মি’রাজ শুধু ধর্মীয় বিষয় নয় বরং বিশ্ব শান্তির চিরন্তন ফরমূলা মাওঃ মুফতী মো: ওমর ফ

Author Topic: মি’রাজ শুধু ধর্মীয় বিষয় নয় বরং বিশ্ব শান্তির চিরন্তন ফরমূলা মাওঃ মুফতী মো: ওমর ফ  (Read 1417 times)

Offline Md. Siddiqul Alam (Reza)

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 253
    • View Profile
মি’রাজ শব্দের অর্থ উর্ধ্বগমন,সিড়ি বেয়ে উপড়ে আরোহন ইত্যাদি । মুলত মি’রাজ হচ্ছে রাসুল সা: এর জীবনের বিস্ময়কর ঘটনা যা দ্বারা রাসুলের রিসালাতের সত্যতা, মহান আল্লাহর অসিম ক্ষমতার নমুনা প্রদর্শন,এবং বিশ্ব মানবতার মহান শিক্ষক,সকল বিজ্ঞানীদের বিজ্ঞানী সর্ব যুগের সর্ব কালের শ্রেষ্ঠ মানব মহানবী সা: কে স্বচক্ষে আসমান জমীন-জান্নাত জাহান্নাম এর পরিধি সুখ শান্তি কি আমলে কি পুরস্কার,গোটা পৃথিবী কে শান্তিময় করার কলা কৌশল,অতিত নবী রাসুলদের সাক্ষাৎকার মতবিনিময় ইত্যাদি বহুবিধ বিষয়ের বাস্তব চিত্র যেন রাসুল সা: সরেজমিনে দেখে তাঁর উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে শতভাগ সফল হতে পারেন সেই জন্যই মি’রাজ ।
বর্তমানে বিশ্বব্যাপী যে দাঙ্গা হাঙ্গামা, মারামারি কাটাকাটি, জুলুম নির্যাতন অন্যায় অবিচার ইত্যাদি অপকর্ম চলছে, তা হতে সমাজকে রক্ষা করতে হলে মিরাজের শিক্ষা গুলো পুরোপুরি বাস্তবায়ন অপরিহার্য্য। তবেই সমাজে,দেশ-বিদেশে সর্বত্র বয়ে আসবে অবিরাম অনাবিল শান্তি শৃঙ্খলা। আসুন আমরা মিরাজের শিক্ষাগুলো যথাযত ভাবে জেনে বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করি।
নিম্নে মিরাজের শিক্ষাগুলো সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরা হলো।
১ নং শিক্ষা: “তোমার প্রভূ হুকুম করেছেন - তোমরা এক আল্লাহ তা’য়ালা ব্যতীত আর কারো ইবাদত করবে না”। অর্থাৎ ইবাদত হবে একমাত্র আল্লাহর। “আল্লাহ তা’য়ালার আদেশ ও নিষেধের ভিত্তিতে জীবন কাটানোর নামই হলো ইবাদত”। আর যিনি আল্লাহ তা’য়ালার আদেশ ও নিষেধের আলোকে জীবন পরিচালনার চেষ্টা করেন তাকে আবদ বা আবেদ বলা হয়। শুধু নামায, রোযা, হজ্জ ও যাকাত ইত্যাদি আনুষ্ঠানিক আ’মালকে ইবাদত বলাহয় না। ইবাদত হলো জীবনের সকল ক্ষেত্রে আল্লাহ তা’য়ালার কথা মেনে চলার নাম। যার কারণে সূর্যোদয়ের সময় নামায পড়লে সাওয়াবের পরিবর্তে গুনাহ হয়। ঈদের দিন রোযা রাখলে সাওয়াব হয় না বরং গুনাহ হয়। কেননা ঐ সময় নামায ও রোযার ব্যাপারে আল্লাহ তা’য়ালার নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাহলে বুঝা গেল নামায রোযা ইত্যাদিকে তখনই ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত বলা হবে যখন এগুলো আল্লাহর কথার আলোকে আদায় করা হয়। এর দ্বারা পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছে আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারোও নিকট মাথানত করা, প্রনাম করা, কবর পুজা করা, আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো কাছে কোন কিছু চাওয়া এবং তার উপর তাওয়াক্কুল করা ইবাদতের সম্পূর্ণ বিপরীত।
নামায মি’রাজের অন্যতম উপটৌকন। নামায একমাত্র ইবাদত যা তিঁনি মি’রাজের রাত্রিতে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যমে এ উম্মতের উপর ফরজ করেছেন। নামায হলো মুমিন ব্যক্তির মি’রাজ স্বরূপ। অর্থাৎ রাসুললুল্লাহ (সাঃ) মি’রাজের মাধ্যমে যেভাবে আল্লাহর দিদার লাভ করেছেন, মুমিন ব্যক্তিও নামাযে সেরূপ আল্লাহর দিদার লাভে সক্ষম হবে। নামাযই হলো কাফের ও মুমিন ব্যক্তির মাঝে একমাত্র পার্থক্যকারী। দ্বীনের মধ্যে নামায হলো দেহের মধ্যে মাথার মতো। অর্থাৎ মাথা বিহীন দেহ যেমন চিনা যায় না তেমনি নামায বিহীন মুসলমানকেও রাসুলুল্লাহ (সাঃ) উম্মত বলে চিনবেন না। অথবা মাথা বিহীন দেহ যেমন জীবিত থাকে না, অনুরূপ নামায বিহীন ঈমানও টিকে থাকে না। নামায হলো বেহেস্তের চাবি। সুতরাং নামাযের ব্যাপারে অত্যাধিক সতর্কতা অবলম্বন করা মুমিন ব্যক্তির ঈমানী দায়িত্ব।
