কফ দূর করে লেটুসপাতা

Author Topic: কফ দূর করে লেটুসপাতা  (Read 1619 times)

Offline Sultan Mahmud Sujon

  • Administrator
  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 2674
  • Sultan Mahmud Sujon, Sr. Admin Officer
    • View Profile
    • Helping You Office Operation & Automation Management
কফ দূর করে লেটুসপাতা
« on: January 03, 2012, 09:13:33 AM »
বাড়তে শুরু করেছে রৌদ্রের তেজ, আবার সন্ধ্যার পর থেকে ঠান্ডা বাতাস। গরম-ঠান্ডায় এই ঋতুতে বেড়ে চলেছে কফ, কাশি আর ভাইরাস জ্বর। গরম-ঠান্ডার এই সমস্যাগুলো দূর করতে লেটুসপাতার অবদান যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দেশে সালাদের বাটিতে একটি পরিচিত নাম লেটুসপাতা। এই পাতার বৈজ্ঞানিক নাম লাকটুসা স্যাটিভা এল।

হাঁচি, কাশি, কফ, হাঁপানি ও ফুসফুসের ইনফেকশন দূর করে লেটুসপাতা। সবুজ হওয়া সত্ত্বেও এতে রয়েছে মাত্র ৮ মিলিগ্রাম ভিটামিন ‘সি’, কিন্তু উচ্চমাত্রার ভিটামিন ‘এ’। ভিটামিন ‘এ’ ও ‘সি’ ঠান্ডাজনিত অসুখের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। কিডনির সমস্যার জন্য যেসব রোগীদের প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যায় তাঁদের জন্য লেটুসপাতা ভীষণ উপকারী।

হাত-পা ফুলে যাওয়া, কিডনির পাথর, কিডনির কার্যহীনতা, মূত্রথলির ইনফেকশন ও কিডনিতে ব্যথা—এই অসুখগুলোতে লেটুসপাতা যথেষ্ট জরুরি। ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য এই পাতা আশীর্বাদস্বরূপ। রক্তের চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে ও ডায়াবেটিক রোগীদের দেহের বিভিন্ন ক্ষয়ক্ষতি নিরাময়ে সাহায্য করে। কাঁচা বা ভাজা লেটুসপাতার সালাদ রক্ত পরিষ্কার করে, হূৎপিণ্ডের শিরা-উপশিরার দেয়ালে চর্বি জমতে বাধা দেয় এবং রক্তের কোলেস্টরেলের মাত্রা কমায়। পাকস্থলী ও খাবার হজমকারী অন্যান্য অঙ্গের ওপর রয়েছে এর যথেষ্ট ইতিবাচক প্রভাব। বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে দেখেছেন, যাঁরা লেটুসপাতা নিয়মিত খান তাঁদের পেট ভার হয়ে থাকা, গ্যাস হওয়া, ক্ষুধা না লাগা, অ্যাসিডিটি—এই সমস্যাগুলো দূর হয়। বার্ধক্য আসে দেরিতে, ত্বকে বলিরেখাও পড়ে দেরিতে।

এই পাতার সোডিয়াম ভিটামিন ‘বি’ ওয়ান, ‘বি’ টু, ‘বি’ থ্রি শরীরের যেকোনো অঙ্গে পানি জমে যাওয়া রোধ করে। অথচ লেটুসপাতাতে রয়েছে ৯৫.৫ গ্রাম পানি। এই পানি রক্তের লোহিত রক্তকণিকা, শ্বেতকণিকা, অনুচক্রিকা ও অন্যান্য উপাদানকে সুস্থ-সবল রাখে। ত্বকের কোথাও কেটে বা ছিঁড়ে গেলে এই পাতাকে থেঁতলে ব্যথার স্থানে লাগালে ব্যথা ভালো হয়। গর্ভবতী মায়েরা কাঁচা লেটুসপাতা খেলে মা ও শিশু উভয়ের শরীরেই রক্তের মাত্রা বাড়ে। এতে পানির পরিমাণ বেশি হওয়ার জন্য মোটা ব্যক্তিদের চর্বি ও ওজন কমায়।

চোখের ইনফেকশনজনিত সমস্যায় (যেমন—চোখ ওঠা) এক বা দুই লিটার পানিতে সামান্য লেটুসপাতা (৫০ গ্রাম) প্রায় ছয় মিনিট ফুটিয়ে সেই পানিতে চোখ ধুলে চোখ ওঠা দ্রুত ভালো হয়। চোখের অতিরিক্ত পরিশ্রমের পরও এই ফুটানো পানি ঠান্ডা করে ব্যবহার করলে চোখের ক্লান্তি দূর হয়।
খুশকির বিরুদ্ধেও কাজ করে এই পাতা। অনেক শ্যাম্পুতে লেটুসপাতার গুঁড়া ব্যবহার করা হয়। দীর্ঘ সময় রৌদ্রে থাকলে ত্বকে কালচে পোড়া ভাব হয়। লেটুসপাতা থেঁতলে ত্বকে দিলে ত্বকের উপকার হয়। এই পাতার ক্ষতিকর দিক হলো, দ্রুত নষ্ট হয়। তাই টাটকা থাকতেই খেয়ে নেওয়া ভালো।

ফারহানা মোবিন
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, এপ্রিল ২০, ২০১১