নবজাতক শিশুর যত্ন – কী করবেন, কী করবেন না

Author Topic: নবজাতক শিশুর যত্ন – কী করবেন, কী করবেন না  (Read 2009 times)

Offline Sultan Mahmud Sujon

  • Administrator
  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 2674
  • Sultan Mahmud Sujon, Sr. Admin Officer
    • View Profile
    • Helping You Office Operation & Automation Management
সন্তানের পরিচর্যা সঠিকভাবে জানতে পারলেই তবে ভালো মা-বাবার দায়িত্ব পালন সম্ভব। যাঁরা এই প্রথমবারের মতো মা-বাবার স্তরে উন্নীত হয়েছেন, তাঁরা শিশু-চিকিৎসক কিংবা নার্সের কাছে শিশু যত্নের বিভিন্ন খুঁটিনাটি জেনে নিতে পারেন। জগতের সব মা-বাবার মধ্যে সর্বজনীন অনুভূতি থাকে, সন্তানকে বুকভরা ভালোবাসা দিয়ে, যত্ন-আত্তি দিয়ে গড়ে তোলার। তবে মনে রাখা দরকার, এতে কিন্তু মা-বাবাকে বেশ কিছু সময় দিতেই হবে।

তুলে নেওয়ার সময়
ছোট্ট শিশুকে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিয়ে যাওয়ার সময় সর্বদা এক হাত মাথার নিচে রেখে সাপোর্ট দিতে হবে। কখনো মাথায় ধরে ঝুলিয়ে যেন তুলে না নেওয়া হয়।

জড়িয়ে রাখা
মা যেভাবে বাচ্চাকে সঠিক পদ্ধতিতে স্তন্যপান করান, সেভাবে উষ্ণ আলিঙ্গনে রেখে বাচ্চাকে কোলে রাখতে হয় এবং বাহু শিশুর মাথা ঘাড়ের পাশে থাকবে, অন্য বাহু ও হাতে শিশু-শরীরের বাকি অংশে সাপোর্ট দেবেন।

বুকের দুধ পানে
শিশুকে বুকের দুধ পানের সঠিক অবস্থান জেনে নিতে হবে। মা পিঠ সোজা রেখে বসবেন। শিশুর পেট মায়ের পেটের সঙ্গে লেগে যাবে। শিশু বড় হাঁ করে স্তনের বোঁটা নিয়ে নেবে। সিগারেট ধরার ভঙ্গিতে স্তনের বোঁটা শিশুর মুখে গুঁজে দেওয়া ভুল।

শিশুকে শোয়ানো
বেশি তুলতুলে নরম বিছানায় নবজাতক শিশুকে শোয়ানো উচিত নয়। এতে করে সে উল্টে গিয়ে তার নাক-মুখ চেপে শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যেতে পারে। কিছুটা শক্ত বিছানা ও দুই পাশে ছোট বালিশ ব্যবহার করুন।

শিশুকে জাগানো
শিশুকে জাগাতে তীব্র কোনো বাজনা পেটানো বা শব্দ সৃষ্টি না করা ভালো। তাকে আলতোভাবে চুম্বন-স্পর্শ দিন, আলতোভাবে গায়ে সুড়সুড়ি দিন। জেগে উঠবে। পিঠে বা শরীরের অন্য অংশে জোরে থাপড় বা ঝাঁকুনি দেওয়া অনুচিত।

শিশুর সঙ্গে খেলার সময়
ছোট্ট শিশুকে নিয়ে খেলার সময় ওকে এমনভাবে দুই হাতে ধরতে হবে, যেন হাত ছিটকে না পড়ে। হাত ছেড়ে শূন্যে খেলা করা এক সর্বনাশা পদক্ষেপ।

শিশুকে শান্ত করানো
শিশুকে শান্ত করতে কাছে যা পাওয়া যায়, তা দিয়ে বশ করতে যাওয়া অনুচিত। এগুলোর মধ্যে বেশ কিছু বিপজ্জনক দ্রব্যও থাকতে পারে। বরং তাকে কাঁধে নিন। মায়া-মমতার পরশের হাত পিঠে বুলিয়ে দিন। শিশুর কান্না থেমে যাবে।

শিশুকে হাসাতে
শিশুকে হাসানোর প্রক্রিয়ায় তার মুখের ভেতর আঙুল ঢুকিয়ে দেন পরিবারের কোনো কোনো নির্বোধ সদস্য। বরং তার বয়স অনুযায়ী রংবেরঙের পুতুল নিয়ে তার সঙ্গে মজা করুন।

শিশুর নাক পরিষ্কার রাখতে
কোনো কোনো জন নবজাতকের নাক পরিষ্কার করতে নিজের অপরিচ্ছন্ন আঙুলের ডগা শিশুর নাসারন্ধ্রে ঢুকিয়ে চেষ্টা চালাতে থাকেন। কয়েক ফোঁটা লবণমিশ্রিত পানি শিশুর নাসারন্ধ্রে দিয়ে নরম পরিচ্ছন্ন কাপড় সুচোমুখ করে পরিষ্কার করা যায়। প্রয়োজনে ন্যাজেল অ্যাসপিরেটরের সাহায্য নেওয়া যাবে।

ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, সহকারী অধ্যাপক
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জানুয়ারী ১২, ২০১০