করোনা রোগীর সুস্থ হতে কতদিন লাগে?

Author Topic: করোনা রোগীর সুস্থ হতে কতদিন লাগে?  (Read 826 times)

Offline Md. Siddiqul Alam (Reza)

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 253
    • View Profile
করোনাভাইরাস আতঙ্কে এখন সারা বিশ্ব। মহামারি আকারে এটি ছড়িয়ে পড়েছে সবখানে। পরিসংখ্যানভিত্তিক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২৩ লাখ মানুষ প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে আর মৃত্যুবরণ করেছে দেড় লাখের বেশি মানুষ। এখনো পর্যন্ত এই ভাইরাসের কোনো প্রতিষেধক তৈরি হয়নি। ফলে বোঝাই যাচ্ছে, প্রাণঘাতী এই ভাইরাস থেকে বিশ্ববাসী মুক্তি পেতে বেশ সময় লাগবে। আর আক্রান্ত রোগী পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতেও লাগবে লম্বা সময়।

তবে সুস্থ হয়ে ওঠার বিষয়টি নির্ভর করবে, রোগী কতটা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তার ওপরে। অনেক মানুষ সামান্য কিছু উপসর্গ নিয়েই দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন কেউ কেউ। আবার অনেকের জন্য এটা দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। কোভিড-১৯ এর ক্ষেত্রে বয়স, লিঙ্গ এবং অন্যান্য শারীরিক বিষয়ও গুরুতর অসুস্থতার কারণ হয়ে দাঁড়ায় বলে বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে বলা হয়।

*সামান্য কয়েকটি উপসর্গ থাকলে কী হবে?

করোনায় আক্রান্ত বেশির ভাগ রোগীর ক্ষেত্রে কাশি বা জ্বরের মতো প্রধান উপসর্গগুলো দেখা গেছে। সঙ্গে শরীরের ব্যথা, ক্লান্তি, গলা ব্যথা এবং মাথা ব্যথা অনুভব করতে পারেন। কিছু কিছু রোগীর ক্ষেত্রে পাতলা পায়খানা, অণ্ডকোষে ব্যথা, পায়ে সংক্রমণসহ বেশকিছু লক্ষণও দেখা যাচ্ছে।

প্রথমদিকে শুষ্ক কাশি হতে পারে। কিছু মানুষের ক্ষেত্রে ভাইরাসের খেয়ে ফেলা ফুসফুসের মৃত কোষমুক্ত শ্লেষ্মাযুক্ত কাশি শুরু হতে পারে। মূলত বিশ্রাম, বেশি করে তরল পান এবং প্যারাসিটামলের মতো ব্যথানাশক ব্যবহার এসব ক্ষেত্রে চিকিৎসা দেওয়া হয়ে থাকে।

যাদের লক্ষণ হালকা থাকে। তারা দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন। এক সপ্তাহের কম সময়ের মধ্যে জ্বর চলে যায়। তবে কাশি আরও কিছুদিন থাকতে পারে। চীনের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব ক্ষেত্রে সুস্থ হয়ে উঠতে গড়পড়তা দুই সপ্তাহ সময় লাগে।

*গুরুতর লক্ষণ-উপসর্গ থাকলে কী হবে?

কোভিড-১৯ অনেকের ক্ষেত্রে গুরুতর হয়ে উঠতে পারে। এটি সংক্রমণের সাত থেকে ১০ দিনের মধ্যে ঘটে থাকে। পরিবর্তন অনেক সময় হঠাৎ করেই হয়ে থাকে। শ্বাস নিতে কষ্ট হয় এবং ফুসফুস ফুলে যায়। এর কারণ হলো, শরীরের ভেতরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করার চেষ্টা করে। শরীরের প্রতিক্রিয়া তৈরির চেষ্টা করার ফলে শরীরের ভেতরের অনেক ক্ষতি হয়ে যায়। এই সময়ে অনেক মানুষকে অক্সিজেন সহায়তা দেওয়ার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়।

চিকিৎসক ও ব্রডকাস্টার ডা. সারাহ জার্ভিস বলছেন, ‘শ্বাসকষ্টের এই ব্যাপারটি ভালো হয়ে উঠতে অনেক সময় লেগে যায়। শরীর তার ভেতরের কষ্টের ব্যাপারগুলো কাটানোর চেষ্টা চালিয়ে যায়। সুস্থ হয়ে উঠতে দুই থেকে আট সপ্তাহ সময় লেগে যেতে পারে। যদিও আরও কিছুদিন ক্লান্তি ভাব থেকে যাবে।’

* নিবিড় পরিচর্যা দরকার হয়, তাহলে কী হবে?

