Faculties and Departments > Faculty Forum

ফল সবজি ও মসলার পুষ্টিগুণ

(1/1)

tany:
আমরা জানি আমাদের শরীরের পুষ্টিসাধন এবং নিয়মিত ও সুষ্ঠু বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন সুষম খাদ্য। সুষম খাদ্যে থাকে ৬টি উপাদান। যথা : (১) আমিষ বা প্রোটিন, (২) শর্করা বা শ্বেতসার, (৩) স্নেহ বা তেলজাতীয় খাদ্য, (৪) ভিটামিন, (৫) খনিজ লবণ এবং (৬) পানি। প্রোটিন, শ্বেতসার আর স্নেহ পদার্থ আমাদের শরীরের বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য অবশ্য প্রয়োজনীয় এবং এরা আমাদের শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করে থাকে। কিন্তু শরীরের রোগ প্রতিরোধে, শরীরের ক্ষয় বা ঘাটতি পূরণে, দীর্ঘকালীন রোগভোগের সময়, দৈনন্দিন খাদ্য গ্রহণে অনীহা দূরীকরণে এবং শরীরকে কর্মোময় ও প্রাণবন্ত রাখতে আমাদের প্রয়োজন হয় কিছু খনিজ লবণ ও ভিটামিন তথা খাদ্য প্রাণের।

আর এসব ভিটামিন ও খনিজ লবণ আমাদের সহজেই সারাসরি গ্রহণ করতে পারি বিভিন্ন ফলমূল, শাকসবজি ও বিভিন্ন সুগন্ধি মসলাজাতীয় দ্রব্যের মাধ্যমে। বাজারে ওষুধ আকারে বিভিন্ন খনিজ লবণ সমৃদ্ধ ও ভিটামিন ওষুধ কিনতে পাওয়া যায়। তবে আমাদের দেশীয় বিভিন্ন ফল ও শাকসবজি গ্রহণের মাধ্যমে এসব ভিটামিন ও খনিজ লবণ অতি সহজে, সুলভ মূল্যে গ্রহণ করাই বাঞ্ছনীয়। কারণ শাকসবজি ও ফলমূল সরাসরি গ্রহণ করলে শরীরের পুষ্টি ও উপকারিতা বেশি পাওয়া যায়।

প্রথমেই আসি খনিজ লবণের কথায়। ক্যালসিয়াম সর্বাধিক পরিচিত ও গুরুত্বপূর্ণ একটি খনিজ লবণ। ক্যালসিয়াম আমাদের হাড় ও দাঁতের গঠন মজবুত ও শক্তিশালী করে, ক্ষয়রোধ করে এবং আর্থ্রারাইটিস, বাতজাতীয় রোগের সাথে লড়াই করে। ফসফরাসের কাজও অনুরূপ। কৃষক ভাইয়েরা, আপনারা যারা জমিতে ফসলের শিকড় বৃদ্ধি ও গাছের দৃঢ়তা বৃদ্ধির জন্য ফসফরাস জাতীয় সার টিএসপি ব্যবহার করে থাকেন, তারাও জেনে রাখুন যে মানুষের শরীরের দৃঢ়তা বৃদ্ধির জন্য, ফসফরাস অনুরূপ কার্যকারিতা দিয়ে থাকে। পার্থক্য শুধু আমরা বিভিন্ন ফলমূল, শাকসবজির মাধ্যমে ফসফরাস খুব সহজে গ্রহণ করতে পারি। আর এ জন্য প্রয়োজন আমাদের সদিচ্ছা। দৈনন্দিন সুষম খাদ্য গ্রহণের ক্ষেত্রে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। আবার, আয়রন বা লৌহ হলো এমন একটি জীবন রক্ষাকারী খনিজ যা, শরীরের রক্তস্বল্পতা দূর করে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়ের রক্তশূন্যতা বা এনিমিয়া দূর করার জন্য আয়রন আর একলামশিয়া বা খিচুনি প্রতিরোধের জন্য ক্যালসিয়ামের অবদান অনস্বীকার্য।

