হাদিসে বর্ণিত কিছু ঔষধি খাবার

Author Topic: হাদিসে বর্ণিত কিছু ঔষধি খাবার  (Read 1908 times)

Offline Md. Siddiqul Alam (Reza)

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 253
    • View Profile
মহান আল্লাহ তাঁর বহু সৃষ্টির মধ্যে বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক রেখে দিয়েছেন। তিনি যেমন রোগ সৃষ্টি করেছেন, রোগের প্রতিষেধকও সৃষ্টি করেছেন। এমন অনেক খাবার রয়েছে, যেগুলোর ঔষধি গুণ নিয়ে প্রিয় নবী (সা.) থেকে বহু হাদিস বর্ণিত হয়েছে। এর কয়েকটি তুলে ধরেছেন মুফতি মুহাম্মদ মর্তুজা
 
আজওয়া খেজুর :

মদিনার উত্কৃষ্টতম খেজুর আজওয়া। পবিত্র হাদিস শরিফে এই ফলটিকে জান্নাতের ফল আখ্যায়িত করা হয়েছে। রাসুল (সা.)-এর প্রিয় ফল ছিল খেজুর। এর উপকারিতা অপরিসীম। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতিদিন সকালবেলা সাতটি আজওয়া (উত্কৃষ্ট) খেজুর খাবে, সেদিন কোনো বিষ ও জাদু তার ক্ষতি করবে না।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৪৪৫)। হৃদেরাগে আক্রান্তদের জন্যও এটি মহা উপকারী ওষুধ। রাসুল (সা.) তাঁর এক সাহাবিকে হৃদেরাগের জন্য আজওয়া খেজুরের তৈরি ওষুধ খেতে পরামর্শ দিয়েছেন। সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার আমি অসুস্থ হলে রাসুল (সা.) আমাকে দেখতে আসেন। এ সময় তিনি তাঁর হাত আমার বুকের ওপর রাখলে আমি তার শৈত্য আমার হৃদয়ে অনুভব করি। এরপর তিনি বলেন, তুমি হৃদেরাগে আক্রান্ত। কাজেই তুমি সাকিফ গোত্রের অধিবাসী হারিসা ইবনে কালদার কাছে যাও। কেননা সে একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক। আর সে যেন মদিনার আজওয়া খেজুরের সাতটা খেজুর নিয়ে বিচিসহ চূর্ণ করে তোমার জন্য তা দিয়ে সাতটি বড়ি তৈরি করে দেয়। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৮৩৫)

এই হাদিস থেকে আরেকটি জিনিস বোঝা যায়, তা হলো—কোনো ওষুধ গ্রহণ করার আগে অবশ্যই অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ মহান আল্লাহ তাঁর বহু সৃষ্টিতে ঔষধি গুণ রেখেছেন, তবে রোগভেদে তার প্রয়োগেরও ভিন্ন ভিন্ন পন্থা রেখেছেন, যাঁরা তা নিয়ে গবেষণা করেন, তাঁরাই তা জানতে পারেন।

কালিজিরা :

বিস্ময়কর এই জিনিসটির প্রশংসা করেছেন খোদ রাসুল (সা.)। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছেন, কালিজিরায় সব ধরনের রোগের উপশম আছে, তবে ‘আস্সাম’ ব্যতীত। আর ‘আস্সাম’ হলো মৃত্যু। এর ‘আল হাব্বাতুস্ সাওদা’ হলো (স্থানীয় ভাষায়) ‘শূনীয’ (অর্থাৎ কালিজিরা)। (মুসলিম, হাদিস : ৫৬৫৯)

তাই যেকোনো রোগ নিরাময়ে, রোগ থেকে নিরাপদ থেকে অন্যান্য সতর্কতার পাশাপাশি অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে কালিজিরা সেবন করা যেতে পারে। আয়ুর্বেদিক, ইউনানি ও কবিরাজি চিকিৎসায় এর ব্যাপক ব্যবহার হয়ে থাকে। তাই যারা এসব চিকিৎসা নিয়ে গবেষণা করে, তাদের কাছে রোগ অনুযায়ী সঠিক ব্যবহারবিধি পাওয়া যাবে। কারণ একেক ধরনের রোগের জন্য কালিজিরার ব্যবহারবিধিও একেক রকম।

