অর্থনীতিতে করোনার প্রভাব

Author Topic: অর্থনীতিতে করোনার প্রভাব  (Read 1235 times)

Offline Md. Siddiqul Alam (Reza)

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 253
    • View Profile
বিশে^ এখন আতঙ্কের নাম কোভিড-১৯ ভাইরাস। চীন থেকে শুরু। তারপর একে একে করোনাভাইরাস এখন প্রায় দুইশো দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ^জুড়ে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা তৈরি হওয়ায় সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা। এটি এখন মহামারী রূপ নিয়েছে। বাংলাদেশেও করোনা আক্রান্ত রোগী বাড়ছে। মৃত্যুও হয়েছে। ইতোমধ্যেই করোনা রাজনীতি, অর্থনীতিসহ সব অঙ্গনেই স্থবিরতা সৃষ্টি করেছে। কোথায় গিয়ে এর শেষ হবে, তা বলা যাচ্ছে না। এক দেশে এর প্রভাব কমলে অন্যদেশে বাড়ছে। সবচেয়ে বড় শঙ্কা তৈরি হয়েছে অর্থনীতিতে। বলা যায়, এটি প্রায় থমকে গেছে। বৈশি^ক প্রবৃদ্ধির অন্যতম নিয়ামক চীন, আমেরিকা ও ইউরোপজুড়ে বিভিন্ন দেশে এই ভাইরাস অর্থনীতিতে ধ্বস নামিয়েছে। দোকানপাঠ, বিমান চলাচল সব বন্ধ থাকায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। যেখানে নিরাপত্তাই মুখ্য সেখানে এর থেকে ভালো উপায় হয় না। এর ফলে আর্থিক বিশ^মন্দা বাস্তবে রূপ নিতে শুরু করেছে বলে সতর্ক করেছেন অর্থনীতিবিদরা। এর মধ্যে চীনের তথ্য বেশি দুশ্চিন্তার কারণ। ১৯৮৯ সাল জিডিপির প্রান্তিক তথ্য প্রকাশ শুরুর পর প্রথম ধসের মধ্যে পড়লো বিশে^র দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ বোর্ডের গবেষণা ও পরিসংখ্যান বিভাগের সাবেক প্রধান ডেভিড উইলকক্স সিএনএন বিজনেসকে বলেন, ১০ দিন আগেও বিশ^ অর্থনীতি মন্দার দিকে মোড় নিচ্ছে কিনা তা নিয়ে বাস্তব অনিশ্চয়তা ছিল, কিন্তু এখন এটি নিয়ে আর কোনো প্রশ্ন নেই। অর্থনীতির আর একটি দিক চাকরির বাজার। করোনার কারণে এই দিকেও টালমাটাল অবস্থার তৈরি হয়েছে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলও’র মতে, মহামারী রূপে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকটে প্রায় আড়াই কোটি মানুষ চাকরি হারাতে পারে। আইএলও’র মতে, নতুন করোনাভাইরাসটির প্রভব যদি খুব স্বল্পমাত্রায় হয় তাহলে অন্তত ৮০ লাখ মানুষ চাকরি হারাতে পারে। আর এর মাত্রা যদি খুব বেশি হয় তাহলে বেকার হওয়া মানুষের সংখ্যা দাঁড়াবে ২ কোটি ৪৭ লাখ। এখানে উল্লেখ্য যে, ২০০৮-০৯ কালীন সময়ে বৈশি^ক আর্থিক সংকটের সময়ে বেকার হয়েছিল ২ কোটি ২০ লাখ মানুষ। তবে এর সাথে আইএলও আরও বলছে, ২০০৮ সালের বৈশি^ক মন্দার সময়কার মতো বিশ^জুড়ে সমন্বিত উদ্যোগ নেয়া হলে সম্ভাব্য বেকারত্বের হার অনেক কম হতে পারে।

