স্মার্টফোনের জগতে অতি সুপরিচিত এক নাম অ্যান্ড্রয়েড। স্মার্টফোন মানেই যেনো অ্যান্ড্রয়েড! মোবাইল ফোনের অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হচ্ছেে এটি। বর্তমানে বাজারের প্রায় ৭৫ শতাংশ ফোনেই অ্যান্ড্রয়েড সেবা। আর অন্য সবাই মিলে বাকি ২৫ শতাংশ! একাই চার তৃতীয়াংশ বাজার দখল করে আছে; ভাবা যায়! অথচ বহুল ব্যবহৃত এই অপারেটিং সিস্টেমটি মোবাইল ফোনে ব্যবহারের কথাই ছিলো না। ব্যবহার করার কথা ছিলো ক্যামেরায়! নতুন বার্তার পাঠকদের জন্য থাকছে অ্যান্ড্রয়েড আবিষ্কারের ইতিবৃত্ত।
অ্যান্ড্রয়েড মূলত একটি মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম। যেটি মোডিফাইড লিনাক্স কার্নেলের উপর ভিত্তি করে বানানো হয়েছে। অনেকের ধারণা অ্যান্ডয়েড গুগলের আবিষ্কার। কথাটি আসলে পুরো সত্য নয়। ২০০৩ সালে অ্যান্ডি রুবিন নামক মার্কিন কম্পিউটার প্রোগ্রামার ও ইঞ্জিনিয়ারের হাত ধরে অ্যান্ডয়েডের গোড়াপত্তন হয়। তবে অ্যান্ডি স্মার্টফোনে ব্যবহারের জন্য এটি তৈরি করেননি। তার আবিষ্কারটি ছিলো মূলত ক্যামেরায় ব্যবহারের জন্য। ডেটা কপি সহজ করা-ই ছিলো মূল উদ্দেশ্য। ২০০৫ সালে টেক জায়ান্ট গুগল এটিকে কিনে নেয়। এরপর টানা তিন বছর এর ডেভেলপিংয়ের কাজ করে গুগল। বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার পর ২০০৮ সালে গুগল এটিকে বাজারে আনার সিদ্ধান্ত নেয়।
বাজারে আনার আগেই গুগল একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নেয়। অ্যান্ডয়েডকে সকলের জন্য মুক্ত প্লাটফর্ম ঘোষণা করে গুগল। যে কেউ চাইলে এটিকে ব্যবহার করতে পারবে। লঞ্চ করার বছরই অ্যান্ডয়েড ব্যবহার করে এইচটিসি প্রথম স্মার্টফোন বাজারে আনে। তারপর থেকে আর অ্যান্ড্রয়েডকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ফ্রি অপারেটিং সিস্টেম হওয়ায় দিন দিন অ্যান্ড্রয়েডের ব্যবহার দিন দিন বাড়তে থাকে। অন্যদিকে অন্যান্য অপারেটিং সিস্টেমের জন্য লাইসেন্সের ঝামেলা থাকায় তুলনামূলক অ্যান্ডয়েডের চাহিদাই বাড়তে থাকে।
শুরু থেকেই অ্যান্ডয়েডের নজর কাড়তে শুরু করে। ২০০৮ সালে রিলিজের পর এর নাম দেয়া হয় অ্যান্ডয়েড ১.০। পরবর্তী সংস্করণের নাম ১.১ দেয়া হলেও পরবর্তী নাম গুলো বদলে যায়। মিষ্টিজাতীয় বিভিন্ন খাবারের নামে বাজারে আসতে শুরু করে অ্যান্ড্রয়েডের নতুন সব সংস্করণ। কিটক্যাট, জেলিবিন,ললিলপ নামগুলো যেনো আরও বেশি জনপ্রিয় করে তুলে অ্যান্ড্রয়েডকে। তবে এই বছরের ৩ সেপ্টেম্বর গুগল নিয়ে আসে অ্যান্ডয়েডের ১৭তম সংস্করণ অ্যান্ড্রয়েড ১০। যেটি ব্যবহার করে বাড়তি স্বাচ্ছন্দ পাবেন ব্যবহারকারীরা। বেশকিছু নতুন ফিচার যুক্ত হয়েছে অ্যান্ডয়েড ১০ এ।
অ্যান্ড্রয়েড ১০- ডার্ক থিম ব্যবহার করা যাবে। এই থিমের ফলে ফোনের ইউজার ইন্টারফেসে কালো আবহ পাওয়া যাবে। যেটি চোখে আরাম দেয়ার পাশাপাশি ব্যাটারির স্থায়ীত্ব বাড়াবে। এছাড়া সাউন্ড অ্যামপ্লিফায়ার যুক্ত করা হয়েছে। পডকাস্ট শোনা, ভিডিও দেখার পাশাপাশি ফোনে কথা বলার সময়ও সুবিধা পাওয়া যাবে। ভয়েজ কলের সময় বাড়তি শব্দ কমিয়ে পরিষ্কার শব্দ শোনাবে। এছাড়া নতুন ৬৫টি ইমোজি যুক্ত হচ্ছে অ্যান্ড্রয়েড ১০-এ। যার মধ্যে ৫৩টি লিঙ্গভেদে ব্যবহৃত হবে! তবে অ্যান্ড্রয়েড ১০- এর সেবা এখন কেবল গুগল পিক্সেল স্মার্টফোনের জন্য।