, তখন আমাদের উচিত সমাজের এতসব প্রতিকূলতায় টিকে থাকার জন্য যুদ্ধ করা মানুষটির সাহসকে সম্মান করা। তার কাজকে সম্মান করা। সেই মানুষটাকে সম্মান করা।
পরিবর্তন আসবে। এখনই সময়। নিজেকে পরিবর্তন করতে পারলেই তো অন্যকে পরিবর্তন করা সম্ভব.....।
ফারহানা হক
২৫/০১/২০২০
« Last Edit: February 15, 2020, 05:55:30 PM by Farhana Haque »

Logged
Farhana Haque
Coordination Officer
Daffodil Institute of Social Sciences-DISS
Daffodil International University
Phone: (EXT: 234)