জয়তুন :


প্রিয় নবী (সা.)-এর পছন্দের ফলগুলোর একটি ছিল জয়তুন। এর তেলও শরীরের জন্য বেশ উপকারী। রাসুল (সা.) তা নিজে ব্যবহার করতেন এবং সাহাবায়ে কেরামকেও ব্যবহার করার তাগিদ দিতেন। হজরত ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা (জয়তুনের) তেল খাও এবং তা শরীরে মালিশ করো। কেননা এটি বরকত ও প্রাচুর্যময় গাছের তেল।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১৮৫১)

কোরআনে বর্ণিত ফলগুলোর অন্যতম একটি ফল জলপাই বা জয়তুন। সুরা ত্বিনের প্রথম আয়াতে মহান আল্লাহ যে ফলের কসম খেয়েছেন। সুরা নুরের ২৪ নম্বর আয়াতে তিনি এই ফলের গাছকে আখ্যা দিয়েছেন মুবারক গাছ হিসেবে। রাসুল (সা.)-এর একটি হাদিস থেকেও জানা যায় যে আগের নবীরাও এই বরকতময় গাছের ফল ও তেল ব্যবহার করতেন। মিসওয়াক হিসেবে ব্যবহার করতেন এই গাছের ডালকে। (আল মুজামুল আওসাত)

জমজমের পানি :

জমজমের পানি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ পানি। পবিত্র জমজম নিয়ে রাসুল (সা.)-এর বহু হাদিস রয়েছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি হলো ইবনে আব্বাস (রা.) কর্তৃক বর্ণিত। মহানবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ পানি হলো জমজমের পানি। তাতে রয়েছে তৃপ্তির খাদ্য ও ব্যাধির আরোগ্য।’ (আল-মুজামুল আওসাত, হাদিস : ৩৯১২)। রাসুল (সা.) জমজমের পানি ভীষণ পছন্দ করতেন। বেশির ভাগ সময় তিনি জমজমের পানি পান করার চেষ্টা করতেন। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি জমজমের পানি সঙ্গে করে নিয়ে আসতেন, আর বলতেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) তা বহন করে আনতেন। (তিরমিজি, হাদিস : ৯৬৩)

 

মহান আল্লাহ এই পানিতে এতটাই বরকত রেখেছেন, যে কেউ (আল্লাহর ওপর পূর্ণ বিশ্বাস নিয়ে) কোনো উপকার লাভের আশায় এই পানি পান করলে মহান আল্লাহ তাঁর আশা পূরণ করেন। জাবির বিন আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, জমজমের পানি যে উপকার লাভের আশায় পান করা হবে, তা অর্জিত হবে। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩০৬২)

মধু :

মধুর ঔষধি গুণ সবারই কমবেশি জানা। মহান আল্লাহ মধুর মধ্যে বহু রোগের আরোগ্য রেখেছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তার (মৌমাছির) পেট থেকে নির্গত হয় বিবিধ বর্ণের পানীয়, যাতে মানুষের জন্য রয়েছে আরোগ্য। অবশ্যই তাতে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য নিদর্শন রয়েছে।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ৬৮-৬৯)। রাসুল (সা.) মধু বেশ পছন্দ করতেন। আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) মিষ্টি ও মধু খুব ভালোবাসতেন। (বুখারি, হাদিস : ৫২৭০)। এ ছাড়া তিনি অন্যদের বিভিন্ন রোগের জন্য মধু পান করার পরামর্শ দিতেন। মহানবী (সা.)-এর কাছে এক সাহাবি এসে তাঁর ভাইয়ের পেটের অসুখের কথা বললে রাসুল (সা.) তাঁকে মধু পান করানোর পরামর্শ দেন এবং এতে সে সুস্থ হয়ে ওঠে। (বুখারি, হাদিস : ৫৩৬০)
MD. SIDDIQUL ALAM (REZA)
Senior Assistant Director
(Counseling & Admission)
Employee ID: 710000295
Daffodil International University
Cell: 01713493050, 48111639, 9128705 Ext-555
Email: counselor@daffodilvarsity.edu.bd