ভার্চুয়াল দুনিয়ায় দেখা হলো মা-মেয়ের

Author Topic: ভার্চুয়াল দুনিয়ায় দেখা হলো মা-মেয়ের  (Read 1748 times)

Offline sadiur Rahman

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 199
  • Test
    • View Profile
লিউকেমিয়ায় ভুগে মাত্র সাত বছরেই মারা যায় না-ইয়ন। চার বছর পর মেয়ের সঙ্গে আবার দেখা হয় না-ইয়নের মা জ্যাং জি-সংয়ের। তবে সেটা ভার্চুয়াল দুনিয়ায়। দক্ষিণ কোরিয়ার এক টিভি অনুষ্ঠানের সৌজন্যে আয়োজন করা হয়েছিল মা-মেয়ের এই পুনর্মিলনী। জানাচ্ছেন খালিদ সাইফুল্লাহ

জ্যাং জি-সং দাঁড়িয়ে আছেন সবুজ ঘাসে ঢাকা এক খোলা মাঠে। দূরে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু টিলা দেখা যাচ্ছে। কাছেই কিছু কাঠের টুকরার স্তূপ। সাত বছরের মেয়ে না-ইয়নকে খুঁজে খুঁজে হয়রান তিনি। কই গেল মেয়েটা? হঠাৎ শোনা গেল মেয়ের চিরচেনা কণ্ঠ, ‘মা, মা!’

চার বছর বিরতির পরও চিরচেনা কণ্ঠস্বরটা চিনতে কোনো কষ্ট হয় না জ্যাং জি-সংয়ের। ঘুরে তাকাতেই দেখতে পেলেন গোলাপি এক ফ্রক পরা না-ইয়ন ছুটে আসছে তাঁর দিকে। কাছে এসে মাকে সে প্রশ্ন করে, ‘কোথায় ছিলে মা? আমার কথা কি ভেবেছিলে? তোমাকে অনেক মিস করেছি।’

প্রশ্ন শুনতেই কণ্ঠ ধরে আসে জ্যাং জি-সংয়ের। কী উত্তর দেবেন তিনি? গত চার বছরে এক দণ্ডের জন্যও অকালে মারা যাওয়া এই মেয়েটাকে ভুলতে পারেননি।

‘না রে, তোকে কি আর ভুলতে পারি। কোথায় ছিলি এত দিন?’

মা-মেয়ের কথোপকথন শুনে অনেকেই হয়তো ধাক্কা খেতে পারেন। কিন্তু ঘটনা সত্য। চার বছর আগে মারা যাওয়া না-ইয়নকে হাজির করা হয়েছিল ভার্চুয়াল রিয়ালিটির দুনিয়ায়। সেখানেই মেয়ের সঙ্গে দেখা হয় মা জ্যাং জি-সংয়ের।

দেখা হলো মা-মেয়ের
মা-মেয়ের এই ভার্চুয়াল মিলন মঞ্চায়ন করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রথম সারির টিভি চ্যানেল এমবিসি। তাদের একটি টিভি অনুষ্ঠান হচ্ছে ‘মিটিং ইউ’। সেই অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবেই এই আয়োজন করা হয়। মা-মেয়ের এই ভার্চুয়াল পুনর্মিলনী ছুঁয়ে গিয়েছে দর্শকদের। ভিজিয়েছে তাঁদের চোখও। শুধু তা-ই নয়, প্রযুক্তি দুনিয়ায় বিশাল আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এটি।

এ আবেগঘন এই ভিডিওতে দেখা যায়, ভিআর বক্স এবং হাতে গ্লাভস পরিহিত অবস্থায় মা জ্যাং-জি তাঁর মৃত মেয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন। কথাবার্তার একপর্যায়ে মেয়েকে একটি কেক উপহার দেন জ্যাং জি-সং। এরপর মেয়েকে জন্মদিনের একটি গান গেয়ে শোনান। টেবিলে বসে খেতে খেতে দীর্ঘক্ষণ গল্প করেন মা-মেয়ে। এ সময় না-ইয়ন মাকে লেখা একটি চিঠি পড়ে শোনায়। বিদায়বেলায় দেখা যায়, না-ইয়ন বিছানায় শুয়ে পড়ে এবং মা তাকে হাত নেড়ে বিদায় জানান। পুরো ঘটনাটি গ্রিনরুমে বসে দেখে জ্যাং-জির পরিবার।

যেভাবে তৈরি করা হলো মুহূর্তটি
ভার্চুয়াল রিয়ালিটির সাহায্যে মা-মেয়ের মিলনের এই প্রকল্পে কাজ করেন সিউলের ভাইভ স্টুডিওর পরিচালক লি হাইউন। সম্পূর্ণ বিষয়টি উপস্থাপন করার জন্য তাঁদের আট মাস সময় লেগেছে। মৃত না-ইয়নের ভার্চুয়াল মডেল তৈরি করার জন্য একজন শিশু অভিনেতার সাহায্য নেন তাঁরা। বিভিন্ন ভঙ্গিতে সেই শিশু অভিনেতার হাঁটাচলা বা  ছোটাছুটির ভিডিও রেকর্ড করা হয়। এরপর না-ইয়ন বেঁচে থাকা অবস্থায় তোলা বিভিন্ন ছবি এবং ভিডিও থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য নিয়ে প্রযুক্তিবিদরা তার একটি এনিমেশন মডেল তৈরি করেন। এই ভার্চুয়াল মডেলকে সংযুক্ত করা হয় ভিআর বক্স ও সেন্সরচালিত হ্যান্ড গ্লাভসে। ভার্চুয়াল মডেলটিতে না-ইয়নের কণ্ঠস্বর আনার জন্য তারই কিছু ভিডিও ব্যবহার করা হয়েছে। মা-মেয়ের মিলনের মুহূর্তটি উপস্থাপন করা হয়েছে একটি পার্কে, যেখানে তাঁরা প্রায়ই সময় কাটাতে যেতেন। ওই পার্কের ত্রিমাত্রিক বিভিন্ন ছবি এবং মডেল ব্যবহার করে পার্কটির ভার্চুয়াল নকশা তৈরি করা হয়। স্টুডিওতে দৃশ্যগুলো দেখার জন্য ভার্চুয়াল রিয়ালিটির গগলস এবং স্পর্শ অনুভূতি পাওয়ার জন্য সেন্সরচালিত বিশেষ একধরনের গ্লাভস পরেন জ্যাং জি-সং।

এই আয়োজনের প্রধান পরিচালক লি হাইয়ুন বলেন, ‘প্রযুক্তির  সাহায্যে পুরনো স্মৃতি ফিরিয়ে আনতে কাজ করছি, যা অনেকের মনকে প্রশান্ত করবে।

তবে ভিডিওটি প্রকাশের পর অনেকেই এ ধরনের ভার্চুয়াল রিয়ালিটির কড়া সমালোচনা করেছেন। অনেকেই পুরো বিষয়টিকে মানুষের আবেগ নিয়ে প্রতারণা হিসেবে দেখছেন। আবার অনেকে মনে করেছেন, এতে করে যদি সন্তানহারা এক মা মনে কিছুটা শান্তি পান তাতে দোষ কী?

Source : https://www.kalerkantho.com/online/info-tech/2020/03/01/880573
Shah Muhammad Sadiur Rahman
Coordination Officer
Department of Multimedia & Creative Technology (MCT)
Email:mctoffice@daffodilvarsity.edu.bd
Cell:01847140056(CP),Ext:160

Offline tokiyeasir

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 905
  • Test
    • View Profile
Interesting...Thanks