নৈতিকতা

Author Topic: নৈতিকতা  (Read 887 times)

Offline Raja Tariqul Hasan Tusher

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 114
  • Test
    • View Profile
নৈতিকতা
« on: March 11, 2020, 04:57:39 PM »
জেসমিনের দুই সেট গয়না ব্যাংকের সেফটি ডিপোজিট বক্সে না রাখলেই নয়। লম্বা, চৌকো ও ভারী স্টিলের বক্সটা ধরিয়ে দিয়ে ছোকরা ব্যাংক অফিসার একটা ছোট্ট ঘরে তাকে নিয়ে টেবিলের ওপর বক্সটা রেখে ওপরের ডালা খুলতেই হায়দার সাহেবের চোখ বিস্ফোরিত হয়ে উঠল।

ভেতরে রাশ রাশ এক শ ডলারের নোট! কত হবে? কি কারণে যেন তার সামান্য ভয় ও উত্তেজনা হচ্ছে। পাঁচটা বান্ডিল। একটা বান্ডিলই অনেক মোটা। সেখান থেকে সামান্য দুই আঙুলে চিমটি করে ধরে পুরুত্ব বোঝার চেষ্টা করলেন। পাঁচটা বান্ডিলে কমসে কম ৫০ হাজার ডলার হবে! এখন? বাইরে বের হয়ে বলবেন এর ভেতরে টাকা আছে?
মন পরিবর্তন করে তিনি ফোন বের করলেন। তার বন্ধু আসাদকে ফোন দিলেন। আসাদ শুনে বললেন, ‘এত টাকা! ফেরত দিবা কেন? লকার এখন তোমার, টাকাও তোমার।’
যুক্তিটা মনে ধরলেও হায়দার সাহেবের মনে হলো কোথায় যেন ফাঁক আছে।
তারপর লিয়াকতকে ফোন করলেন। লিয়াকত ফিসফিস করে বললেন, ‘টাকাসহ ওটা রেখে দে। কয় সপ্তাহের মধ্যে যদি হইচই না হয়, তখন টাকা নিয়ে আসবি! মালিক হয়তো মারা গেছে, কে জানে?’
বুদ্ধিটা একেবারে খারাপ না, কিন্তু কোথায় যেন একটা সূক্ষ্ম চুরির গন্ধ আছে।
এবার জেসমিনকে ফোন দিলেন। জেসমিনও গলা খাটো করে বললেন, ‘টাকাটা কোনোভাবে বাসায় আনতে পারলে দুটি গাড়িরই ফুল পেমেন্ট হয়ে যায়! তবে সাবধান! শেষে আবার পুলিশি কেস যেন না হয়।’
টাকাগুলো আরেকবার দেখে নিয়ে তিনি আসাদকে ফোন করলেন। ‘দোস্ত, আসলে মাত্র পাঁচ শ ডলার। বাকিগুলো কাগজ কেটে কেটে রেখেছে। ওগুলো আমি টাকা ভেবেছিলাম।’
আসাদ সঙ্গে সঙ্গে বললেন, ‘ওহ, তাহলে ফেরত দিয়ে দাও। ওদের কাছে তো মালিকের ইনফরমেশন আছেই।’
তারপর লিয়াকতকে ফোন করে একই কথা বললেন। লিয়াকত বললেন, ‘তাই নাকি? তাহলে তো আর চিন্তা করার কিছু নাই, ওদের বলে দে।’
শেষে তিনি জেসমিনকে ফোন করলেন। জেসমিন বললেন, ‘মাত্র পাঁচ শ ডলার? ভালো করে দেখছ ওগুলো কাগজ না ডলার?’
‘দেখছি, কাগজ। এখন কি করব?’
‘কি আর করবা, ফেরত দিয়ে দাও। আমরা পাপের ভাগী হতে যাব কেন?’