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ধারণা করছে, প্রতি ২০ জন রোগীর মধ্যে একজনের নিবিড় পরিচর্যার দরকার হয়ে থাকে। এর মধ্যে রয়েছে ঘুম পাড়িয়ে রাখা এবং ভেন্টিলেটর দেওয়ার মতো ব্যবস্থাগুলো। যেকোনো ধরনের অসুস্থতাই হোক না কেন, নিবিড় পরিচর্যা ইউনিট থেকে ফিরে সুস্থ হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে বেশ সময় লাগে। বাড়ি যাবার আগে রোগীদের নিয়মিত ওয়ার্ডে পাঠানো হয়ে থাকে।

ইনটেনসিভ কেয়ার মেডিসিন ফ্যাকাল্টির ডিন অ্যালিসন পিটার্ড বলছেন, ‘ক্রিটিক্যাল কেয়ার বা ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) থেকে বেরিয়ে পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে ১২ থেকে ১৮ মাস লেগে যেতে পারে। হাসপাতালের বিছানায় দীর্ঘদিন শুয়ে থাকলে শরীরের পেশির ক্ষয় হয়ে যায়। রোগীরা দুর্বল হয়ে পড়েন এবং পেশী পুনরায় তৈরি হতে সময় লেগে যায়। অনেকের এজন্য ফিজিওথেরাপির সহায়তাও দরকার হয়। আইসিইউতে থাকার কারণে অনেকের মধ্যে প্রলাপ বকা এবং মানসিক সমস্যা হওয়ারও সম্ভাবনা দেখা দেয়।’

চীন ও ইতালির রোগীদের ক্ষেত্রে শরীরের দুর্বলতা, সামান্য শারীরিক পরিশ্রমের পরেও শ্বাসকষ্ট হওয়া, ক্রমাগত কাশি এবং অনিয়মিত শ্বাসপ্রশ্বাসের খবর পাওয়া গেছে। সেইসঙ্গে অনেক ঘুমেরও দরকার হয়।

কার্ডিফ এন্ড ভেল ইউনিভার্সিটি হেলথ বোর্ডের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ফিজিওথেরাপিস্ট পল টুজ বলছেন, ‘আমরা জানি, পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে রোগীরা অনেক সময় নেন। অনেক বলতে, সেটা কয়েক মাস হয়ে যায়। অনেক মানুষ ক্রিটিক্যাল কেয়ারে তুলনামূলকভাবে অল্প সময় থাকেন। আবার অনেককে দীর্ঘদিন ভেন্টিলেটরের সহায়তাও দিতে হয়।’

* করোনাভাইরাস কি স্বাস্থ্যের জন্য দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলবে?

যেহেতু এই বিষয়ে এখনো দীর্ঘমেয়াদী কোনো তথ্য উপাত্ত নেই, তাই এ বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কারো জানা নেই। কিন্তু অন্যান্য অবস্থার কথা বিবেচনা করে দেখা যেতে পারে।

অ্যাকুইট রেসপিরেটরি ডিসট্রেস সিনড্রোম (যাকে আরডস বলা হয়ে থাকে) এমন সব রোগীদের মধ্যে তৈরি হয় যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার বিষয়টি অতিরিক্ত চাপের ভেতর দিয়ে যায়। যা তাদের ফুসফুসের ক্ষতি করে দেয়।

পল টুজে বলছেন, ‘এক্ষেত্রে আমরা দেখেছি যে, মানুষজন পাঁচ বছর পরেও শারীরিক ও মানসিক জটিলতার মুখোমুখি হয়েছেন।’

ওয়ারউইক মেডিকেল স্কুলের প্রভাষক ডক্টর জেমস গিল বলছেন, ‘পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তারও দরকার। আপনার যদি শ্বাসকষ্ট হয়, তখন হয়তো চিকিৎসক বলছেন, আমরা তোমাকে এখন ভেন্টিলেটরে নিয়ে যাবো। আমরা তোমাকে ঘুম পাড়িয়ে রাখবো। আপনি কি আপনার পরিবারকে বিদায় জানাতে চান? এই রোগীদের মধ্যে পিটিএসডি (পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার) দেখা দেয়া আশ্চর্যজনক নয়। অনেকের উল্লেখযোগ্য মনস্তাত্ত্বিক ক্ষত তৈরি হতে পারে। অনেক সময় হালকাভাবে আক্রান্ত হলেও সেটা দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ানোর সম্ভাবনাও রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘তবে আতঙ্কিত হবেন না। করোনায় আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে উঠতে বেশি দিন সময় লাগে না। গড়ে আক্রান্ত হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যেই অধিকাংশ রোগী সুস্থ হয়ে উঠে। কেউ আতঙ্কিত হবেন না। ভয় পাবেন না। প্রথমেই নিজেকে শান্ত রাখুন। সর্দির জন্য সাধারণ যে ওষুধগুলো রয়েছে ব্যবহার করুন। বেশি বেশি পানি পান করুন। এতে কিছুটা স্বস্তি পাবেন। কোনোভাবেই হতাশ হবেন না। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন।

http://www.dainikamadershomoy.com/post
MD. SIDDIQUL ALAM (REZA)
Senior Assistant Director
(Counseling & Admission)
Employee ID: 710000295
Daffodil International University
Cell: 01713493050, 48111639, 9128705 Ext-555
Email: counselor@daffodilvarsity.edu.bd