২ নং শিক্ষা: “আর পিতা মাতার সাথে সদাচারণ কর” আল্লাহ তা’য়ালার পরেই পিতা মাতার হক। পবিত্র কুরআনের অসংখ্য জায়গায় আল্লাহ তা’য়ালা তাঁর ইবাদতের পরেই পিতা মাতার সাথে সদাচারণ করতে আদেশ করেছেন। আল্লাহ তা’য়ালার ইবাদত ও পিতা মাতার সাথে সদাচারণ উৎপ্রত ভাবে জড়িত। মাতা পিতার খেদমত না করে শুধু নামায রোযা ইত্যাদি পালনের মাধ্যমে জান্নাতে যাওয়া অসম্ভব। যে ব্যাক্তি পিতা মাতাকে জীবিত পেয়েছে কিন্তু তাদেরকে খুশি করে জান্নাত লাভ করতে পারেনি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) তাকে তিরস্কার করেছেন। আবার পিতা-মাতার অসন্তোষ সন্তানের ধ্বংসের জন্য যথেষ্ট। যদি কোন সন্তানের উপর পিতা-মাতা অসন্তুষ্ট থাকেন- সে সন্তান কখনো কামিয়াব হতে পারে না। “ দু’টি বিষয়ের শাস্তি দুনিয়াতেই পেতে হয়। জুলুম এবং পিতার মাতার অবাধ্যতা”। তাই আমাদের উচিত যে কোন মূল্যে পিতা-মাতার সাথে উত্তম আচরণ করা। পিতা-মাতার ও উচিত সন্তানদের কে সে ভাবে গড়ে তোলা। পিতা-মাতা তাদের দায়িত্বের অবহেলার কারণে সন্তান সন্ততি পাপ কাজে জড়িয়ে পড়লে এ অপকমের্র দায়ভার তাঁরা কখনো এড়াতে পারবে না ।
৩ নং শিক্ষা: পরস্পর পরস্পরের হক অতিব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় পরিবার সমাজ ও রাষ্ট্রে যত মারামারি তা কারো অধিকার নষ্ট করার দরুণ অথবা অন্যায় অবিচারের দরুণ তাই প্রত্যেকেই প্রত্যেকের হক বা অধিকার যথযথভাবে আদায় করলে সর্বত্র শান্তিময় পরিবেশ বিরাজ করবে।সামাজিক অনেক অনুষ্ঠানাদি দেখা যায় যেখানে সাজ সজ্জা করে লক্ষ কোটি টাকা ব্যয় করা হয় অথচ প্রতিবেশী,গরীব আত্মীয় স্বজন কে ঐ অনুষ্ঠানে দাওয়াত দেওয়া হয় না । “আত্মীয় স্বজন, মিসকিন এবং পথিকদের হক তাদেরকে বুঝিয়ে দিন”। ইসলামে সকল মানুষের জীবনের সার্বিক শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। আত্মীয় স্বজনের হক বলতে বুঝায়, তাদের মিরাসী সম্পদ এবং আতিথেয়তার অধিকার। যদি কোন আত্মীয় উত্তরাধিকার সূত্রে কোন সম্পদের মালিক হয়, তা তাকে প্রদান করা বাধ্যতামূলক। যদি ছল চাতুরী করে তার অধিকার থেকে তাকে বঞ্চিত করা হয় তাহলে সে বড় গুনাহগার হবে। যে ব্যাক্তি তার ওয়ারিশের মিরাস কর্তন করবে আল্লাহ তার জান্নাতের অধিকার কর্তন করবেন।
৪ নং শিক্ষা: কেহ গাছতলায় কেহ বা বিশতলায়,কেহ হাজার টাকার কার্পেট এর উপর জুতো দিয়ে হাটে কেহ মারা যাওয়ার পর দাফনের কাপড়ের জন্য রাস্তায় লাশ রেখে পয়সা সংগ্রহ করা লাগে ইহা মানবতা মনুষ্যত্ব নয় এর মূল কারণ অবৈধ ইনকাম যা অপচয় অপব্যয়ের সুযোগ তৈরী করে তাই সরকার ও প্রশাসনের দায়িত্ব হলো অবৈধ ইনকামের পথ বন্ধ করে বৈধ পথে আয় রোজগারের পথ সুগম করে দেওয়া । “অপব্যয়-অপচয় করিও না, নিশ্চয় যারা বেহুদা খরচ করে তারা শয়তানের ভাই। আর শয়তান তার প্রভূর সঙ্গে বিদ্রোহকারী”। “বনী আদম পাঁচটি প্রশ্নের জবাব দেয়ার আগে কিয়ামতের দিন পা নাড়াতে পারবে না। তার জীবনকাল সম্পর্কে তা কোথায় ব্যয় করেছে, তার যৌবনকাল- তা কোন কাজে লাগিয়েছে, তার মাল সম্পর্কে সে এগুলো কোথা হতে আয় করেছে, কোথায় ব্যয় করেছে এবং তার জ্ঞাত বিষয়ের কতটুকু আমল করেছে। অপ্রয়োজনীয় কাজে অর্থ ব্যয় ও সম্পদ বিনষ্ট করা হলো অপচয়। এক কথায় আয়-ব্যয়, সঞ্চয় সবই হবে আল্লাহর ইচ্ছায়।


https://www.dailyinqilab.com/article
MD. SIDDIQUL ALAM (REZA)
Senior Assistant Director
(Counseling & Admission)
Employee ID: 710000295
Daffodil International University
Cell: 01713493050, 48111639, 9128705 Ext-555
Email: counselor@daffodilvarsity.edu.bd