চাকুরী জীবনের প্রায় ২১ বছর পার করলাম। কত স্মৃতি, কত মানুষ, কত ঘটনা। সব কথা মনে করতে গেলে আস্তে আস্তে মাথার উপর চাপ পড়ে। কত মানুষের কথা মনে আছে। সব ক্ষেত্রে যে শুধু বসেদের কথা মনে আছে তা নয়। কিছু মানুষকে মনে আছে তাদের কাজের প্রতি একাগ্রতা ও নিষ্ঠার জন্য। কে অনেক উপরে উঠেছে, কে অর্থনৈতিক ভাবে ভালো আছে। তার থেকে মনে আছে বেশী - কে কেমন ছিল।
আমি নিশ্চিত সবার স্মৃতিতেই প্রথম চাকুরী অনেক বেশী ভাবে নাড়া দেয়। প্রথম চাকুরীতে এডজাস্ট করা সব থেকে সহজ।
টেক্সটাইল ফ্যাক্টরীর চাকুরী দিয়ে শুরু। শিফটিং ডিউটি। কখনও সেই ভোর সকালে আলো ফোটার আগে মাইক্রবাসে উঠে ফ্যাক্টোরীর দিকে রওনা দেয়া। কখনও আবার রাতে সবাই যখন খেয়ে দেয়ে ঘুমাতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে তখন নাইট শিফটে কাজ শুরু করা। সারা রাত জেগে কাজ করা। টেক্সটাইল ফ্যাক্টোরী গুলো যেন এক জেগে থাকা ভিন্ন এক শহর। এখানে কারো রাতে ঘুমানোই ব্যতিক্রম ঘটনা। এর পর আবার সারাদিন ঘুমানো।
আমাদের পেশার জগতে বহু ব্যতিক্রমি পেশা আছে যেগুলো সম্পর্কে অন্য মানুষেরা খুব কমই জানেন। তাদের সাফল্য ও ব্যর্থতা অনেক ভিন্ন। এপ্রিল-মে মাসের গরমে এসি ছাড়া থাকাই কেউ ভাবতেও পারে না। সেখানে ডায়িং ফ্লোরের গরমে কিভাবে ওয়ার্কাররা একনিষ্ট ভাবে কাজ করে চলে। মেশিন খুলে ফুটন্ত বাথের স্যাম্পল চেক করে। প্রচন্ড গরমে ওয়ার্কারদের দেখেছি কত আনন্দের সাথে লেবু, গুড় আর লবণের শরবত খেতে। আবার শীতকালের শৈত্য প্রবাহের সময় ডায়িং ফ্লোরে কাজ করা কত আরামদায়ক সবার কাছে।
ভালো লাগতো যখন কাজ শেষে আবার মাইক্র করে বাসায় ফিরে আসতাম। আশুলিয়ার রাস্তা তখন ফাকা ফাকাই থাকতো। ভোরের বা রাত ৯ টার আশুলিয়ার রাস্তা অনেক মনোরম ও নয়নাভিরাম মনে হত।
কত কথা কত ঘটনা কত মানুষ হারিয়ে যায়। সব গুলো যদি লেখার অক্ষরে আবদ্ধ করা যেত !!