কম্পিউটার, ল্যাপটপ হোক কিংবা স্মার্টফোন হোক; এসব ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলোতে কাজ করার সময় কাট-কপি-পেস্ট করা তো লাগেই। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা না গেলে আপনি একটি ম্যাসেজ আপনার ১০জন বন্ধুকেও পাঠাতে পারতেন না, আবার বিভিন্ন সোর্সে পাওয়া প্রয়োজনীয় তথ্যগুলোও একত্রিত করে রাখতে পারতেন না। তুচ্ছ কোনো কাজ থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় সকল ক্ষেত্রেই আপনাকে এই কপি পেস্টের কৌশল ব্যবহার করতে হয়। কখনো কি চিন্তা করেছেন আপনার কাজ সহজ করে দেওয়ার মতো এই প্রক্রিয়াটি প্রবর্তনের পেছনে কার অবদান রয়েছে? উনি হলেন- কম্পিউটার বিজ্ঞানী ল্যারি টেসলার। আইফোনের পূর্বসূরি হিসেবেও পরিচিত এই টেসলার। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন এই বিজ্ঞানী। এই সময় তার বয়স ছিল ৭৪ বছর।
শুধুমাত্র কাট-কপি-পেস্টের উদ্ভাবনের মধ্যেই তার কৃতিত্ব সীমাবদ্ধ নয়। তিনি ‘মোডলেস কম্পিউটিং’-এর মতো ইউজার ইন্টারফেস (ইউআই) ডিজাইন নিয়েও অনেক কাজ করেছিলেন। এই প্রোগ্রামের ক্ষেত্রে একজন ইউজারকে তার কাজের উপর ভিত্তি করে বারবার ‘মোড’ পরিবর্তন করতে হয় না। যেই মোডই অন থাকুক না কেনো, সেই মোডই বিভিন্ন ধরনের ইনপুট নিয়ে কাজ করা সম্ভব এই মোডলেস কম্পিউটিংয়ের সুবাদে। তার নিজস্ব ওয়েবসাইট ‘নোমোডস.কম’-এ তার উদ্ভাবিত এরকম মোডলেস ফাংশনগুলোর বর্ণনা দেওয়া ছিল। একসময় কম্পিউটার প্রোগ্রাম থেকে মোড বাদ দেওয়ার চ্যাম্পিয়ন হিসেবে টেসলারের নামডাক ছিল।
তার হাত ধরেই নতুন দিশা পায় কম্পিউটার সায়েন্স। এমনকি ‘ব্রাউজার’-এর প্রচলনের জন্যও কাজ করেন ল্যারি। অর্থাৎ অ্যাপলের কিছু হার্ডওয়্যার ও কাট-কপি-পেস্টের জন্য টেসলারের নাম বারবার সামনে আসলেও তার অবদানের ভাণ্ডার এই দুটি ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নয়।
মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ল্যারি টেসলার ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন ও এভারনোটের কনসালটেন্ট ছিলেন। ডেস্কটপ ও মোবাইল কীভাবে আরো উন্নত করা যায় তা নিয়েই টেসলার কাজ করেছিল। হাতেগোনা যে কয়েকজন বিজ্ঞানীর অবদানে পার্সোনাল বা ব্যক্তিগত কম্পিউটার ব্যবহার এত সহজ হয়েছে, তাদের মধ্যে ল্যারি টেসলার অন্যতম।
[Collected]