এবার আসি আর এক প্রাণ রক্ষাকারী উপাদান আয়োডিন প্রসঙ্গে। এটি শরীরে খুবই সামান্য পরিমাণে দরকার হয় কিন্তু এর প্রভাব অপরিসীম। আয়োডিন থাইরয়েড গ্রন্থিকে সুস্থ সবল রাখে। এটি গলগণ্ড, দুর্বলতা, স্তন ক্যান্সারসহ বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে থাকে। কডলিভার অয়েল, বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ, আয়োডিন মিশ্রিত খাবার লবণ হতে খুব সহজেই আয়োডিন পাওয়া যায়। কডলিভার অয়েলে আয়োডিন ছাড়াও আছে একটি মূল্যবান উপাদান ভিটামিন ‘এ’ যা অন্ধত্ব ও রাতকানা প্রতিরোধ করে। এ ছাড়া আরো আছে ক্যালসিয়াম, যা শিশুদের হাড় ও দাঁত মজবুত করে।খনিজ লবণ ছাড়াও আমাদের শরীরের স্বাভাবিক সুস্থতা রক্ষায় প্রয়োজন ভিটামিন। এই ভিটামিন আবার এ, বি, সি, ডি, কে এবং ই ইত্যাদি নামে পরিচিত। দেশী ফলে এসব ভিটামিন প্রচুর রয়েছে। সাধারণ দেশীয় ফল, যেমন- কলা, পেঁপে, পেয়ারা, বেল, আম, জাম, কাঁঠাল প্রভৃতি বিটামিন সমৃদ্ধ ফল। এ রচনায় দেশী-বিদেশী পাঁচটি ফলে ভিটামিন ও খনিজ লবণের উপস্থিতি ও উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।

আপেল : আপেল পুষ্টিকর ও সুস্বাদু ফল। এটি শরীর থেকে বিষাক্ত ও ক্ষতিকর পদার্থ বের করে দেয়। ভিটামিন ‘এ’ এবং ‘বি১’ বা থায়ামিনে ভরপুর। আরো আছে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, সোডিয়াম ইত্যাদি। আছে টার্টারিক অ্যাসিড, যা শরীরে জীবাণু সংক্রমণ প্রতিরোধ করে, আর এটি যানবাহনে ভ্রমণকালীন বমি প্রতিরোধে সহায়তা করে। আপেলে আছে ‘পেকটিন’ যা পাকস্থলীকে সুস্থ রাখে। বলাবাহুল্য, পেয়ারাতেও আছে প্রচুর পেকটিন। আপেলের রস যকৃৎ, গলব্লাডার বা পিত্তথলী ও ফুসফুসের স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়ক।

আঙ্গুর : এতে আছে পটাশিয়ামে ক্লোরাইড নামক খনিজ লবণ যা শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে এবং রক্তকে বিশুদ্ধ করে। এটি যকৃৎ ও কিডনিজনিত রোগ প্রতিরোধ করে। কালো আঙ্গুর অ্যানিমিয়ায় উপকারী। কিশমিশ বা শুষ্ক আঙ্গুর লৌহ, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম ও আয়রন সমৃদ্ধ।

