জেনে নিন করোনার সত্য-মিথ্যা

Author Topic: জেনে নিন করোনার সত্য-মিথ্যা  (Read 684 times)

Offline Faruq Hushain

  • Jr. Member
  • **
  • Posts: 86
  • Test
    • View Profile
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা সিডিসি করোনা বিষয়ে কী করবেন, কী করবেন না, তা তুলে ধরেছে।

১. একটু পরপর পানি, লবণ বা ভিনেগার মিশ্রিত পানি বা গরম পানি পান করলে কিংবা গলা ভেজালে অথবা রসুন মুখে রাখলে করোনা গলা থেকে ফুসফুসে যায় না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ধরনের একটি তথ্য ঘুরছে। এই তথ্যের কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।


করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। এই সুযোগে অনেক ভুল তথ্যও ছড়াচ্ছে। মনে রাখতে হবে, করোনা প্রতিরোধে সচেতনতাই সবচেয়ে জরুরি। করোনা নিয়ে ছড়ানো ভুল তথ্যগুলোর ক্ষেত্রেও এই কথা প্রযোজ্য। ভাইরাসটি নতুন। এ নিয়ে এখন গবেষণা চলছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা সিডিসি করোনা বিষয়ে কী করবেন, কী করবেন না, তা তুলে ধরেছে।

১. একটু পরপর পানি, লবণ বা ভিনেগার মিশ্রিত পানি বা গরম পানি পান করলে কিংবা গলা ভেজালে অথবা রসুন মুখে রাখলে করোনা গলা থেকে ফুসফুসে যায় না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ধরনের একটি তথ্য ঘুরছে। এই তথ্যের কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।


২. গরমে করোনার সংক্রমণ হবে না, এই ধারণাও ভুল। আবহাওয়া ও পরিবেশের তাপমাত্রার সঙ্গে সংক্রমণের কোনো সম্পর্ক নেই। করোনা যেকোনো তাপমাত্রায় সংক্রমণ ঘটাতে পারে।

৩. থার্মাল স্ক্যানার কেবল শরীরের তাপমাত্রা নির্ণয় করে। এর মাধ্যমে করোনার সংক্রমণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায় না। কাজেই থার্মাল স্ক্যানারে ধরা না পড়লে করোনা হয়নি, এমন মনে করা ঠিক নয়। সাধারণত উপসর্গ দেখা দিতে ২ থেকে ১০ দিন সময় লাগে। তাই ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের অন্তত ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।

৪. করোনার প্রতিষেধক: মানুষের ব্যবহারের জন্য স্বীকৃত ভ্যাকসিন বা প্রতিষেধক তৈরি হতে বেশ সময় লাগে। ২০০৩ সালে ছড়ানো সার্সের প্রতিষেধক তৈরি করতে ২০ মাস এবং আফ্রিকার দেশগুলোয় ছড়ানো ইবোলার প্রতিষেধক তৈরি করতে ৭ বছরের বেশি সময় লেগেছে। করোনার প্রতিষেধক তৈরির জোর চেষ্টা চলছে। তবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত প্রতিষেধক তৈরি হতে কিছুটা সময় লাগবে অবশ্যই।

৫. ফেস মাস্কে করোনা প্রতিরোধ করা যায়, এটিও একটি ভুল ধারণা। সাধারণ সার্জিক্যাল মাস্ক পরার পর মুখ ও মাস্কের মধ্যে বেশ খানিকটা ফাঁকা থাকে, যা ড্রপলেট (মুখ নিঃসৃত ক্ষুদ্র তরল কণা) প্রবেশের জন্য যথেষ্ট। এন-৯৫ মাস্ক বাতাসের ৯৫ শতাংশ শূন্য দশমিক ৩ মাইক্রন বা তার চেয়ে বড় কণা আটকাতে পারে। তার মানে এই নয় যে এটি পরলে করোনা প্রতিরোধ করা যাবে। কোভিড-১৯ রোগী এবং রোগীর পরিচর্যাকারী, সেবাদানকারী, হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্সদের মাস্ক পরা জরুরি।

বারবার হাত ধোয়া ও হাত নাকে-মুখে-চোখে না লাগানোই সবচেয়ে ভালো প্রতিরোধ। হাত ধোয়ার ক্ষেত্রে সাবান-পানি সবচেয়ে কার্যকর। করোনাভাইরাসের বাইরের আবরণটি চর্বির। কাজেই ক্ষারযুক্ত যেকোনো সাধারণ সাবান এ ক্ষেত্রে কার্যকর। কারণ, ক্ষারে চর্বির আবরণটি ভেঙে যায়, হাত ভাইরাসমুক্ত হয়। সাবান-পানি না থাকলে অ্যান্টিসেপটিক হ্যান্ডওয়াশ বা অ্যালকোহলযুক্ত স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে পারেন।

করোনা ছড়ায় যেভাবে: সংক্রমিত ব্যক্তির শ্বাসপ্রশ্বাস, হাঁচি-কাশি কিংবা কথা বলার সময় মুখ থেকে নিঃসৃত তরল কণা বা ড্রপলেটের মাধ্যমে বেরিয়ে এসে যেকোনো বস্তু বা তলে লেগে যায় করোনাভাইরাস। সে জায়গা স্পর্শ করলে হাত থেকে ভাইরাসটি নাক-চোখ-মুখ দিয়ে সুস্থ ব্যক্তিও আক্রান্ত হতে পারে। তাই পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখা জরুরি। অন্তত তিন ফুট দূরে থাকতে হবে।

সহযোগী অধ্যাপক, এন্ডোক্রাইনোলজি অ্যান্ড মেটাবলিজম, গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল