যা খেলে করোনা রোধ তো হবেই না, বাড়বে ঝুঁকি

Author Topic: যা খেলে করোনা রোধ তো হবেই না, বাড়বে ঝুঁকি  (Read 529 times)

Offline Sahadat Hossain

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 368
  • Test
    • View Profile
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডব্লিউএইচওর তথ্য অনুসারে সারা বিশ্বে ১৭৭ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। এই ভাইরাস নিয়ে অনেক কিছুই অজানা। ওষুধ ও প্রতিষেধক না থাকায় করোনাভাইরাস নিয়ে অনেক গুজব ছড়িয়েছে। নানা অপচিকিৎসাও ছড়িয়েছে। চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা বলছেন, করোনাভাইরাসের কারণে আতঙ্কিত হয়ে এসব অপচিকিৎসা নিলে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়তে হতে পারে। এসব থেকে দূরে থাকাই ভালো।

জেনে নিই করোনা নিয়ে গুজব কোনগুলো আর বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন।


ঘন ঘন পানি পানে করোনা যাবে না
করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে একটি পোস্ট ছড়িয়ে দিয়ে বলা হয়, প্রতি ১৫ মিনিট পরপর পানি পান করুন। এতে গলার মধ্যে থাকা ভাইরাস পাকস্থলীতে চলে যাবে। পাকস্থলীতে থাকা অ্যাসিড ভাইরাস মেরে ফেলবে।

Lifebuoy Soap
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিষয়টি এত সহজ নয়। এটি অতি সরলীকরণ। লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের ভাইরাস বিশেষজ্ঞ সহকারী অধ্যাপক কল্পনা সবাপাত্রী বলেন, বিষয়টি অতি সরলীকরণ। সে কারণে এসব নিয়ে মাথাও ঘামাতে চাই না। তিনি বলেন, যদি কারও মুখ ব্যবহার করে ভাইরাস কাউকে আক্রান্ত করে, তাহলে তা দু–একটি নয়, লাখ লাখ ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করে। পানি পান করার সময় সামান্য পরিমাণ ভাইরাসই পাকস্থলীতে যাবে। তা ছাড়া শুধু মুখের মাধ্যমে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে না। চোখ ও নাকের মাধ্যমে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। ফলে ঘন ঘন পানি পান করে করোনা আটকানো যাবে ন। এ ছাড়া গবেষণায় দেখা গেছে, করোনাভাইরাসের ৫০ শতাংশই মুখ, নাক, চোখ থেকে সংক্রমিত হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, চীনা গবেষকেরা বলেছেন, আক্রান্ত ব্যক্তিদের পাকস্থলীতে করোনাভাইরাস আক্রমণ করছে। পাকস্থলীতেই করোনাভাইরাস বেঁচে থাকে, তাহলে পানি পান করে করোনাভাইরাস পাকস্থলীতে নিলে তা ধ্বংস হবে না।

তবে যাঁরা হালকা গরম পানি দিয়ে দিনে তিনবার গার্গল করেন, এমন ব্যক্তি শ্বাসরোগে কম আক্রান্ত হন বলে দেখা গেছে। কিন্তু এই প্রক্রিয়া করোনাভাইরাস বা ‘কোভিড–১৯’ কোনো কাজ দেবে না।

কল্পনা সবাপাত্রী বলেন, ১৫ মিনিট পরপর পানি পান করা খারাপ কিছু না। কিন্তু যদি ১৫ মিনিট পরপর পানি পান করে কেউ ভাবেন তিনি নিরাপদ আছেন, তাহলেই বিপদ।

আইসক্রিমে সমস্যা নেই

অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে আইসক্রিম না খেতে পরামর্শ দিচ্ছেন। আইসক্রিম খাওয়ার কারণে গলার মধ্যে করোনাভাইরাস বেশি সময় সক্রিয় বা বেঁচে থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি ঠিক নয়। এ রকম একটি পোস্ট কম্বোডিয়াতে জাতিসংঘের শিশু তহবিলের (ইউনিসেফ) নামে ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৮ মার্চ ইউনিসেফের উপনির্বাহী পরিচালক শার্লোট পেট্রি গর্নিৎজকাকে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘জনসাধারণের কাছে আমাদের অনুরোধ, আপনারা কীভাবে নিজেকে এবং পরিবারকে সুরক্ষিত রাখতে পারবেন, সে সম্পর্কে যাচাইকৃত উৎস থেকে সঠিক তথ্য সন্ধান করুন।’