একটি বিষয় হলো অর্থনীতি এবং শ্রমবাজার একে অপরের সাথে অত্যন্ত নিবিড়ভাবে সম্পর্কযুক্ত। এই ভবিষ্যত একটি দিকে ইঙ্গিত করে। তাহলো যদি এর প্রভাব আরও তীব্র হয় তাহলে বৈশি^ক মন্দার ভেতর পড়তে হবে। আর তা যদি আমরা সামাল দিতে চাই তাহলে সবাইকে একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে গুরুত্বপূণ হলো অভ্যন্তরীণ শ্রমবাজার নিয়ন্ত্রণ করা। এদিকে এই ভাইরাসে আক্রান্তের হার এখন ইতালি, ইরান, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, স্পেন, ফ্রান্স ইত্যাদি দেশে বেশি। এন্টার্টিকা বাদে পৃথিবীর বাকি সব মহাদেশেই ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাস। প্রতিদিন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মানুষ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। চীনের অবস্থা সবচেয়ে বেশি সংকটজনক ছিল। এখন তা স্থিতিশীল। উহানের সেই ডাক্তার যারা বীরের মতো পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে তারা আজ আদর্শ। পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য চীনসহ সারাবিশ^ই আপ্রাণ চেষ্টা করেছে। তারা এখন এগিয়ে আসছে অন্যদের সাহায্য করতে। তাদের সাহায্য আমাদের কাজে লাগবে। কারণ তারা ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গেছে। প্রতিদিন মৃত্যুর মিছিলে সংখ্যা বাড়ছে। সেই সাথে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যাও বাড়ছে। বলা যায়, প্রাণাহানি এবং অর্থনীতি দুই দিকেই ক্ষতি করে চলেছে এই ভাইরাসের প্রকোপ। বিশ^ব্যাপী ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে করোনাভাইরাস। আশা করা হচ্ছিল, এর প্রভাব ক্রমেই কমতে থাকবে এবং একসময় নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আসবে। তবে সেটি না হয়ে আরও বহু দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। কেবল আমাদের দেশের অর্থনীতি নয়, বরং বিশে^র অর্থনীতির গতিকে ¯øথ করে দিয়েছে করোনা। পরিস্থিতি যদি দ্রæত স্বাভাবিক না হয় তাহলে তা অর্থনীতিকে আরো ব্যাপক ক্ষতির মুখে ফেলবে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য প্রকৃতপক্ষে এমন একটি বিষয় যেখানে এক দেশ অন্য দেশের ওপর নির্ভরশীল। তা যদি চীনের মতো শক্তিশালী বাণিজ্য সক্ষমতাসম্পন্ন দেশ হয় তাহলে তা আরও বেশি প্রভাব ফেলবে এটাই স্বাভাবিক। নিত্য নতুন প্রযুক্তিপণ্যে খুব দ্রæত বিশে^ নিজের অবস্থান সুসংহত করে নেয়া দেশ হলো চীন, যার প্রযুক্তিপণ্য বিশে^ অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং মানুষের দৈনন্দিন ব্যবহারের একটি বড় অংশ পূরণ করছে। তা সে বিভিন্ন ধরনের পণ্যের ক্ষেত্রেই। করোনাভাইরাসের প্রভাব কতদিন চলবে বা তার প্রভাব কতটা তীব্র হবে তা এই মুহূর্তে বলা সম্ভব হচ্ছে না। ধীরে হলে বিভিন্ন দেশে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে। বর্তমান সময়ে চীন বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিশে^ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বিশে^র বিভিন্ন দেশের বাজারে চীনা পণ্য অত্যন্ত জনপ্রিয়। কিছু পণ্য প্রায় এককভাবে রয়েছে চীনের দখলে। ব্যবসা বাণিজ্যে চীনকে সর্বাধিক গুরুত্বের তালিকায় রাখে অনেক দেশ। এজন্য চীনকে ‘সব দেশের কারখানা’ বলেও অভিহিত করা হয়। বিশ^ থেকে চীনের যোগাযাগ অনেকটাই সীমিত হয়ে গেছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। বাংলাদেশেও আমদানি করা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও দ্রব্যের শতকরা ৮০ ভাগেরও যোগানদাতা চীন। আমদানি ও রপ্তানির বিভিন্ন বিষয় রয়েছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, চীন থেকে পণ্য আনা ব্যাহত হওয়ায় ইতোমধ্যে প্রধান রপ্তানি পণ্য গার্মেন্টের এক্সেসরিজের দাম ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে বলে জানিয়েছে এ খাতের শিল্পমালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। কিছু পণ্যে বেশি আবার কিছু পণ্যে কম প্রভাব পড়বে। আবার সময়ের সাথে সাথে কিছু পণ্যের চাহিদা তীব্র হবে। সেক্ষেত্রে পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে। এই পরিস্থিতি সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করছে সমস্যাটি কত দীর্ঘ হয় তার ওপর। যদি দ্রæতই এর সমাধান হয় তাহলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। কিন্তু তা না হলে অর্থনীতিতে মন্দা অবশ্যম্ভাবী।

