উদ্যোক্তা মন যেভাবে গড়ে তুলবেন

Author Topic: উদ্যোক্তা মন যেভাবে গড়ে তুলবেন  (Read 1377 times)

Offline Badshah Mamun

  • Administrator
  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 1997
    • View Profile
    • Daffodil International University
উদ্যোক্তা মন যেভাবে গড়ে তুলবেন

উদ্যোক্তা হওয়ার বাসনা মনের গভীরে অনেকেই লালন করেন। তবে লালিত স্বপ্নকে পেছনে ঠেলতে নানা অজুহাত নিজের মনেই তৈরি করে মানুষ। টাকা নেই, আমাকে দ্বারা ব্যবসা হবে না, বিশ্বস্ত মানুষ পাব কই, পরিবারে ব্যবসা করেনি কেউ, আমি কি পারব? আমার জিনিস কিনবে কে—এসব সাত পাঁচ ভেবে অনেকেই এক ধাপ এগিয়ে তিন ধাপ পিছিয়ে যান। আসলে উদ্যোক্তা হওয়ার মতো সাহস দেখাতে পারে খুব কম মানুষ। ঝুঁকি থাকবেই, তবে মনকে সেভাবেই গড়তে হবে। নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে দেখতে হলে প্রথমেই প্রয়োজন মনের মাঝে সৃজনশীলতা, নেতৃত্বের ক্ষমতা এবং আকাঙ্ক্ষা গড়ে তোলা। কিছু কিছু বিষয় আছে যা উদ্যোক্তা মনটাকে শক্তিশালী করে। আজ যেনে নেওয়া যাক তেমন কয়েকটি বিষয়।

১. অভিজ্ঞ পরামর্শদাতাদের কথা শুনুন—কিছু শুরু করার আগে আসলে প্রথমেই অভিজ্ঞদের কথা শুনুন। কীভাবে ঝুঁকি নিয়েছেন তারা কীভাবে মোকাবিলা করেছেন সে সব গল্পগুলো মনের মাঝে গেঁথে ফেলুন। মার্ক জাকারবার্গের মতো বিশ্বের সফল ব্যক্তিরাও বলেন, নিজেদের সাফল্যের জন্য পরামর্শদাতাদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া অভিজ্ঞতাগুলোকে কৃতিত্ব দেন তারা। পরামর্শদাতারা আপনার ধারণাগুলোই হয়তো বলবে তবে সেই সঙ্গে তাঁরা কোন বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকতে হবে, ক্ষতিকারক বিষয়গুলো চিহ্নিত করে দেবে। যাদের ভাগ করে নেওয়ার মতো অভিজ্ঞতা আছে তাদের সঙ্গে চাইলে লিঙ্কড ইন বা স্কোরের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে যোগাযোগ করা যেতে পারে।

২. যত পারেন পড়ুন—পরামর্শদাতাদের পাশাপাশি, আপনি প্রকাশিত বই এবং নিবন্ধগুলি থেকে জ্ঞান অর্জন করতে পারেন। যে সমস্ত লোকেরা তাদের অভিজ্ঞতা লিখে রাখে এবং তাদের সঙ্গে বিশ্বের সঙ্গে ভাগ করে নেয় তাঁরা চান যে আপনি তাদের ভুল এবং সাফল্যগুলো থেকে শিখুন এবং তারা বাস্তব-গল্পই তুলে ধরে যা আপনি নিজের উদ্যোগে প্রয়োগ করতে পারেন।

৩. উদ্যোক্তা হওয়ার ইভেন্টগুলোতে যোগ দিন—যে অবস্থায় আছেন তার থেকে আরও ভালো হতে চাইলে, উদ্যোক্তা হওয়ার নানা ধরনের কর্মশালায় যোগ দেওয়া উচিত। ট্রেড শো, সম্মেলন, ওয়েবিনারয়ের মতো ইভেন্টগুলোতে নিজের উদ্যোক্তা মনকে স্থির করে। এই জাতীয় ইভেন্টগুলো নেটওয়ার্কিংয়ের জন্য দুর্দান্ত সুযোগ, এবং শিল্প জুড়ে সংযোগ থাকায় সাফল্যের জন্য আপনাকে প্রস্তুত করবে।

৪.নতুন চ্যালেঞ্জ অনুসন্ধান করুন—একজন উদ্যোক্তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা হলো সমস্যা সমাধান করার ক্ষমতা। আপনাকে দ্রুত চিন্তা করতে হবে, বিভিন্ন কোণ থেকে পরিস্থিতি বিবেচনা করতে হবে এবং সৃজনশীল সমাধান করতে হবে যা এর আগে অন্য কেউ করেনি। এই ধরনের দক্ষতা বিকাশের জন্য, চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতির সন্ধান করতে হবে। সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনার জন্য মস্তিষ্ককে খাটাতে হবে। আপনাকে প্রতিক্রিয়া এবং সমালোচনা গ্রহণ করতে শিখতে হবে, অন্যের চিন্তাভাবনা এবং ধারণাটি আন্তরিকভাবে শুনতে হবে। কোন ফলাফল বা সমাধানে ফোকাস করবেন তা আপনাকেই বেছে নিতে হবে।

নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে দেখতে চাইলে জীবন যাপনের ক্ষেত্রে সুশৃঙ্খল হওয়া খুবই জরুরি। তাহলেই আপনার কাজে সুশৃঙ্খলা থাকবে। পেশাগত এবং ব্যক্তিগত উভয় জায়গায় সময় নষ্টের বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

৫. প্রতিদিন আপনার লক্ষ্য নিয়ে ভাবুন— উদ্যোক্তা হলে ভালো হতো, একবার এমন ভেবেই বসে থাকলাম—তাহলে পথ কখনই সহজ হবে না। প্রতিদিন নিজের লক্ষ্যটি নিয়ে ভাবতে হবে। কাজের ফাঁকে হোক, গল্পের ছলে হোক সব সময় লক্ষ্যটি নিয়ে ভাবতে হবে। আলোচনা করতে হবে। আপনি উদ্যোক্তা হতে চান কারণ আপনার একটি লক্ষ্য রয়েছে। প্রতিদিন এই লক্ষ্য নিয়ে ইতিবাচক চিন্তা করুন। নিজেই নিজেকে প্রেরণা দিন।

৬. ব্যবসায়ের প্রতিটি অংশ বোঝার চেষ্টা করে দেখুন—সফল উদ্যোক্তারা একটা কথা খুব বলেন তা হলো যে জিনিসটি নিয়ে ব্যবসায় নামছেন পুরোপুরি সেটি সম্পর্কে জানতে হবে। এটি কীভাবে তৈরি হয়, কী কী কাজে লাগে। অন্যকে দিয়ে তৈরি করে বা অন্যের জ্ঞান নিয়ে সফলতা আসার সম্ভাবনা খুব কম। একক উদ্যোক্তার জন্য অনেক কাজ আছে, তার মানে এই নয় যখন আপনার ব্যবসা বৃদ্ধি পায়, কর্মচারী থাকে, তখন এই দায়িত্ব কতটা কঠিন ছিল তা আপনি ভুলে যাবেন। প্রত্যেকের কাজের জন্য আপনার উপলব্ধি থাকতে হবে। অহংকার এড়িয়ে চলতে হবে। আপনার ব্যবসায়ের প্রতিটি ক্ষেত্রে আপনার হাত থাকতে হবে। আপনার কর্মীদের কাজের ধরন কী তা দেখার জন্য বিভিন্ন ভূমিকাতে তাদের পাশাপাশি কাজ করতে হবে। যা আপনাকে বিষয়গুলো সম্পর্কে ধারণা রাখতে সহায়তা করবে এবং একটি দল হিসাবে সহযোগিতা এবং বন্ধনের সুযোগ তৈরি করবে।তরুণেরা কেন উদ্যোক্তা হবেন

৭. নিজেকে সুশৃঙ্খল করুন—
নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে দেখতে চাইলে জীবন যাপনের ক্ষেত্রে সুশৃঙ্খল হওয়া খুবই জরুরি। তাহলেই আপনার কাজে সুশৃঙ্খলা থাকবে। পেশাগত এবং ব্যক্তিগত উভয় জায়গায় সময় নষ্টের বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনার ব্যয় করা সময় সীমাবদ্ধ করুন, প্রচুর পরিমাণে ঘুমান, ভারসাম্যপূর্ণ খাবার খেতে হবে। কাজের অনুশীলন এবং পড়ার সময় নির্ধারণ করতে হবে। উল্লেখযোগ্য হলো মন থেকে বিভ্রান্তি দূর করতে হবে।

৮. কথা বলার চেয়ে শুনুন বেশি—আসলে এই বিষয়টি জীবনের প্রতি ক্ষেত্রেই লালন করা উচিত। নিজে কথা বেশি বলার চেয়ে শ্রোতা হওয়া জরুরি। মনোযোগ দিয়ে সবার কথা শোনা এরপর নিজের বিচার বুদ্ধি দিয়ে তা বিবেচনা বুদ্ধিমানেরাই করেন। ব্যবসার ক্ষেত্রে বিশেষত যখন কঠিন বা অস্বস্তিকর কোনো আলোচনা হয়, তখন উপস্থিত থাকার বিষয়ে এবং অন্য ব্যক্তি কী বলছেন কী বলা হচ্ছে তা তাতে মনোযোগ দেওয়া ভালো।

৯ অন্যকে সাহায্য করুন—আমরা যেমন অন্যের কাজ থেকে শিখি তেমনি অন্যকে সাহায্য করার মনোভাবও একজন উদ্যোক্তার রাখতে হবে। অন্যকে সাহায্য করার মাধ্যমে একজন উদ্যোক্তার শিক্ষা আরও বাড়ে। এটি মনে রাখা প্রয়োজন।

Source: https://rb.gy/5frl7a
Md. Abdullah-Al-Mamun (Badshah)
Senior Assistant Director
Daffodil International University
01811-458850
cmoffice@daffodilvarsity.edu.bd
www.daffodilvarsity.edu.bd

www.fb.com/badshahmamun.ju
www.linkedin.com/in/badshahmamun
www.twitter.com/badshahmamun