বিবৃতিতে বলা হয়, বিভিন্ন সামাজিক এবং কিছু মূলধারার মিডিয়ায় প্রচারিত এ ভুল বার্তায় বলা হয়েছে, আইসক্রিম এবং অন্যান্য ঠান্ডা খাবার এড়ানো এ ভাইরাস সংক্রমণের সূত্রপাত রোধে সহায়ক হতে পারে, যা অবশ্যই ‘সম্পূর্ণ অসত্য’।

বিবৃতিতে এ ধরনের মিথ্যাচারের হোতাদের উদ্দেশে একটি সাধারণ বার্তা দিয়ে বলা হয়, এটি বন্ধ করুন। ভুল তথ্য প্রচার করা এর সঙ্গে আস্থার অবস্থানে থাকা ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নামে চালিয়ে দিয়ে তাতে নির্ভরযোগ্যতার রং দেওয়ার অপচেষ্টা বিপজ্জনক এবং ভুল।

রসুন খেলে কাজ হবে না
রসুন খেলে করোনাভাইরাসকে প্রতিরোধ করা যাবে—এমন পরামর্শ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, রসুন খেলে করোনাভাইরাস বা ‘কোভিড–১৯’ থেকে বাঁচা যায়, এটি পরীক্ষায় প্রমাণিত না। রসুন স্বাস্থ্যের জন্য খুব ভালো একটি খাবার। করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে চীনের এক নারী দেড় কেজি রসুনের গরম রস পান করে অসুস্থ হন। এরপর তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন।

‘অলৌকিক’ পানি খেয়ে লাভ নেই
যুক্তরাষ্ট্রে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়, ক্লোরিন মেশানো পানি পান করলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয় না। যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) বলছে, এটি খুবই বিপজ্জনক প্রচারণা। এর সঙ্গে বিজ্ঞানের কোনো সম্পর্ক নেই। এটি পান করলে ভয়াবহ ডায়রিয়া ও বমি হতে পারে।

ব্লিচিং মিশ্রিত পানি পান করলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করা যায়, এমন একটি ভিত্তিহীন তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া রাজ্যে প্রথমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে রাজ্যটির ব্লু রিজ পয়জন সেন্টার বিবৃতিতে জানায়, ব্লিচিং মিশ্রিত পানি পান করলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ তো করাই যাবে না, উল্টো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে।

থানকুনি পাতায় প্রতিরোধ হয় না
দেশের বিভিন্ন জেলায় হঠাৎ করে গুজব ছড়িয়ে পড়ে, তিনটি থানকুনি পাতা খেলে করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
১৭ মার্চ রাতে দেশের বিভিন্ন স্থানে থানকুনি পাতা খাওয়ার হিড়িক চলে। কোথাও কোথাও থানকুনি পাতা খেতে মাইকযোগে আহ্বান জানানো হয়।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বহু বছর ধরে থানকুনি পাতা বাংলাদেশের মানুষ সবজি হিসেবে খেয়ে আসছেন। সবজি হিসেবে এর পুষ্টিগুণ অনেক ভালো। কিন্তু এতে ‘কোভিড–১৯’ প্রতিরোধ করতে পারে এমন কোনো গবেষণা নেই। বিষয়টি স্রেফ গুজব।

বিবিসি, গার্ডিয়ান, সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট অবলম্বনে।
Ref# Prothom Alo
Md.Sahadat Hossain
Administrative Officer
Office of the Director of Administration
Daffodil Tower(DT)- 4
102/1, Shukrabad, Mirpur Road, Dhanmondi.
Email: da-office@daffodilvarsity.edu.bd
Cell & WhatsApp: 01847027549 IP: 65379