শীতের শুরুতে শিশুর যত্ন

Author Topic: শীতের শুরুতে শিশুর যত্ন  (Read 1996 times)

Offline Sultan Mahmud Sujon

  • Administrator
  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 2674
  • Sultan Mahmud Sujon, Sr. Admin Officer
    • View Profile
    • Helping You Office Operation & Automation Management
শীতের শুরুতে শিশুর যত্ন
« on: January 02, 2012, 04:39:10 PM »
ধীরপায়ে হামাগুড়ি দিয়ে শীত আসছে। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে শীতের আগমন মানে মায়ের দুশ্চিন্তা দ্বিগুণ বেড়ে যাওয়া।
ফারহানা আলম একজন কর্মজীবী মা। শীতের আগমনে চিন্তায় পড়েছেন এক বছরের ছেলে শুভকে নিয়ে। বারবার নাক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে তার। শরীরের তাপমাত্রা কখনো কখনো স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। সঙ্গে রয়েছে খুসখুসে কাশি। নবজাতক তাশকিয়াকে নিয়ে মা তানিয়া পড়েছেন অন্য সমস্যায়। তাশকিয়ার হাত ও পায়ের চামড়া খসখসে হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে চামড়ার মধ্যে ফুসকুড়িও দেখা যাচ্ছে কিছু কিছু। তাই চিকিত্সকের শরণাপন্ন হয়েছেন তিনি।
এ বিষয় নিয়ে কথা হলো বারডেম হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান তাহমিনা বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, শীতের শুরুতে শিশুদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো সর্দি-কাশি। এ সময় আমি মায়েদের ঈষত্ উষ্ণ পানি দিয়ে শিশুদের গোসল করাতে পরামর্শ দেব। হালকা ফ্যান ছেড়ে ঘুমালেও কোনো ক্ষতি নেই। নাক যদি বন্ধ হয়ে যায়, তবে লবণ পানির ড্রপ ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ছাড়া বাজারে নরসল ড্রপ কিনতে পাওয়া যায়। পাতলা কাপড় বা কটন বাডে দুই ফোঁটা নরসল ড্রপ লাগিয়ে নাক পরিষ্কার করা যেতে পারে। যদি কাশি হয়, তবে ওষুধ ব্যবহার না করে ঘরেই প্রতিরোধব্যবস্থা তৈরি করা যেতে পারে। যেমন—আধা কাপ লাল চায়ের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে খাওয়ানো যায়। অথবা আধা কাপ গরম পানির সঙ্গে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস ও মধু বা তুলসী পাতার রস ও মধু মিশিয়ে খাওয়ানো যায়। আদা কুচি করে বা আদা চায়ের সঙ্গে মধু মিশিয়েও শিশুকে খাওয়ানো যেতে পারে। জ্বর ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে উঠলে প্যারাসিটামল সিরাপ খাওয়ানো উচিত। এ ছাড়া তোয়ালে ভিজিয়ে বারবার শিশুর গা মুছিয়ে দিতে হবে। তবে বাচ্চার নিউমোনিয়া হয়েছে কি না সে বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। এ জন্য চিকিত্সকের পরামর্শ নিতে হবে।
শিশুর ত্বকের যত্ন প্রসঙ্গে তাহমিনা বেগম বলেন, শীতের সময় শিশুকে প্রতিদিন সামান্য গরম পানি দিয়ে গোসল করালে ভালো হয়। গোসলের আগে সরিষার তেল ব্যবহার না করে জলপাই তেল ব্যবহার করাই ভালো। গোসলের পর বেবি লোশন ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ছাড়া সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন সাবান এবং এক দিন শ্যাম্পু ব্যবহার করা যেতে পারে।
শিশুকে প্রতিদিন গোসল করানোর ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, অনেকে নবজাতককে নিয়মিত গোসল করান না। ফলে বাচ্চার গায়ে ফুসকুড়ি ওঠে এবং এর মধ্যে পুঁজ জমে যায়। তিনি আরও বলেন, আমরা সাধারণত জন্মের পর ২৮ দিন পর্যন্ত বাচ্চাকে নবজাতক বলি। জন্মের পর নবজাতককে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত গোসল না করানো উচিত। এরপর প্রতিদিন গোসল করানো যেতে পারে।
রাতে ঘুমানোর আগে গ্লিসারিনের সঙ্গে পানি মিশিয়ে শিশুর হাত-পায়ে লাগানো যেতে পারে। শীতের শুরুতে বাচ্চাদের পোশাকের ব্যাপারে তাহমিনা বেগম বলেন, এ সময় খুব গরম কাপড় পরানোর দরকার নেই। শিশুদের মোটা সুতি কাপড় পরানো যেতে পারে। আঁটসাঁট বা উলের কাপড় পরালে শিশুর শরীর ঘেমে ঘামাচি উঠতে পারে। তবে শিশুদের ফ্লানেলের জামা পরানো যেতে পারে। রাতে গলায় ও মাথায় পাতলা কাপড় পেঁচিয়ে রাখলে ভালো হয়। তাহলে ঠান্ডা লাগার ভয় অনেকাংশেই কমে যাবে। তবে টুপি বা মোজা পরে শিশুকে কখনোই ঘুমাতে দেওয়া উচিত নয়।

শারমিন নাহার
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, নভেম্বর ২৪, ২০০৯