আমাদের অর্থনীতির একটি বড় শক্তি হলো গার্মেন্টস খাত। গার্মেন্ট শিল্পের ওপর নির্ভর কর্মসংস্থানের একটি বিশাল অংশ। সম্ভাবনাময় এবং অর্থনীতিকে শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যাওয়া এই খাতে রপ্তানি করে আমাদের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হচ্ছে। কারণ বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের মধ্যে বেশির ভাগই পোশাক। চীনে করোনার প্রভাবের কারণে রপ্তানিতে প্রভাব পড়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় বাজার স্থিতিশীল রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। অসাধু ব্যবসায়ীরা যেন কোনোভাবেই এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাজার অস্থিতিশীল না করতে পারে তার ব্যবস্থা নিতে হবে। সামনে পবিত্র রমজান। এই মাসকে সামনে রেখে বিষয়টি নিয়ে গুরুত্ব সহকারে ভাবতে হবে। বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি একটি শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। এই অবস্থা বজায় রাখতে হলে অর্থনীতির এই গতি বজায় রাখতে হবে। করোনার প্রভাবে অর্থনীতির গতি ধীর হওয়ার অবস্থা রুখতে রপ্তানি পণ্যের বৈচিত্র্যতার ওপরও জোর দিতে হবে। তবে এ ধাক্কা কেবল একদিক থেকে আসবে না। প্রযুক্তিপণ্য, গার্মেন্টস পণ্য, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, এমনকি যোগাযোগ ক্ষেত্রেও এর প্রভাব পড়বে। তাই সমন্বিত উদ্যোগ নেয়ার কোনো বিকল্প নেই।
লেখক: শিক্ষক ও কলামিস্ট

https://www.dailyinqilab.com/article
MD. SIDDIQUL ALAM (REZA)
Senior Assistant Director
(Counseling & Admission)
Employee ID: 710000295
Daffodil International University
Cell: 01713493050, 48111639, 9128705 Ext-555
Email: counselor@daffodilvarsity.edu.bd

Offline Binoy

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 618
    • View Profile
Re: অর্থনীতিতে করোনার প্রভাব
« Reply #1 on: April 05, 2020, 10:38:14 AM »
It is really alarming!

Offline rayhanul.bba

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 219
  • Test
    • View Profile
Re: অর্থনীতিতে করোনার প্রভাব
« Reply #2 on: April 05, 2020, 10:46:08 AM »
Good issues have been covered.
Md. Rayhanul Islam
Senior Lecturer
Department of Real Estate
Facuty of Business & Entrepreneurship
Daffodil International University

Offline parvez.te

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 335
  • Nothing is impossible...
    • View Profile
Re: অর্থনীতিতে করোনার প্রভাব
« Reply #3 on: April 05, 2020, 01:57:00 PM »
nice
Manik Parvez

Offline tokiyeasir

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 905
  • Test
    • View Profile
Re: অর্থনীতিতে করোনার প্রভাব
« Reply #4 on: April 06, 2020, 08:51:41 AM »
Well and alarming topic. Thanks sir