কমলা : কমলার উপকারিতা এক কথায় বলে শেষ করা যায় না। এটি ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ ফল যা আমাদের শরীরের রক্তনালীতে শক্ত ও সুদৃঢ় করে। স্বার্ভি রোগ প্রতিরোধ করে। এতে আরো থাকে পেকটিন, যা শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয় এবং রক্তের কোলস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। এটি হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক প্রতিরোধে সহায়তা করে এবং শরীরের তারুণ্য ধরে রাখে। চামড়া মসৃণ ও কমনীয় করে। সাধারণ জ্বর, সর্দিকাশি, ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রতিরোধ করে যেহেতু এতে আছে ভিটামিন সি। তবে এটি ভিটামিন ‘এ’ তে পরিপূর্ণ তাই দৃষ্টিশক্তির বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। প্রতিরোধ করে সাধারণ প্রদাহ, আর্থ্রারাইটস, ক্যান্সারসহ উচ্চ রক্তচাপ ও হার্টের অসুখ। কারণ এতে আছে পটাশিয়াম, ও হাটের অসুখ। কারণ এতে আছে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফলিক অ্যাসিডসহ এন্টিঅঙিড্যান্ট। এ এন্টিঅঙিড্যান্ট আবার বৃদ্ধ বয়সে স্মৃতি ভ্রংশজনিত রোগ যেমন- পারকিনসন্স অ্যালঝাইমার প্রতিরোধ করে।ডাব : এটি সর্বপ্রথমে একটি জীবাণুমুক্ত বিশুদ্ধ পানি। এতে আছে প্রচুর পটাশিয়াম, তাই উচ্চ রক্তচাপের রোগীর জন্য এটি নিরাপদ। কারণ দৈনন্দিন সাধারণ খাবার লবণ সোডিয়াম, ক্লোরাইড (ঘধপষ)। উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য হুমকিস্বরূপ। এ ছাড়া ছোট শিশুদের ডায়রিয়া, কলেরা প্রতিরোধ করে তাদের শরীরে প্রয়োজনীয় পানির অভাব পূরণ করে এবং স্যালাইনের বিকল্প হিসেবে কাজ করে। হাঁপানির রোগীর জন্যও ডাবের পানি নিরাপদ ও উপকারী।
আখ : আখে রয়েছে সুক্রোজ, যা শরীর সহজে গ্রহণ করতে পারে। তাই সুস্থ শরীরে এর রস পান করলে তাড়াতাড়ি শক্তি পাওয়া যায়। এটি জণ্ডিসে ভীষণ উপকারী।
তবে আখের রসের চেয়ে ৩০ গুণ বেশি পুষ্টি আছে আখের গুড়ে। এতে আরো আছে ক্যালসিয়াম ‘বি’ ভিটামিন এবং আয়রন। ম্যাগনেশিয়াম, খনিজ থাকাতে এটি হজমে সহায়ক এবং কোষ্ঠকাঠিন্য রোগে উপকারী। তবে ইদানীং কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বিষাক্ত হাইড্রোজ মিশ্রিত করে গুড় বিক্রয় করছে বিধায় সরাসরি আখ খাওয়াই উত্তম।

বিভিন্ন মসলার উপকারিতা
হলুদ : এটি প্রদাহ নিবারক ভেষজ মসলা। যকৃতের সুস্থতায় ক্যান্সার প্রতিরোধে, ঋতুকালীন, ব্যথা কমাতে হলুদ কাজে লাগে। এটি একটি ভালো এন্টিসেপটিক।
কাঁচা মরিচ : এতে আছে ভিটামিন ‘সি’ এবং এন্টি অঙিড্যান্ট’ শরীরের বিভিন্ন ব্যথা প্রতিরোধ করে।

আদা : পেট ফাঁপা বন্ধ করে। বমি বন্ধ করে। হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। সাধারণ ঠাণ্ডা ও শ্লেষ্মা দূর করে। আদা চা পান করলে গলার ব্যথা দূর হয়।

মেথি : মেথি ও মেথি শাক ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে। এটি শরীরের স্নিগ্ধতা রক্ষা করে থাকে এবং একটি ভেষজগুণ সম্পন্ন মসলা। পাঁচ ফোঁড়নের একটি অন্যতম উপাদান হলো মেথি। এটি চুলের সৌন্দর্য বর্ধক। এটি উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধ করে।

গরম মসলা : বিভিন্ন মসলাকে একত্রে গরম মসলা বলা হয়। এর মধ্যে লবঙ্গ কণ্ঠনালীর প্রদাহ দূর করে এবং টনসিল কমানোয় সহায়তা করে। এলাচ হজমে সহায়তা করে ও মুখের দুর্গন্ধ দূর করে। চারুচিনি পেট ফাঁপায় আরাম দেয় এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।

Shahnoor Rahman:
Thanks for Sharing.  :) :)

Shah-Noor Rahman
Assistant Professor
Business Administration

sayma:
informative one..

kamrulislam.te:
So much informative

Umme Atia Siddiqua:
Thanks for sharing.

Navigation

[0] Message Index

Go to full version